![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বি এন পি, একটি রাজনৈতিক দল যার বয়স প্রায় ৩ যুগ। দলটি সরকার গঠন করেছিল চার বার। একাধিক উন্নয়ন মূলক কর্মকান্ডে বাংলাদেশের জনগনের হৃদয়ে একটি বড় জায়গা দখল করে আছে এই দলটি । দলটির সভাপতি একজন আপসহীন নেতা হিসাবে পরিচিত। নেতার, নব্বইয়ের সেই সৈরাশাসক সরকার পতনের নেতৃত্ব আজ ও বাংলার মানুষের মনে দাগ কেটে আছে। জীবনের ঝুকি নিয়ে বাংলার মানুষের সেবার করার যে নেশা তা তিনি বহুবার প্রমান করছেন। নিজের সন্তানের চেয়ে যিনি দেশ এবং দেশের মানুষ কে বেশি ভালবাসেন তার সাক্ষী পুরোদেশ। সেই নেতা এবং তার দল নিয়ে উঠছে অনেক কথা। সাম্প্রতিক সময়ে একাধিক বার আন্দোলনের ডাক দিয়ে সফল না হওয়ার মতো একটি শব্দ সরকারী দলের কাছে বেশ জনপ্রিয়। আসলেই দলটির দুরবস্থা নাকি এটা সরকারের পপগান্ডা। বিভিন্ন টক- শো এবং কি প্রত্রিকায় দলের অনেক সিনিয়র নেতারা এ কথা অকপটে স্বীকার করেন যে দলের কোন্দল এবং নেতা কর্মীরা জেলে থাকার কারণে তারা আন্দোলনে সফল হয়নি। দীর্ঘ রাজনীতির পথ পাড়ি দিয়ে আসা দলটি আসলেই কি ভেঙ্গে যাচ্ছে, আর কেনই বা আজ এই দুরবস্থা ? তবে কারণ যেটাই হোক সমাধান করতে হবে একজনকে আর তিনি হলেন বেগম খালেদা জিয়া।
বি এন পি আন্দোলন করে সফল হয়নি, ব্যক্তিগতভাবে এ কথা পুরোপুরি মানতে আমি নারাজ। আন্দোলনে ভুল হয়ত ছিল এবং কি দলে একতা-র ও অভাব ছিল কিন্তু সেটা এই প্রথম বি এন পি-র আন্দোলনে ঘটেনি, অতীতে ছিল ভবিষ্যতেও থাকবে। হিটলার থেকে ভিয়েতনাম পযন্ত সে সাক্ষর বহন করছে। যদি ইতিহাসের দিকে তাকাই তাহলে এ কথা নিঃসন্দেহে বলতে পারি যে আন্দোলনে বি এন পি সফল হয়েছে। আমাদের নিজেদের ইতিহাসের কথা বলি, লাহোর প্রস্তাব পাশ হয়েছিল ১৯৪০ সালে আর পাকিস্তানের প্রতিষ্ঠা হয় ১৯৪৭ সালে। ৭ বছর সময় লাগে সাফল্য পেতে। ভাষা আন্দোলনের সূচনা ১৯৪৭-এ, আন্দোলন জমে উঠে ১৯৫২ সালে আর রাষ্ট্র ভাষার দাবী সাংবিধানিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৫৬ সালে। ৫২ থেকে ধরলেও ৪ বছর পেরিয়ে যায়। ১৯৬৯ গণ অভ্যুত্থানে আর ইয়াহিয়া খার মার্শাল ল আমাদের নিয়ে যায় ১৯৭১-এ মুক্তিযুদ্ধে। শুধু তাই নয়, এরশাদকে বিতাড়িত করতে সংঘবদ্ধ বিরোধী দলের সময় লেগেছিল প্রায় ৮ বছর। নিঃসন্দেহে, এ থেকে আমরা শিক্ষা নিতে পারি যে কোন আন্দোলনের ফলই রাতারাতি বা তাৎক্ষনিকভাবে হাতে আসেনি, সময় লেগেছে। কোনো শ্রমেই যে বৃথা যায় না সেটাই প্রমান হয়েছে। আজ যারা ভাবছেন বি এন পি ব্যর্থ হয়েছে সেটা হবে তাদের ভুল ধারণা।
প্রকৃতপক্ষে নতুন প্রজম্ম মনে করেন বি এন পি দলটি-তে আছে কোটি, কোটি নিবেদিত কর্মী কিন্তু অভাব নেতৃতের। অনেকের মতে, নেতৃত্বের কারণে দলটি-তে কোন্দল । অনেকে মনে করেন, দল চালাচ্ছেন খালেদা জিয়া আবার কেউ কেউ মনে করেন দল চলছে তারেক রহমানের নির্দেশে। কিছু দ্বিতীয় সারির নেতা মনে করেন দল চালাচ্ছেন সরকারের সঙ্গে আঁতাত করা একটি গ্রুপ যাদের উপদেশ সব সময় দল কে ভুল পথে নিয়ে যাচ্ছে। দলের কিছু সিনিয়র নেতা অনেকটা প্রকাশ্য ভাবেই তারেক রহমান কে পছন্দ করেন না, আর তারাই সরকারের সঙ্গে আতাত করছে বলে অনেকের ধারণা। সরকার বিরোধী আন্দোলনে মাঠে তৃন্নমুলের যে ভুমিকা ছিল তা ধন্যবাদ দিলে নিতান্তই সামান্য হবে। এই আন্দোলনে ছাত্রদল এবং বি এন পি-র হাই-প্রোফাইল নেতাদের ভুমিকাও প্রশ্নবিদ্ধ। শুধু তাই না , বি এন পি ক্ষমতা থাকা অবস্থায় সুবিধাভোগী নেতারা বর্তমানে দলের রাজনৈতিক কর্মকান্ড থেকে নিজেকে সরিয়ে রাখছেন। একারণে তৃন্নমুলের মধ্যে সবচেয়ে বড় প্রশ্ন " সু-সময় এই নেতারা আবার না ফিরে আসে" । তৃন্নমুলের নেতাদের কথা বলতেই মনে পরে জুলফিকার আলী ভুট্টো-র কথা। জুলফিকার আলী ভুট্টো বলেছিলেন, 'আমি তো শেখ মুজিবকে ভয় পাই না, আমি ভয় পাই তার পাশে বগলে ফাইল নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা ঐ খাটো মানুষটিকে।' বঙ্গবন্ধুর পাশে থাকা এই লোকটি স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক তাজউদ্দীন আহমদ। তিনি ছিলেন একজন সৎ, নিষ্ঠাবান এবং দেশ-প্রেমিক। ঠিক একইভাবে, তৃন্নমুলের নেতারা ভয় পায় খালেদা জিয়া'র পাশের লোকদের যারা সরকারের সঙ্গে প্রতি নিয়ত আতাত করছে। পাথক্য একটাই, খালেদা জিয়া'র পাশের লোকেরা তাজউদ্দিন সাহেবের মত সৎ, নিষ্ঠাবান এবং হয়তো দেশপ্রেমিক নন। এ কথা ঢালাও ভাবে বলা যাবে না যে, ওনারা সবাই খারাপ তবে কিছু কিছু নাম যে এমনি এমনি রটেনি সে দিকটাও খেয়াল রেখে চলতে হবে কারণ উপর থেকে ফেরেস্তা এনে তো আর দল চালানো সম্ভব নয়।
বিভিন্ন পেপার-পত্রিকায় মাধমে জানতে পারলাম নেতা খালেদা জিয়া এখন দল গঠনে মনোযোগ দিয়েছেন। সত্যিকার অর্থে বি এন পি-র জন্য দল গঠন করা হবে আন্দোলনের চাইতেও বেশি কঠিন কাজ । বি. এন. পি বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ রাজনৈতিক দল হলেও নেতৃত্ব বিকাশের ক্ষেত্রে দলটির অপারগতা বা অমনোযোগী মনোভাব প্রচন্ডভাবে লক্ষনীয়। দলটির অন্যতম সহযোগী সংগঠন "ছাত্রদল", যা বর্তমানে একটি অ-ছাত্রের বাজারে পরিনত হয়েছে। শুধু তাই নয়, দেশের পচাত্তর ভাগ এলাকায় গড়ে ১০ বছর ধরে ছাত্রদলের কোনো পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়নি। ছাত্রদলের মতো যুবদলের অবস্থা আরো নাজুক। একজন সিনিয়র নেতার মতে কোনো কোনো এলকায় গত ১৭ বছর পযন্ত কোনো পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয় নাই। এই সবকিছু কে ছাড়িয়ে গেছে যখন জানা যায় প্রায় চার বছর ধরে দলে কোনো মহাসচিব নেই। ব্যপারটি খুবই হাস্যকর যখন ভাবি দলটি চার বছরেও একজন ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব কে ভারমুক্ত করতে পারে না সেই দল কতটুকু নেতৃত্ব বিকাশে মনোযোগী । দলে কি নেতৃত্ব বিকাশের প্রয়োজন নাই ? অন্য আর যাই হোক, এসব দলীয় কার্যক্রম তো আওয়ামীলীগের কাছ থেকে শিখতে পারে বি এন পি। বাস্তবে গত কয়েক বছরে আওয়ামিলিগ যা দিয়েছে তা হলো মধ্যরাতে গণহত্যা , জন জনে মামলা, দুর্নীতির রেকর্ড , ধর্ষণের রেকর্ড , ঘরে এবং সীমান্তে লাশ, মদ -গাজ্জা এবং ইয়াবা চালানের মত ভারী আমল নামা থাকা সত্তেও আওয়ামিলিগ বহাল তবিয়তে ক্ষমতা আছে তার অন্যতম কারণ নেতৃত্ব বিকাশ।নিয়মিত কাউন্সিল এবং নতুন নেতৃত্ব তৈরিতে আওয়ামিলীগ দলটি যতটুকু সোচ্চার ঠিক ততটুকু অবহেলায় রয়েছে বি এন পি। নেতৃত্ব বিকাশ আর তৃন্নমুল পর্যায়ের নেতা কর্মীদের মূল্যায়নের কোনো বিকল্প যে নেই সেই উপলদ্ধি বি এন পি-র এখনই হওয়া প্রয়োজন। এখনই সময় নিজেদের সমলোচনা নিজেরাই করে আরো উন্নত এবং আধুনিক মনা রাজনৈতিক দল হিসাবে আত্মপ্রকাশ করা। আশা করি, আগামী তিন মাসের মধ্যে সকল অঙ্গ-সংগঠনের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষনা করা এবং পরবর্তী তিন মাসের মধ্যে জেলায় জেলায় আন্দোলন কমিটি গঠন করা। গত আন্দোলনের মাধ্যমে লক্ষ অর্জনের বীজ বপন হয়েগেছে এখন শুধু সেই আন্দোলনের ইতি টানার অপেক্ষা । এই আন্দোলন কমিটিই পরবর্তিতে নির্বাচনে নেতৃত্ব দিবে। আন্দোলন কমিটির নেতৃত্বে থাকবে দলের মহাসচিব আর দলীয় কমিটির নেতৃত্ব দিবেন সয়ং খালদা জিয়া। দলীয় কমিটি এবং আন্দোলন কমিটির লক্ষ্য একটাই কিন্তু কাজের ধরন এবং বিবরণ হবে ভিন্ন। এভাবেই সকল নেতা কর্মীর সহযোগিতায় বি এন পি ঘুরে দাড়াতে পারে আগের চেয়ে আরো শক্তিশালী দল হিসাবে। সকল পপগান্ডা কে পিছনে ফেলিয়ে, নিজেদের ভুল আর অবৈধ সরকারের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে বি এন পি বর্তমান বিধস্ত বাংলাদেশকে "মডেল বাংলাদেশে" পরিনত করুক এই পত্যাশা।
লেখক : এইচ, কে হীরা (একজন সচেতন নাগরিক )
[email protected]
২| ২৭ শে জুলাই, ২০১৫ দুপুর ১:৪১
স্বপ্নীল সরকার বলেছেন: বিএনপিতে যোগ্য নেতৃত্বের বড়ই অভাব ..................
©somewhere in net ltd.
১|
২৭ শে জুলাই, ২০১৫ সকাল ১১:০৮
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: যে কোন আন্দোলনের ফলই রাতারাতি বা তাৎক্ষনিকভাবে হাতে আসেনি, সময় লেগেছে। কোনো শ্রমেই যে বৃথা যায় না সেটাই প্রমান হয়েছে। আজ যারা ভাবছেন বি এন পি ব্যর্থ হয়েছে সেটা হবে তাদের ভুল ধারণা।
সকল পপগান্ডা কে পিছনে ফেলিয়ে, নিজেদের ভুল আর অবৈধ সরকারের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে বি এন পি বর্তমান বিধস্ত বাংলাদেশকে "মডেল বাংলাদেশে" পরিনত করুক এই পত্যাশা।