![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
পেশা: সিনিয়র সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার
গতকাল রাত থেকেই আমার খুব ইচ্ছা করছিল বৌদ্ধ ধর্ম স্রষ্টা সম্পর্কে কি বলে সেটা জানার? যদিও স্কুল জীবণ থেকেই আমি কম বেশী বৌদ্ধ ধর্মের সাথে বা এর আচার অনুষ্ঠানের সাথে পরিচিত। যা হোক, সত্য কথা হলো বৌদ্ধ ধর্ম বা দর্শনে স্রষ্টা সম্পর্কে এক অস্বাভাবিক রকমের নীরবতা পালন করা হয়েছে, বলা যায় স্রষ্টার অস্তিত্ত্ব অস্বীকারই করা হয়েছে। প্রায় আড়াই হাজার বছর পূর্বে আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ নেপালের লুম্বিনি নামক অঞ্চলে বৌদ্ধ ধর্মের প্রবর্তক, গৌতম বুদ্ধ জন্মগ্রহণ করেছিলেন এক রাজকীয় হিন্দু ক্ষত্রিয় পরিবারে।
প্রাচীনকাল থেকেই এই উপমহাদেশে বৈদিক দর্শনের পাশাপাশি চলছিল শ্রমণ ধর্ম বা দর্শন যা অ বৈদিক আন্দোলন নামে অধিক পরিচিত। বলা যায়, বৌদ্ধ ধর্মের পূর্বে এই অ বৈদিক দর্শনের নেতৃত্ব ছিল জৈন দর্শনের হাতেই। অ বৈদিক আন্দোলন থেকে উদ্ভূত দর্শন গুলোর অধিকাংশই স্রষ্টার অস্তিত্ত্ব স্বীকার করে না। বৌদ্ধ ধর্মও এর ব্যতিক্রম নয়। তবে মজার ব্যাপার হলো বেদিক ধর্মের যে দলটিতে অসংখ্য দেব দেবীতে বিশ্বাসের কথা বলা হয়েছে সেসব দেব দেবীর কথা বৌদ্ধ ধর্মেও পাওয়া যায়। ব্রক্ষ্মা, বিষ্ঞু, শিব, স্বরস্বতী, লক্ষী সহ আরো অসংখ্য দেব দেবীর কথা প্রাচীন পালি লিপিতে পাওয়া যায়। তবে এই সব দেব দেবী কে বেদিক ধর্মের মত এত গুরুত্ব দেয়া হয়নি বৌদ্ধ দর্শনে। বৌদ্ধ ধর্মে এসব দেব দেবী মানুষের মতই আরেক সত্ত্বা যারা সংসার জীবণে আবদ্ধ।
বৌদ্ধ দর্শনের মূল আলোচ্য বিষয় হচ্ছে দুঃখের কারণ ও তা নিরসনের উপায়। সর্বপ্রকার বন্ধন থেকে মুক্তিই হচ্ছে বৌদ্ধ দর্শনে প্রধান লক্ষ্য- এটাকে নির্বাণ বলা হয়। বৌদ্ধ মতে নির্বাণ হল সকল প্রকার দুঃখ থেকে মুক্তি লাভ। আর ঠিক এখানেই আমার প্রশ্ন, সেটা হলো নির্বাণ লাভেই যদি মুখ্য উদ্দেশ্য হয় তাহলে বিভিন্ন দেশে বুদ্ধের এত বিশাল বিশাল মূর্তি বানানো হলো কেন? কেন বুদ্ধের মূর্তি বিনা কোন বৌদ্ধ মন্দির কল্পনাই করা যায় না? যে পরিমাণ সময় ও শ্রম এই সব মূর্তি বানাতে ব্যয় হয় বা হয়েছে, সে সময় ও শ্রম ব্যয় করা উচিত ছিল নির্বাণ লাভের উদ্দেশ্যে। বুদ্ধ যখন বোধি বৃক্ষের নিচে বসে ধ্যান করেছিলেন তখন কি তার সামনে কোন মূর্তি ছিল? নিশ্চয়ই না। বুদ্ধ নিশ্চয়ই বলে যাননি তার মৃত্যুর পর তার মূর্তি বানাতে বা তার মূর্তি বানিয়ে তার পূজো করতে।
ভাবতে অবাক লাগে, যে বৌদ্ধ দর্শন স্রষ্টার অস্তিত্ত্বের ব্যাপারে নিশ্চুপ, সেই দর্শনের অনুসারীরাই বুদ্ধের মূর্তি বানিয়ে তার পূজো করে, তাকে বসিয়েছে স্রষ্টার আসনে। বুদ্ধ এখন খালি গৌতম বুদ্ধই নন, তিনি "ভগবান" বুদ্ধও বটে। অত্যন্ত হাস্যকর। সংবাদ মাধ্যমে জানতে পারলাম বুদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষে বৌদ্ধ প্রধান দেশগুলোতে এদিন সরকার মদ বিক্রির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। আমার প্রশ্ন কেন শুধু এদিনই? কেন সারা বছর নয়?
স্রষ্টার অস্তিত্ত্বের ব্যাপারে বৌদ্ধ দর্শনের সাথে ইসলামের কোন মিলই আমি পাইনি। তবে যতটুকু বুঝতে পেরেছি তাতে বলতে পারি যে, মূর্তি পূজা ইসলাম ও বৌদ্ব ধর্ম উভয় দৃষ্টিকোণ থেকেই গর্হিত ও নিন্দনীয়। বুদ্ধ তার জীবদ্দশায় নিজ মূর্তি বা অন্য কারো মূর্তি বানিয়ে পূজো করেছেন বলে আমার জানা নেই। নিজেকে তিনি কখনোই ভগবান বলে দাবী করেন নি। তার অনুসারীদেরও বলেননি তার মূর্তি বানিয়ে পূজো করতে। ধারণা করা হয় বুদ্ধের মৃত্যুর প্রায় কয়েকশ বছর পর থেকেই বৌদ্ধ ধর্মে এই কুপ্রথা চালু হয়। তাই আমার প্রিয় বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী ভাই বোনদের বিনীতভাবে অনুরোধ করছি, মূর্তি পূজা সহ অন্যান্য জঘন্য কাজ (যেমন, মদপান, ব্যভিচার) থেকে বিরত থাকার জন্য। বৌদ্ধ দর্শন বুদ্ধ মূর্তি বানিয়ে প্রতিষ্ঠা করা সম্ভবপর নয়। তাই এই অহেতুক কাজ থেকে নিজেদের বিরত রাখুন।
তথ্যসূত্রঃ
God in Buddhism
en.wikipedia.org/wiki/Buddhism
en.wikipedia.org/wiki/Sramana
en.wikipedia.org/wiki/Gautama_Buddha
বুদ্ধ পূর্ণিমা : মহামানব বুদ্ধের জন্ম বোধি ও মহাপরিনির্বাণ লাভের তিথি
০৮ ই মে, ২০১২ সকাল ১০:২২
নাফাজি বলেছেন: আমি সাধারণত অন্য ধর্মাবলম্বী ভাই বোনদের সেই বিষয়ের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করি যেটা উভয় বিশ্বাসের মধ্যেই সাধারণভাবে গ্রহণযোগ্য। মানা না মানা তো মানুষের ব্যক্তিগত ব্যাপার।
২| ০৭ ই মে, ২০১২ রাত ১০:১৫
টুন্টু কুমার নাথ বলেছেন: ভাইয়া আপনি নিজেই পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ-কালাম পড়েন তো?
০৮ ই মে, ২০১২ সকাল ১০:১৭
নাফাজি বলেছেন: জ্বী ভাই, আমি পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় করার চেষ্টা করি এবং গত চার বছর ধরে যাকাতও দিয়ে আসছি।
৩| ০৭ ই মে, ২০১২ রাত ১০:৪৬
কাল্পনিক রাহুল বলেছেন: আমার জানা মতে সম্রাট অশোক এই মুর্তিপূজা শুরু করে । আমি বুড্ডিস্ট ফেমিলিতে জন্ম নিলেও আমি মটেও এই ধর্মে বিশ্বাসী না । দার্শনিক হিসেবে বুদ্বের বানির কোন জুড়ি নায় । কিন্তু ধর্ম হিসেবে আমার কাছে অসম্পূর্ন মনে হয় ।
০৮ ই মে, ২০১২ সকাল ১০:২৩
নাফাজি বলেছেন: আপনার সুচিন্তিত মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
৪| ১০ ই মে, ২০১২ সকাল ৯:০০
আবদুল্লাহ্ আল মামুন বলেছেন: আমি রাহুল ভাইএর সাথে একমত। আমি একজন বৌদ্ধ ভিক্ষু এর সাথে কথা বলেছিলাম, উনি খুবই জ্ঞানী এবং অনেক কিছু সম্পর্কে অবগত। উনি বানীগুলোকে দার্শনিক দিক দিয়ে প্রাধান্য দিয়েছেন।
যাইহোক, ধন্যবাদ অনেক, পোস্টটি পড়ে ভালো লাগলো।
১০ ই মে, ২০১২ বিকাল ৪:৩০
নাফাজি বলেছেন: ধন্যবাদ মামুন ভাই, আপনার মন্তব্যের জন্য। আর oDesk এ আপনার অর্জনের জন্য আপনাকে অসংখ্য অভিনন্দন।
৫| ১৭ ই মে, ২০১২ সকাল ১১:৫৯
এস এইচ খান বলেছেন: সহমত। পোস্টে +
১৭ ই মে, ২০১২ দুপুর ২:৫১
নাফাজি বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে...
©somewhere in net ltd.
১|
০৭ ই মে, ২০১২ রাত ৯:৫৭
কর্ন বলেছেন: আদর্শ: ইসলাম
তাই আমার প্রিয় বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী ভাই বোনদের বিনীতভাবে অনুরোধ করছি, মূর্তি পূজা সহ অন্যান্য জঘন্য কাজ (যেমন, মদপান, ব্যভিচার) থেকে বিরত থাকার জন্য। বৌদ্ধ দর্শন বুদ্ধ মূর্তি বানিয়ে প্রতিষ্ঠা করা সম্ভবপর নয়। তাই এই অহেতুক কাজ থেকে নিজেদের বিরত রাখুন।
আপনার বরং বলা উচিত ছিলো যেহেতু বৌদ্ধ ধর্মে কোনো স্রষ্টা নাই , তাই সকল মরা খেকো বৌদ্ধ ভাই বেরাদার রা ইসলামের সুশীতল ছায়ায় প্রবেশ করুন ।