![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
পার্কের এই দিকটা কিছুটা শুনশান,এ দিকের জায়গাটাকে একটু ভুতুরে টাইপ ও বলা যায়, তাই অন্য মানুষেরা এপাশে কম আসে, তবে আমি আসি।
জায়গাটার একটা ভাল ব্যাপার হচ্ছে পার্ক টার এক কোনায় জায়গাটা আর এখান থেকে পার্কটা সম্পূর্ণ দেখা যায়।
বিকালের সময় টাতে পার্কে আসি,এ সময় পার্কের অন্য দিকে ভিড় থাকে, তাই এদিক টায় এসে বসি।
পার্কে আসলে নানা ধরনের মানুষের সাথে পরিচয় হয়।তবে এখন আর কারো সাথে কথা বলতে ভাল লাগেনা।তাই সব সময় একা একাই বসে থাকি।
লোক গুলো অদ্ভুত ভাবে আমাকে দেখে, একা একা এই নির্জনে বসে থাকি বলে।এই জায়গাটা আসমানীর পছন্দের ছিল,ওই এখানে আমাকে নিয়ে আসত। আর বলত, এ পাশে মানুষ কম আসে,আমাদের কেউ ডিস্ট্রাব করবে না।হুম,সত্যি কেউ ডিস্ট্রাব করত না।
এখন আর আসমানী আসেনা,আমি একাই আসি।কিছুক্ষন বসে থেকে আবার চলে যাই।
কয়েক দিন আগে আসমানী মারা গেছে,তাই ও আর আমার সাথে আসেনা।
ওর চেহারাটাও এখন আর মনে পরেনা।খুব তাড়াতাড়ি সব ভুলে যাচ্ছি।আর ভোলা দরকার ও, নতুন কাওকে আবার পটাতে হবে।
আজ আসতে একটু দেরী হয়ে গেছে,এখানে আসলে আসমানীর কথা মনে পড়ে , তাই নিয়ম করে এখানে আসি।আজ পার্কে এসে এ জায়গাটার দিকে তাকাতেই দেখি আসমানীর জায়গায় একটা মেয়ে বসে আছে।সাদা জামা পড়া।দূর থেকে আসমানীর মতই লাগছে , ইদানীং সব মেয়েকেই আসমানীর মতন লাগে।ওর চেহারাটা ঠিক ভাবে মনে রাখতে পারিনা।আরেকটু কাছে যখন আসলাম,তখন মনে হচ্ছিল এটাই আসমানী।
আমি হাটতে হাটতে মেয়েটার সামনে চলে আসলাম।মেয়েটা মাথা নিচু করে বসে আছে।এক দম আসমানীর মতন করে।
আমি মেয়েটাকে ডাকলাম,
-শুনছেন।
মেয়েটা কোন কথা বলল না,শুধু মাথা তুলে তাকাল। আমি দেখে ভয় পেলাম,এ তো আসমানীই।না কোথাও ভুল হচ্ছে আমার,এটা কি করে সম্ভব। নাহ,আসমানীর চেহারাই তো আমার ঠিক ভাবে মনে নেই,এটা শুধু আমার কল্পনা।
আমি আবার বললাম,
-আপনার পাশে একটু বসা যাবে!
মেয়েটা এবারও কোন কথা বলল না,ব্রেঞ্চ টা থেকে উঠে গিয়ে সামনে দাড়িয়ে রইল।
আমি কি করব ভাবতে পারছিনা।খুব অদ্ভুত লাগছে সব।
মেয়েটা একটু পর আকাশের দিকে তাকাল।আমি বসতেও পারছিলাম না।তাই আমিও দাড়িয়ে রইলাম।
মেয়েটা এক যোগে তাকিয়ে আছে আকাশের দিকে, না জানি কি দেখছে।
আমিও আকাশের দিকে তাকালাম,সামান্য কিছু মেঘ ছাড়া আর কিছুই দেখতে পারলাম না।
চোখ নামিয়ে যখন মেয়েটার দিকে তাকালাম,তখন দেখি মেয়েটা আমার দিকেই দেখছে,আমি তাকাতেই মেয়েটা সুন্দর একটা হাসি দিল।
এই মেয়ের হাসির মানে বোঝার ক্ষমতা আমার নেই।
মেয়েটা মুখ ফিরিয়ে নিয়ে আবার আকাশের দিকে দেখা শুরু করল।আমি বলেই ফেললাম,
-কি দেখছেন?
মেয়েটা হয়ত আমার কথা শুনেই নি,তাই কোন জবাব ও দিলনা।
আমি মেয়েটার একটু কাছে গিয়ে বললাম,
-কি দেখছেন?
মেয়েটা মুখ ঘুরিয়ে আমার দিকে তাকাল।বাতাসে কারণে মেয়েটার চুল গুলো মেয়েটার মুখে গিয়ে পড়ছিল।মেয়েটা নিজ হাতে সরিয়ে দিয়ে বলল,
-আপনাকে।
আমি মেয়েটার কথা শুনে একটু ধাক্কাই খেলাম।নিজেকে সামলে নিয়ে বললাম,
-আমাকে!!
-হুম।
-কিভাবে,আপনি তো আকাশ দেখছিলেন?
মেয়েটা আমার কথা শুনে হেসে ফেলল,কিন্তু আমি মোটেও জোক্স বলিনি।মেয়েটা হাসতেই হাসতেই বলল,
-একটু আগে আপনাকে আকাশে দেখা যাচ্ছিল।তাই দেখছিলাম।
মেয়েটাকে খুব অদ্ভুত লাগছে,অন্য কেউ এ কথাটা বললে, পাগল ভাবতাম।হেসে উড়িয়ে দিতাম।কিন্তু মেয়েটার বেলায় তা পারছিনা।
মেয়েটা আবার আকাশের দিকে তাকাল,আমি মেয়েটার চোখের দিকে তাকালাম,অদ্ভুত সুন্দর চোখ।কিন্তু সবচেয়ে অদ্ভুত,মেয়েটার চোখে আমাকে দেখা যাচ্ছে,কিন্তু মেয়েটা তো আকাশের দিকেই তাকিয়ে আছে।
আমি সাথে সাথেই আকাশের দিকে তাকালাম, কই আমার ছবি তো নেই আকাশে।
আমি আকাশ থেকে চোখ নামিয়ে মেয়েটার দিকে তাকাতেই দেখি মেয়েটা আমার দিকে দেখছে।
আমার ভয় লাগছিল,আমি পিছিয়ে পড়লাম এক পা।
চারপাশে তাকিয়ে দেখলাম কেউ নেই কিন্তু এটা কিভাবে সম্ভব একটু আগেই পার্ক টাতে মানুষের ভিড় ছিল,এক মিনিটে খালি হয়ে গেল কিভাবে।
আমি ঘুরে আবার মেয়েটার দিকে তাকালাম,মেয়েটা হাসছে,শব্দ করে হাসছে।এখনো বাতাস বইছে কিন্তু এবার সামানের দিকে না পিছনের দিকে বইছে।মেয়েটার চুল গুলো পিছনে উড়ছে।
মেয়েটা এবার আর চুল ঠিক করার চেষ্টা করলা না,কিন্তু আমি হাটার চেষ্টা করতে লাগলাম।কিন্তু পা উঠানোর শক্তিও আমার মধ্য বিদ্যমান ছিলনা।
আমি যখন ওই স্থান ছেড়ে যাওয়ার ব্যার্থ চেষ্টা করছিলাম,
তখন খুব রিন রিনে গলায় মেয়েটা বলে উঠল,
-নয়ন,আমার চোখের দিকে তাকাও!
আমি কথাটা শুনে মেয়েটার দিকে তাকালাম।মেয়েটা আবার বলল,
-চোখের দিকে তাকাও।
আমি মেয়েটার চোখের দিকে তাকাতেই চমকে গেলাম।
মেয়েটার চোখ সাদা হয়ে আছে।তবুও কি সুন্দর লাগছে চোখ দুটা।
আমি আমার মন কে বোঝাচ্ছিলাম,ওদিকে না দেখার জন্য।কিন্তু তবু আমার সব আগ্রহর কেন্দ্রবিন্দু ছিল ওই দুই চোখের উপর।
আমি আবার তাকালাম চোখ দুটোতে,এখন ওই দুই চোখে আসমানীকে দেখ যাচ্ছে।আসমানীর চেহারা টা মনে পড়ে গেছে।
আসমানীই আমার সামনেই দাড়িয়ে আছে,কিন্তু কি ভাবে সম্ভব। ওকে নিজ হাতে আমি খুন করে কবর দিয়েছি,ও কিভাবে বেচে ফিরতে পারে।ওর কবর আমার বাসার পিছনের জংগল টাতে।আজ ও সকালে দেখে এসেছি।
এসব চিন্তার মাঝখানে আসমানী বলল,
-আমাকে কেন মেরে ছিলে, নয়ন?
আমি তো তোমাকে অনেক ভালবাসতাম।কথা দিয়েছিলাম কখনো ছেড়ে যাবনা।
আসমানী কাঁদতে কাঁদতেই কথা গুলো বলল।
আমি খুব ভয় পেয়ে গেলাম,কি হচ্ছে আমার সাথে।আমি চলে যাওয়ার জন্য খুব চেষ্টা করতে লাগলাম,কিন্তু এক পাও নড়াতে পারছিলাম না।
আসমানী আবার বলে উঠল,
-তুমি না কথা দিয়ে ছিলে আমাকে ছেড়ে কখনো কোথাও যাবেনা এখন কোথায় যাচ্ছ।
আসমানীর গলার সর চেঞ্জ হয়ে গেছে,আগের চাইতে মোটা হয়ে গেছে।ওর চেহারা পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে,ওকে মারার সময় যে ভাবে ওর শরীর কুচি কুচি করে কেটেছিলাম, সে রকম হয়ে যাচ্ছে ওর শরীর টা।ওর মুখটা রক্তে ভরে গেছে।আমি ওর আগেও অনেক মেয়েকে মেরেছি কিন্তু ওকে সত্যি ভালবেসে ফেলেছিলাম।কিন্তু ওই এক মাত্র যে ফিরে এসেছে।মেয়েদের মেরে ফেলা আমার নেশা।তবে ওর কথা আলাদা ছিল!
অন্য সব মেয়েদের মারার সময় ওরা চিতকার করে,বাচতে চায়।কিন্তু আসমানি শুধু বলেছিল,সে আমার কাছে আবার ফিরে আসবে,এবং এসেছে।
আসমানী কে ওয়াদা করেছিলাম, কখনো ছেড়ে যাবনা।তাই হয়ত আমাকে নিতে এসেছে।
ওকে দেখে খুব ভয় লাগছে।
আসমানী আমার খুব কাছে চলে এসেছে।তবে ওর চোখ দুটোর কোন পরিবর্তন হয়নি,কারণ ওর চোখ দুটোর কোন ক্ষতিই আমি করিনি।ওর চোখ দুটো আমার অনেক প্রিয় ছিল।
ওর চোখ দুটো খুব সুন্দর।
আমি এখন ওর চোখের দিকেই তাকিয়ে আছি।ও আমার কাছে এসে আমার হাতটা ধরল,মনে হচ্ছিল আমি মারা যাচ্ছি।ও আমাকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছে!
আমি কোন শব্দও করতে পাচ্ছি না। আমি ওর চোখ থেকে আমার চোখ কোন ভাবেই সরাতে পারছি না,ওর চোখের মাঝেই হারিয়ে যাচ্ছি।
পুনশ্চ:পার্কের এ দিকে এখন আর কেউ আসেনা।এখানে মাঝে একটা ছেলে আর একটা মেয়ে কে হাত ধরে বসে থাকতে দেখা যায়।
১৬ ই এপ্রিল, ২০১৫ রাত ২:২০
নাহিদ পারভেজ নয়ন বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ
২| ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৫ রাত ১২:৪৮
মনিরা সুলতানা বলেছেন: দারুন
১৬ ই এপ্রিল, ২০১৫ রাত ২:২১
নাহিদ পারভেজ নয়ন বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ
©somewhere in net ltd.
১|
১৬ ই এপ্রিল, ২০১৫ রাত ১২:৪৪
দিশেহারা রাজপুত্র বলেছেন: চমৎকার।