নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ভালবাসি দেশমাতাকে। শিক্ষাব্যবস্থাকে বদলে দেয়ার স্বপ্ন অন্তরে লালন করি। বিভিন্ন ধরণের বই পড়তে পছন্দ করি। আর দশজন সাধারণ মানুষের মতোই বিশেষণ হীন। আমার ব্লগে আপনাকে সাদর সম্ভাষণ।

নাফিজ মেহরাব

জলের উপর পানি না, পানির উপর জল

নাফিজ মেহরাব › বিস্তারিত পোস্টঃ

শাহরুখ খানের ঢাকার অনুষ্ঠান এবং আমাদের চেতনাবোধ।

২৯ শে জুন, ২০১৫ রাত ২:০৪

২০১০ সালের দিকে আমাদের দেশে এসেছিলেন বলিউডের কিং খান খ্যাত শাহরুখ খান। নাচে গানে মাত করে দিয়েছেন আমাদের বাংলাদেশের সবাইকে। আমি তখন অনুষ্ঠানটি দেখিনি বা দেখার আগ্রহ পাইনি। গতরাতে সেহেরী খেয়ে ঘুমাতে যাওয়ার আগে ইউটিউব ঘাটতে চলে আসলো শাহরুখ খানের বাংলাদেশ সফর। হাতে করার মত কাজ ছিল না। তাই আগ্রহ নিয়ে কিং খানের অনুষ্ঠান দেখতে লাগলাম।

আমার মতে অনুষ্ঠানটি ছিলো আমাদের বাংগালী চেতনাবোধের উপর চরম এক আঘাত। আমাদের মিডিয়া যে ভারতমুখী হয়ে পড়েছিলো শাহরুখ খান এসে যেন তাই আবার প্রমাণ করে গেলেন। আমাদেরর দেশের ললনারা শাহরুখের মুখে চুমু একে দিতে যেন চাতকের মত অপেক্ষায় ছিলেন। কিন্তু কে যেন শাহরুখ খানের মুখে চুমু দেবার সাথে সাথেই তিনি তা টিস্যু দিয়ে মুছে ফেললেন, সেদিকে কেউ নজর দিলেন না। রাশিয়ান এক নাচিয়ে(প্রায় নগ্ন) স্টেজে তুলে দিয়ে দিয়ে আমাদের দেশের ছেলেদের সাথে নাচালেন। রাশিয়ান নাচিয়ে ভ্যালোডি না কি যেন নাম তার নাচ তো আমাদের যাত্রাপালা অপেক্ষা কোন অংশে কম অশ্লীল নয়। এই নগ্ন নাচ যখন দেখতে আমাদের আপত্তি নেই তাহলে আমাদের যাত্রাপালার নাচ দেখতে আপত্তি কি?আমাদের দেশের লোকজনকেও দেখলাম কিং খানকে খুশি করার জন্য উঠেপড়ে লেগেছে। ম্যা হিন্দি জানতাহু বলে অনেককেই চেচাতে দেখলাম। আমারা যে ভাষার জন্য রাজপথ রক্তে রঞ্জিত করেছি সেই ভাষার জন্য কাউকে বড়াই করতে দেখলাম না অথচ আমরা ভাংগা গলায় হিন্দি বলে নিজেকে কেউকেটা গোছের কেউ মনে করি। আরেকজনকে বলতে দেখলাম আই হেইট হিন্দি। এটা কোন ধরণের আচরণ! একজন অতিথিকে ডেকে এনে আমরা তার ভাষা কে অপমান করলাম? যে জাতি ভাষার জন্য রক্ত দেয় সেই জাতি কিভাবে অন্য আরেকটা ভাষা কে অপমান করে আমার বুঝে আসে না।


শাহরুখ খান কিভাবে বাংলাদেশে এসে হিন্দিতে কথা বলে? তিনি কি ধরেই নিয়েছেন বাংলাদেশের সবাই হিন্দি জানে? আমি মনে করি এতে আমাদের চেতনায় বিশাল ধাক্কা খেয়েছে। এটা যদি বাংলাদেশ না হয়ে লন্ডন কিংবা আমেরিকা হতো তাহলে কি শাহরুখ হিন্দিতে কথা বলবার সাহস দেখতে পারতো? তার উচিত ছিল আমাদের চেতনার প্রতি সম্মান জানিয়ে পুরো অনুষ্ঠান ইংরেজিতে কথা বলা। অবশ্য আমরাই যদি বেহায়ার মত নিজেদের বিলিয়ে দেই করি তার কি দোষ!

শাহরুখ খান আসার সময় চেতনাবাদীদের অস্তিত্ব খুজে পাওয়া যায় না অথচ ফেসবুকে নাঈলা নাইমের ছবি দেখে তাদের চেতনা বোধ ফুসলে ওঠে। আমরা দেশের সবার সামনে বিকিনি পড়িয়ে নাচিয়েদের সাথে নাচ যদি দেখতে পারি তাহলে নাঈলা নাইমের ছবি দেখতে দোষ কি? তখন বলে উঠি আমাদের কালচারে এটা নাই। কিন্তু শাহরুখ যেটা করে গেলো তা কি আমাদের কালচারে আছে?



মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৯ শে জুন, ২০১৫ রাত ২:২৪

বালক বন্ধু বলেছেন: পোস্টির জন্য ধন্যবাদ।
আপনার পোস্টটি পড়ে সেই সময়ের সামুর কয়েকটা পোস্টের কথা মনে পড়ে গেল। আমি তখন সামুতে নিয়মিত। ফেসবুকে যতটা না বসি তার চাইতে বেশী সামুতে।
সেই সময় আসলেন শাহরুখ খান। তার অনুষ্ঠানের পর এক ভদ্র মেয়ে পোস্ট দিয়েছিল এক নারী মঞ্চে উঠে ঠিক ভাবে হিন্দি বলতে পারেনি দেখে নাকি দেশের ইজ্জত গিয়েছে! পরে অবশ্য তার পোস্টে যে পরিমানে মাইনাস পড়েছিল তাও একটা ইতিহাস হয়ে রবে সামুনর ব্লগে।
এই ধরনের কত চেতনা আমাদের দেশে আছে তার কি হিসেব আছে! একবার আমার বন্ধু খুব খুশী হয়ে বলেছিল বাংলাদেশ ভারতের অংশ হয়ে গেলে ভাল হবে। ভলিউডের নায়িকাদের দেখতে যেতে পারবে সহজে। এটা ছিল ২০০৮ এর ঘটনা। ২০১২ সালে ফেসবুকে একটা বড় গ্রুপ আবিষ্কার করলাম যারা এর পক্ষে আছে এবং সেখানে পক্ষের লোক দেখে মাথা খারাপ হওয়ার মত অবস্থা।

দুইটা ভিন্ন বিষয় দিয়ে উদাহরণ দিলাম যাতে করে বুঝা যায় আমাদের দেশের অবস্থাটা কোন দিকে যাচ্ছে। আমরা উপর দিয়ে অনেক কিছুই দেখার সুযোগ পাইনা। কিন্তু ভিতরে ভিতরে পরিস্থিতি অনেকটাই বদলে যাচ্ছে!

২৯ শে জুন, ২০১৫ রাত ২:৫৭

নাফিজ মেহরাব বলেছেন: আপনার কমেন্টের জন্য ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.