![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বলার চেয়ে লিথতে পছন্দ করি । পড়তে ভীষন ভাল লাগে ।
প্রেমের বিয়ে হোক বা পিতা-মাতার দেয়া বিয়ে হোক, সব তরুণ-তরুণী রোমান্টিসিজম নিয়ে বিয়ের মুখোমুখি হয়। ভবিষ্যৎ জীবনসঙ্গীকে নিয়ে তারা কল্পনায় স্বপ্নের রঙিন বাসর গড়ে তোলে। রোমান্সের ফানুস উড়িয়ে স্বপ্নরাজ্যে উড়ে যায়। অপরিচিতের বাধা ডিঙিয়ে তারা পরস্পর প্রেমের বন্ধনে একাত্ম হয়ে আকাশ-কুসুম ভাবনা গড়ে তোলে। কিন্তু একদিন তাদের স্বপ্নের ভুবন থেকে মাটির পৃথিবীতে নেমে আসতে হয়। সমাজ-সংসারের রূঢ় বাস্তবতার মুখোমুখি হতে হয়। প্রেমের বিয়ে স্বাভাবিক পরিণতি লাভের পথে যখন বাধা সৃষ্টি করে তখনই বাধে বিপত্তি। বহু বাধা-বিপত্তি পেরিয়ে নানান ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্যে দিয়ে তরুণ-তরুণী তাদের ইপ্সিত লক্ষ্যে উপনীত হওয়ার প্রাণপণ চেষ্টা করে। সমাজে ঘটে যাওয়া প্রেম-বিয়ের এমন বাস্তব ঘটনাবলি থেকে সৃষ্ট কাহিনীই স্থান পায় আমাদের সাহিত্যে।
প্রেম ও বিয়ের উপাখ্যানে রচিত হয় উপন্যাস, নাটক, গল্প, কাব্য ও সিনেমায়। প্রেমের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে ফুটে ওঠে সমাজের চিত্র। লায়লি-মজনু, শিরি-ফরহাদ, আনারকলি-জাহাঙ্গীর, শাহজাহান-মমতাজ, দেবদাস-পার্বতী, রোমিও-জুলিয়েট প্রভৃতি প্রেমের উপাখ্যান আজও পাঠ হয়। প্রেম পূর্ণতা পায়নি বিয়েতে এমন ঘটনা আছে অনেক।
শেক্সপিয়ারের কাব্যে রোমিও এবং জুলিয়েটের ভালোবাসা বিয়েতে পূর্ণতা পায়নি। দুটি প্রাণ অকালে ঝরে গিয়েছিল। তার কারণ হলো, জুলিয়েটের পিতা প্রেম স্বীকার করে দুজনের বিয়ে দিতে রাজি হননি। তিনি কন্যাকে জোর করে অন্য পাত্রের সঙ্গে বিয়ে দিয়েছিলেন। মার্চেন্ট অফ ভেনিসের নায়িকা পোর্শিয়া ইচ্ছা করলেই মনের মানুষকে বিয়ে করতে পারতো না। তার বাবা মৃত্যুর আগে দানপত্রে স্পষ্টভাবে লিখে গিয়েছিলেন, পোর্শিয়া ইচ্ছা করলেই যাকে-তাকে বিয়ে করতে পারবে না। তিনটি মঞ্জুষা থাকবে। তার একটি সোনার তৈরি একটি রূপার তৈরি, আরেকটি সীসার। এর একটার মধ্যে থাকবে পোর্শিয়ার ছবি। যে পাণিপ্রার্থী বলতে পারবে কোন মঞ্জুষায় পোর্শিয়ার ছবি আছে সেই পোর্শিয়ার পাণি গ্রহণ করতে পারবে।
এক সময় এ দেশের কৌলিন্য প্রথা বিভীষিকার সৃষ্টি করেছিল। টেকচাঁদ মিত্রের আলালের ঘরের দুলাল-এ উল্লেখ আছে, বাবু বনরাম ঠাকুরের সন্তান। এজন্য জাতি রক্ষার্থে কল্যাণদ্বয় জন্মিবামাত্র বিস্তর ব্যয় ভূষণ করিয়া তাহাদের বিবাহ দিয়াছিলেন; কিন্তু জামাতা কুলীন, অনেক স্থানে দায় পরিগ্রহ করিয়াছিল বিশেষ পারিতোষিক না পাইলে বৈদ্যবাটির শ্বশুরবাটিতে উঁকিও মারিত না।
কালীপ্রসন্ন সিংহের হুতোম প্যাঁচার নকশা-য় কুলীন স্বামীর বিস্তারিত বর্ণনা আছে। একজন কুলীন এতো বিয়ে করতো যার হিসাব রাখা সম্ভব ছিল না। তাই একটা খেরো খাতা সব শ্বশুরবাড়ির ঠিকানা লিখে রাখতে হতো এবং পর্যায়ক্রমে শ্বশুরবাড়ি গিয়ে জামাই বিদায় নিতো।
বঙ্কিমচন্দ্রের প্রখ্যাত উপন্যাস চন্দ্রশেখর-এ প্রতাপ কেবল জ্ঞাতি সম্পর্কের কারণে শৈবালিনীকে বিয়ে করতে পারেনি। নিজের ভালোবাসার দাম দিতে গিয়ে সে জীবন বিসর্জন দিয়েছিল।
বেগম রোকেয়া অবরোধবাসিনী গ্রন্থে বিয়ে প্রসঙ্গে লিখেছেন, এক জমিদার বাড়িতে তিন মেয়ের একই দিনে বিয়ে দেয়া হয়েছিল। বর-কনে কেউ কাউকে কখনো দেখেনি। কাজি এক আসরে তিনটি বিয়ে পড়াতে গিয়ে সব গোলমাল করে ফেলেছিলেন। ফলে যার বিয়ে ঠিক হয়েছিল তার সঙ্গে তার বিয়ে না দিয়ে ওলট-পালট বিয়ে দিয়েছিলেন। এক জমিদার কন্যার বিয়ে একজন সুপাত্রের সঙ্গে স্থির হয়েছিল। কিন্তু দেনা-পাওনা নিয়ে বিরোধের ফলে বিয়ে ভেঙে যায়। তখন মেয়ের অভিভাবক তার এক চরিত্রহীন ভ্রাতুষ্পুত্রের সঙ্গে কন্যার বিয়ে দেন। মেয়েটি ওই ভ্রাতুষ্পুত্রের জঘন্য চরিত্র সম্পর্কে অবহিত ছিল। কিন্তু বিয়েতে বাধা দেয়ার তার শক্তি ছিল না। জোর করে তার বিয়ে দিয়ে দেয়া হয়েছিল।
লুৎফর রহমানের রায়হান উপন্যাসে আমিনার সঙ্গে আমিনার ভাই মজিদের বিয়ে দিয়ে জাত খোয়াতে অস্বীকার করছিল। কারণ মজিদ ছিল চাষার ছেলে। এনায়েত আলী অশিক্ষিত হলেও উচু বংশের ছেলে। তার সঙ্গে আমেনার বিয়ে দিলে তার ভাইয়ের সম্মান ও মর্যাদা বৃদ্ধি পাবে। তাই প্রবঞ্চনার আশ্রয় নিয়ে আমিনার বিয়ে দেয়া হয়েছিল এনায়েত আলির সঙ্গে। এই বিয়ের পরিণামে আমেনাকে দুঃসহ কষ্ট ভোগ করতে হয়েছিল।
দেবদাস উপন্যাসে পার্বতীর সঙ্গে মিলনে বঞ্চিত দেবদাসের মৃত্যু প্রসঙ্গে শরৎচন্দ্র এই সত্যের প্রতিধ্বনি করেছেন, যদি কখনও দেবদাসের মতো এমন হতভাগ্য অসংযমী পাপিষ্ঠের সহিত পরিচয় ঘটে, তাহার জন্য প্রার্থনা করিও। প্রার্থনা করিও আর যাহাই হোক যেন তাহার মতো এমন করিয়া কাহারও মৃত্যু না ঘটে। মরণে ক্ষতি নাই, কিন্তু সে সময় যেন একটি স্নেহ-কর স্পর্শ তাহার ললাটে পৌঁছে, যেন একটিও করক্ষণাদ্রে স্নেহময় মুখ দেখিতে দেখিতে এ জীবনের অন্ত হয়। মরিবার সময় যেন কাহারও এক ফোঁটা চোখের জল দেখিয়া সে মরিতে পারে।
মানুষের এই চিরন্তনী বাসনা একমাত্র বিয়ের মাধ্যমে পরিপূর্ণ হতে পারে।
০৬ ই মার্চ, ২০১৪ সকাল ১১:৩৮
ময়দার রসেগাল্লা বলেছেন: আমার জন্য ও পাত্রী দেখে রাখবেন । আমার ও মন্চায় ।
©somewhere in net ltd.
১|
১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ১২:২৪
দি সুফি বলেছেন: আহা! বিয়ে করতে মুঞ্চায়