নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমাদের একেক জনের জীবনের এক একটা নির্দিষ্ট বিন্দুতে এসে আমাদের আশপাশে যা হচ্ছে তার উপর নিয়ন্ত্রন হারিয়ে ফেলি। তখন জীবনের নিয়ন্ত্রন নেয় ভাগ্য। এটাই দুনিয়ার সবচেয়ে বড় মিথ্যা।
ইংরেজীতে পেন নেম বলে একটি কথা প্রচলিত আছে, প্রকৃত নামের পরিবর্তে ব্যাবহৃত নামকেই বলা হয় পেন নেম, বাংলায় যাকে ছদ্মনাম হিসেবে অভিহিত করা হয়। কবি-সাহিত্যিকদের ছদ্মনাম গ্রহন করার রীতি অনেক আগে থেকেই প্রচলিত, অনেক কবি সাহিত্যিক প্রকৃত নামের চেয়ে ছদ্মনামেই জনপ্রিয় হয়েছেন, আবার অনেকে ছদ্মনামে লেখা শুরু করলেও প্রকৃত নামেই পরিচিত হয়েছেন। আবার অনেকের ছিল একাধিক ছদ্মনাম। কেমন ছিলো ছদ্মনামের সেই সব সাহিত্যিকেরা, ৪ পর্বের এই কথনের শুরুতেই থাকছে বাংলা সাহিত্যে ব্যবহৃত নির্বাচিত কিছু সাহিত্যিক ও তাদের সাহিত্যকর্ম.....................................................................
পর্ব-১
- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর-এর‘জীবনস্মৃতি’ পাঠ করলে আমরা দেখি রবীন্দ্রনাথও চ্যাটার্টন দ্বারা প্রভাবিত হয়ে নিজে ছদ্মনাম গ্রহণ করেন। ব্যবহার করেছেন ৯ টি ছদ্মনাম, তিনি যে ছদ্মনামে লিখতেন তা হল- ভানুসিংহ ঠাকুর; অকপটচন্দ্র ভাস্কর; আন্নাকালী পাকড়াশী; দিকশূন্য ভট্টাচার্য; নবীন কিশোর শর্মণ; ষষ্ঠীচরণ দেবশর্মা; বানীবিনোদ বিদ্যাবিনোদ; শ্রীমতী কনিষ্ঠা; শ্রীমতী মধ্যমা।
- সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় ১৯৫৮ সালে প্রথম বই প্রকাশের পর তিনি লিখে গেছেন ক্লান্তিহীনভাবে। আর পাঠকও তাকে ভালোবাসা দিয়েছে হৃদয় উজাড় করে। তার প্রকাশিত প্রথম কবিতার বই একা এবং কয়েকজন।
নীল লোহিত, নীল উপাধ্যায় আর সনাতন পাঠক ছদ্মনামে লিখতেন অজস্র। তবে তাঁর নীললোহিত ছদ্মনামটিই বেশি বিখ্যাত। নীললোহিত নামে তিনি যে উপন্যাস বা গল্পগুলো লিখেছেন সেগুলোর অধিকাংশের নায়ক নীললোহিত নামে সাতাশ বছরের এক তরুণ। যার পায়ের তলায় সর্ষে। যে খোলা চোখে, খোলা মনে দেখে জীবনকে। নীললোহিতের সঙ্গে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের এক চমকপ্রদ সাক্ষাতের বর্ণনাও রয়েছে ভ্রমণকাহিনি তিন সমুদ্র সাতাশ নদীতে।
- শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় যিনি ছিলেন বাংলা সাহিত্যের অন্যতম জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। যাঁর নাম শুনলেই আমাদের দেবদাস কিংবা শ্রীকান্তের কথা মনে পড়ে যায়। তাঁর সাহিত্যকর্মকে ঘিরে উপমহাদেশে এ পর্যন্ত প্রায় ৫০টি চলচ্চিত্র বিভিন্ন ভাষায় নির্মাণ করা হয়, এর মধ্যে তাঁর রচিত 'দেবদাস' উপন্যাসটি বাংলা, হিন্দি এবং তেলেগু ভাষায় আটবার এবং 'পরিণীতা' দুইবার নির্মাণ করা হয়। এ ছাড়া মেজদিদি, বিন্দুর ছেলে, দত্তা, স্বামী উপন্যাস অবলম্বনেও জনপ্রিয় সব চলচ্চিত্র নির্মিত হয়। 'স্বামী' চলচ্চিত্রের জন্য ১৯৭৭ সালে শরৎচন্দ্র ফিল্মফেয়ার সেরা লেখকের পুরস্কার পান।
- শওকত ওসমান, তাঁর আসল নাম শেখ আজিজুর রহমান। তবে তিনি শওকত ওসমান নামে লিখতেন। তিনি রচনা করেছেন 'জননী'-র মতো বিখ্যাত উপন্যাস। এই উপন্যাসটি ইংরেজীতে অনুবাদ করেছেন প্রবাসী বাঙালী ওসমান জামাল এবং প্রকাশিত হয়েছিলো লন্ডনের একটি নামজাদা প্রকাশনা সংস্থা থেকে। এই বিষয়ে শওকত ওসমান সাহিত্যের আরেক দিকপাল কবি শামসুর রাহমানকে তাঁর স্বভাবসুলভ চমৎকার ভঙ্গিতে বলতেন, 'শোনো শামসুর রাহমান, আমি পাশ্চাত্যকে অন্তত একটি বাংলা শব্দ উপহার দিয়েছি - জননী। তাঁর রচিত 'ঈশ্বরের প্রতিদ্বন্দ্বী' গল্পগ্রন্থটির অনুবাদ 'গডস অ্যাডভার্সারিজ' প্রকাশ করেছে পেঙ্গুইন পাবলিশার্স। বই দুটি বিদেশে প্রশংসিত হয়েছে এবং লন্ডনের দ্য গার্ডিয়ান পত্রিকা 'জননী' বিষয়ে সপ্রশংস আলোচনা প্রকাশ করেছে। আইয়ুব খানের সামরিক শাসনের সময়ে তিনি লিখেছেন সাড়া জাগানো উপন্যাস 'ক্রীতদাসের হাসি'। এই উপন্যাসটিও ইংরেজীতে অনূদিত হয়েছে।
তাছাড়া বিষাদসিন্ধুর রচয়িতা মীর মশাররফ হোসেন লিখতেন গাজী মিয়া নামে। প্যারীচাঁদ মিত্র লিখতেন টেকচাঁদ ঠাকুর নামে। পরের পর্বে থাকবে আরো কিছু সাহিত্যিকের ছদ্মনামের গল্প ও তাদের সাহিত্যকথন।
সাহিত্যিকগন যে নামেই পরিচিত থাকুক না কেন তারা সময়কে দিয়ে গেছেন অসাধারন কিছু সাহিত্য কর্ম, যা আমাদের ভাবায় আর ধাবিত করে সময় থেকে সময়ে।
rokomari.com থেকে প্রাপ্ত ইমেইল থেকে।
২৬ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৫:৫৩
নয়ন বিন বাহার বলেছেন: বাহ! ভালো বলেছেন। আমারও তাই মনে হয়।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১| ২৬ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৪:৩০
সাহসী সন্তান বলেছেন: আমার মনে হয় উনারা যদি সামুতে ব্লগিং করতেন, তাহলে সম্ভাবত ঐ নামেই ব্লগিং করতেন!
ভাল পোস্ট! শুভ কামনা জানবেন!