নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মনের ভেতর জমতে থাকা বিক্ষিপ্ত ভাবনাগুলো জট পাকিয়ে যাবার হাত থেকে মুক্তির অন্যতম উপায় হচ্ছে কোথাও তা গুছিয়ে লিখে ফেলা

ইনজিনিয়ার নাঈমুল হক

ইনজিনিয়ার নাঈমুল হক › বিস্তারিত পোস্টঃ

চিনি খাওয়ার সাহসি গল্পঃ

০৮ ই মে, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৫৭

চিনি খাওয়ার সাহসি গল্পঃ.........
আব্বা যখন অর্ডনেন্স ফেক্টরিতে চাকরি করত তখন আমরা রেশনে আটা, চাল, তেল এবং চিনি পাইতাম। প্রতি মাসে ঠেলা গাড়িতে করে যখন রেশন আসত তখন আমি দৌড়ে গিয়ে সবার আগে চিনির থলেটা নিয়ে আসতাম। অনেক চিনি একসাথে দেখে মনটা আনন্দে ভরে যেত। খুব কম সময়ই শুকনো ঝরঝরে চিনি পাওয়া যেত। বেশির ভাগ সময় পাওয়া যেত বড় দানার ভেজা আঠালো চিনি। সেই চিনিগুলোই ছিল আমার সবচেয়ে প্রিও। সেখানে আবার কিছু ঝোলাগুড়সহ জমাট বাধা চিনি থাকত। আমি ঘেটে ঘেটে সেই জমাট বাধা চিনি খুজে নিয়ে খেতাম। কাচা পেপে খেতে বিস্বাদ লাগত, তাই চিনি দিয়ে খাওয়া হত। গাজর যত লাল তত মিষ্টি নয়, তাই গাজরও চিনি দিয়ে মেরে দি্তাম। বাঙ্গি খেতে কেমন যেন পানসে তাই সেটাও খাওয়া হত চিনি দিয়ে। নারকেল কোরানোর পর তলায় যে অবশিষ্ট অংশ থাকত সেগুলো চামচ দিয়ে কুরিয়ে চিনি মিশিয়ে খাওয়া হত। তা ছাড়া যে জিনিসই খেতে একটূ বিস্বাদ লাগত সেটাও চিনি মিশিয়ে খেতাম। তাছাড়া চিনির ছিল আরো নানাবিধ ব্যাবহার, যেমন স্কুলে থাকতে বইএর ফাকে শখের বশে ময়ুরের পালক রাখা হত। সহপাঠি গুনিজনরা বলত ময়ুরের পালক চিনিসহ মুড়িয়ে রাখলে নাকি গোড়া থেকে আর একটি বাচ্চা পালক গজায়। সেটা পরীক্ষা করতে গিয়ে বইএর ফাকেই চিনিসহ ময়ুরের পালক রেখেছিলাম, পিপড়া ধরে একাকার অবস্থা। অতিরিক্ত চিনি খাওয়ার ঝোকের কারনে আব্বা আম্মার চোখ রাঙানি তো ছিলই। দুপুরে সাবাই যখন ঘুমিয়ে পড়ত তখন সন্তপর্নে পা টিপে টিপে কিচেনে গিয়ে বয়াম থেকে চিনি চুরি করে খেতাম। আমার পিঠাপিঠি ছোট বোন কোথা থেকে এসে উপস্থিত হত আর তারস্বরে চিৎকার করে বলত, আম্মু ছোট ভাইয়া না আবার চিনি খাইতেছে। আমার যখন মন খারাপ হত তখনই দুই চামচ চিনি খেয়ে নিতাম. একবার আমার দুটো দাতে পোকা ধরেছিল। ডেন্টিস্টের কাছে গিয়ে ফিলিং করাতে হয়েছিল। ডাক্তারের কাছে যাওয়ার সময় পুরো রাস্তা আব্বা আমাকে সেই রকম শাসিয়েছিলেন এভাবে- “আর কোনো দিন চিনি খাবি? খাবি আর? খুব ভালো হইছে না এইবার? চিনি খাওয়ার মজা বুঝছস এখন?” ডেন্টিস্টের চেম্বারে গিয়ে আব্বা আমার বিরুদ্ধে সবার আগে অভিযোগ করলেন, ও খালি চামচ দিয়ে একটু পর পর চিনি খায় তাই দাতে পোকা ধরে গেছে। ডাকতার সাহেব সবিনয়ে বললেন, চিনি খেলে বাচ্চাদের বুদ্ধি বাড়ে। কোনও সমস্যা নাই বাবা তুমি আরো বেশী করে চিনি খাবে, আপনি শুধু খেয়াল রাখবেন বাচ্চা যেন দু বেলা ভালো করে ব্রাশ করে। শুইনা আব্বা এক্কেরে জায়গায় বোল্ড হইয়া গেল।যাই হোক এবার বলি চিকেন রোল, বিফ রোল, মাটন রোল তো অনেক খেলেন, কিন্তু কড়া বাদামি করে ভাজা পরোটার ব্যাস বরাবর এক পরত চিনি ঢেলে মুড়িয়ে লাস্ট কবে খেয়েছেন মনে পড়ে? আবার খেয়ে দেখুন, স্কুলের ব্যাগ কাধে নিয়ে দৌড়তে মন চাইবে।
অতএব.........
আমি চিনি গো চিনি তোমারেই
তুমি চিনি গো চিনি আমারই
বিঃ দ্রঃ এই চিনিময় পোস্ট পড়ে কারো রক্তে সুগার লেভেল বেড়ে গেলে তার জন্য আন্তরিকভাবে দুঃখিত।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.