![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্বের সরাসরি বিরোধী চিহ্নিত রাজাকার-আলবদরদের বিচার কার্য শুরু হয় ২০১০ সাল থেকে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠন করার পর থেকে অপরাধী অনুসারে শুরু হয় প্রসিকিউশন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে মানবতা বিরোধী অপরাধে দন্ডের প্রথম রায় আসে "মাওলানা আবুল কালাম আজাদ" এর বিরুদ্বে। তার বিরুদ্দ্বে ফাঁসির রায় দেওয়া হয়। কিন্তু তার আগেই তিনি সীমান্ত দিয়ে পালিয়ে পাকিস্তানে চলে যান বলে গায়েবী ভাবেই বাঙ্গালী উদযাপন করে এই জয়।
এর পর আসে ২য় রায়ের দিন। এবার ৫ ই ফেব্রুয়ারী, মঙ্গলবার। মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত জামায়াতের সেক্রেটারী জেনারেল "আব্দুল কাদের মোল্লা"। তার বিরুদ্বে আনিত অভিযোগ সন্দেহাতিত ভাবে প্রমাণিত হবার পরেও বিজ্ঞ আদালত তাকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দেন। আর এইখানে শুরু হয় সেই কাহিনী, দৃশ্যপট, টার্নিং পয়েন্ট।
এই রায় স্বভাবতই বাংলার স্বাধনতাকামী, মুক্তিযুদ্ববিশ্বাসী জনগণ হতাশ হন। এই রায়ের মাধ্যমে তারা আওয়ামীলীগের সাথে জামায়াতের আঁতাত হয়েছে বলে ধরে নেন। গালাগালি করেন। সবাই ব্যস্ত টিভিতে কেন "কাদের মোল্লা" যাবজ্জীবন পেল এই বিষয়ে খুটিনাটি দেখেন। বাধে বিপত্তি এরই মধ্যে। আব্দুল কাদের মোল্লাকে তার রায়ের পর যখন প্রিজন ভ্যানে করে প্রিজন সেলে নিয়ে যাবেন ঠিক তখনই তিনি বিভিন্ন টেলিভিশন ভিডিওতে তার পক্ষে রায় হয়েছে বা তিনি রায় জিতেছেন এই সম্বলিত "ভি" চিহ্নটি প্রদর্শন করেন। যা মুক্তিযুদ্ব চেতনাকামী মানুষকে আহত করে একই ভাবে ক্ষুব্দ করে তোলে।
সবাই ফেইসবুকে হতাশামূলক স্ট্যাটাস দেন। এরই মধ্যে Blogger and Online Activist Network (BOAN) ফেইসবুকে ইভেন্ট খুলে বিকাল ৪ টায় শাহবাগে মানব বন্ধন। ঐ ইভেন্টে প্রাথমিকভাবেই অনেকেই সারা দেন। শেয়ার দেন এই নিউজ। বিকাল ৪ টায় যখন শাহবাগে গিয়ে দেখা যায় ৫০/৬০ জন মানুষ হয়েছে। তখন তারা সিদ্বান্ত নেয় যে যারাই এসেছে তারা মানব বন্ধন করুক। যত বিকাল গড়ায় তত দেখি ভীড় বাড়ে। এর কারণ হল অনেকেই অফিস শেষ করে ফিরছেন। ভীড় বাড়তেই থাকে। একসময় বন্ধ করে দিতে হয় শাহবাগ মোড়ে যান চলাচল। এবং উপস্থিত জনতার সিদ্বান্তেই তখন শুরু হয়ে যায় শাহবাগ গণজাগরণ মঞ্চের কার্যক্রম।
এই গনজাগরণ মঞ্চের দাবীর প্রেক্ষিতে আইন সংশোধন করে কাদের মোল্লার সাজা বৃদ্বির জন্য রাস্ট্রপক্ষ মামলা রিভিউ করেন। যা এই মঞ্চের প্রাথমিক বিজয় হয়েছে বলে অনেকই মনে করেছেন।
শুরুতে সব ক্ষুব্দ মানুষজন এই শাহবাগে সংহতি জানায়। সকল রাজনৈতিক দল শুধুমাত্র বিএনপি বাদে এখানে সংহতি প্রকাশ করে। বিএনপি পর্যবেক্ষনে রাখে শাহবাগকে। একদিন শাহবাগের পক্ষে বলে তো আরেকদিন বিপক্ষে। দিন দিন শাহবাগ জনপ্রিয় হতে থাকে। এরই বিপরীতে তৈরি হয় "হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ" নামে একটি সংগঠনের কার্যক্রম। এরা ইসলামের হেফাজতকারী হিসেবে নিজেদেরকে পরিচয় দেয়। এবং শাহবাগ নাস্তিকদের অবস্থান বা যুদ্বাপরাধীদের বিচার চাওয়া ফ্যাসিবাদ, নাস্তিকতার শামিল তা তারা বলতে থাকেন।
৬ ই এপ্রিল তারা মতিঝিলে ১০ লক্ষ লোকে সমাবেশ করার ঘোষনা দেয়। অবশ্য কয়েকটি দলের হরতাল ডাকায় ১০ লক্ষ লোক না হলেও কানায় কানায় লোকে লোকারণ্য হয়ে যায় মতিঝিল-দিলকুশা-পল্টন এলাকা। এরই পরবর্তীতে ৫ ই মে ঢাকা ঘেরাও এবং ৬ ই মে সরকার পতনের আন্দোলনে মতিঝিল অবস্থানের ঘোষনা দেয় হেফাজতে ইসলাম। জনসমাবেশ করতে পারলেও রাতে অবস্থান করতে ব্যর্থ হয় হেফাজত। হেফাজতের সেই পেশি প্রদর্শনের সমাপ্তি ঘটে ৫ মে মধ্যরাতে মতিঝিলের শাপলা চত্বরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানের মধ্য দিয়ে। ঐ একই দিনে শাহবাগের মঞ্চও ভেঙ্গে দিয়ে তাদেরকেও সরিয়ে দেওয়া হয়।
সরকার পক্ষে আপিলের প্রেক্ষিতে আসামী পক্ষ ও রাষ্ট্র পক্ষে যুক্তি তর্কে উপস্থানপনের শেষে কাদের মোল্লার বিরুদ্বে ফাসি রায় দেওয়া হয়। মহামন্য সুপ্রিম কোর্ট এই রায় প্রদান করেন।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে কাদের মোল্লা ছাড়াও মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধে যুক্ত থাকার অভিযোগে রায় হয়েছে আরও পাঁচজনের বিরুদ্ধে। রায় হয়েছে জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমির গোলাম আযম, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, জামায়াতের নেতা কামারুজ্জামান, দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধে। তাঁদের মধ্যে একমাত্র গোলাম আযম ছাড়া মৃত্যুদণ্ডের রায় হয়েছে বাকি সবার বিরুদ্ধে।
কিন্তু আবদুল কাদের মোল্লার রায় যেভাবে বাংলাদেশের রাজনীতিকে নিয়ন্ত্রণ করেছে, আর কোনো নেতার বিরুদ্ধে আইসিটির দেওয়া রায় তেমনটি করতে পারেনি।
এর নেপথ্য কারণ হয়তো কাদের মোল্লার সেই "ভি" চিহ্ন ই!
কাদের মোল্লা হয়তো "ভি" চিহ্নটি না দেখালে আজকে শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চ, হেফাজতে ইসলাম সৃষ্টি হত না। বিভক্ত হয়ে পড়তনা আস্তিক-নাস্তিক দ্বন্দে। রাজনীতির এত মারপ্যাচ উত্থান-পতন আসতো না। সবচেয়ে বড় কথা কাদের মোল্লার মামলার রিভিউ ই সম্ভবত হতো না। তাতে কাদের মোল্লা বেঁচেই যেতেন। এইভাবে ফাঁসি কাষ্ঠে হয়তো ঝুলতেও হতো না।
তাই বলাই যায় একটি "ভি" চিহ্ন সারাজীবনের কান্না !!
Find / Follow me on Facebook:
https://www.facebook.com/neelchy
২| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ৯:০০
বোধহীন স্বপ্ন বলেছেন: শুধু একটা ভি-চিহ্ন এত্ত কিছু কইরা ফালাইলো !!!!
©somewhere in net ltd.
১|
১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ৭:১৩
সাদা মনের মানুষ বলেছেন: