নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মেডলি ট্রাভেল লাভিং ওয়ান।

মোরতাজা

আমি সাধারণের একজন। বেড়াতে, বেড়ানোর আয়োজন করতে ভালোবাসি।

মোরতাজা › বিস্তারিত পোস্টঃ

'পুলিশ আপনার বন্ধু'- এবং ভীতি-প্রেম

০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ১০:৪৪

'পুলিশ আপনার বন্ধু'- কথাটা কেমন যেনো নিষদ্ধি সম্পর্কের মত শোনায়! কতজন এ কথা বিশ্বাস করবেন বা করেন, জানি না। তবে কখনো কখনো আমি পুলিশকে বন্ধু হিসাবে পেয়েছি।



যেমন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে (১৯৯৯-২০০৬) আমার ঘনিষ্ঠজনদের মধ্যে পুলিশের সার্জন আনোয়ার ভাই ও মশিউর ভাই ছিলেন, এসি রহিম ভাই ও নাফিউল ভাই তো আছেনই।ওসি লু]ফর ভাইয়ের কথাও বলতে পারি। মানুষ হিসাবে উনারা খুবই ভালো ছিলেন।

পুলিশ হিসাবে কিছু বিচ্যুতি থাকতে পারে, যেহেতু সে সময় আমি সম্বাদিক, তাই সেটি আমাকে ছোঁয়নি।



তবে দিনে দিনে পুলিশ যে মানুষের বন্ধু নয়, সেটি দেখছি, জানছি এবং শিখছি। কথায় আছে- 'বাঘে ছুঁলে আঠারো ঘা। পুলিশে ছুঁলে ছত্রিশ ঘা।'



ছোটবেলায় পুলিশ সম্পর্কে খুব একটা জানতাম না। আমাদের এলাকায় একটা পুলিশ ফাঁড়ি ছিল, এখন সেটি থানা। ওই থানায় খুব একটা 'ইনকাম' ছিল না। কারণ আমাদের স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা শক্তিমান ছিল। তারা ইউপি ভবনেই সমস্যার সমাধান করতেন। এখন যেহেতু সমস্যা রাজনৈতিক তাই এর সমাধানে পুলিশ লাগে। কারণ যে কোনো কিছুই তো এখন রাজনৈতিক নিক্তিতে মাপা হয়।



পুলিশে আমার খুব ভয়, র্যাবে আরো। পুলিশের ভয়টা সম্ভবত ৮৮ সালের দিকে, সে সময়আমাদের সামনে মহাজন বাড়িতে গভীর নলকূপ বসলো। মহাজনের পোলা অনিল কোনো এক নারীকে চড় মেরেছিল, সে কারণে পুলিশ হাজির।



সেই পুলিশদের দেখে মনে হলো জগতে ওরাই রাজা। গ্রামের চাষা ভূষা মানুষরে তাদের কাছে মানুষই মনে হয়নি। কাপড় শুকানোর দড়ি দিয়ে অনিলকে বাঁধা হলো, থানায় নিয়ে যাওয়া হলো। নেবার আগে তাকে চড়ানো হলো। একটা ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হলো। সেখান থেকে পুলিশে আমার ভয়। পুলিশ মানে আমার কাছে অধিক ক্ষমতাবান কিছু মানুষ, যাদের কোনো আইন মানতে হয় না।



১৯৯১ এর দিকে আমাদের বাড়ির সামনের রাস্তা ধরে পুলিশ সদস্যরা কখনো বাজারে যেতে দেখলেও আমি দৌড়ে বাড়ির পেছনে লুকিয়ে যেতাম। আমার মনে হতো এরা যাকে পাবে, তাকে মারবে।



সময় পাল্টেছে। ঢাকা শহরে এসেছি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পরেই সম্বাদিক। তখন প্রথম আলোর নিউজ কন্ট্রিবিউট করি। পুরান ঢাকায় একটা অপরাধের রিপোর্ট করতে গিয়ে, পুলিশের বক্তব্য জানতে থানায় গেলাম, পুলিশ আমাকে ভিন্ন ইঙ্গিত করলো। আকারে ইঙ্গিতে বোঝালো লাইনে আসেন। নইলে বিপদে পড়বেন।



অনেক সিনিয়র ক্রাইম রিপোর্টারে নাম বললেন। চিনলাম না। তবে শেষ পর্যন্ত প্রথম আলো রিপোর্টটা ছাপছিলো, নইলে অপরাধটা সেখানে থেকেই যেতো।



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের দিনগুলো রাজার হালে কেটেছে।এতেই আমার তৃপ্তি। ক্যাম্পাস ত্যাগের পর পুলিশের সাথে খুব একটা মেশা হতো না। ২০০৯ সালের দিকে পাহাড়ের কয়েকটা থানায় গিয়েছিলাম। তাদের অনেক সুখ দু:খের গল্প শুনে মনটা ভারাক্রান্ত হয়ে ছিল। সে সব লিখেছিলামও।



বছর কয়েক মোহাম্মদপুরে ছিলাম (২০০৭-২০১৩)।

সাধারণত নিজেকে একজন সম্বাদিক হিসাবে পরিচয় স্বাচ্ছন্দের সাথে দিতে পারি না। কারণ মানুষের মনে সম্বাদিক সম্পর্কে অনেক নেতিবাচক ধারণা। আমার এ পরিচয়টা দেবার দরকারও পড়ত না। যে এলাকায় বা হলে আমি থেকেছি সেখানে সব নিয়ম মেনেই থাকতাম।



মোহাম্মদপুরে ২০১১ সালের দিকে একদিন অফিসে আসছিলাম। দেখলাম হাউজিং লিমিটেডের তিন নম্বর রোড়ে পুলিশ একজন দারোয়ানকে মারছে। আর বলছে, তুই জানস হে কই থাকে। ক। নইলে জানে মাইরালামু। আমি জানতে চাইলে উল্টো বললো, চইলা যান। নইলে খবর কইরা দিমু। আমি কথা বাড়ালাম না।



শুধু বললাম- এভাবে কাইরে মারন ঠিক না। অফিসারের সাথে থাকা চামুণ্ডারা আমাকে জ্ঞান দেবার চেষ্টা করলো।



এভাবে এ নগরে পুলিশের অনেক নিপীড়ন দেখেছি। মাসখানেক আগে দেখলাম আরামবাগে- পুলিশ এক ছাত্রকে কিল ঘুষি মেরে তাকে তাদের গাড়িতে তুলতে বাধ্য করছে। তার অপরাধ সে রাত ১১ টার সময় ওভার ব্রিজের কিনারে খাড়ায়া সিগ্রেট খাচ্ছে।



এর ক'দিন পর জানুয়ারী ৭ কি ৮ তারিখে এলিফ্যান্ট রোড়ের মাল্টিপ্ল্যান সেন্টারে গেলাম কম্পিউটারের সাউন্ড সিস্টেম কিনতে, সেখানে দোকানি বলল- মাত্র পুলিশ তাদের মার্কেট থেকে দুজনকে ধরে নিয়ে গেছে। একজনের পকেটে সিগারেট পাইছে। বলছে, তুই গাঁজা খাস। চল থানায়, মজা দেখামুনে।



পুলিশ এ রকম অনেক মজা দেখায়। এটা কেবল ভুক্তোভোগিরাই জানেন। তবুও বিপদে পুলিশের কাছে আমরা ছুটি, পুলিশ, মামলা নেয়, যার কাছ থেকে টাকা বেশি পায় তার পক্ষে যায় সব। দুপক্ষের কাছ থেকেই টাকা খায়। তার পর কোর্ট কাছারি- জীবন শেষ।



গ্রাম বাংলায় একটা কথা আছে যারে বিপদে ফেলতে চাও তাকে হয় মালাতে জড়িয়ে দাও, না হয় দ্বিতীয় বিয়ে করিয়ে দাও।



এত সব কথা কেন বলছি, বলছি আজ রাত সাড়ে ৮ টার দিকে রাজারবাগ গিযেছিলাম। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ৩৯ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠান চলছে। আলো ঝলমলে মঞ্চ। গান ভেসে আসছে -'অনন্ত প্রেম তুমি দাও আমায়'।

এ হত্যা গুম এবং বন্দুকযুদ্ধের সময় আমাদের মত গণ মানুষের প্রতিনিধি হয়ে কোনো শিল্পী সেখানে কথাটা উচ্চারণ করছেন। আবেগে চোখে পানি এসে গেলো।



পুলিশ সদস্যদের বলি 'অনন্ত প্রেম' দিন আমাদের। সে প্রেম মানবিক প্রেম। শুভ হোক প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ১১:৪৬

আকরাম বলেছেন: বিপদে ফেলতে চাও তাকে হয় মামলাতে জড়িয়ে দাও, না হয় দ্বিতীয় বিয়ে করিয়ে দাও।

০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ বিকাল ৫:২৬

মোরতাজা বলেছেন: :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.