নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
শিশুর মত চোখ দিয়ে দেখি আমার এই বিশ্ব।মানুষ স্বপ্নের কাছে হেরে যায় না, হেরে যায় নিজের প্রত্যাশার কাছে। প্রত্যাশা থাকে আকাশচুম্বী অথচ প্রচেষ্টায় থাকে শুধুই স্বপ্ন।
প্রভাতীর বাম হাতে ভীষণ ব্যথা,নড়াচড়া করতে গেলে হাতের মাংশপেশীতে যখনি টান পড়ছে তখনি উহ! শব্দটা মনের অজান্তে বের হয়ে আসছে।মা সেই কোন সকালে বলেছে একটা নাপা খেয়ে নিতে।
কিন্তু কে শোনে কার কথা।মা 'কে সে বলেছে, "ব্যথাটা থাকুক মা,সামনে এগিয়ে যেতে হলে এমন ব্যথা পুষে রাখা চায়"।
প্রভাতী কলেজ থেকে বাসায় ফিরছে রিকশায় করে।পনের টাকা রিকশা ভাড়া।রিকশায় উঠার পর কিছু দূর যেতে না যেতে খেয়াল করে রিকশা ওয়ালা ভাই অন্য রিকশাওয়ালা'র সাথে ইশারায় কী যেন বলে,ও ঠিক বুঝতে পারেনা।
রিকশাওয়ালা ভাই পেছন ঘুরে ওর মুখের দিকে তাকায়।ভীষণ বিরক্ত লাগে।এদের এই দোষ একটু সুযোগ পেলে তাকাবে, কোন মেয়ে হেঁটে যাচ্ছে ঘাড় ঘুরিয়ে পেছন ফিরে ফিরে তাও দেখবে,টাকা দেবার সময় ইচ্ছে করে হাতের আঙুলে স্পর্শ করবে। কেন যে এমন করে!!!
বাসায় পৌঁছাতে এখনো পথ বেশ বাকী।হঠাৎ রিকশা ব্রেক করল,প্রভাতী সামনের দিকে তাকিয়ে দেখে বাঁশ দিয়ে ব্যারিকেড দেয়া হয়েছে উভয় পাশে।রিকশাচালক বলছে "আপা দেখেন কী কান্ড!"বর্ষাকালে রাস্তা ও ড্রেন ঠিক করছে।রাস্তার একপাশে বেশ ময়লা জড়ো করা।
প্রভাতী দেখছে - একজন লোক বাঁশ উঁচু করে দিল আর সামনের রিকশা'টা চলে গেল,উঁচু করা বাঁশের নিচ দিয়ে। প্রভাতী তার রিকশাচালক কে বলল" আপনি রিকশা নিয়ে আসেন, আমি হেঁটে এইটুকু পথ পার হয়ে আসছি"।
প্রভাতী রিকশা থেকে নেমে গেল,রিকশা চালক বাশঁ উঁচু করছে কিন্তু একা পারছেনা,কিছু না ভেবে প্রভাতী বাঁশে হাত রেখে উঁচু করে দিল, এর পর রিকশা একটু ঢুকতে না ঢুকতে ওখানকার এক ড্রেনের কর্মী বলল "না!এই রিকশা যাবেনা"।রিকশা ওয়ালা অবলীলায় হার মেনে নিয়ে প্রভাতী'র কাছে টাকা চাইল।প্রভাতী' তখনো হাত উচুঁ করে অন্য রিকশা,মোটর সাইকেল, সাইকেল যাবার সুযোগ করে দিল।সেই রিকশাচালক বলল আপা ছাড়েন, টাকা দেন।
প্রভাতীকে এখনো অনেক পথ হেঁটে যেতে হবে,একটু খানির জন্য লোকটা পুরো টাকাটাই নিল।প্রভাতী কিছু বলল না। টাকা দিয়ে ও হেঁটে যেতে উদ্যত হল।ঠিক তখন খেয়াল করল একটা অ্যাম্বুলেন্স দাঁড়িয়ে আছে,প্রভাতী এগিয়ে গিয়ে দেখল ওর ভেতরে রোগীও আছে।
প্রভাতী কারোর জন্য অপেক্ষা করল না,সে নিজেই হাত উচুঁ করে গায়ের সবটুকু জোর খাঁটিয়ে সেই বাশঁ তোলার চেষ্টা করল।কিছুটা তুলে যখন পারছিল না আর ঠিক তখন সেই ড্রেন ম্যান সাহায্য করল। অ্যাম্বুলেন্স পার হল কিন্তু সামনে আর একটা ধাপ মানে সামনে ছিল আর একটা বাঁশ।
প্রভাতী এগিয়ে গেল,ওই বাঁশের ওখানে গিয়েও হাত দিয়ে বাঁশ উচুঁ করে ধরল ।মজার ব্যাপার হল তখন ওকে দেখা দেখি রাস্তা দিয়ে হেঁটে আসা আরো তিনজন মানুষ এসে সেই বাঁশে হাত আরো উঁচু করে ধরল।নিমিষে চলে গেল রোগী বহনের সেই গাড়িটি।
ঠিক সেই সময়ে প্রভাতীর মনের মাঝে একটা কথায় বেজে উঠল,"সাহায্যের জন্য বেশি নয় শুধু একটি হাত বাড়ানোই প্রয়োজন।"
প্রভাতী তখনও দাঁড়িয়ে বাঁশ হাতে, অন্য মানুষ গুলো চলে গেলেও সে বেশ কিছু মোটর সাইকেল, রিকশাগুলোকে বের হতে সুযোগ করে দিচ্ছে।প্রভাতীর মুখ নেকাব দিয়ে ঢাকা,কেউ ওর মুখ দেখতে পারছেনা,কিন্তু সবাই তাকাচ্ছে ওর দিকে।
প্রভাতী দেখছে সবার চোখে মুখে একটা লজ্জা মিশ্রিত আনন্দের হাসি।প্রভাতী হেঁটে হেঁটে বাড়ি ফিরছে আর ভাবছে শুরুটা করতে হবে নিজের থেকে, যে যা ভাবে ভাবুক,আমার কাজটুকু শুধু আমিই করব।আর কোন পিছুটান নয়,নারীরাও পারে।
১৪ ই জুন, ২০১৬ সকাল ৯:৫৬
নীল মনি বলেছেন: শুকরিয়া
২| ১৩ ই জুন, ২০১৬ দুপুর ২:৩৩
শারলিন বলেছেন: ভাল লেগেচে
১৪ ই জুন, ২০১৬ সকাল ৯:৫৭
নীল মনি বলেছেন: বালিকা তুমি!! শুকরিয়া
৩| ১৫ ই জুন, ২০১৬ ভোর ৫:০৩
কালনী নদী বলেছেন: Keep going sister! aihamdulilah em following you.
২২ শে জুন, ২০১৬ দুপুর ১:১৮
নীল মনি বলেছেন: শুকরিয়া ধন্য হলাম
©somewhere in net ltd.
১| ১১ ই জুন, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৫৫
সুমন কর বলেছেন: প্রভাতী'রা এগিয়ে যাক।
ভালো হয়েছে। +।