নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কোন শিরোনাম নাই!

লুমিনি২৪

লুমিনি২৪ › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভবিষ্যতের গাড়ি

৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১১:২১

নতুন প্রযুক্তির ব্যবহার আজকাল ইলেক্ট্রনিকসের জগতে বেশি হলেও অন্য ক্ষেত্রগুলোতেও এখন এর প্রয়োগ বাড়ছে। বর্তমানে গাড়িতে আমরা যে ধরনের ইঞ্জিন ব্যবহার করি সেটার ধরন উনবিংশ এবং বিংশ শতাব্দীর মতন। শুধু সময়ের সাথে বেড়েছে এর কার্যক্ষমতা এবং প্রযুক্তিগত উৎকর্ষতা। কিন্তু একদম পুরোপুরি পরিবর্তন আসেনি।



যে ধরনের ইঞ্জিনের কথা বলা হচ্ছে তা internal combustion engine বা অন্তর্দহন ইঞ্জিন. এতে জ্বালানি হিসেবে অকটেন, পেট্রোল, ডিজেল ইত্যাদি দহন করা হয় এবং সৃষ্ট উচ্চ চাপ ব্যবহার করে ইঞ্জিন চলে। কিন্তু দিন দিন জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি এবং পরিবেশের কথা চিন্তা করে বিজ্ঞানিরা চেষ্টা করছেন এই ইঞ্জিনের বদলে অন্য কোন প্রযুক্তি ব্যবহার করা যায় কিনা। আর এই ধরনের গাড়ি বর্তমানে অনেক দেশেই ব্যবহার হচ্ছে।



বর্তমানে ২ টি প্রযুক্তি গাড়ি কোম্পানিগুলো ব্যবহার শুরু করেছে যাতে ইঞ্জিনের ব্যবহার একদম নেই। একটি হল ব্যাটারিচালিত এবং আরেকটি হল ফুয়েল সেল চালিত। তবে ২ প্রযুক্তির গাড়িতেই ইলেকট্রিক মোটরের ব্যবহার মুখ্য।



ব্যাটারিচালিত গাড়িতে রিচার্জেবল ব্যাটারি(লিথিয়াম আয়ন) ব্যবহার করে ইলেকট্রিক মোটর দিয়ে গাড়ি চলে, অনেকটা ইলেকট্রিক মোটর চালিত অটোরিকশার মত। যদিও এই মোটরগুলো অত্যন্ত শক্তিশালী, ভিন্ন ধরনের ব্যটারি ব্যবহার করে এবং রিকশার মত উলটে পড়ার সম্ভবনা নেই!



অন্যদিকে ফুয়েল সেল একধরনের ব্যাটারি সদৃশ বস্তু যাতে চার্জের প্রয়োজন হয় না বরং জ্বালানি ব্যবহার করা হয়। জ্বালানি হিসেবে এখন পর্যন্ত হাইড্রোজেন গ্যাসের ব্যবহারই বেশি। তবে মিথেন গ্যাস, মিথানল, ডিজেল ইত্যাদিও ব্যবহার করা যায়। Internal combustion engine এর থেকে বিপরীত হল এটাতে জ্বালানি পোড়ানো হয়না বরং রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে সরাসরি বিদ্যুৎ শক্তিতে পরিণত করা হয়। এই বিদ্যুৎ শক্তি ব্যবহার করে ইলেকট্রিক মোটরের সাহায্যে গাড়ি চলে।



ব্যাটারিচালিত ইলেকট্রিক গাড়ির চল উনবিংশ শতাব্দীর দিকে শুরু হলেও ১৯৯০ এর পর এধরনের গাড়ির প্রতি গাড়ি নির্মাতা কোম্পানিগুলো আগ্রহী হয়। জেনারেল মোটরস, টয়োটা, হোন্ডা, ফোর্ড প্রভৃতি কোম্পানিগুলো কিছু মডেলের গাড়ি আনলেও বাজারে খুব একটা চলেনি। কিন্তু ২০০০ সালের দিকে অর্থনৈতিক সমস্যা এবং টেসলা মোটরস এর নতুন ডিজাইনের গাড়ির আবির্ভাবের জন্য অন্যান্য কোম্পানিগুলো নড়েচড়ে বসে। বর্তমানে টেসলার পাশাপাশি টয়োটা, ফোর্ড, হোন্ডা, বিএমডব্লিউ, ভক্সওয়াগন, মিতসুবিসি, ফিয়াট এবং আরো কিছু কোম্পানির ইলেকট্রিক গাড়ি রয়েছে।





টেসলা ইলেকট্রিক কার



ইলেকট্রিক গাড়ির ব্যাটারি





অন্যদিকে ফুয়েল সেলের ব্যবহার অনেকটাই বিংশ শতাব্দীর। ২০০৮ এর দিকে হোন্ডা তাদের ফুয়েল সেলের গাড়ি বানিজ্যিকভাবে বাজারজাত করে। ২০১৪-১৫ এর জন্য টয়োটা মিরাই মডেলের একটি ফুয়েল সেল গাড়ি বাজারজাত করছে/করবে।





টয়োটা মিরাই ২০১৪





ইঞ্জিন বনাম ইলেকট্রিক বনাম ফুয়েল সেল



ইঞ্জিনচালিত গাড়িগুলোর থেকে ইলেকট্রিক গাড়ির সুবিধা হল এতে বায়ু দূষণের মাত্রা শূন্য। ব্যাটারি চার্জ হবে আর তাই দিয়ে গাড়ি চলবে। তবে বিদ্যুৎ উৎপাদনে জ্বালানি তেল কিংবা গ্যাস পোড়ানোর জন্য যে বায়ু দূষণ হবে তা একটা নির্দিষ্ট জায়গায় হবে। গাড়ির মত সারা শহর জুড়ে নয়। আর ফুয়েল সেল ইঞ্জিনের তুলনায় অনেক বেশি কার্যক্ষম। ফলে কম জ্বালানিতে গাড়ি চলবে বেশি।





ইলেকট্রিক গাড়ির অভ্যন্তরীণ অংশ



ইঞ্জিনের চেয়ে ইলেকট্রিক এবং ফুয়েল সেলের গাড়ির আরেকটি সুবিধা হল এগুলো ইঞ্জিনের মত জটিল প্রক্রিয়ায় কাজ করে না ফলে রক্ষণাবেক্ষণ খরচ অনেক কম পড়বে।



টয়োটা মিরাই এর ফুয়েল সেল



তবে ইলেকট্রিক গাড়ি এবং ফুয়েল সেলের গাড়ির একটা বড় সমস্যা, এগুলো এখনও অনেক ব্যয়বহুল। টেসলার ইলেকট্রিক সেডানগুলোর দাম পড়বে ৫০ লক্ষ টাকার বেশি। আর টয়োটা মিরাই এর দাম ৪৫ লক্ষ টাকা। যদিও এতে টয়োটার ভর্তুকি রয়েছে।



তবে ইলেকট্রিক গাড়ি একদিক থেকে ফুয়েল সেল গাড়ির চেয়ে এগিয়ে। সেটা হল ব্যাটারি আপনি চাইলে বাসাতেই চার্জ দিতে পারেন কিন্তু ফুয়েল সেলের হাইড্রোজেন গ্যাস ভরতে আমাদের দেশে গ্যাসের লাইনের কাহিনী হবে নিশ্চিত। পাশাপাশি হাইড্রোজেন গ্যাস সরবরাহ ততটা সহজলভ্য নয়। বানিজ্যিকভাবে হাইড্রোজেন তৈরিতে ব্যবহার করা হয় মিথেন। অনেক দেশেই জ্বালানি গ্যাস সহজলভ্য নয়। সৌর শক্তি ব্যবহার করে পানি থেকে হাইড্রোজেন বানানো সম্ভব। কিন্তু সেটা ইলেকট্রিক গাড়ির ব্যাটারি চার্জিং এ ব্যবহার করাই ভালো।



তবে প্রযুক্তির ময়দানে অনেক ব্যাপারই আছে যা পন্যের ভাগ্য নির্ধারন করে থাকে। এখন পর্যন্ত আধুনিক দুই গাড়ির কোনটাই দামের দিক থেকে ইঞ্জিনসম্পন্ন গাড়ির চেয়ে কম নয় বরং বেশি। পাশাপাশি কোন ধরনের গাড়ি ভবিষ্যতে বাজার দখল করবে সে ব্যাপারে বলাও মুশকিল।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.