![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ভীষণ কল্পনাপ্রবণ একজন মানুষ আমি। কল্পলোকের ক্যানভাসে ছবি এঁকে, মনোজগতের সুবিশাল হাইপার স্পেসে নিজের এক মহাবিশ্ব সৃষ্টি করে আমি হয়েছি ঈশ্বর। যখন প্রচন্ড কষ্টে কাঁদতে ইচ্ছে করে, তখন নিজের সৃজিত মহাবিশ্বের অসীম গ্যালাক্সিপুঞ্জ দেখে গর্বিত অনুভব করি। অতঃপর স্বপ্নীল জগতের দিকে তাকিয়ে উচ্চারণ করি দৈব বাণী- "নিশ্চই তোমাদের সৃষ্টিকর্তা মহান। দুঃখ কিংবা কষ্ট তাকে স্পর্শ করে না।"
সত্যিকারের বাঙ্গালীয়ানা ব্যাপারটি আমরা আসলে ভুলে যেতে বসেছি।
বাঙ্গালীয়ানা মানে কিছু নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্য যা আমাদের পরিচায়ক, যা আমাদেরকে অন্যান্য জাতি থেকে পৃথক করে। প্রত্যেক জাতিরই একটি স্বতন্ত্র সংস্কৃতি থাকে। আমরাও তার ব্যতীক্রম নই।
তবে প্রত্যেক culture-এর ভেতরেই অনেকগুলো sub-culture থাকে, ঠিক যেমন একটা set-এর অনেকগুলো sub-set থাকে। প্রত্যেক sub-set এর নিজস্ব বৈশিষ্ট্য থাকে, এবং সেগুলো অন্য sub-set থেকে অনেকটাই আলাদা। কিন্তু এই সবগুলো sub-set এর মাঝেই বেশ কিছু common বৈশিষ্ট্য থাকে, যার কারনে এই সব sub-setই বৃহত্তর সেটের সদস্য। এখন ধরুন, কোন এক sub-set এর সদস্য বললেন, অন্য sub-set এর বৈশিষ্ট্য যারা ধারণ করে, তারা এই set এর সদস্য নন! তাহলে ব্যাপারটি কেমন দাঁড়াবে?
একজন বাঙালী হতে পারেন মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান কিংবা অন্যধর্মাবলম্বী। প্রত্যেক ধর্মের অনুসারীরই নিজস্ব কিছু আচার-অনুষ্ঠান থাকে, থাকে কিছু নিজস্ব বৈশিষ্ট্য, নিজস্ব বিশ্বাস। কিন্তু এসবকিছুর গণ্ডি ছাড়িয়ে আমরা সবাই বাঙালী। তাই আমাদের প্রত্যেকের মাঝেই বেশ কিছু বৈশিষ্ট্য থাকবে যেগুলো কমন। এদেশের সব ধর্মের অনুসারী মিলে-মিশে বাস করেছেন, বাস করবেন। একে অপরের ধর্মকে শ্রদ্ধা করবেন। কেউ অন্যের ধর্মীয় বিশ্বাস কিংবা আচার-অনুষ্ঠান নিয়ে প্রকাশ্যে কটাক্ষ করবেন না। একজন মসজিদের ইমাম কখনো হিন্দু ধর্মের দেবদেবীদের নিয়ে কটু মন্তব্য করবেন না, তেমনি একজন হিন্দুও মুসলিমদের নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করবেন না। একজন যেমন অন্যের শাড়ি পরা, কপালে টিপ দেয়া, কানে দুল পরা নিয়ে উগ্র এবং উস্কানিমূলক বক্তব্য দেবার অধিকার রাখেন না। তেমনি কেউ অন্যের হিজাব পরা, মাথায় কাপড় দেওয়ার বিরুদ্ধে বক্তব্য দেবারও অধিকার রাখেন না। যে নারী শাড়ি পরছেন, চুলে বেনী করছেন কিংবা খোপা করছেন, কপালে লাল টিপ পরেছেন- তিনিও বাঙালী। আবার যে নারী বোরখা পরেছেন, কিংবা স্রেফ ঘোমটা দিয়েছেন- তিনিও বাঙালী। আবহমান কাল ধরে বাংলার লক্ষ লক্ষ নারী মাথায় কাপড় দিয়ে চলাফেরা করে এসেছেন, কিংবা হিজাব পরেছেন- তারা কেউ কি বাঙালী নন?
কেউ শাড়ি পরা নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য দিচ্ছেন, আবার কেউ মাথায় ঘোমটা দেয়া নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য দিচ্ছেন। এভাবেই কি আমাদেরকে নিজেদের বাঙালী প্রমাণ করতে হবে? এই extremism কিংবা polarization এর শেষ কোথায়?
©somewhere in net ltd.