![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
-আপনি কি আমাকে দেখেছেন?
মেয়েটা প্রশ্ন টা করে আমার দিকে জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল।শুধু চোখ গুলো দেখা যাচ্ছে মেয়েটার কিন্তু তা দেখেই বোঝা যাচ্ছে এটা জিজ্ঞাসু দৃষ্টি। আমি কি বলব ভাবছি।মেয়েটা আবার বলল,
-দেখেন নি তো?
-না দেখিনি।
-তাহলে প্রেমে পড়লেন কিভাবে আমার?
মেয়েটা খুব কঠিন প্রশ্ন করছে।কি করে বলি যে আমি ওর চোখ দেখে প্রেমে পড়ে গেছি।এটা বলা যায় কিন্তু বেশি রোমান্টিক হয়ে যাবে ব্যাপারটা। আর কিছুটা ফ্লাটিং টাইপ ও হয়ে যাবে।
আমার চুপ করে থাকা দেখে মেয়েটা আবার বলল,
-বলেন কেন প্রেমে পড়ছেন?
-এমনি এমনি !
-এমনি এমনি কেউ কারো প্রেমে পড়ে?
-হুম,,পড়ে। যেমন আমি আপনার প্রেমে পড়েছি।
-ফালতু !
এ কথাটা বলেই মেয়েটা হাটা দিল।অন্য দিন হলে আমি পিছু পিছু যেতাম কিন্তু আজ আর পিছু পিছু যাবনা,ফালতু বলে গেছে। পিছে পিছে গেলে আবার কি না কি বিশেষন লাগিয়ে দিবে কে জানে??
মেয়েটার বাড়ি আমাদের এলাকা থেকে দু তিন এলাকা পরেই।বাড়ি ঘর সব চিনি।তাই হারানোর খুব একটা ভয় নেই।আর ওর কলেজ যেতে হলে আমাদের এলাকার উপর দিয়েই যেতে হয় তাই দেখাতো হবেই।মেয়েটা কিছুদূর গিয়ে রিকশা নিয়ে চলে গেল।
কিন্তু যেতে যেযেতে আমার মনে প্রশ্নের উদয় করে দিয়ে গেল। মেয়েটার প্রশ্নের ভাল কোন উত্তর আমার কাছে নেই।
কেন ওর প্রেমে পড়েছি??
মেয়েটার মুখ এখনো দেখিনি,প্রায় ছ মাস যাবত পিছনে ঘুরছি।
মেয়েটা বোরখা পড়ে আর হিযাব দিয়ে এমন ভাবে মুখ ঢাকে চোখের মনি ছাড়া আর কিছুই দেখা যায়না।অনেক ক্ষন যাবৎ মেয়ে মেয়ে করছি,, মেয়েটার একটা সুন্দর নাম ও আছে তা হল নুসরাত।
নুসরাত যে কতটা সুন্দর তা ওর চোখ প্রকাশ করে।ওর বাবা হাজী,,আর মেয়েকে খুব সুন্দর শিক্ষা দিয়েছেন।পর্দার ব্যাপারে ও খুব সিরিয়াস,এ জিনিষটা দেখে বেশি করে প্রেমে পড়ে গেছি ওর।
প্রেম বেড়েই চলছে কমছে না।
দুদিন ধরে কথা বলার চেষ্টা করছিলাম, আজ বলতে পেরেছি কিন্তু ও তো আমাকে ফালতু বলে চলে গেল।অবশ্য কোন ব্যাপার না,প্রেমের জন্য দু একবার ফালতু হওয়া যায়।
পরের দিন,আমি যথাস্থানে দাঁড়িয়ে ছিলাম।ও আসতেই আমাদের কথা বলা শুরু,
-আপনি আবার আসছেন?
-হুম,
-আমি কারো সাথে প্রেম করতে পারবনা?
-হুম,আমি জানি তো !
-তাহলে আবার কেন আসছেন?
-কালকের উত্তর দিতে !
-আচ্ছা,বলেন?
-আসলে আপনি বোরকা পড়েন তাই আপনার প্রেমে পড়ে গেছি
আমার কথা শুনে নুসরাত হাসল,তা বোঝা গেল ওর হাসির শব্দ শুনে।ও হাসি থামিয়ে বলল,
-আরো তো অনেক মেয়ে বোরকা পরে তাদের প্রেমেও পড়েন নাকি নিয়মিত?
-জানি নাতো,ভাবতে হবে।
-আচ্ছা, ভাবেন। আজ আসি।
-আচ্ছা।
-আরেক টা কথা, আমার পিছু পিছু আসবেন না।মানুষ দেখলে কি ভাববে আপনাকে?
-আচ্ছা,আর যাবনা।
আমাকে রেখে নুসরাত রিকশা নিয়ে চলে গেল।একটা কথা ভেবে ভাল লাগছে, আমি যে ওর পিছে পিছে যাই এটা ও লক্ষ্য করেছে।আর আমাকে কেউ খারাপ যেন না ভাবে তার ও চিন্তা করে ও।
কিছুদিন আমাদের কথা হল।কিন্তু নুসরাত কে বোঝার ক্ষমতা আমার ছিলনা।সেরকম ভাবে কিছুই বলেনা ও।শুধু বলে ও কারো সাথে প্রেম করতে পারবে না।ওর কাছে ওর পরিবার আগে। আমি ছাড়ার পাত্র ছিলাম না।রোজ ঘুরে ফিরে একি কথা বলতাম।কিন্তু আজ সকালে আমি ওর কলেজের সামনে নির্দিষ্ট জায়গায় দাড়িয়ে ছিলাম, নুসরাত নিজে এসে আমাকে বলল,
-আচ্ছা,সত্যি করে বলুন তো আমাকে কেন ভালবাসেন?
-তোমার চোখ দুটো দেখে !
-চোখ দেখেই কি সব হয়,আমি তো বিশ্রী ও হতে পারি।
-আমি জানি তুমি তা নও,,বিশ্রী হলেও আমার চলবে
আমি যে নুসরাত কে তুমি করে বলছি তা ও খেয়াল ই করেনি।
নুসরাত আমার কথাটা শুনে হাসল।হাসি থামিয়ে কিছুক্ষন চুপ করে থাকল।তারপর বলল,
-আচ্ছা,আমাকে দেখবেন?
-কেন?
-আজকে আমাকে ছেলে দেখতে আসবে,আর তার সামনে তো আমাকে মুখ দেখাতেই হবে।তাই আপনি চাইলে আপনিও দেখতে পারেন।
-না আমি তোমাকে দেখবনা।
-কেন?
-যদি তোমাকে দেখে আমার পছন্দ না হয় !
কথাটা শুনে নুসরাত কিছুই বলল না।আমি আবার বললাম,
-কেন তুমি বিয়ে করতে চাইছ না?
-জানিনা।আসলে না মনে হয়।
-কেন?
-আমি আমার চেহারা এখনো নিজের পরিবারের মানুষ ছাড়া কাওকে দেখাইনি।আর আমি চাইছিনা আমার সামী ছাড়া অন্য কারো সামনে তা দেখাতে।
-আচ্ছা,,আমি কথা দিলাম।তোমায় সামী ছাড়া কারো সামনে চেহারা দেখাতে হবেনা।
আমার কথাতে নুসরাত কি বুঝল কে জানে?
আর কিছু না বলে ও চলে গেল।আমি দাড়িয়ে দাড়িয়ে তা দেখলাম।
দুই,,
পাত্র হিসেবে আমি খুব খারাপ ছিলাম না।সদ্য এক টা সরকারী ব্যাংকে জয়েন করেছি,তাই পাত্র হিসেবে বাজারে একটু দাম ছিল আমার। যদিও ধর্ম কর্মের কাজ একটু কম করি।কিন্তু তবুও আমার বিশ্বাস ছিল নুসরাতের বাবা আমাকে পছন্দ করবেন।আর তিনি করেছেন।
মেয়ে দেখার সময় এলে আমি নিজে থেকেই না করে দিলাম, বলেছি মেয়ে যেরকম ই হোক কোন সমস্যা নেই।কথাটা শুনে নুসরাতের বাবা খুশি হয়েছেন।হয়ত পাত্রের এ কথা শুনে নুসরাত ও।
নুসরাত এখনো জানেনা, ওর পাত্র আমি।
মাকে গিয়ে দেখে আসতে বললাম।আমার মা আলাদা ভাবে নুসরাত কে দেখল,মায়ের মুখ দেখেই বুঝেছি মায়ের খুব পছন্দ হয়েছে।আর আমি জানতাম নুসরাত কে পছন্দ হবে।
মায়ের ইচ্ছা আর নুসরাতের বাবার মতামত থাকার কারণে আমাদের বিয়েটা ওই রাত্রেই হয়ে গেল।
ভাবছিলাম,পাত্র যদি আমি না হতাম,, যদি আমি রাস্তায় দাড়িয়ে থাকা ছেলেটা হতাম তবে কি নুসরাত আমাকে ভুলে যেত?
এটা নুসরাতের কাছ থেকে জেনে নিতে হবে।
নুসরাত ও রকম মেয়ে নয় যে পরিবার ত্যাগ করে অন্য কারো হাত ধরে চলে যাবে।এটা ও আমাকে অনেক বার বলেছে।এসব ভাবতে ভাবতে অনেক সময় পেড়িয়ে গেল।আমাদের বাসর নুসরাত দের বাসাতেই সাজানো হল।আমি ঘরে ঢোকার উদ্দেশ্য পা বাড়ালাম।আর ভাবতে লাগলাম নুসরাত যখন আমাকে দেখবে তখন ওর মুখের রিয়্যাকশন টা কেমন হবে।
আর এটা ভেবেও ভাল লাগছে যে আমি ওকে দেওয়া কথা রেখেছি।আমি তো এখন ওর সামী আমার সামনে ওর কোন লজ্জাও থাকবেনা।
আমি ঘরে ঢুকতেই,নুসরাত এসে আমার পা ধরে সালাম করল।আমি ওকে উপরে তুলে ওর মুখ টা দেখলাম,,আর বললাম যা আশা করেছি তার চাইতে অনেক বেশি কিছু পেয়েছে।
চোখের মায়া বড় মায়া,নুসরাতের মায়াবী চোখেই আমি আটকে গেছিলাম বহু আগে।চোখ কখনো ঠকায় না।
কিন্তু সারপ্রাইজ আমার জন্য অপেক্ষা করছিল।আমি ভেবেছি নুসরাত আমাকে দেখে অবাক হবে কিন্তু না আমি ভুল ছিলাম।
আমি জিজ্ঞেস করলাম,
-তুমি অবাক হওনি?
-কেন?
-আমি যে তাই !
-না তো,,, আমি তো জানতাম আপনি !
-তাহলে সকালে কেন বললে?
-আপনাকে পরিক্ষা করলাম,
-কেমন পরিক্ষা?
-যদি আমাকে দেখতে চাইতেন,তবে বুঝতাম আপনার বিশ্বাস নাই আমার চোখের প্রতি।তখন আর আপনাকে বিয়ে করতে রাজি হতাম না।
যত টা বোকা ভেবেছিলাম নুসরাত কে, ও তত টা বোকা নয় অধিক চালাক হয়ত আমার থেকেও বেশি।
-নাহিদ পারভেজ নয়ন
২৮ শে জুন, ২০১৫ দুপুর ১:৩৯
নাহিদ পারভেজ নয়ন বলেছেন: ধন্যবাদ
২| ২৬ শে জুন, ২০১৫ বিকাল ৩:৩৮
তানভীরএফওয়ান বলেছেন: The man who find a religious wife is a king without kingdom -- Imam Gazzale (Rah
৩| ২৬ শে জুন, ২০১৫ রাত ১০:৫৫
আরণ্যক রাখাল বলেছেন: অপু তানভীর এই ধরনের নামের প্রথম গল্প লিখেছিলেন| ডুয়ার্সে দেখা মেয়েটার সাথে আমার সম্ভাব্য প্রেম কাহিনী| তারপর থেকে এধরনের নামের অনেক গল্প পড়লাম| নামের ব্যাপারে তো অন্তত একটু ইউনিক হোন! গল্পের কথা নাই বললাম| ধার্মিক গল্প!
২৮ শে জুন, ২০১৫ দুপুর ১:৩৯
নাহিদ পারভেজ নয়ন বলেছেন: আমি প্পড়িনি,, ধন্যবাদ
৪| ২৭ শে জুন, ২০১৫ রাত ২:৪১
হাসান স্কাই৯৯৯ বলেছেন: খুব অসাধারন গল্প, পড়ে ভাল লেগেছে
সামী/স্বামী--- পেয়েছে/পেয়েছি---গেছিলাম/গিয়েছিলাম----------মনে হয় বানান গুলো টাইপিং এ ভুল হয়েছে
©somewhere in net ltd.
১|
২৬ শে জুন, ২০১৫ দুপুর ২:৩৬
আশিক ইলাহি বলেছেন: ভালো লেখা ভাইয়া।