নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি নাহিদ পারভেজ নয়ন।

নাহিদ পারভেজ নয়ন

যা মনে আসে তাই লিখি।সব লেখা পড়ার যোগ্য নয় তবুও লিখি।

নাহিদ পারভেজ নয়ন › বিস্তারিত পোস্টঃ

জ্যোৎস্না কন্যা

২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সকাল ১১:৩৬


-তিন হাজার
.
শিরীন কখনোই চিৎকার করে কথা বলেনা কিন্তু তিন হাজার কথা টা চিৎকার করেই বলল।
শিরীনের চিৎকার শুনে আমি অবাক হলাম,,এত সাধারণ বিষয়ে চিৎকার করার কি আছে?
কত কঠিন কঠিন বিষয়ে ও চুপ করে ঠান্ডা মাথায় থাকে আর এই সামান্য তেই চিৎকার করছে।
.
ও আবার বলল,
-তিন হাজার??
এবার আগের চাইতে একটু নরম গলায়।
.
আমি হুম বলে,শাড়ির রিসিভ টা শিরীনের দিকে এগিয়ে দিলাম।ও আমার হাত থেকে ক্ষপ করে রিসিভের কাগজ টা কেড়ে নিল।তারপর উল্টে পাল্টে ভালভাবে দেখতে লাগল।
.
আমি বললাম,
-কি হয়েছে,এমন করতেছ কেন?
-এটা দু হাজার টাকার শাড়ি?
-মানে?
-মানে তুমি ঠকছ।
-আরে না,,
-হুম,,,তোমাক এই শাড়ি কে আনতে বলছিল?
-তুমি?সারাদিন ঘ্যান ঘ্যান কর, বল কিছু দেইনা?
-তাই বলে কি আমি শাড়ি চাইছি?
-তাহলে কি চাইছ?
.
শিরীন কিছু বলল না,চুপ করে রইল।
শিরীন আরেক অদ্ভুত মেয়ে,দুই সপ্তাহ থেকে ঘ্যানর ঘ্যানর করে ওকে বিয়ের পর থেকে নাকি কিছুই দেইনা।রোজ সপ্তাহে একটা করে ফুলের তোড়া দেই, সেটা বেমালুম ভুলে গেল মেয়েটা।
.
মিথ্যা অপবাদ মাথায় নিয়ে শাড়ি কিনে আনলাম সেটাও দোষের।
.
-যাও শাড়ি ফেরত দিয়ে আসো,আমি নিজে যাব কিনতে।
-কিনতেই যাবে,তো এত ঘ্যানর ঘ্যানর করছিলা কেন?
-এমনি,যাও ফেরত দিয়ে আস।
-নেবেনা ফেরত,
-কেন?
-যেই দোকান থেকে নিয়ে আসছি ওরা বিক্রিত জিনিষ ফেরত নেয়না।
.
শিরীন আমার কথা শুনে কিছুক্ষন চুপ করে থেকে আবার বলল,
-তুমি আমাকে নিয়ে যাইতে পারো নাই?
-না,,
-কেন?
-পরে আবার ঘ্যান ঘ্যান করতা আমি নিজে তোমাকে কিছুই দেইনা।
-উফ,,এত বড় ভুল কিভাবে কর,
-একবারই তো হইছে,,
.
আমি শিরীনের কথা শুনে অদ্ভুত থেকে অদ্ভুতর হচ্ছি।যার জন্য চুরি করলাম,সেই বলে চোর।চুরি করতে না হয় একটু ভুলই হইছে।
.
আমি বললাম,
-এত শখ করে শাড়িট আনলাম,কই তুমি খুশি হবে,তা না আমার উপর রাগারাগি করতেছ।
.
শিরীন আবার রাগ হয়ে বলল,
-খুশি করার কাজ করছ,এক হাজার টাকা লস করে দিয়াসছো।
-ওকে,,করছি করছি।ভাল লাগছে তাই নিয়াসছি।ভাবছি তোমাকে সুন্দর লাগবে।
থাকো আর আসব না বাড়িতে। থাকো তুমি একলা।
সারাদিন চিল্লা চিল্লি।
.
এই বলেই বাড়ি থেকে বের হয়ে এলাম।
যাব কোথায় জানিনা,ছাদে যাওয়া যেতে পারে।
বাইরে যাওয়া বৃথা, পকেটে মোবাইল টা ছাড়া আর কিছু নেই।টাকা ছাড়া বাইরে গিয়ে লাভ ও নেই।
উঠে গেলাম ছাদে,ঘন্টা খানেকের মধ্য সন্ধ্যা হবে।তখন শিরীন খোজা খুজি শুরু করবে।
আমাকে কোথাও খুজে পাবেনা,,কারণ ভর সন্ধ্যায় ও কখনো ছাদে খুঁজতে আসবেনা।তাই নিশ্চিন্তে থাকা যায়।
.
ঘন্টা খানেক লাগল না,আধাঘন্টার মধ্যই আমার ফোন বাজতে শুরু করল।
না ধরব না ফোন,,যেমন শিরীনের ব্যাবহার সেরকম আমারো ব্যাবহার হওয়া উচিত।কত সুন্দর নীল শাড়ি টা কিনে আনলাম।একদরের দোকান থেকে নিয়ে আসছি,তাই তিন হাজার নিছে।
ব্যাপার টা তা নয়,শাড়িটাতে শিরিনকে দারূন লাগত।কিন্তু এই বোকা মেয়ে আমার ভালবাসা বুঝল না।
.
আজ পূর্ণিমা, তাই আকাশে বড় একটা চাদ উঠছে।
আর চাদের জ্যোৎস্না গুলো সব আমার ছাদে আর আমার গায়ে পড়তেছে।
যদি শিরিন নীল শাড়ি টা পড়ে এসে আমার পাশে বসে হাত ধরে জ্যোৎস্নাবিলাশ করত তাহলে কত ভাল হত।কিন্তু আফসোস এই বোকা মেয়ের জন্য।
.
যাক কি আর করার,একা একাই জ্যোৎস্না বিলাশ করতে লাগলাম।
.
হঠাৎ ঘাড়ে একটা হাত পরল,আমি ঘাড় ঘুরিয়ে পিছনে তাকিয়ে দেখি শিরীন।
এটা একটু আগের শিরীন নয়,এ আমার ভালবাসার শিরীন ।নীল শাড়ি পড়া শিরীন।
.
-ফোন ধরছিলে না কেন?
.
আমি মুখ ঘুড়িয়ে সামনে আনলাম।ওকে বুঝতে দেওয়া যাবেনা যে ওর প্রতি আর রাগ নেই আমার।
আমি বললাম,
-ইচ্ছা করছিল না।
-রাগ আছে এখনো?
-জানিনা,
-বসব তোমার পাশে?
-তোমার ইচ্ছা।
.
শিরীন আমার পাশে বসতে বসতে বলল,
-কেমন লাগতেছে?
.
আমি শিরীনের দিকে তাকালাম।ওকে পুরো জ্যোৎস্না কন্যার মত লাগতেছে।যদিও কখনো জ্যোৎস্না কন্যাকে দেখিনি, তবে আমি নিশ্চিত জ্যোৎস্না কন্যা থেকে থাকলে সে শিরীনের মতই হবে।
.
এই বদ কন্যা জানে,আমি ওর দিকে তাকালেই আর ওর প্রতি রাগ করে থাকতে পারব না।তাই এই ব্যাবস্থা করে আসছে।
.
-ভাল।
-শুধু ভাল।
-না অনেক ভাল।
-যাও আর কখনো কিছু আনতে হবে না,শুধু ফুল দিও তাতেই হবে।
.
আমি মনে মনে খুশি হলাম,যাক বাঁচা গেল। শিরীনের ঘ্যনর ঘ্যানর থেকে মুক্তি পেলাম।
বেশি দাম দিয়ে শাড়ি নিয়ে এসে সারা জীবনের জন্য মুক্তি।
.
শিরীন আমার হাত ধরে বলল,
-চুপ করে আছ কেন।
.
আমি চুপ করে রইলাম কিছু বললাম না
শিরীন আমার কাধে মাথা রাখতে রাখতে বলল,
-এখনো রাগ করে আছ?
-না তো,,
-তাহলে কথা বলছ না কেন?
.
আমি ওর দিকে তাকিয়ে দেখি ওর কপালে ওর মাথার দুটা চুল পড়েছে।আমি চুল গুলো হাত দিয়ে সরিয়ে দিতে দিতে বললাম,
-অনেক সময় নিরবতাও অনেক কিছু বলে।
.
শিরীন জবাবে কিছু বলল না,আমার দিকে তাকিয়ে হাসল।আমিও হাসলাম।
.
সত্যি নিরবতা অনেক কিছু বলে,আর নিরবতা ভালবাসাও বাড়ায়।
.
.
.
-নাহিদ পারভেজ নয়ন

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:০৯

শামীম আরেফীন বলেছেন: সাবলিল বর্ণনা। গল্পের পরিণতি আরেকটু ভালো হতে পারত। তবু ভাল্লাগছে...

২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:৫৮

নাহিদ পারভেজ নয়ন বলেছেন: ধন্যবাদ

২| ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:৩৫

জাহিদ ২০১০ বলেছেন: খুব সুন্দর হইছে

২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:৫৯

নাহিদ পারভেজ নয়ন বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ

৩| ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১:১৯

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: সুখপাঠ্য

০১ লা অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৩:৫৯

নাহিদ পারভেজ নয়ন বলেছেন: ধন্যবাদ

৪| ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:০২

সুমন কর বলেছেন: মোটামুটি লাগল।

০১ লা অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৩:৫৯

নাহিদ পারভেজ নয়ন বলেছেন: ধন্যবাদ

৫| ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:০৬

জেন রসি বলেছেন: সাবলীল বর্ণনা ভালো লেগেছে।

সত্যি নিরবতা অনেক কিছু বলে,আর নিরবতা ভালবাসাও বাড়ায়।

কথা সত্য!
.

০১ লা অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৪:০০

নাহিদ পারভেজ নয়ন বলেছেন: ধন্যবাদ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.