নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নিজেকে নিজেই আবিষ্কারের চেষ্টা করছি।

না ই বললাম

না ই বললাম › বিস্তারিত পোস্টঃ

দৈনিক দিনলিপি : প্রারম্ভিক

২০ শে জানুয়ারি, ২০২২ দুপুর ১:৩১

বৃহস্পতিবার, ২০ জানুয়ারী ২০২২

মানসিক এবং ব্যক্তিগত কিছু হাহাকার থেকে মুক্তির বিভিন্ন উপায় খুঁজছি। প্রতিদিন নিজের মস্তিষ্ককে সারাদিন ইন্সটাগ্রাম আর অনলাইন শপের সস্তা চাইনিজ পণ্যের সমাহারে ব্যস্ত রাখি কিন্তু রাত হলেই নৈশচর পাখির মতো মাথার ভিতরের কন্ঠগুলো চিৎকার করে উঠে। সবার আগে যে প্রশ্নটা ওঠে তা হলো, “কি করলাম আজ সারাদিন?”- এটি সাধারণভাবে উত্তর করা যায় না। অফিস-কাজ-রান্না-খাওয়া-বই পড়া কিছুই যথেষ্ঠ প্রডাক্টিভ মনে হয় না। হয়তো ব্যপারটা এক্সিসটেন্সিয়াল ক্রাইসিস-এর কাতারে পড়ে কিছুটা। গত কয়েকদিন ধরে সমাধান ভাবছিলাম।

আগের মতো কিছুই করিনা এখন। কৈশরে কি করে এতো সময় থাকতো? এখন এতো কম কাজ করেও কেনো দিনগুলো চোখের পলকে শেষ হয়ে যায়? স্কুলজীবনে অর্ধেকদিন ক্লাস আর প্রায় এক হালি টিউটর/প্রাইভেটের পরেও বিকেলে আড্ডা, ঘোরাঘোরি, মাঝে মাঝে ছাদে গিয়ে বসা, তিন গোয়েন্দা আর জাফর ইকবাল গলধঃকরণ করেও নতুন নতুন ইন্টারনেট শিখে সাইবার ক্যাফেতে গিয়ে ফেইসবুক খোলার সময় পেয়েছি। এসএসসির সময়টাতে ব্লগিং শিখেছি। ইংরেজী বাংলা বিভিন্ন ব্লগে নিয়মিত ছাইপাঁশ লিখে গিয়েছি। বইমেলা থেকে কেনা প্রায় গোটা পঞ্চাশেক বই এপ্রিলের মধ্যেই পড়ে শেষ করে ফেলেছি। নিজে নিজে ফটোশপ, ওয়ার্ড, এক্সসেল শিখে বন্ধুদেরজন্য বিভিন্ন অপমানমূলক ছবি এডিট করেছি নিছক মজা করার জন্য!

আর এখন!

প্যান্ডামিকের লকডাউনে কষ্ট করেও ১০টা বই পড়া হয়ে উঠেনি। করোনার আগেও প্রায় বছরখানেক আড্ডা দিতে যাবো যাবো করেও সবার সময় হয়ে উঠেনি। ব্লগের লেখালেখির ইতি হয়েছে বোধহয় বর আটেক আগেই। নতুন কিছু শেখার জন্য সময় কোথায়? ভাইয়ের নবজাতকের একটা ছবি তুলেছিলাম শখ করে। ব্যাকগ্রাউন্ডটা একটু হালকা এডিট করে নব্য বাবা-মাকে উপহার দিতে চেয়েছিলাম। বাচ্চার চার বছরের জন্মদিন হয়ে গেলো সেদিন, কিন্তু তবু সময় বের করতে পারলাম না। তবু কেন দিন শেষে দেখি কিছুই করা হয়নি?
ভাবলাম নতুন করে ব্লগ আইডি করবো। আমার আগেরগুলো ততটা Anonymous ছিলো না। এবার আর কাউকে জানাবো না। এটা শুধু আমার দিনলিপি। কোনো সৃজনশীল বা শিক্ষামূলক কিছু না। শুধু দিনে কি কি করেছি তা টুকে রাখবো এখানে। খানিকটা ডায়েরীর মতোই। কিন্তু ব্লগের কেন? কারণ ডায়েরীতে ভাবাবেগ লিখতে পারিনা এখন আর। কেমন যেনো ন্যাঁকা ন্যাঁকা লাগে। এবং কোনো জবাবদিহিতা নেই বলে প্রায় দেড়/দুই বছরও ডায়েরীর পাতা খালিই পড়ে থাকে। ২০১৬তে বোধহয় এই মাঝারী সাইজের ডায়েরীটি নিয়েছিলাম। এখনও অর্ধেকটাও লেখা হয়ে উঠেনি। আর কৈশরে শুধু দিনে কি কি ঘটেছে সে দিনলিপি লিখতে গিয়ে কোনো এক বছরে দুইটা মোটা মোটা ডায়েরী শেষ করেছিলাম। তাই ভাবলাম ব্লগেই ভালো। একটা রেকর্ড থাকবে। আর শেষ কারণ হলো, নিঃসঙ্গতা। বড় পরিবারে থাকার পরেও কেন যেনো নিজের সাথে মানসিকতা মিলে এমন মানুষ খুব বেশি নেই। শীতের রাতে ছোট ফ্ল্যাটের পাঁচতলার চিকন বারান্দা থেকে ঢাকার কোনো এক গলির দৃশ্য দেখতে দেখতে কারো সাথে কথা বলতে ইচ্ছে করে। কোনো রোমান্টিকতা নয়, যৌনতা নয়, স্নেহ বা সম্মানমূলক নয়, জ্ঞানগর্ভ আলোচনা নয়, নিছক কনভার্সেশন। খুব ক্রেইভ হয় কারো সাথে কথা বলতে সৃষ্টিজগত নিয়ে, মানষ নিয়ে, সভ্যতা নিয়ে, সময় নিয়ে, অতীত নিয়ে, ভবিষ্যৎ নিয়ে- ঐ যে বললাম না, এক্সিসটেন্সিয়াল ক্রাইসিস! এসব নিয়েই কথা বলতে ইচ্ছে করে। সেরকম কেউ নেই আমার। খুব ইন্ট্রোভার্ট ধরনের মানুষ আমি। কাওকেই আমার মনের গভীরে উঁকি দিতে দেই না, আবার ভিতরের তীব্র নিঃসঙ্গতাও মাঝে মাঝে চরম যন্ত্রণা দেয়। তাই নিজেকে অনেক বুঝিয়ে এই ব্লগের যাত্রা করছি। এখনো ওয়ার্ডেই লিখছি, জানি না শেষ পর্যন্ত পোস্ট করবো কি না।

যদি করেই ফেলি পোস্ট, ইচ্ছা আছে দৈনিক যদি নাও হয়, অন্তত সপ্তাহে একবার পোস্ট করার। দিনে যদি কিছু নাও ঘটে, অতীতের কোনো ঘটনা লিখবো। তবু লিখবো। দিনশেষে মনে হবে, যাক অন্তত একটা ব্লগ হলেও লিখেছি আজ।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ২০ শে জানুয়ারি, ২০২২ দুপুর ২:২২

দেয়ালিকা বিপাশা বলেছেন:

সময়ের পরিবর্তনে যখন বেঁচে থাকার উচ্ছ্বাস ক্রমশ নিষ্প্রাণ হতে থাকে, তখন সময়টা বড্ড বেশি হলেও বেঁচে থাকা আর হয়না।

কেমন ছিলাম ছোটবেলায়? কেমন কেটেছে কৈশোর? এই সহজ প্রশ্ন গুলো করলেই বেঁচে থাকার সহজ উদ্দেশ্যটা খুঁজে পাওয়া যায়।

সহজ করে বলতে গেলে, সে সময়ে চিন্তাভাবনায় জটিলতা কাজ করত না, হাজারো মানুষের ভিড়েও অবিশ্বাসের কোনো অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যেত না, মানসিকতার মিল না থাকলেও অন্যের সঙ্গে নিজের মানসিকতার মিল খুঁজতে যেতাম না। আপন আলোয়, আপন ছন্দে কাটিয়েছি সেই দিনগুলো। তাই সে সময় গুলোতে বেঁচে ছিলাম, প্রাণবন্ত হয়ে বেঁচে ছিলাম। আর আজ শুধু বাঁচার জন্য বাঁচি, বেঁচে থাকার কারণ খুঁজি। তখন নিজেকে অন্যের মাঝে বিলিয়ে দিতাম আর আজ নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছি। তাই যতটা নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছি ততটাই নিসংগতার দেখা পাচ্ছি।

সবশেষে বলতে চাই, বাঁচার জন্য নয় শুধুমাত্র বেঁচে থাকার জন্য বাঁচতে হবে। কেউ মনের মতো নয় তবে নিজের মনকে অন্যের মনের মত করে নিতে হবে। আনন্দ এবং দুঃখ দুটোই অন্যকে বিলিয়ে দিতে হবে। তবেই নিঃসঙ্গতা দূর হয়ে মনে হবে যেন সত্যিই বেঁচে আছি!

অনেক দোয়া এবং শুভকামনা রইল।

- দেয়ালিকা বিপাশা

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.