![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
-আপনার পাশে বসা যাবে,
,
প্রশ্নটা করে মেয়েটা আমার দিকে তাকিয়ে রইল। সুন্দরী মেয়ে।অবশ্য বিয়ে বাড়িতে আসা সব মেয়েরাই সুন্দরী হয়ে থাকে ।সবাই সেজে গুজে আসে, কখনোই তাদের আসল রুপ দেখা যায়না কিন্তু এ মেয়েকে দেখে মনে হচ্ছে এ আসলেই সুন্দর। মুখে কোন আটা ময়দা মানে মেকাপ নেই।
.
আমি বললাম,
-জি বসেন।
.
ধন্যবাদ দিয়েই মেয়েটা আমার পাশের চেয়ারে বসে পড়ল।
এসেছি বিয়ে বাড়িতে, সচরাচর আমি কোন অনুষ্ঠান এ যাইনা কিন্তু আম্মার জন্য আসতে হয়েছে।মামার ছেলের বিয়ে,আম্মা জোর করে নিয়ে আসছে।এখানে এসে আম্মা ব্যাস্ত হয়ে গেল,আমি একা হয়ে গেলাম।
দু একজন কাজিন ছিল বাট কথা খুব একটা হল না আর আমি মোটেও কোলাহল পছন্দ করিনা। কিন্তু এখানে ওটাই অতিরিক্ত ভাবে হচ্ছে। তাই বিয়ে বাড়ির একদিকে যেখানে ফাঁকা সেখানে এসে বসলাম।
.
কিছুদূরেই মেয়েটা দাঁড়িয়ে ছিল সাদা সেলোয়ার পড়ে,একা একা । বিয়ে বাড়িতে এসে কোন মেয়ে একা একা থাকবে কেন?
মেয়েটা মাঝে মাঝে তাকাচ্ছিল আমার দিকে আমি ও তাকাচ্ছিলাম।যখন আমার দিকে আসতে লাগল তখন ভাবলাম তাকাচ্ছি তাই কিছু বলবে হয়ত কিন্তু সেরকম কিছু হলনা।
.
মেয়েটা আবার জিজ্ঞেস করল,
-আপনি ছেলে পক্ষ না মেয়ে পক্ষ?
-ছেলে,আপনি?
-মেয়ের বান্ধবী,
-ও আচ্ছা,,
-বিরক্ত হচ্ছেন কি?
-না তো,কেন?
-আসলে একা একা আছেন,ভাবলাম আমি এলাম তাই হয়ত।
-না তেমন না,আসলে আমার কোলাহল খুব অপছন্দ,
-আমারো,বান্ধবীর বিয়ে তাই আসতে হয়েছে।
-ও আচ্ছা।আপনার নাম কি?
-তাজরী,আপনার?
-নয়ন, এত একা একা থাকেন কেন?
-এমনিতেই,আপনি?
-একাকিত্ত ভাল লাগে তাই,
.
তাজরী আমার কথা শুনে হাসল তারপর বলল,
-ভাল বলেছেন।
.
আরো কিছুক্ষন কথা হল আমাদের,কে কোথায় পড়ি?ইত্যাদি ইত্যাদি।যদিও আমি পড়িনা জব করি।মা মেয়েও খুঁজছে বিয়ে দেয়ার জন্য।
.
কিছুক্ষন যেতেই বিয়ে বাড়ি ভর্তি হয়ে গেল আমরা যেখান বসে ছিলাম সেখানে আর নীরবতা রইল না।কোলাহলে পরিপূর্ণতা পেয়ে গেল।
.
আমি তাজরীকে বললাম,
-কোথাও হাঁটার মত জায়গা আছে?
-হুম,আছে তো।
-আপনার বাসা কি এ গ্রামেই?
-না,পাশের গ্রাম।কিন্তু চিনি সব,চলুন
.
আমি তাজরীর সাথে নিয়ে উঠলাম সেখান থেকে,যখনি বিয়ে বাড়ি থেকে বের হব তখনি হঠাৎ আম্মার সামনে পড়লাম।
আম্মাকে তাজরীর সাথে পরিচয় করিয়ে দিলাম।আম্মা একটু অবাকই হল, ভাবল যে ছেলে কারো সাথে মিশতে পারেনা সে কিছুক্ষনের দেখায় এক মেয়ের সাথে আলাপ করছে আবার বাইরে হাঁটতেও যাচ্ছে। অবাক আমিও হয়ে ছিলাম,বাট তাজরীও আমার মত একা থাকতে ভালবাসে ,তাই হয়ত মিশতে পেরেছি।দুজনের কিছু মিল আছে।
.
তাজরী আর আমি হাঁটতে হাঁটতে রাস্তায় চলে এলাম।রাত বেশি হয়নি নটার মত বাজে,তবুও মনে হচ্ছিল অনেক রাত।শুধু হাঁটছিলাম না কথাও হচ্ছিল। কথা বলার এক সময় জানাও হল, কেউ প্রেম করি কিনা?
তাজরী প্রেম করেনা,তাতে খুব একটা খুশি হইনি। কারণ ওর প্রেমে আমি পড়িনি,তবে ওকে ভাল লেগেছে,ভাল মেয়ে,সুন্দরী মেয়ে।
.
হুট হাট করে আমাদের মত ছেলেরা প্রেমে পড়েনা,তবে পরে কি হবে ওটা আল্লাহ জানে।
.
আধাঘন্টার মত হাঁটাহাঁটি করে আবার বিয়ে বাড়িতে চলে এলাম,তাজরী আলাদা হয়ে গেল আমার কাছ থেকে।বিয়ে হওয়া পর্যন্ত আর ওর দেখা পেলাম না।খাওয়ার সময় দেখা হয়েছে কিন্তু কথা হয়নি।খাওয়ার পর আমি ওকে খুঁজে বের করলাম,এক গাঁদা মেয়ের সাথে ও ছিল, যদিও একটু অসস্তি হচ্ছিল তবুও মনে হল ওর সাথে কথা বলা দরকার।
.
আমি ডাক দিলাম,
-তাজরী,
.
সব গুলো মেয়েই আমার দিকে তাকাল,সাথে তাজরীও।মনে হল সবাই অবাক,অচেনা কেউ ডেকেছে তাই হয়ত।তাজরী জবাব দিল না,চুপচাপ সেখান থেকে চলে আসল।
.
ও আমার সামনে এসে বলল,
-আপনি ! ভাল হয়েছে,,আপনার নাম্বার টাই তো নেয়া হয়নি,
-হুম,,আমিও ওই জন্যই খুঁজছিলাম আপনাকে,,
.
তাজরী আবার হাসল,হেসে বলল
-সত্যি।
-হুম,সত্যি।
.
এই মেয়ের প্রেমে না পড়লেও, ওর হাসির প্রেমে পড়েছি সেটা নিশ্চিত।আরো একটা জিনিষের প্রেমে পড়েছি সেটা তাজরীর চোখ জোড়া। অসম্ভব সুন্দর কাজল দেয়া চোখ জোড়া ।
এ কথা অবশ্য আগেই তাজরীকে বলেছি,আর নিয়মিত কাজল ও দিতে বলেছি।
.
ওর নাম্বার নিয়ে ওকে একটা মিসকল দিয়ে আমার নাম্বার টা ওকে দিয়ে দিলাম তারপর বললাম,
-আচ্ছা,আমি যাই তাহলে।কথা হবে।
-আচ্ছা,ভাল থাকবেন।
-হুম,আপনিও,,
.
সেদিন রাত্রেই তাজরীর সাথে কথা হয়।বাসা আসতে রাত দুটা বেজে গিয়েছিল, বিছানায় শুতেই ফোন বেজে উঠল,ফোন হাতে নিয়ে দেখি তাজরীর নাম্বার থেকে কল।
রিসিভ করে বললাম,
-হ্যালো,
-পৌছে গেছেন?
-হুম,মাত্রই,
-ও আচ্ছা।
.
কখনোই কোন মেয়ের সাথে ফোনে কথা বলিনি তাই বুঝলাম না আর কি বলা দরকার।কিছুক্ষন পর তাজরী বলল,
-আচ্ছা রাখি,
-আচ্ছা।
.
এর পর থেকে প্রায় রাত্রেই কথা হচ্ছিল আমাদের ঘন্টাখানেক করে।বুঝতে পারছিলাম কারো প্রেমে পড়ে যাচ্ছি খুব ভাল ভাবে পড়ে যাচ্ছি।
.
তাজরী র সাথে দেখাও হয়েছে দুবার,যদিও সে রকম ভাবে না।সেদিন হঠাৎ তাজরীকে জিজ্ঞেস করলাম,কোথায় আপনি?
ও বলল,নীল ক্ষেত,
আমিও বললাম,আমিও ওখানে।যদিও ওখানে ছিলাম না,দেখা করার ইচ্ছা ছিল তাই মিথ্যা বলি।
তাজরী আমার কথা শুনে বলল,চলুন দেখা করি।আমিও এটাই চাইছিলাম,রাহী হয়ে গেলাম।
এ ভাবেই দেখা সাক্ষাৎ।
তাজরী হয়ত এতদিনে বুঝে গেছে আমি ওর প্রেমে পড়ে গেছি।আর খুব ভালভাবে।
.
এভাবেই চলছিল আমাদের দিন,খারাপ না ভালই কাঁটছিল।কিন্তু হঠাৎ কাল আম্মা বলল আমার বিয়ে দিবে,কথা টা শুনে আমার মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ল।জীবনে কখনো মায়ের অবাধ্য হইনি,এবারো হওয়ার সাহস ছিলনা।আর তাজরীর কথাও বলার পরিস্থিতি ছিলনা কারণ তাজরীকেই এখনো বলিনি, তাই একপ্রকার বাধ্য হয়ে মেয়ে দেখতে আসতে হল।
.
মেয়ের বাড়ি ঘর ভালই পছন্দ হওয়ার মত,ঘরে বসে আছি ঘন্টাখানেক। মেয়ে আসল আরো মিনিট দশেক পর।বড় সর ঘোমটা দিয়ে আর হাতে নিয়ে নাস্তার ট্রে।যদিও আগেও নাস্তা দেয়া হয়েছিল।
.
ঘোমটার নিচে এত বড় একটা সারপ্রাইজ ছিল কে জানে?
ঘোমটা খুলতেই চমকে উঠলাম, দেখি এটা তাজরী। উফ,দারুন লাগছিল ওকে।লাল শাড়িতে পুরো বউদের মত। আমি যতটা অবাক হয়েছি, ও কে দেখে, মনে হল ও আমাকে দেখে ততটা অবাক হয়নি।ও আগে থেকেই হয়ত জানত আমিই পাত্র।আমি আশ্চর্য হলাম যে তাজরী আমাকে এটা কেন জানাল না?
গতকাল রাত্রেও আমাদের কথা হয়েছে ফোনে।এ বিষয়ে ও কিছুই বলেনি।
.
তাজরীর বাবা জিজ্ঞেস করল,আলাদা কথা বলতে চাই কিনা?
আমি বললাম, না থাক।কিন্তু তাজরী বাধ সাধল, ও বলল, কথা বলবে।আমার মুখ হঠাৎ করেই অন্ধকার হয়ে গেল।ওর কি অন্য কেউ আছে নাকি?আমাকে কি মানা করে দিবে?
একটু আগেও মনে হত তাজরী আমাকে, ভালবাসে কিন্তু এখন অন্য কিছু মনে হচ্ছে।
.
আমি ভীত মমনে ওর পিছু পিছু ছাদে গেলাম।
ছাদে গিয়ে দাঁড়াতেই ও বলল,
-আসলে আমি এমন একজন কে বিয়ে করতে চাই যে আমাকে ভালবাসে,
-হুম,আমি
-আপনি কি?
-না মানে তোমার কি অন্য কেউ আছে তাজরী?
-না,
.
আমি নিশ্চিন্ত আর খুশি হয়ে বললাম,
-তাহলে আমাকে বিয়ে কর,আমি তোমাকে
-কি?
-ভালবাসি,
.
তাজরী কি যেন ভেবে বলল,
-ভালকরে বলুন তাহলেই ভেবে দেখব বিয়ে করা যাবে কি যাবেনা,
-মানে,
-মানে হল ভালবাসি বলুন সুন্দর করে
.
আমি চারপাশ দেখে নিয়ে বললাম,
-ভালবাসি ভালবাসি ভালবাসি শুধু তোমাকে তাজরী।
তাজরী শুনে শুধু হাসল আর বলল,
-তাই,
-হুম,তাই তো,
-আচ্ছা,তাহলে আমি রাজি।
.
.
.
.
-নাহিদ পারভেজ নয়ন
১৮ ই অক্টোবর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৩৯
নাহিদ পারভেজ নয়ন বলেছেন: ধন্যবাদ
২| ১৮ ই অক্টোবর, ২০১৫ দুপুর ১:১৮
আরণ্যক রাখাল বলেছেন: ভালোই
১৮ ই অক্টোবর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৩৯
নাহিদ পারভেজ নয়ন বলেছেন: ধন্যবাদ
৩| ১৮ ই অক্টোবর, ২০১৫ দুপুর ১:৩১
শাহরিয়ার কবীর বলেছেন: ভালোই লিখেছেন।
১৮ ই অক্টোবর, ২০১৫ রাত ৯:৩৬
নাহিদ পারভেজ নয়ন বলেছেন: ধন্যবাদ
৪| ১৮ ই অক্টোবর, ২০১৫ দুপুর ২:১৩
নীল আকাশ বলেছেন: ভালো লেগেছে পড়ে।
১৯ শে অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৫:১৫
নাহিদ পারভেজ নয়ন বলেছেন: ধন্যবাদ
৫| ১৮ ই অক্টোবর, ২০১৫ দুপুর ২:১৭
এস কাজী বলেছেন: নয়ন ভাই আপনে বড়ই লাকি। আপনার কপালের লগে যদি কপালটা এক বার ঘষতে পারতাম!!!!
গল্প ভালইছে।
১৯ শে অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৫:১৬
নাহিদ পারভেজ নয়ন বলেছেন: আইসা পড়েন, কপাল ঘষি।
৬| ১৮ ই অক্টোবর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৪৮
আরণ্যক রাখাল বলেছেন: আপনার গল্পগুলো একঘেয়েমী হয়ে যাচ্ছে না? ফিনিশিংগুলো এমনকি বিষয়ের মধ্যেও কিন্তু পার্থক্য খুব কম, যদিও লেখাগুলো বেশ সুখপাঠ্য| ভেবে দেখবেন
৭| ১৯ শে অক্টোবর, ২০১৫ দুপুর ১:০৭
আমিনুর রহমান বলেছেন:
সাধারণ ভালোবাসার গল্প কিন্তু পড়তে ভালো লেগেছে।
©somewhere in net ltd.
১|
১৮ ই অক্টোবর, ২০১৫ দুপুর ১২:০১
আজিজার বলেছেন: দারুন লিখেছেন।