নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি নাহিদ পারভেজ নয়ন।

নাহিদ পারভেজ নয়ন

যা মনে আসে তাই লিখি।সব লেখা পড়ার যোগ্য নয় তবুও লিখি।

নাহিদ পারভেজ নয়ন › বিস্তারিত পোস্টঃ

হরতাল চাই

০৩ রা মার্চ, ২০১৫ দুপুর ১:৫৫

আমার হরতাল সিরিজের ২য় গল্প

-হ্যালো,কেমন আছেন?

ভার্সিটির পাশে ছোট এক ঝুপড়ীতে বসে চা খাচ্ছিলাম।
হঠাত কেউ এসে জিজ্ঞাস করল।
আমি মুখ তুলে তাকালাম,তাকিয়ে অনেক টাই অবাক হলাম এতো আমাদের নতুন ভাড়াটিয়ার মেয়ে।
এও এখানে পড়ে।
আমি চা টেবিলে রেখে উত্তর দিলাম
-হাই,আমি ভালই আছি আপনি?
-আমিও ভাল।

মেয়েটার কথা শুনে মনে হল না যে ভাল আছে।আমার মনে হচ্ছে কোন প্রব্লেম এ পরেছে।

-কোন সমস্যা?
-হুম,মানে কোন রিকশা যাচ্ছেনা বাসার দিকে!

যাক বাচা গেল, রিকশা ঠিক করে দিতে হবে।বড় কোন সমস্যা নয়। এই মেয়ের সাথে প্রথম দিন পরিচয় হয়ে ভুল করেছিলাম।
২য় দিন সিরিতে দেখা হয়ে গেল।দেখলাম মেয়েটা খুব ব্যাস্ত।আমি বললাম
-কি করছেন?
ও বলল
-ব্যাগ তুলছি!
-কোন হেল্প করতে পারি
-সত্যি করবেন,?
-হুম,বলুন কি করতে হবে!
-নিচে দুটো ব্যাগ আছে, একটু নিয়ে আসুন না প্লিজ।

প্লিজ, সুন্দরি মেয়েরা প্লিজ বললে, ওই কাজ করতেই হয়।আমিও ইম্প্রেস করার জন্য বলে ফেললাম
-ওকে
-ধন্যবাদ।

ব্যাগ তোলার জন্য তারাতারি নিচে নামলাম।নিচে নেমে দেখি বিশাল দুটো সুটকেস। এত ওজনের কিছু আমি জিবনেও তুলনি।এই মেয়ে আমাকে আগে বলবেনা, যে ব্যাগ নয় এগুলা সুটকেস।মেয়েটার উপর খুব রাগ হচ্ছে।অনেক ক্ষন ধরে মেয়ে মেয়ে করছি, মেয়েটার একটা সুন্দর নাম আছে,আর নাম টা হল মুনতাহিনা।ছোট করে মুনা।

আমি অনেক কষ্টে সুটকেস দুইটা ওদের গেট পর্যস্ত দিয়ে আসলাম।
ওখানে দাঁড়ালাম না যদি আরো কিছু করতে বলে!সেদিন শিক্ষা হয়ছিল যে সুন্দরি মেয়েরা খুব ভয়ংকর।এদের সাহায্য করতে নাই।যাক আজ মুনতাহেনা কে সাহায্য করা যাবে এটা অত কঠিন না।

আমি মুনার মুখের দিকে তাকিয়ে বললাম,
-মেইন রোডে গিয়েছিলেন?ওখানে রিকশা নাই?
-না,ওখানেও কোন রিকশা নেই!
রাস্তায় কোথায় যেন পেট্রল বোমা ফুটানো হইছে।তাই কেউ ওই দিকে যাচ্ছেনা।

আমার মনে ছিলই না আজ হরতাল,হরতালে ছেলেদের চলাচলের অসুবিধা না হলেও মেয়েদের হয়।

-ও,তো এখন কি করবেন?
-আপনি বাসায় যাবেন না?

এই মেয়ে কি আমার সাথে যেতে চায়, অবশ্য আমার সাথে যাওয়ার সুবিধাও আছে।প্রথমত সেফ যাওয়া যাবে আর ২য় ত ভাড়ার টাকাও বেচে যাবে।মেয়েটা হয়ত সত্যি বিপদে পরেছে।তাই উত্তর দিলাম

-হুম,একটু পরেই যাব।
-আমাকে একটু সাথে নিতে পারবেন।
-কিন্তু
-কেন,আপনার বাইকে মেয়ে তোলেন না নাকি!

আসল জায়গায় হাত।আর কিছু বলা যাবেনা, একে নিয়ে যেতেই হবে

-আচ্ছা ঠিক আছে।
এক কাপ চা খাবেন?

মুনা অনেক ভেবে উত্তর দিল
-হুম,এক কাপ খাওয়া যায়।

আমরা চা খেয়েই রওনা হলাম।
অচেনা কোন মেয়ে বাইকের পিছনে বসা টা আমার জন্য খুবই অসস্তিকর।

বাইকে উঠে প্রথম কথাটা মুনাই বলল
-আচ্ছা আপনাকে সেদিন বেশি কষ্ট দিয়ে ফেলেছিলাম,তাই না।
-কোনদিনের কথা বলছেন?
-যেদিন ব্যাগ উপরে নিয়ে আসলেন,অনেক ভারী ছিল ব্যাগ দুটো।কষ্ট পেয়েছিলেন কি

মনে হচ্ছে বলে ফেলি, না কষ্ট পাইনি মজা পাইছি।ভারিই তো ছিলনা ব্যাগের এত হালকা যে বার বার তুলতে ইচ্ছা করছিল।

-আরে না,অত কষ্ট পাইনি।
-তাহলে ঘরে না ঢুকে দরজায় ব্যাগ রেখে গেলেন কেন!
-না মানে,একটা জরুরী কাজ এসে গিয়েছিল তো তাই আর কি
-ও আচ্ছা।

কিছুক্ষন পর মুনা আবার বলল
-আজ আসছেন তো আমাদের বাসায়!
-কেন?
-ওমা,আপনি জানেন না?
-কি!কি জানব?
-আজ আপনাদের দাওয়াত আছে আমাদের বাসায়"
-ও।হুম যাব অবশ্যই।
-কি কি রান্না করবেন?
-গেলেই দেখতে পারবেন!
-আপনি করবেন সব?
-কেন, আপনার কি মনে হয় আমি রান্না করতে পারিনা।
-না তা নয়।

বাড়ির গলির সামনে এসে গেছি,এখানেই ওকে নামিয়ে দিতে হবে।এলাকায় যদি কেউ দেখে আমার বাইকে কোন মেয়ে তাহলে ইজ্জত নিয়ে টানাটানি হয়ে যাবে।আমি মুনাকে বললাম
-আচ্ছা এখান থেকে যেতে পারবেন বাসায়।
-কেন, আপনি আর যাবেন না।
-না মানে, একটু কাজ ছিল!
-কি কাজ?

আরে এত প্রশ্ন করছে কেন মেয়েটা,মনে হচ্ছে আমার কোন গার্জিয়ান।রাগ উঠছে,রাগ সামলে বললাম
-এক জনের সাথে দেখা করতে যাব।
মুনা কি যেন ভেবে বলল
-আচ্ছা যান।

কি ভাবল কে জানে।আমি অত চিন্তা না করেই চলে গেলাম।

রাত্রে যখন ওদের বাসায় গেলাম, মুনাকে দেখে তো আমি পুরাই অবাক মেয়েটা এত সুন্দর, আমি লক্ষ্যই করিনি এ কদিন।সুন্দরি জানতাম কিন্তু এত সুন্দর তা জানতাম না।


খেতে বসেই দেখি আমার পছন্দের জিনিষ গুলোই রান্না হয়েছে।আমি তো আবাকের উপর অবাক হচ্ছি।
মুনার মা বলল
-তোমাকে অনেক ধন্যবাদ বাবা!
-কেন আন্টি?
-আজ তুমি না থাকলে যে কিভাবে ও বাসায় আসত।হরতালের দিন বললাম ভার্সিটি যাস না।তাও গেল।
বলল পরিক্ষা আছে।
-হুম আন্টি, মুনাদের পরিক্ষা হচ্ছে।
-কাল যে কি হবে।
-আপনি টেনশন নিয়েন না।

টেনশন নেয়ার কোন কারন ছিলনা কারন আমার আম্মু পাশেই ছিল,সবার কষ্টের সাথি আমার আম্মু।আম্মু ফটাফট উপায় বের করে বলল
-আরে ভাবী,সমস্যা নেই।আমি আবির কে বলে দিচ্ছি।ও রোজ মুনা কে নিয়ে যাবে নিয়ে আসবে।

আমি কথাটা শুনে তব্দা লেগে গেলাম।বলে কি আমার মাদার।।
আমি নিজেই ঠিকমত ভার্সিটি যাইনা।আরেক জনকে কি ভাবে নিয়ে যাব।
-কি বলছ আম্মু।আমি নিজেই ঠিকমত যাইনা।আরেকজন কে কি করে নিয়ে যাব।
-কাল থেকে রোজ যাবি।
আম্মু মুনার দিকে তাকিয়ে
-মা,তুমি আবিরের নাম্বার নিয় নাও।সকালে কল করে জাগিয়ে তুলবে।ওর সাথেই যাবে আসবে।
-হুম আন্টি।

এটা কোন কথা হল।কাল থেকে ঘুম হারাম হয়ে যাবে।আমি মুনাকে কিছু বলতে যাব তখন মুনাই বলল
-দিন আপনার নাম্বার দিন?
-নাম্বার দিতে হবেনা,আমি ঠিক সময় আসব।

এবারেও বাধ সাধল আমার আম্মু,বলল
-দে,নাম্বার দে!
-হুম

নাম্বার দিয়ে চলে আসলাম বাসায়।একটু পর মোবাইল এ একটা কল আসল।আননোন নাম্বার,রিসিভ করেই বললাম
-হ্যালো,কে?
-আমি,
-আমি কে?
-মুনা

নাম্বার পেয়েই কল দিছে।কিছু ব্যাপার আছে।

-ও আপনি।
-ডিসট্রাব, করলাম না তো
-না,কিছু বলবেন?
-না,এমনি।এটা আমার নাম্বার।
-ও আচ্ছা।ঘুমিয়ে পড়ুন।
কাল পরিক্ষা আছে না।
-হুম।শুভ রাত্রি।


সকাল বেলা মুনার ফোনেই ঘুম ভাংল। ওকে নিয়ে ভার্সিটি গেলাম।
এভাবেই এক সপ্তাহ গেল।প্রথমে যদিও মুনাকে ভাল লাগত কিন্তু এই এক সপ্তাহে আমি ওর প্রতি বিরক্ত।একদিন অতিষ্ঠ হয়ে বলেই ফেললাম
-এখন হরতাল অত জোরালো হয় না।তুমি রিকশায় যাওয়া আসা কর।
-আপনার কি খুব অসুবিধা হচ্ছে?
-হুম
-ঠিক আছে।

তারপর দুই দিন মুনার কোন খবর পাইনি।কিন্তু ৩য় দিন ভার্সিটি থেকে যখন বের হব তখন দেখি ও একটা ছেলের সাথে রিকশায় যাচ্ছে আর হেসে হেসে কথা বলছে।খুব খারাপ লাগছিল এটা দেখে।জানিনা কেন,কিন্তু খারাপ লাগছিল।

বাড়ি ফিরে রাত্রে ঘুমাতেই পারলাম না। ভাবছিলাম কি হত যদি ও আমার বাইকেই যাওয়া আসি করত।
অনেক কষ্টে রাত টা পার করলাম।
সকালে মুনার ফোন ট্রাই করলাম,রিং হল কিন্তু কেউ ধরলনা।মনে হচ্ছে আমার নাম্বার দেখেই ও ধরেনি।
আবার কল দিলাম।এবার রিসিভ হল,ওপাশ থেকে মুনা বলল

-কি খবর, আবির সাহেব,হঠাত
-না,এমনি।তুমি কেমন আছ?
-কেমন আছি জানার জন্য কি ফোন দিছেন?

মেয়েটা এত বেশি বুঝে কেন।
-না মানে,তুমি আজ ভার্সিটি যাবেনা।
-কেন নিয়ে যাবেন!
-যদি বলি হ্যা।
-আরেক জন পেয়ে গেছি যে নিয়ে যাবে আমাকে
-ছেলেটা কে
-জলছেন নাকি!
-হয়ত,যদি পুড়েও যাই তুমি কি করবে!
-পানি ঢালব।
হা হা হা।মুনার হাসি শুরু।সেই হাসি কোথায় থামবে কে জানে।আমি মন থেকেই চাচ্ছি যেন হাসি টা না থামে।

-যাবে আমার সাথে,এ মনে হরতাল খুব গুরুতর,মনে অনেক ককটেল ফাটছে।
-আমি ৫ মিনিটের মধ্য নিচে নামছি,যদি নিয়ে যেতে চান তবে নামুন
-ওকে

৫ মিনিট যথেষ্ট আমার জন্য।

আর পিছে ফিরে তাকাতে হয়নি।
প্রতিদিন মুনা আমার সাথেই যাচ্ছে।
আরো হরতাল চাই,আমার প্রেম টা মজবুত না হওয়া পর্যন্ত। হরতালের শেষ হলে হয়ত ওর মা ওকে রিকশায় যেতে বলবে তাই হরতাল চাই।
বেশি করে হরতাল চাই।





মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৩ রা মার্চ, ২০১৫ দুপুর ২:২৩

বাড্ডা ঢাকা বলেছেন: হরতাল চাই হরতাল হরতাল প্রেমেও লাগুগ হরতাল !:#P :-B

০৪ ঠা মার্চ, ২০১৫ রাত ১২:২৪

নাহিদ পারভেজ নয়ন বলেছেন: প্রেমে লেগে গেছে অলরেডি

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.