নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মাদরাসা শিক্ষা; শিক্ষার্থী সম্পর্কে অনেকেরই ভুল ধারণা রয়েছে। এটা নিশ্চিত করেই বলতে চাই; এ কারণে যে এ শিক্ষা ব্যবস্থা; এর বিস্তৃতি এবং বাংলাদেশের রাজনীতিতে এর ভূমিকা নিয়ে অনেক তর্ক রয়েছে। অনেকেই এ বিষয়ে লিখে থাকেন এবং এরা বিষয়টি সম্পর্কে খুব একটা ধারণা না রেখেই কথা বলেন- সেটি আসলে বেদনাদায়ক এ জন্য যে; যে যা নয় তাকে সে দোষে অভিযুক্ত করা হয়।
মাদরাসা ছাত্রদের হেও করা; তাদের ওপর রাজনৈতিক দর্শন চাপিয়ে নিপীড়ন করার যে সংস্কৃতি আমাদের দেশে দশকের পর দশক ধরে গড়ে উঠেছে সেটির জন্য মঞ্চনাটক থেকে টিভি নাটক এবং হাল আমলের ডিজিটাল মিডিয়ার ''অবদান' বলে শেষ করা যাবে না।
পত্রি কুরআনে বলা হয়েছে- তোমরা পড়। সেখানে মাদরাসা শিক্ষার কথা বলা হয়নি। বলা হয়েছে-, পড় তোমার রবের নামে; যিনি তোমাকে সৃষ্টি করেছেন।
তবুও বিশ্ব রাজনীতির নানা আঙ্গিকের কারণে মাদরাসা নামের একটি শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে। মজার ব্যাপার হলো এর পৃষ্ঠপোষকতা করেছে ব্রিটিশ এবং ভারত সরকার।
ভারতের দেওবন্দ এবং বাংলাদেশের হাটহাজারী সম গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে রয়েছেন। হাটহাজারীর অনুসারীরা দেওবন্দের ভাবশিষ্য। আমাদের শিক্ষা ব্র্যবস্থায় যে রকম অক্সফোর্ড ;ক্যামব্রিজ টপে থাকে। তেমনি কওমি মাদরাসার শিক্ষার্থীদের কাছে দেওবন্দ।
ভারতীয় উপমহাদেশের মানুষ ধর্মপ্রাণ এবং ধর্ম পালন করুক বা না করুক ধর্মের অবমাননার বিষয়ে সোচ্চার।
কিন্তু টেকি দুনিয়াতে এবং কিছু 'প্রগতিশীল' মানুষের বদ্ধমূল ধারণা মাদরাসায় কেবল গরিবের ছেলে মেয়েরাই পড়ে এবং এরা জামায়াত ইসলামের রাজনীতির সাথে জড়িত; মওদুদীর দর্শনে বিশ্বাসী; তাই এদের কোনোভাবেই আষ্তায় আনা যাবে না। সম্ভব হলে এদের থেকে শত সহস্র গজ দূরে থাকো।
কথাটা আরেকবার মনে করিয়ে দিলেন একজন ব্লগার-;
আমি তার লেখার সাথে দ্বিমত করছি এ কারণে যে ছোট বেলা থেকে মাদরাসা; মক্তব; কওমি ও সরকারি মাদরাসার সাথে আমার পরিবারের সম্পৃক্ততার কারণে। আমার দাদা মাদরাসারা শিক্ষক ছিলেন।
তিনি মূলত হাফেজ্জী হুজুর এর অনুসারী ছিলেন। হাফেজ্জী হুজুরের কথা অনেকেরই অজানা। কারণ ব্লগ আর ফেসবুকের তথ্যসূত্রহীন জগতে এ সব আলেমদের নাম নেয়া হয় না। কারণ এখানকার সব আলোচনার মূল কেন্দ্র বিন্দু হলো রাজনীতি। কীভাবে রাজনৈতিক ফায়দা তোলা যায় তাই এর উদ্দেশ্য!
সমাজে প্রথাগত ধারণা হলো মাদরাসায় পড়ুয়াদের কোনো কাজ কর্ম নেই; ইমামতি-মুয়াজ্জিনি করে খাবেন। নইলে কুরআনের সুরা-সিফারা পড়িযে জীবন পার করবেন।
কিন্তু বাস্তবতা দিনে দিনে অনেক পাল্টেছে। তবুও এটা দৃশ্যমান মাদরাসার ছাত্র-শিক্ষকদের বিপক্ষে প্রচারণা ও নেতিবাচক ধারণা এখনো দূর হয়নি।
মওদূদীর পক্ষ বা বিপক্ষ নিয়ে আমি কোনো আলাপে যেতে চাই না। কারণ মওদুদীর ফলোয়ার কারা সেটা আমরা কম বেশি জানি। মাদরাসার চেয়ে স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীই এ ক্ষেত্রে বেশি- নিশ্চিত করেই বলতে পারি; এ কারণে যে বহুধা বিভক্ত মাদরাসার শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা জামায়াতের মতের সাথে দ্বিমত পোষণ করে আসছেন বহুকাল আগে থেকে।
মাদরাসা শিক্ষার্থীদের কাছে 'মওদূদী' দর্শন ফেৎনা হিসাবে পরিচিত। আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত এবং সাম্রাজ্যবাদীরাই তাকে আদর্শ ইসলামিক ব্যাক্তিত্ব মনে করেন; গরিব এ সব মাদরাসা শির্ক্ষীরা নন।
কিন্তু মওদূদীকে সামনে রেখে গড় পড়তা সব মাদরাসাকে আক্রমণ করার কারণে কখনো তারা বিক্ষুব্ধ হন। কিন্তু 'রাজনৈতিক' ইসলামের কাছে হার মানেন না।
ইসলামকে আমরা জামায়াতে ইসলামী ও মওদুদী দর্শন দ্বারা বিচার করি- অল্প কিছু ব্যাতিক্রম ছাড়া। এ জন্য যে কোউকে কেবল মাদরাসার শিক্ষার্থীদের সবক দিতে দেখি। নিজের দিকটা দেখেন না।
সমাজ ব্যবস্থা মাদরাসার শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের এতটা কোনঠাসা করে ফেলেছে যে; এখানে পড়া ছেলে মেয়েরা তাদের পরিচয় দিয়ে লজ্জিত হয়! বিস্ময় নিয়ে সেটি আমরা দেখি এবং আরো দেখি অনেকেই এটা নিয়ে রস করে মজা পান।
মাদরাসা শিক্ষার্থীরা দশকের পর দশক ধরে দেশের শীর্ষ বিদ্যাপীঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও বুয়েটে নিজেদের অবস্থান করে নিচ্ছে। মেডিকেল কলেজ ও অন্যান্য কারিগরি বিদ্যায়ও নিজেদের অবস্থান জানান এমন হারে দিচ্ছে যে সন্ত্রস্ত বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাদের ঠেকানোর জন্য নানা তরিকা নিয়ে হাজির হচ্ছে।
যারা মাদরাসার শিক্ষার্থীদের উপদেশ দেবার ভান করে তাদের মূর্খ বলে প্রচারণার সুযোগ নেন; তাদের জন্য বলি- মওদুদী দর্শন নয় উপমহাদেশের মুসলমানরা ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন শুরু করেছিল ইংরেজি ভাষা শিক্ষার বিরোধিতা করে। সে সময় মওদুদী কেডা? এটা কেউ জানত না। এটা এখন কারো কাছে ভুল সিদ্ধান্ত মনে হতে পারে। তারা যদি সে সময়কার হিন্দুদের মত কৌশলী হতেন ; তাহলে হয়ত পিছিয়ে পড়তেন না। এটা অন্য আলাপ।
দেওবন্দ মাদরাসা থেকে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন সমর্থন করা হয়েছিল। শাহ দেহলভী ও আরো কিছু মাদরাসার হুজুর ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে শরিক হয়েছিল। এখানে মওদুদীর ভূমিকা কোত্থেকে আসে আমি জানি না। মওদূদীর অবস্থান; আলোচনা এবং তার দর্শন সে সময় ছির বলে আমার জানা নেই। হুজুগে মাতাল হওনের জন্য কেউ কেউ সে প্রসঙ্গ তুলছেন। এটা সত্য নয়!
একজন কৃতি ব্লগার লিখেছেন- মাদরাসার ছাত্ররা ইবনে সিনা; আলবেরুনীর কথা ভাবো। সে কথাও আমারও। কিন্তু পথটা তৈরি করার জন্য যে বিশ্ববিদ্যালয়ের আঙ্গিনায় যেতে হবে- সেখানে তো বিরাট নীতিমালার দেয়াল তৈরি করে তাদের প্রতিহত করা হচ্ছে। আর ভাবা হচ্ছে এবার জমাত খতম হলো। আদতে মাদরাসায় পড়ুয়া কয় শতাংশ ছাত্র জামাতের রাজনীতি করেন; তার কি কোনো হিসাব কারো কাছে আছে? নেই। নিশ্চিতভাবেই নেই।
ব্লগারদের ব্লগানোর জন্য কিছু তথ্য দিয়ে রাখি বঙ্গদেশে ভারতীয় আদলে দেওবন্দের ভাবশিষ্যরা যে হাটহাজারী মাদরাসা গড়ে তোলেন। সেখান থেকেই মূলত কওমী মাদরাসার বিস্তার। দেশজুড়ে শত শত কওমি মাদরাসা রয়েছে। সেখানে গরিব- ধনী- সবপক্ষেরই সন্তানরা পড়তে যায়। গরিব মানুষ বেশি বলে আমাদের চোখে সেটি বেশি পড়ে।
আমরা যারা গরিব মানুষের অধিকারে কথা বলি তারা কিন্তু এতিম শিশুদের দায়িত্ব নিতে চাই না কিম্বা রাষ্ট্রকে বাধ্য করতে পারি না। যারা কিছু করে খাওয়ার ব্যবস্থা করছেন তারে সমালোচনা করতে পারি।
বঙ্গদেশে সরকারি মাদরাসার বিস্তৃতিও ভারত সরকারের হাত ধরে। কলকাতা সরকারি আলিয়া মাদরাসার পর ঢাকা আলিয়া এবং পরে সিলেট ও বগুড়ায় দুটো সরকারি আলিযা মাদরাসা স্থাপন করা হয়। যেখানে বিসিএস'র মাধ্যমে শিক্ষকরা নিযুক্ত হন।
এর বাইরে দেশজুড়ে শত শত মাদরাসা তৈরি হয়েছে।
এখন এ সব কি জামাত ইসলাম তেরি করেছে। উত্তর অবশ্যই না। দয়া করে ব্লগারদের খবর নিয়ে দেখতে বলি দেশজুড়ে কাওমি মাদরাসা ও সরকারি -আধা সরকারি মাদরাসাগুলো পরিচালনার কতৃত্ব কার হাতে বেশি। এখানে জমাতের উপস্থিতি ১০ শতাংশের বেশি হবে না। সেখানে মওদূদী দর্শনের অভিযোগে মাদরাসা শিক্ষার্থীদের জীবন বিপন্ন করার চেষ্টাকে নিন্দা করি।
মাদরাসার ছাত্ররা কেবল কম্পিউটার ; ইন্টারনেটরে জ্ঞানেই সমৃদ্ধ নন তারা দেশের শীর্ষ বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনাও করছেন। মাদরাসা শিক্ষাকে কীভাবে আরো এগিয়ে নেয়া যায় সে চেষ্টা করতে হবে। কিন্তু জামাত-মওদুদী জুজুর ভয়ে তাদের দাবিয়ে রাখার চেষ্টা কখনো সুফল বয়ে আনতে পারে না।
সবশেষে কথাটা বলি সেটি মাদরাসা হোক ও স্কুল-কলেজ হোক সবার জন্য প্রযোজ্য। গুণগত মান সম্পন্ন নৈতিক শিক্ষা। এটা আমার কথা না; ভারতের সাবেক প্রেসিডেন্ট এপিজে আবদুল কালাম ১৮ অক্টোবর ঢাকায় এক অনুষ্টানের বিশ্বের সামনে চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলাপে এ কথা বলেছেন। আমিও তার সাথে একমত নৈতিক শিক্ষার সঙ্কট কাটাতে হবে। আর শিক্ষার গুণগত মান নিয়ে আপস করারও সুযোগ নেই।
কিন্তু আমাদের চলমান পাঠ্যধারা আমাদের কতটা নৈতিক করছে? হাল আমলে ধর্ষণ; পরকীয়া; খুন; লুট; জবর দখল; অপহরণ; বিনাবিচারে হত্যা; দুর্নীতি এবং তারপর তার জন্য অনুশোচনা না করার যে প্রবণতা বাড়ছে সেটা থেকে কিছুটা শিক্ষা আমরা নিতে পারি।
বঙ্গবন্ধু ও জিয়াউর রহমান নিয়ে আমি আলাপে যাইনি কারণ তারা এ দেশের মাটি মানুষ এবং অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামকে বেগবান করেছেন; তাদের বাতলানো পথে হাঁটলে আমরা এগিয়ে যাবো। জয় হোক মানুষের। মিশে যাক বিভেদ-বৈষম্য।
২৭ শে অক্টোবর, ২০১৪ দুপুর ২:২৬
মোরতাজা বলেছেন: হুমমম, ধন্যবাদ।
২| ২৭ শে অক্টোবর, ২০১৪ দুপুর ২:০৪
দি রিফর্মার বলেছেন: সুন্দর ও যুগোপযোগী লেখার জন্য ধন্যবাদ।
২৭ শে অক্টোবর, ২০১৪ দুপুর ২:২৫
মোরতাজা বলেছেন: ধন্যবাদ
৩| ২৭ শে অক্টোবর, ২০১৪ বিকাল ৪:৩৭
অজানাবন্ধু বলেছেন: ধন্যবাদ ---------- অনেক অনেক ধন্যবাদ ।
২৭ শে অক্টোবর, ২০১৪ বিকাল ৪:৩৯
মোরতাজা বলেছেন:
৪| ২৭ শে অক্টোবর, ২০১৪ বিকাল ৫:০৩
মুকতোআকাশ বলেছেন: মাদ্রাসা শিক্ষার বিরুদ্ধে অপ-প্রচার আজকের নয়। যারা ইসলামকে ধংস করতে চায় তারা বুদ্ধিমান। তারা যানে ইসলামের মেরুদন্ড শিক্ষা। তাই নৈতিক শিক্ষার বিপরীতে তারা চালু করেছে নীতিহীন শিক্ষা। আর মাদ্রাসার বিরুদ্ধে অপ-প্রচার চালিয়ে ও বিভিন্ন ভাবে এই শিক্ষা ব্যাবস্থা টিকে ধ্ংস করতে চায়। মাদ্রাসা সম্পর্কে অনেক তথ্য দেবার জন্য ধন্যবাদ।
২৭ শে অক্টোবর, ২০১৪ বিকাল ৫:২৫
মোরতাজা বলেছেন: পড়ার জন্য আপনাকেও ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১| ২৭ শে অক্টোবর, ২০১৪ দুপুর ১:৫২
পরিবেশ বন্ধু বলেছেন: পত্রি কুরআনে বলা হয়েছে- তোমরা পড়। সেখানে মাদরাসা শিক্ষার কথা বলা হয়নি। বলা হয়েছে-, পড় তোমার রবের নামে; যিনি তোমাকে সৃষ্টি করেছেন।
এখন পড়া কিভাবে শুরু করতে হবে সেটার দিক নির্দেশ দিয়েছেন আমাদের নবী
পাক হযরত মোহাম্মাদ সাঁ ।
মাদরাসা অর্থ কি , প্রতিষ্ঠান বা জ্ঞানশালা ।
সার্বিক অর্থ পড়া বা শিক্ষা , যা হাদিস শরীফে প্রমাণ ফরজ হিসাবে ।। ইসলামের
সোনালী যুগ থেকে অদ্যবধি পর্যন্ত মাদরাসা শিক্ষা চালু আছে , ছিল এবং ভবিষ্যতেও থাকবে ।
কিন্তু তা যেন ইসলাম বহির্ভূত না হয় বা সমাজ , ও মানব এর বিপরিদ বিধ্বংসী কোন রাজনৈতিক হাতিয়ার না হয় ।
সুন্দর আলোচনা করেছেন , ধন্যবাদ ।