নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মনের ভেতর জমতে থাকা বিক্ষিপ্ত ভাবনাগুলো জট পাকিয়ে যাবার হাত থেকে মুক্তির অন্যতম উপায় হচ্ছে কোথাও তা গুছিয়ে লিখে ফেলা

ইনজিনিয়ার নাঈমুল হক

ইনজিনিয়ার নাঈমুল হক › বিস্তারিত পোস্টঃ

হার কুত্তেকা দিন আতা হ্যায়

২০ শে জুলাই, ২০১৬ ভোর ৪:২৬

মেয়েটার গায়ের রঙ ফর্সা, সুন্দর কমলালেবুর কোয়ার মত ঠোট, খাড়া নাক, টানা টানা চোখ, দীঘল কালো চুল সবই আলাদা আলাদা ভাবে সুন্দর। কিন্তু সব কিছু একসাথে জোড়া দেওয়ার পর তাকে দেখাচ্ছে টিকটিকির মত। কিন্তু শুধু গায়ের রঙ এর জন্য অহংকারে তার মাটিতে পা পড়ে না।

মেয়েটার গায়ের রঙ ময়লা, নাক বোঁচা, দাত আকাবাঁকা, মোটা ঠোট। কিন্তু টোটাল কম্বিনেশানটা একত্রে মিলে খুব আকর্ষনীয় লাগে তাকে। সেই সাথে আছে ভুবন ভোলনো হাসি। তার অজান্তে অনেক পুরুষ তার জন্য ঘায়েল হচ্ছে কিন্তু সে নিজের গায়ের রঙের কারনে হীনমন্যতায়। ভুগছে। তাই নিরহংকার ব্যাক্তিত্ব তাকে আরও আকর্ষনীয় করে তুলেছে।

god always does miracle this way.

সৃষ্টিকর্তা মেয়েদের চোখের লেন্সে এমন বিশেষ দৃষ্টিভ্রম দিয়েছেন যার কারনে সুন্দরী মেয়েরা আয়নায় নিজেকে মোটা দেখতে পায়। তাই তাদের অহংকারের লিমিটেশন থাকে।
কেউ নিজের রুপ নিয়ে সন্তুষ্ট নয়।
শিশু থেকে বয়স কাল পর্যন্ত মানুষের রুপ বিবর্তিত হয়।
সেই সাথে আবর্তিত হয় সুসময় এবং দুঃসময়ের।

বাচ্চাটা ছোট কালে গোলগাল আদুরে, অনেক কিউট ছিল। যে কেউ দেখলেই গাল টেনে আদর করত। কিন্তু সে যতই বড় হচ্ছে, কৈশরের দিকে এগুচ্ছে ততই সে দেখতে কেমন যেন ঘোড়ার মত হয়ে যাচ্ছে।

অন্য একটা বাচ্চা দেখতে হোঁদল কুতকুতে। কিন্তু বড় হতে হতে বেশ হ্যান্ডসাম হয়ে উঠল।

দুই বেনি করে স্কুলে যাওয়া বৈশিষ্টহীন যে মেয়েটার দিকে ছেলেরা হয়ত তাকাতই না। কিন্তু ভার্সিটিতে উঠে কিভাবে যেন তার পরীর মত দুটি পাখা গজিয়ে গেল।

জিরো ফিগারের স্লিম যে সুন্দরী নায়িকা ছিল বূড়ো হওয়ার পর তাকে দেখাচ্ছে হরর ফিল্মের শাকচুন্নির মত

সাদামাটা এভারেজ চেহারার মেয়েটি বয়স কালে কাচা পাকা চুল, চোখে চশমা সহ অভিজাত চেহারার আকর্ষনীয় ব্যাক্তিত্বের মহিলা হয়ে উঠলেন।

এগুলো বলার উদ্যেশ্য হচ্ছে প্রত্যকেরই সোনালী সময় আসে। হিন্দিতে একটি কথা আছে "হার কুত্তেকা দিন আতা হ্যায়" শুধু ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করা।

কিশোর বয়সে ছেলেটা ছিল প্লে বয়। তাকে দেখে মেয়েরা গায়ের ওড়না ফেলে দিত। দূর থেকে ফ্লাইং কিস করত। তাকে নিয়ে মেয়েদের মহলে ছিল ব্যাপক টানাটানি। কিন্ত ছেলেটা মাত্র ২৫ বছর বয়সেই যৌবনের দ্যুতি হারিয়ে ভাংগা চোয়াল এবং কপালে ভাজ সহ বিদ্ধস্থ। তাকে আর চেনা যায় না। এই অল্প বয়েসেই তার সাধ আহলাদ সব শেষ হয়ে বৈরাগী। কেউ কেউ পাগড়ি, উচু করে লুংগি পরে পুরাই হুজুর।

যে ছেলেটা ক্লাসে এক কোনে জড়সড় হয়ে বসে থাকত। মেয়েদের সাথে কথাই বলত না। তোতলামি ছিল ভয়ানক। সে হটাৎ একদিন কথা বলতে শুরু করল। হয়ে উঠল সু বক্তা, বিখ্যাত স্ট্যান্ড আপ কমেডিয়ান। হালের ক্রেজ।

যে ছেলেটা মাত্র ২৪ বছর বয়েসে গ্রাজুয়েশান প্লাস মাস্টার্স শেষ করে ২৬ বছর বয়েসেই কোম্পানির বড় পদে লাখ টকা বেতন, বাড়ি গাড়ি পেয়ে গেল তার এই অল্প বয়েসেই পেটে ভুড়ি, মাথায় টাক হয়ে পুরাই আংকেল লুক।

যে ছেলেটা হন্যে হয়ে চাকরী খুজতে খুজতে জুতা ক্ষয় হয়ে গেল। পাচ হাজার টকা মাইনেতে চাকরী শুরু করে সামাজিক স্ট্যাটাস, বাড়ি গাড়ির মুখ দেখতে দেখতে বয়স পঞ্চাশ হয়ে গেল। কিন্তু পঞ্চাশ বছর বয়েসেও তাকে দেখাচ্ছে পচিশ বছরের তরুনের মত। বয়স বোঝাই যায় না। বিধাতা তার জন্য ঘড়ির কাটা থামিয়ে রেখেছিলেন।

এভাবে আড়াল থেকে সৃষ্টিকর্তা নিপুন হস্তে এসব ব্যালান্সিং করে যান। আমরা টের পাইনা। আমরা শুধু আরেক জনের ভালো দেখে হিংসা করি।

অনেক সময় দেখেছি কিছু ক্ষনজন্মা মানুষ যাদের জীবন কেটেছে অবহেলায়। কিন্তু মৃত্যুর সময় ঘনিয়ে এলে তার চেহারা উজ্জ্বল দেখায়। সে মানুষের শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে ওঠে। সে অসাধ্য সাধন করতে শুরু করে।হটাৎ করেই জীবনের অপুর্ন সাধ আহলাদগুলো একে একে খুব অল্প সময়ে পুরন হয়ে টুক করে মরে যায়।

মানুষের জীবন কখনো একইভাবে চলতে থাকে না। জীবনে চলার পথে অনেকগুলো বাঁক রয়েছে। প্রত্যেক বাকে রয়েছে সম্পুর্ন নতুন নতুন চমক। এই বাক গুলোতে পৌছে একটি মানুষ এক রকম মরে গিয়ে সম্পুর্ন নতুন রুপে জন্মগ্রহন করে। প্রতিটি বাকে মানুষের ভাগ্য বিবর্তিত হয়। এর মধ্যে কিছু রাস্তা থাকবে কন্টকাকীর্ন। এই পথটুকু দাতে দাত চেপে সহ্য করে এগিয়ে যেতে হয়।
আজকে আপনার কাছে যা নেই বলে আক্ষেপ করছেন জীবনের অন্য কোনো বাকে গিয়ে তা পেয়েও যেতে পারেন। হয়ত তা আসতে পারে আপনার সন্তানের মাধ্যমেও।
নিজের ক্যারিয়ার জীবনে সফল ব্যাক্তিটি সন্তানের বখে যাওয়ার দুশ্চিন্তায় আত্মহত্যার কথা ভাবছেন

অপরদিকে এটিএম বুথের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা বৃদ্ধ সিকিউরিটি গার্ডের চোখেমুখে থাকে সর্বদা স্বর্গীয় হাসি এবং যুদ্ধ জয়ের আনন্দ, কারন তার একটি ঢাকা মেডিক্যালে পড়া মেয়ে আছে।

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২০ শে জুলাই, ২০১৬ ভোর ৪:৩৬

চাঁদগাজী বলেছেন:




কি লিখেছেন আপনি জানেন, এ ধরণের মনোভাব আমার ভালো লাগেনি

২| ২০ শে জুলাই, ২০১৬ ভোর ৫:০৪

ফারগুসন বলেছেন: এভাবে আড়াল থেকে সৃষ্টিকর্তা নিপুন হস্তে এসব ব্যালান্সিং করে যান। আমরা টের পাইনা----------------সত্যিই তাই।
বিশ্বরাজনীতির সাথে সাথে প্রকৃত দর্শনটাও জানা চাই। লেখককে ধন্যবাদ।

৩| ২০ শে জুলাই, ২০১৬ সকাল ৯:৩৫

ইফতেখার ভূইয়া বলেছেন: আপনার লিখাটা পড়ে লগইন করলাম। মন্তব্য করার জন্য হাত নিশপিশ করছিলো। যাইহোক মূল কথায় আসছি। আপনার কথাগুলোর সাথে আমি পুরোপুরি একমত। ত্রিশটা বসন্ত পেরিয়ে জীবনের এই প্রান্তে এসে আপনার প্রায় প্রত্যকটা কথাই আমার কাছে সত্য বলে মনে হয়েছে।

কিশোর বয়সে.... পুরাই হুজুর। এমন লোক আমি দেখেছি অতীতে।

যে ছেলেটা মাত্র ২৪....পুরাই আংকেল লুক। এমনও দেখেছি।

যে ছেলেটা হন্যে হয়ে...থামিয়ে রেখেছিলেন। দেখেছি।

প্রত্যেক বাকে রয়েছে সম্পুর্ন নতুন নতুন চমক। এই বাক গুলোতে পৌছে একটি মানুষ এক রকম মরে গিয়ে সম্পুর্ন নতুন রুপে জন্মগ্রহন করে। ব্যাপারটা আসলেই তাই। আমিও এমনি একটা ক্রান্তি লগ্নে দাঁড়িয়ে আছি। প্রবাসে আসার পর আমার মা সব সময়ই বলতেন,"বাবা, তুমি তোমার মা-বাবাকে যেভাবে ভালোবাসছো, যেভাবে তাদেরকে কখনো কষ্ট পেতে দাও নাই। তোমার সন্তানও একদিন তোমাকে এর চেয়ে অনেক বেশী ভালোবাসবে। আমি মা হয়ে তোমার জন্য প্রান ভরে দোয়া করছি, তুমি জীবনে কোনদিন কোথাও আটকাবানা। সমস্যা আসবে, কিন্তুু তুমি খুব সহজেই সেটা পার হয়ে যাবা।"

বিগত ১০ টা বছর সত্যিই তাই হয়েছে আমার জীবনে। আমেরিকায় এসে এমন একটা জীবনে আটকে গেলাম যে পড়াশোনা শুরু করার কোন পথ খুঁজে পাচ্ছিলাম না, হাতেও ছিলোনা টাকা-পয়সা। আপনাদের সবার দোয়ায় পড়াশোনা সফলভাবেই আপাতত শেষ করেছি। আমার মা-বাবার সে কি গর্ব আমাকে নিয়ে। কিন্তু পড়াশোনা করার সময়, ঠিকমতো কাজ করতে পারিনি। হাতে টাকা-পয়সা ছিলোনা বলে রাতে শুধু টোস্ট আর পানি খেয়েও দিন কেটেছে আমেরিকায়। দেশের বন্ধুরা খোটা দিতো দশ বছরে ব্যাংকে কত জমেছে? বান্ধবী ক'টা হলো। বন্ধুরা সবাই যখন বিয়ে নিয়ে ব্যস্ত তখন আমি আমেরিকায় খেটে মরি মজুরের মতো। আমার কোন উত্তর ছিলোনা। সময় পরিবর্তন হয়েছে। বন্ধুরা কেউ এখন আর আমার ভালো থাকার কথা শুনতে আসেনা। জানিনা কেন!

দোয়া করি সবাই ভালো থাকুক। লিখার জন্য ধন্যবাদ।


৪| ২০ শে জুলাই, ২০১৬ সকাল ১১:৫৭

ক্লে ডল বলেছেন: কথায় আছে না? সকাল বেলা আমীররে ভাই ফকির সন্ধ্য.....

আড়াল থেকে সৃষ্টিকর্তা নিপুন হস্তে এসব ব্যালান্সিং করে যান।

৫| ২০ শে জুলাই, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:২৪

ইনজিনিয়ার নাঈমুল হক বলেছেন: ৩০ বছরের এক তরুন তার চেয়ে ১০ বছরের ছোট ২০ বছর বয়েসি এক মেয়েকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। মেয়েটি তখন তাকে অপমান করে, বুইড়া হাবড়া লজ্জা করেনা তোর বাচ্চা মেয়ের সাথে লাইন মারতে আসস বলে তাড়িয়ে দেয়।
অনেক দিন পর এই মেয়েটা যখন ৭০ বছরের বুড়ি হয় তখন হটাৎ ঘটনাক্রমে সেই ৮০ বছরের বুইড়া হাবড়ার সাথে দেখা হয়ে যায়। তখন সে আনন্দে উচ্ছসিত হয়ে পড়ে। দুজনই আগের দিনের ঘটনাগুলো আলোচনা করতে করতে নস্টালজিক হয়ে পড়ে। বুড়ি তার সেদিনের ইমম্যাচিওড়ড আচরনের জন্য ক্ষমা চায়, তাকে ঘরে ডেকে নিয়ে পান খাওয়ায়।
আজকে যা আমার জন্য দুর্লভ তা জীবনের কোনো না কোনো সময় অপদস্থ হয়ে সামনে চলে আসে।

৬| ২২ শে জুলাই, ২০১৬ সকাল ৮:৫০

অন্যরকম আমি বলেছেন: অসাধারন কিছু সত্য কথা ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.