নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নজরুল আই নবীন

অধম

নজরুল আই নবীন › বিস্তারিত পোস্টঃ

এন,আই,নবীনের "খোলা চিঠি"

২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১২:৩৬

খোলা চিঠি

এন, আই, নবীন।



কোনো এক দার্শনিক এর একটি বাণী, ‘‘হৃদয়ে কখনো আর্থিক অভাব অনুভব করো না’’। বাক্যটা পড়তেই মনে প্রশ্ন জাগলো, কথাটা কি ঠিক?। তাই যদি হয়, তবে কিসের অভাব অনুভূত হয় হৃদয়ে?, ভালবাসার?, হ্যাঁ হয়তো তাই।

আমি সেই থেকে, অর্থাৎ তোমা থেকে বিচ্ছিন্ন হবার পর থেকে নয়, তোমার সাথে প্রথম সাক্ষাতের পর থেকে, অন্তরে কেমন যেন একটা শুন্য শুন্য ভাব উপলব্ধি করছিলাম। তবে কারণটা বুঝে উঠতে পারছিলাম না, কিন্তু সেদিন তোমাকে দেখার পর দু’য়ে দু’য়ে চার মিলে গেল। এতেদিন আমি যে অস্থিরতা বা বিষন্নতায় ভুগছিলাম, সেটা হলো হৃদয়ে কোনো কিছুর অভাব, আর তা হচ্ছে ভালবাসার। না শুধু ভালবাসার বললে হয়তো ভুল হবে, কারণ মা, বাবা, ভাই, বোন, স্ত্রী, সন্তান সবার ভালবাসা আমি পেয়েছি। তারপরও যখন অভাবটা রয়েই গেছে, বুঝলাম সেটা হলো তোমার ভালবাসার অর্থাৎ একজন প্রেমিকার ভালবাসার।

আমার অনুভূতিটা তুমি হয়তো বুঝবে না, কারণ আমার মতো তো আর তুমি কাউকে ভালবেসে অবহেলিত, ব্যর্থ বা শুন্য হওনি?।

নাটক, নভেল, সিনেমায় একটি সংলাপ প্রায়ই শুনতে পাই, ‘‘খাঁটি মনে, একাগ্রচিত্তে, বা অকৃত্তিম প্রার্থনায় যদি কেউ কিছু পাওয়ার আশা করে, তবে ব্যর্থতা তাকে কখনো স্পর্শ করতে পারে না’’। আমি তো আমার প্রার্থনায় কোনো কৃত্তিমতার সাহায্য নেইনি?, আমার ভালবাসায় তো কোনো খাদ ছিল না?, তাহলে ব্যর্থতা কেন আমাকে স্পর্শ করলো?। শুধু ষ্পর্শই নয়, ব্যর্থতা আমাকে গ্রাস করেছে। তবে কি নাটক নভেল এর কথাগুলো নিতান্তই সংলাপ?, বাস্তব জীবনে কি এর কোনো সত্যতা নেই?। তাহলে লেখক’রা কেন আমাদের মতো সহজ-সরল কোমল হৃদয়ের মানুষ গুলোকে, তাদের ওই সব মন্ত্রমুগ্ধ বাক্যে বশিভূত করে, ব্যর্থতার বাহনে বসিয়ে দুঃখের সাগরে ডুবতে বাধ্য করে?। অবশ্য এসব তোমাকে বলে কোনো লাভ নেই, কারণ এই কথাগুলো তোমার কছেও প্রশ্নবোধক। কিন্তু একটা প্রশ্নের জবাব তো নিশ্চয়ই তোমার কাছে আছে?, বলো কি অপরাধ ছিল আমার?, কেন আমার ভালবাসাকে এভবে অবজ্ঞা করলে?। আমার ভালবাসাতো নিস্পাপ ছিল, অকৃত্তিম ছিল। হ্যাঁ আমার জানা মতে একটা ঘাটতি আমার মধ্যে ছিল, তা হচ্ছে উচ্চশিক্ষার। জানি চাকুরির জন্য শিক্ষাগত যোগ্যতার মাপ কাঠি লাগে, কিন্তু ভালবাসতে গেলেও যে তার প্রয়োজন হয় তা আমার জানা ছিল না। আর জানবোই বা কি করে?, আমিতো আর আগে কখনো ভালবাসার ইন্টারভিউ দেইনি?, তাছাড়া কোনো নাটক নভেলেও সে রকম কোনো পরামর্শ পাইনি।

আমাকে পেছনে রেখে এতদিনে নিশ্চয়ই বেছে নিয়েছো তোমার স্বপ্নের মানুষটাকে?। আর সেই কাঙ্ক্ষীত মানুষকে সাথে নিয়ে কেমন চলছে তোমার দিনকাল খুব জানতে ইচ্ছে করছে। যদি ভাল থাকো এবং মনোনীত মানুষটাকে নিয়ে সুখী হও, তবে আমার ব্যর্থতা নিয়েও আমি সুখের অনুভূতি পাবো। দোয়াও করি তাই। আর যদি সুখী না হও, তবে তোমার চেয়ে বেশি দুঃখ পাবো আমি। একদিকে তোমার দুঃখে দুঃখী হওয়া, অন্যদিকে তোমাকে না পাওয়ার বেদনায় দুঃখ পাওয়া। আমার সব চেয়ে বড় দুঃখ কি জানো?, আজ আমার সব কিছু থেকেও আমি নিঃস্ব।

আজ পর্যন্ত আমার স্ত্রীকে কখনো কোনো কিছু চাইবার সুযোগ আমি দেইনি, চাওয়ার পুর্বেই তার প্রয়োজন মিটিয়েছি। আমার সন্তানদেরকে স্নেহ ভালবাসা থেকে শুরু করে, অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান কোনো কিছুর অভাব বুঝতে দেইনি। এক কথায় স্ত্রী-সন্তানদের দায়িত্ব পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে পালন করেছি আমি। যদি আমার স্ত্রী-সন্তানদেরকে কেউ প্রশ্ন করে যে, জগৎএ সবচাইতে সুখি সংসার কোনটা?, বিন্দুমাত্র দ্বিধা না করে অকপটে ওরা বলবে, আমাদের সংসার। অথচ একই প্রশ্ন যদি আমাকে করা হয় আমি কিন্তু সে ভাবে স্বিকার করতে পারবো না। কারণ আমার সংসারে সুখ আছে আমার মধ্যে নেই। আমার মধ্যে আছে তোমাকে না পাওয়ার বেদনা। বিয়ের পর শীলা’কে আমি আমার ব্যর্থ প্রেমের কথা, অর্থাৎ তোমার কথা বলেছিলাম। ও তুমিতো আবার শীলা’কে চেন না। শীলা আমার স্ত্রী, খুব বড় মনের মেয়ে ছিল সে। হয়তো ভাবছ সেই বড় মন বুঝি এখন আর নেই তাই না?। না সে রকম ভাববার কোনো অবকাশ নেই। ’’ছিল’’ বললাম এ জন্য যে, এখন আর সে মেয়ে বলার মতো অবস্থানে নেই। এখন বললে বলতে হবে বড় মনের মহিলা। কারন এখন সে দুই সন্তানের জননী। তোমার কথা বলার পর সে আমাকে কি বলেছিল জানো?, বলেছিল- ‘‘আমি কথা দিচ্ছি, আমি আমার ভালবাসা দিয়ে তোমার মনের দুঃখগুলোকে ধুয়ে মুছে সেখানে সুখের তাজমহল বানাবো’’ অনেক চেষ্টাও সে করেছে। কোনোদিন কোনো অভিযোগ করার সুযোগ সে আমাকে দেয়নি। আমার চোখ দেখেই সব বুঝে নিতো কি চাই আমি, এবং সে মতোই কাজ করতো। আমাকে খুশি করার জন্য সাধ্যমতো সব কিছুই করেছে সে। এতো দিনে আমিও ভেবেছিলাম শীলা’র ভালবাসা সত্যি সত্যিই বুঝি, ধুয়ে মুছে ছাফ করে দিয়েছে আমার হৃদয় থেকে তোমার স্মৃতিগুলো। কিন্তু হৃদয়টা তো কোনো শ্লে¬ট বা ব্লাকবোর্ড নয় যে, আগের লেখা মুছে ফেলে আবার নতুন করে লেখা যায়। হৃদয়টা হচ্ছে সাদা কাগজের মতো, একবার যদি তাতে কারো ছবি আঁকা হয়ে যায়, তবে কাগজ ছিড়ে যাবে কিন্তু সেই ছবি আর মোছা যাবে না। আর সে জন্যই হয়তো এতোগুলো বছর পর আজ তোমাকে দেখে উপলব্ধি করলাম যে, জীবনে প্রথম দর্শনে যার ছবি একবার মনে গেঁথে যায়, শত চেষ্টাতেও আর সেই ছবি মুছে ফেলা যায় না। আজ তোমাকে দেখার সাথে সাথে, নিজের অজান্তেই হৃদয়ের মধ্যে চিন্চিন্ একটা ব্যথা অনুভব করলাম। বুকের বাঁ পাশটা খামছে ধরে ব্যথাটাকে চাপা দেয়ার চেষ্টা করলাম, হয়তো খামছে ধরাতে ব্যথাটা চলেও গেছে, কারণ ব্যথাটা ছিলো ক্ষণস্থায়ী। কিন্তু তোমার অভাবটাতো চিরস্থায়ী, সেটাতো পূরণ করবো কিভাবে?।

শীলার ভালবাসা শুধু আমার হৃদয়ে, তোমার ছবির উপর একটা আবরণ বা প্রলেপ সৃষ্টি করেছিল মাত্র, অথবা তোমার ছবির উপর দাগ কেটে তার অবয়ব পরিবর্তন করতে চেয়েছিল। কিন্তু সেখানে তোমার ছবি মুছে তার নিজের ছবি সে বানাতে পারেনি। তবে সে তার নিজের হৃদয়ে আমার ছবিটা হয়তো ঠিকই গেঁথে নিয়েছিল। কারণ আমার ছবিটা যে ওর হৃদয়ে আঁকা প্রথম ছবি।

আমার হৃদয়ে আঁকা প্রথম ছবিটা ছিল তোমার, কিন্তু তোমার হৃদয়ে আঁকা প্রথম ছবিটা কার?, সেটাতো একমাত্র তুমিই জানো।

যদি কোনো দিন মন চায় তাহলে যোগাযোগ করো নিম্ন ঠিকানায়।





[email protected]////[email protected]////[email protected]





মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.