নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

\"দুইশো চার\"

নাভিদ ফারাবী

বাংলা ভাষার অক্ষরগুলোকে এদিক সেদিক ঘুরিয়ে ফিরেয়ে ভাষাটার সাথে বেয়াদবী করি। বেয়াদবীগুলোর মধ্যে নকশা খুঁজতে গেলে গোলকধাঁধায় পড়বেন বলে দিচ্ছি।

নাভিদ ফারাবী › বিস্তারিত পোস্টঃ

বক্স সমাচার

২০ শে এপ্রিল, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৩৪


কিছু মেহমান এসেছে বাসায়।
মা শেল্ফ থেকে প্লেট বের করছে। আমি সাহায্য করছি। হঠাৎ লাল নীল রঙের কতগুলো কাঁচের গ্লাসের পিছনে চোখ গেল আমার।
একটা টিফিন বক্স।
সবুজ রঙের বেঢপ বড় কিম্ভুতকিমাকার একটা টিফিন বক্স।
সঙ্গে সঙ্গে আমার জীবনে ঘটে যাওয়া হাহাকারে ভরপুর এক বেদনাব্যঞ্জক কাহিনী মনে পড়ে গেল।

পটভূমি ২০০৭ সাল।
টিফিন বক্সটার তৎকালীন মালিক ও একক ভোগদখলকারী আমার ক্লাস থ্রিতে পড়া ছোটভাই। তুমুল একপশলা মারামারি চলাকালে আমার সিংহপুরুষতুল্য ফাইটিং স্টাইলের দরুন সে মরাকান্না জুড়ে দেওয়ায় আমার শাস্তিস্বরুপ বক্সটার মালিকানা তাকে হস্তান্তর করা হয়েছিল।
আমরা দুজনেই মনিপুরের ছাত্র।
আদি ও আসল খাস মনিপুরের এক নম্বর প্রোডাক্ট।
অর্থাৎ কোন ব্র‍্যাঞ্চ ট্র‍্যাঞ্চ নয়। একেবারে সফদার আলী স্যারের পায়ের ধুলা আর বেতের সপাং সপাং শব্দ মাখানো মূল শাখার পুরনো বিল্ডিং এ ক্লাস করা মর্নিং শিফটের ছাত্র।
মনিপুরের নিয়মানুযায়ী, টিফিন টাইম নামক চিরআরাধ্য বস্তু ভোগের সুযোগ একমাত্র ক্লাস থ্রি থেকে উপরের ছাত্ররাই পায়। টিফিনের ঘন্টা দিলে যখন ক্লাস ফাইভে থাকা আমরা "সিনিয়র ভাইব্রাদাররা" টিফিন বক্স বের করতাম অথবা দুই পাঁচ টাকার ফুচকা, চটপটি, আচার খেতে নিচে নামতাম তখন মাত্র ছুটি হয়ে যাওয়া ক্লাস ওয়ান আর টুয়ের বাটু বাটু আন্ডাবাচ্চারা হাঁসের ডিমের মত বড় বড় চোখ করে তাকিয়ে থাকত।
হ্যাঁ, বিশাল বিশাল রেইনট্রি গাছের মত লম্বা নাইন টেনের ভাইগুলা যদিও থাকত আশেপাশে, কিন্ত তাদেরকে লিটারেলি বড় মানুষের খাতায় ফেলে দেয়া যেত বলে, আমরা, যাদের সাইজ পিচ্চিগুলা নিজেদের কিছুটা কাছাকাছি বলে মনে করত তাদের প্রতিই বিস্ময়ের পরিমানটা বেশি প্রকাশ করত।
তো উক্ত ঘটনার বছর আমার ভাই নব্য ক্লাস থ্রি।
সবেমাত্র কিছুদিন হয়েছে বেশ আয়েশ করে টিফিন টাইম জিনিসটা উপভোগ করছে। মাঝে মাঝে নিজের টিফিন শেষ করে বাইরে একটু বের হলেই হাফহাতা শার্ট পরা ঐ ব্যাটাকে হিস্টিরিয়া রুগির মত এক করিডোর থেকে আরেক করিডোরে দৌড়ে যেতে দেখতাম।
তো দিনকাল ভালই যাচ্ছে ওর। নতুন টিফিন টাইম, প্লাস নতুন টিফিন বক্স জয়। দিন ভাল ওর যাবে না তো ছাই আমার যাবে?
ওদিকে বক্স হারিয়ে মন টন নেতিয়ে থাকা এই আমার জিন্দা লাশের উপরে বোনাস হিসেবে খাঁড়ার ঘাটাও যে পড়বে তা আমি ঘুনাক্ষরেও ভাবিনি।
মার্চের কোন এক সুন্দর সকালের টিফিন টাইম। টয়লেটে নিজের ওজন কমিয়ে সবে মাত্র ক্লাসে ফিরেছি বক্সটা বের করে সাঁটাবো বলে। তখনই আমার এক বন্ধু, সম্ভবত কালা সানী, জানায় যে কিছুক্ষন আগে আমার কনিষ্ট ভ্রাতা বেশ হন্তদন্ত অবস্থায় এসে আমার ব্যাগ থেকে একটা খাতা নিয়ে ঝড়ের বেগে বেড়িয়ে গেছে। আমি তৎক্ষণাৎ ব্যাগের উপরে ঝাঁপিয়ে পড়ি।
কিছুক্ষন অনুসন্ধানের পর ঘটনা বুঝতে পেরে আমার শিরদাঁড়া বেয়ে ঠান্ডা স্রোত নেমে গেল।
সবেধন নীলমণি ভাই আমার যে খাতাটা নিয়ে গেছে সেটা ছিল মালেক স্যারের "হাতের লেখা" খাতা।
যারা মনিপুর স্কুলের নন অথবা মূল ব্র‍্যাঞ্চের নন, তাদের সুবিধার্থে বলছি, মালেক স্যার ছিলেন মনিপুরের একজন ঠান্ডা মাথার, পাতলা গোঁফধারী, হালকা টাকওয়ালা, পানখোর, বাংলা সেকেন্ড পেপারের শিক্ষক যার অভিজাত বেঁতের সুশৃঙ্খল বাড়ির ভয়ে ছেলেপেলে এমনই সোঁজা থাকত যে স্কেলের বদলে এক একটা ছেলেকে খাতায় শুইয়ে ইজিলি মার্জিন টানা যেত। মনিপুরের কত ছাত্র যে চাকরীজীবনে এসেও স্বপ্নে মালেক স্যারের হোমওয়ার্ক আনেনি দেখে ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে ঘুম থেকে ওঠে তা গুনে শেষ করা যায় না।
বেতকে স্রেফ তলোয়ার হিসেবে ব্যবহার করা এহেন স্যারের নিরীহ খাতাটাকে আমার গুন্ডা ভাই কিডন্যাপ করে না জানি কোন চোরা গুহায় চলে গেছে।
আমি সন্তান হারানো পিতার মত আহাজারি করতে করতে চলে এলাম তার ক্লাসে। এসে যে দৃশ্য আমি দেখলাম তার জন্য আমি কোন ভাবেই প্রস্তুত ছিলাম না রাসেল ভাই।
আমি আমার খাতার কোন সাদা পেজ ছেড়া পছন্দ করিনা এটা আমার ভাই জানত। তাই সে সযতনে গত রাত এগারোটা পর্যন্ত জেগে থেকে গুটি গুটি অক্ষরে আমার করা হোমওয়ার্কের পৃষ্ঠাগুলো ছিড়ে ছিড়ে তার ব্যাগ পরিষ্কার করছে।
ঘটনা হল এই যে তার সেই বিজয়ী টিফিন বক্সের আজ প্রথম মনিপুর দর্শন। তাই তার একটা লক যে লুজ এটা কারো জানা ছিল না। সুতরাং সমস্ত পুডিং ব্যাগের ভিতরে লুকোচুরি খেলতে বেরিয়ে পড়েছে। নিজের নতুন খাতাটার দফারফা করতে ইচ্ছে হয়নি বলে গিয়েছিল আমার কাছে পরিত্রাণের আশায়। তো সে নিজে ত্রাণপ্রাপ্ত হলেও আমাকে বানিয়ে দিল ত্রাণপ্রার্থী।
ফ্লোর ঢেকে গেছে আমার রুলটানা পৃষ্ঠা পৃষ্ঠা কষ্টে। এতটাই দূর্বল লাগছিল যে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে তার ব্যাগ মোছা দেখেছি। কাজ টাজ হয়ে গেলে আকর্ণ হাসির সাথে অর্ধেক হয়ে যাওয়া সাদা খাতাটা আমার হাতে গুঁজে দিয়ে বলল, "মারামারি লাগাবি না, খালি পৃষ্ঠা ছিড়ি নাই।"
কিছু না বলে খাতাটা নিয়ে এসে নিজের বেঞ্চে নদীভাঙনের শিকার একদা ধনী চাষীর মত হতাশভাবে বসে পড়লাম।
কিছুক্ষন পরেই ক্লাসে বাঘ ঢুকবে। জুলুজুলু চোখে বেঞ্চ টু বেঞ্চ গিয়ে হাতের লেখা চেক করবে। না পেলে ধুঁয়া উড়িয়ে দেবে। আমি ফাঁকা খাতা সামনে খুলে রেখে আমার এই অপূরণীয় ক্ষতিসাধনকারীর কোন মহামূল্যবান সম্পদ বাসায় গিয়ে লুকিয়ে রাখা যায় তা নিয়ে গভীর গবেষণায় ডুবে গেলাম।
সেইদিন হতে পরবর্তী দেড় সপ্তাহ তার কি একটা জানি লুকিয়ে রেখেছিলাম। ঠিক কি লুকিয়ে রেখেছিলাম তা মনে পড়ছে না, যা মনে পড়ছে তা হল পিছন সাইডে বেতের বাড়ির দরুন খাল হয়ে যাওয়ার জ্বালা যন্ত্রনা।

আজ অনেক বছর পর সেই টিফিন বক্সটার সাথে পুনরায় মোলাকাত।
চিকন একটা হাসি উপহার পেলাম বলে মনে হল।
ফেরতা কোন হাসি আমার পক্ষ থেকে দেইনি।
স্বাধীন বাংলার মাটিতে কোন মীর জাফরের দেয়া হাসির বিপরীতে ফেরতা হাসি এই নাভিদ ফারাবী দেয় না। কিছু মেহমান এসেছে বাসায়।
মা শেল্ফ থেকে প্লেট বের করছে। আমি সাহায্য করছি। হঠাৎ লাল নীল রঙের কতগুলো কাঁচের গ্লাসের পিছনে চোখ গেল আমার।
একটা টিফিন বক্স।
সবুজ রঙের বেঢপ বড় কিম্ভুতকিমাকার একটা টিফিন বক্স।
সঙ্গে সঙ্গে আমার জীবনে ঘটে যাওয়া হাহাকারে ভরপুর এক বেদনাব্যঞ্জক কাহিনী মনে পড়ে গেল।

পটভূমি ২০০৭ সাল।
টিফিন বক্সটার তৎকালীন মালিক ও একক ভোগদখলকারী আমার ক্লাস থ্রিতে পড়া ছোটভাই। তুমুল একপশলা মারামারি চলাকালে আমার সিংহপুরুষতুল্য ফাইটিং স্টাইলের দরুন সে মরাকান্না জুড়ে দেওয়ায় আমার শাস্তিস্বরুপ বক্সটার মালিকানা তাকে হস্তান্তর করা হয়েছিল।
আমরা দুজনেই মনিপুরের ছাত্র।
আদি ও আসল খাস মনিপুরের এক নম্বর প্রোডাক্ট।
অর্থাৎ কোন ব্র‍্যাঞ্চ ট্র‍্যাঞ্চ নয়। একেবারে সফদার আলী স্যারের পায়ের ধুলা আর বেতের সপাং সপাং শব্দ মাখানো মূল শাখার পুরনো বিল্ডিং এ ক্লাস করা মর্নিং শিফটের ছাত্র।
মনিপুরের নিয়মানুযায়ী, টিফিন টাইম নামক চিরআরাধ্য বস্তু ভোগের সুযোগ একমাত্র ক্লাস থ্রি থেকে উপরের ছাত্ররাই পায়। টিফিনের ঘন্টা দিলে যখন ক্লাস ফাইভে থাকা আমরা "সিনিয়র ভাইব্রাদাররা" টিফিন বক্স বের করতাম অথবা দুই পাঁচ টাকার ফুচকা, চটপটি, আচার খেতে নিচে নামতাম তখন মাত্র ছুটি হয়ে যাওয়া ক্লাস ওয়ান আর টুয়ের বাটু বাটু আন্ডাবাচ্চারা হাঁসের ডিমের মত বড় বড় চোখ করে তাকিয়ে থাকত।
হ্যাঁ, বিশাল বিশাল রেইনট্রি গাছের মত লম্বা নাইন টেনের ভাইগুলা যদিও থাকত আশেপাশে, কিন্ত তাদেরকে লিটারেলি বড় মানুষের খাতায় ফেলে দেয়া যেত বলে, আমরা, যাদের সাইজ পিচ্চিগুলা নিজেদের কিছুটা কাছাকাছি বলে মনে করত তাদের প্রতিই বিস্ময়ের পরিমানটা বেশি প্রকাশ করত।
তো উক্ত ঘটনার বছর আমার ভাই নব্য ক্লাস থ্রি।
সবেমাত্র কিছুদিন হয়েছে বেশ আয়েশ করে টিফিন টাইম জিনিসটা উপভোগ করছে। মাঝে মাঝে নিজের টিফিন শেষ করে বাইরে একটু বের হলেই হাফহাতা শার্ট পরা ঐ ব্যাটাকে হিস্টিরিয়া রুগির মত এক করিডোর থেকে আরেক করিডোরে দৌড়ে যেতে দেখতাম।
তো দিনকাল ভালই যাচ্ছে ওর। নতুন টিফিন টাইম, প্লাস নতুন টিফিন বক্স জয়। দিন ভাল ওর যাবে না তো ছাই আমার যাবে?
ওদিকে বক্স হারিয়ে মন টন নেতিয়ে থাকা এই আমার জিন্দা লাশের উপরে বোনাস হিসেবে খাঁড়ার ঘাটাও যে পড়বে তা আমি ঘুনাক্ষরেও ভাবিনি।
মার্চের কোন এক সুন্দর সকালের টিফিন টাইম। টয়লেটে নিজের ওজন কমিয়ে সবে মাত্র ক্লাসে ফিরেছি বক্সটা বের করে সাঁটাবো বলে। তখনই আমার এক বন্ধু, সম্ভবত কালা সানী, জানায় যে কিছুক্ষন আগে আমার কনিষ্ট ভ্রাতা বেশ হন্তদন্ত অবস্থায় এসে আমার ব্যাগ থেকে একটা খাতা নিয়ে ঝড়ের বেগে বেড়িয়ে গেছে। আমি তৎক্ষণাৎ ব্যাগের উপরে ঝাঁপিয়ে পড়ি।
কিছুক্ষন অনুসন্ধানের পর ঘটনা বুঝতে পেরে আমার শিরদাঁড়া বেয়ে ঠান্ডা স্রোত নেমে গেল।
সবেধন নীলমণি ভাই আমার যে খাতাটা নিয়ে গেছে সেটা ছিল মালেক স্যারের "হাতের লেখা" খাতা।
যারা মনিপুর স্কুলের নন অথবা মূল ব্র‍্যাঞ্চের নন, তাদের সুবিধার্থে বলছি, মালেক স্যার ছিলেন মনিপুরের একজন ঠান্ডা মাথার, পাতলা গোঁফধারী, হালকা টাকওয়ালা, পানখোর, বাংলা সেকেন্ড পেপারের শিক্ষক যার অভিজাত বেঁতের সুশৃঙ্খল বাড়ির ভয়ে ছেলেপেলে এমনই সোঁজা থাকত যে স্কেলের বদলে এক একটা ছেলেকে খাতায় শুইয়ে ইজিলি মার্জিন টানা যেত। মনিপুরের কত ছাত্র যে চাকরীজীবনে এসেও স্বপ্নে মালেক স্যারের হোমওয়ার্ক আনেনি দেখে ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে ঘুম থেকে ওঠে তা গুনে শেষ করা যায় না।
বেতকে স্রেফ তলোয়ার হিসেবে ব্যবহার করা এহেন স্যারের নিরীহ খাতাটাকে আমার গুন্ডা ভাই কিডন্যাপ করে না জানি কোন চোরা গুহায় চলে গেছে।
আমি সন্তান হারানো পিতার মত আহাজারি করতে করতে চলে এলাম তার ক্লাসে। এসে যে দৃশ্য আমি দেখলাম তার জন্য আমি কোন ভাবেই প্রস্তুত ছিলাম না রাসেল ভাই।
আমি আমার খাতার কোন সাদা পেজ ছেড়া পছন্দ করিনা এটা আমার ভাই জানত। তাই সে সযতনে গত রাত এগারোটা পর্যন্ত জেগে থেকে গুটি গুটি অক্ষরে আমার করা হোমওয়ার্কের পৃষ্ঠাগুলো ছিড়ে ছিড়ে তার ব্যাগ পরিষ্কার করছে।
ঘটনা হল এই যে তার সেই বিজয়ী টিফিন বক্সের আজ প্রথম মনিপুর দর্শন। তাই তার একটা লক যে লুজ এটা কারো জানা ছিল না। সুতরাং সমস্ত পুডিং ব্যাগের ভিতরে লুকোচুরি খেলতে বেরিয়ে পড়েছে। নিজের নতুন খাতাটার দফারফা করতে ইচ্ছে হয়নি বলে গিয়েছিল আমার কাছে পরিত্রাণের আশায়। তো সে নিজে ত্রাণপ্রাপ্ত হলেও আমাকে বানিয়ে দিল ত্রাণপ্রার্থী।
ফ্লোর ঢেকে গেছে আমার রুলটানা পৃষ্ঠা পৃষ্ঠা কষ্টে। এতটাই দূর্বল লাগছিল যে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে তার ব্যাগ মোছা দেখেছি। কাজ টাজ হয়ে গেলে আকর্ণ হাসির সাথে অর্ধেক হয়ে যাওয়া সাদা খাতাটা আমার হাতে গুঁজে দিয়ে বলল, "মারামারি লাগাবি না, খালি পৃষ্ঠা ছিড়ি নাই।"
কিছু না বলে খাতাটা নিয়ে এসে নিজের বেঞ্চে নদীভাঙনের শিকার একদা ধনী চাষীর মত হতাশভাবে বসে পড়লাম।
কিছুক্ষন পরেই ক্লাসে বাঘ ঢুকবে। জুলুজুলু চোখে বেঞ্চ টু বেঞ্চ গিয়ে হাতের লেখা চেক করবে। না পেলে ধুঁয়া উড়িয়ে দেবে। আমি ফাঁকা খাতা সামনে খুলে রেখে আমার এই অপূরণীয় ক্ষতিসাধনকারীর কোন মহামূল্যবান সম্পদ বাসায় গিয়ে লুকিয়ে রাখা যায় তা নিয়ে গভীর গবেষণায় ডুবে গেলাম।
সেইদিন হতে পরবর্তী দেড় সপ্তাহ তার কি একটা জানি লুকিয়ে রেখেছিলাম। ঠিক কি লুকিয়ে রেখেছিলাম তা মনে পড়ছে না, যা মনে পড়ছে তা হল পিছন সাইডে বেতের বাড়ির দরুন খাল হয়ে যাওয়ার জ্বালা যন্ত্রনা।

আজ অনেক বছর পর সেই টিফিন বক্সটার সাথে পুনরায় মোলাকাত।
চিকন একটা হাসি উপহার পেলাম বলে মনে হল।
ফেরতা কোন হাসি আমার পক্ষ থেকে দেইনি।
স্বাধীন বাংলার মাটিতে কোন মীর জাফরের দেয়া হাসির বিপরীতে ফেরতা হাসি এই নাভিদ ফারাবী দেয় না।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.