নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
শিশুর মত চোখ দিয়ে দেখি আমার এই বিশ্ব।মানুষ স্বপ্নের কাছে হেরে যায় না, হেরে যায় নিজের প্রত্যাশার কাছে। প্রত্যাশা থাকে আকাশচুম্বী অথচ প্রচেষ্টায় থাকে শুধুই স্বপ্ন।
কেন জানি আমরা ছিলাম একটু উল্টো। নিয়ম করে সবার মত তুমি তুমিতে সম্পর্ক আটকে ছিল না।আমাদের সম্পর্ক ছিল তুমি আপনিতে।ও আমাকে আপনি বলত,আর আমি বলতাম তুমি।আপনিই বেশ-তুমিতে নয়।বাহিরে একসাথে দেখলে যে কেউ কনফিউজড হয়ে যেতে পারে।তবুও সে প্রথমে বলে নিল "আমাকে তুমি বলতে পারবে না,আপনি বলবে।আর আমাকে বলতে হবে তুমি।"এ কেমন অনাচার বলতে পারো মেয়ে আমি-আমাকে শুনতে হবে আপনি।আর বলার সময় তাকে বলতে হবে তুমি!
সব মেনে নিলাম।মনে হল সে যেটাতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে সেই হোক। ক্ষতি নেই।
জানালার পর্দা সরানো নেই তার আগে বুঝে গেছি আজ পূর্ণিমা।এই পূর্ণিমা এলে আমি কেমন করে যেন বুঝে যাই!আমি আমার মাঝে থাকিনা।আমার তখন মনে হয় শুধু একটু বাহিরে যেতে পারতাম।আমিও ভেসে যেতে চাই চাঁদের রূপালি আলোয়।আসলে মনের অনেক কথা,অস্থিরতা,সব মনে'তেই থেকে যায়।আমার ওকে বলতেও লজ্জা লাগে।কিন্তু সেদিন রাতে হঠাৎ মনে হল -আজ আমাকে বলতেই হবে আমি বাইরে যাব।আমি শহরটাকে দেখব।আমাদের শহর।এই শহর মন্দ নয়,আকাশ দেখা যায়, দেখো চাঁদ মেঘের আড়ালে লাজে ঢেকে ঢেকে রয়।এই শহর, আমার, এই শহর আমাদের।
সত্যি সেদিন বাহিরে ছিল চমৎকার জ্যোৎস্না।এমন জ্যোৎস্নায় নিজেকে বন্দী রাখা যায় না।ঝিরিঝিরি মিষ্টি বাতাস,যেন দূর থেকে সে বাতাসে ভেসে আসে হাসনাহেনার সুবাস।
রাত প্রায় বারোটা।আমি আমার সমস্ত দ্বিধা একপাশে সরিয়ে রেখে নিঃসংকোচে তূর্যকে বললাম "এইইইই শুনছ।"
সে আমার দিকে তাকিয়ে হেসে দিল।
বলল"হু শুনছি তো!
কিছু বলবেন?"
আমি বললাম তারে "আমার খুব বাহিরে হাঁটতে যেতে ইচ্ছে করছে।সত্যি সত্যি যেতে ইচ্ছে করছে!"
সে বলল "আচ্ছা,চলেন,তবে লুঙীটা বদলে নিই।"
"ইয়াহুউউউউউউ
লুঙী নো প্রবলেম"
তূর্য বলছে"আমি লুঙী পরে বাহিরে যাই না,আপনি রেডি হোন আমি প্যাণ্টটা পরে আসছি।"
আমি শাড়ি পরে নিলাম।হলুদ রঙের শাড়ি।মেয়েরা নীল শাড়ি পরে,আমি পরেছি হলুদ।আমি কেন হলুদ শাড়ি পরেছি সে কথা বলব না,জানি সোডিয়াম আলোর নীচে সেই হলুদ আর হলুদ থাকবে না,তবুও হলুদের উপর হালকা হাতের কাজের শাড়িটা পরে নিলাম।তবে মনে হল হলুদ নিশ্চয় তার পছন্দ হবে না।
তার আর আমার, আমাদের এখনো জানা হয়ে উঠে নি কার কি পছন্দ!
আমি খোঁপা বেঁধে নিলাম,আর চোখেতে একেঁ নিলাম একটুখানি কাজল।কাজল পরতে আমার খুব ভালো লাগে।আয়নায় যখন নিজের কাজল দেয়া চোখ দেখি তখন একটা মায়া মায়া লাগে।মনে হয় মেয়ে তুমি কাজল পরো তোমার চোখেতে।
আমি শাড়ি পরে তার সামনে এসে দাঁড়ালাম,সে একটিবারের জন্য বলল না আমায়, কেমন দেখাচ্ছে,সে বলল"এসেছেন,এত তাড়াতাড়ি! মেয়েদের রেডি হতে তো দেরি লাগে,হাহাহা।"
তার সেই হাসিতে আমি রাগ করতে পারতাম কিন্তু ইচ্ছে হল না।আমি বাহিরের ভেসে যাওয়া জ্যোৎস্নার মুগ্ধতায় ডুবে গেলাম।
তূর্য আর আমি,আমরা হাঁটছি পাশাপাশি।
রাস্তার পাশে এখানে ওখানে কেউ কেউ ঘুমায়।অদূরে কিছু কুকুর চিৎকার করছে।
হাঁটছিআমরা,আমাদের শহরে।এই শহরের নাম আমাদের শহর।
"আচ্ছা রাস্তার কুকুরগুলা ঘুমায় না।"
তূর্য ঃ"নাহ তো"।
আমি বলছি "এবার ঠিক শীত পড়বে।"
তূর্যঃ"হুম হয়ত।"
দেখ তূর্য " সোডিয়াম বাতিতে শহরটা বেশ রঙিন"
"চমৎকার!"
"জীবন বড় সুন্দর!"
"আমি হারিয়ে যাচ্ছি সত্যি।"
হারাবেন কেন? রাতের পরিচ্ছন্নতায় এই শহরে
হারানোর ভয় নেই।আমিপথ চিনিয়ে দেব।"
আমি হাঁটছি তো, আরআর এদিক ওদিক দেখছি,দেখছি এই শহর কেমন।মাঝে মাঝে কথা হচ্ছে। হাঁটতে হাঁটতে অনেক পথ হেঁটে এসেছি।
আমি বলছি"এইইইএ তূর্য একটা গান ধর তুমি।"
আমি পরিপূর্ণ ভাবে হারিয়ে যাচ্ছি ।আমি উচ্ছ্বসিত, আমি চঞ্চলা হরিণীর মত এদিক সেদিক চাইছি শুধু।আমি নিজেকে সামলাতে পারছিনা আজ।
"চাঁদের হাসি বাধ ভেঙেছে ।
উপচে পড়ে অালো। ও ও ও রজনীগন্ধা তোমার গন্ধ সুধা ঢালো। ও ও ও চাঁদের হাসি..."
ও যখন গান গায় আমার ভীষণ ভালো লাগে।জীবনের রঙগুলো ছুঁয়ে দেখতে ইচ্ছে করে।ভালোবেসে একটা মানুষ আমার জন্য গান করছে-এর চেয়ে ভালো উপহার আর কিই বা হতে পারে!!আমি খুশি হুই যখন ও গান গেয়ে উঠে।
"এইইই চল বসি। একটু জিরিয়ে নেয়।আর একটু চা খাই।"
"লাল মগে?
"হুম্মম্মম সামনেই হারিকেন জ্বালানো ছোট্টদোকান,
ওদের মগ লাল আছে কিনা তা তো জানিনা।"
"আচ্ছা।"
তূর্যঃহুম্মম।
শুনেছ প্রহরী রা বাঁশি দিচ্ছে।
"চাচা দুইটা লাল চা।
হালকা লিকার কিন্তু মগ ভর্তি।"
"হুম্মম্মম্ম
মগ ভর্তি!"
" অবশ্যই কাঁচা পাতির!"
এই তূর্য আমি তো কাঁচা পাতির চা কখনো খাইনি।কথা বলতে বলতে এর মাঝেই চা এসে গেল।আমি চা মুখে নিয়ে"হুম্মম্মম মজা তো!"আচ্ছা কাঁচা পাতি কি?কাঁচা পাতি মানে হচ্ছে গরম জল দিয়ে লিকার ছাড়ান। চুলায় জ্বাল করে না।
"আচ্ছা।"
"হুউউ চিনি হয়ছে তোমার টা?"
"হ্যাঁ! অামি চিনি একটু কম খাই"
"আমিওঅঅঅঅঅঅ"
"চিমটি।"
তূর্যঃ"খামচি।"
এই শুনো তূর্য -চা বানানো চাচার মনে হয় ঘুমে ধরেছে"
হিহি"
।"চাচা আপনিও চা খান।"
"চাচা!বাড়ি কতদূর?
বাড়িতে চাচী আছে???"
এতসব প্রশ্ন চাচাকে করেছিলাম আমি।তূর্য কিছুই বলল না,ও শুধু হাসল,আর বলল "আপনি কিন্তু ভালো'য় গল্প করতে পারেন!জানেন "চাচা জিগায় মেয়েডা অাপনার কে লাগে?"
"হাহাহ"
"বলে দাও যা খুশি।"
তূর্যঃ"হুমম"।
"আচ্ছা!তুমি কি বললে উনাকে?"
তূর্যঃ"হুম"।"আমি চাচাকে একটা ছবি দেখালাম শুধু।তাতেই চাচা বুঝে গেল।"
"কি বুঝল?ঠিক আছে!যাবার আগে চুপটি করে শুনে যাব চাচার কাছে!
চাচার বউমা পছন্দ হল?"
"বলবে না তাই তো?যাও।
"বল না! কানে কানে চাচাকে যা বললে!"
তূর্যঃ"কিছু কথা থাক না গোপনে!"
"হুম্মম"
"চাচাকে টাকা দিয়ে দাও।চল উঠি এখানে অনেক মশা!"
আমি চাচার কাছ থেকে বিদায় নিলাম"চাচা আসিইই কেমন,আস সালামু আলাইকুম।"
তূর্যঃ"হাঁটবেন নাকি রিকশা নেব?"
"আর একটু হাঁটি,ক্যামন!"
তূর্যঃ "হুম"
"আচ্ছা,শোন কোন রিকশা দেখছি না তো!"
তূর্যঃ"সামনে মোড়ে পাওয়া যাবে।"
"আচ্ছা চল।"রাতের নিজস্ব সৌন্দর্য আছে!"
তূর্যঃ"বুঝলেন নিশ্চুপ আলো আধাঁর।রিকসার টুং টাং শব্দ মাঝে মাঝে।প্রিয়জনের উপস্থিতি সেই সৌন্দর্য বাঁড়িয়ে তোলে।"
"হুম্মম,রিকশা ডাক দাও।"
তূর্যঃ"হুউউম।"
"ডাকোনা,হাঁটতে পারছি না আর!
তূর্যঃ"রিকশা পেতে হলে অারো সামনে যেতে হবে।"
"আচ্ছা চল।"
আমি গুনগুনিয়ে গান গাচ্ছিলাম-"এ পথ যদি না শেষ হয় তবে কেমন হত তুমি বলতো!"
গান গায়ছেন তো একটু জোরে গায়লে এই অধম শুনতে পেত!
আমি বললাম এই শুনো,এত শুনে কাজ নেই।শুনো
-"হুম বলেন।"
"ওই ব্রিজের ওই খানে একটু দাঁড়ায়?
ওই যে নিচ দিয়ে নদী বয়ে যায়
দাঁড়াবে?"
তূর্যঃ"ওটা ব্রিজ না কালভার্ট!"
"চল না!ওই হল,ব্রিজ বা কালভার্ট,একটা হলে তো হল."
তূর্যঃ"হুম চলুন।চুপকেন?"
কই চুপ,আমিই তো বকবক করছি।তুমি তো চুপ, শুধু হ্যাঁ, হু করছ! আমার একটা ইচ্ছে আছে,তোমায় আমি হুম,হুম গুলিয়ে শরবত বানিয়ে খাওয়াব!
"আচ্ছা খাওয়াবেন।
মেম সাহেবা আজ অনেক বাতাস তাইনা?
হুম,ঠিক বলেছ তূর্য,আসলে আমি
ভাবছিইইইইইইইইই তো,মাঝে মাঝে
ভাবলে এমন চুপ হয়ে যায়!
তূর্যঃ"অামার তো ঠান্ডা লেগে যাচ্ছে,কিন্তু
বাতাসের ঘ্রাণ নিই,কিন্তু ভালও লাগছে।"
তোমার ঠান্ডা লাগছে তাহলে চল উঠি।
তূর্যঃ"না না থাক।"
"রিকশা নাও।"
তূর্যঃ"নাহ!থাকি একটু!"
"আচ্ছা "
"বাসায় যাবে?"
তূর্যঃ"রিকশা
অাসুক অাগে, তারপর তখন যেতে ইচ্ছে করলে যাব।"
"আচ্ছা।"
"এখানে আমার কাছে এসে দাঁড়াও শীত কম লাগবে।
কি কম লাগে ঠান্ডা?
বেশ বাতাস!"
তূর্যঃবেশ বাতাস!কাঁপুনি দিয়ে যায়!
এইইই তূর্য আকাশের চাঁদ জলের মাঝে খেলছে তাইনা?
হুম্মম্ম.
চল চল আর না!বাতাসে জলের খেলায়
ঠান্ডা লেগে মায়ের কাছে বকা শুনতে হবে তো!
তূর্যঃ"আইচ্ছা চলেন।"
তূর্যঃ"এই রিক্সা যাবা?ওই খালি!"
"আমি ডাকি?"
তূর্যঃ"হুম ডাকেন।"
"এইইইইই মামা যাবেন?"
"এত রাতে কই যাইবেন?
তেমন কোথাও না, শুধু ঘোরাবেন আমাদের কে?"
তূর্যঃ"কি রিক্সাওয়ালার ভাগ্নি, ভাড়া তো দেয়াই লাগব না!হাহাহা!"
"হুম তুমি দিবা!"
তূর্যঃ"আমি দিব কেন?"
"ইশশ,তুমিই দিবা,আজ কোন ভাড়া ঠিক হবে না
আজ ঘুরতে বের হয়েছি যে!"
তূর্যঃ"যেমনে ডাক দিলেন মামা! ওতো ভাড়াই নেবে না"
"ঘুরব।"
তূর্যঃ"হুম।"
"যাও উঠব ই না!তুমি একা ঘুরো
আমায় বাঘে খাক, বেশ হবে!"
তূর্যঃ"হাহাহা
হাহাহাহ
বাঘে খাবে কেন?"
"তুমি তো একাই ঘুরবা?"
তূর্যঃ"না,অাাজ দুজনে!"
যাবই না,রাগ করেছি।
তূর্যঃ"কেন? এত রাগ কেন মেয়ে!"
"এই মামা আমি যাব চলেন উনি যাবেনা।
আমি রিকশায় উঠে বসলাম।"
তূর্যঃ"এই দেখ দেখি,আমিও যাব তো, আমাকে নিবেন নাহ!"
"উঠে বসলেই হয়!উঠো উঠো!"
এতরাতে একা পথে ফেলে গেলে ভূতে খাবে,হাজার হোক একটাই তুমি!
তূর্যঃএই তো উঠেছি আমি,আর ঢং করতে হবে না।"
"বস,বসতে পেরেছ তো?দেখ সাইড দিতে গিয়ে আবার পড়ে যেও না
তূর্যঃ"পড়ে গেলে ধইরেন।"
"ইশশ
পড়ে যাবে কেন?
জায়গা তো আমার বেশি লাগে।"
তূর্যঃ"যদি পড়ে যায়?"
" আমি তো মোটু"
তূর্যঃ"হুম"
"পড়বে না।ইনশাআল্লাহ্"
তূর্য"আমার কমই জায়গা লাগে!"
আমি বললাম"হুম লাগবেই তো,তিনবেলা রুটি খাও,রুটি খাওয়ার ফল,হাহাহ।"
তুর্যঃ"রুটি খাওয়া ভালো।"
আমি ঃ"ভালো সে তো নিজের বেলায়,আমাকে তো বল না!
একাই খাও।"
তূর্য ঃ"হুম,আপনিও খান!"
আমি তূর্যকে বললাম"হুম,খেতে হবে বুঝেছ!ওমন জড়োসড়ো হয়ে বসেছ কেন?"
"রুটি খাওয়ার সুবিধা হল একটা আইটেম হলে চলে।"
"তূর্য ভালো করে বস।"
তূর্য বলল "হুম,I m easy।"
আমিঃ"হুম্ম
তাই তাই।"
এরপর আমি বললাম আমার ঘুম ঘুম আসছে।তোমার কাঁধে একটু মাথা রাখি?
তূর্য ছোট্ট করে বললঃ ওকে।
তূর্যের কাঁধে মাথা রাখলাম।আমি এ ক'দিনে জেনে গেছি, খুব ভালো করে যে -তূর্য নিজ থেকে আমার হাত ধরতে চাইবে না।আমি কোন অনুমতি না নিয়েই সকল দ্বিধা দূরে রেখে ওর হাতটা ধরলাম।ও আমার দিকে তাকিয়ে হেসে দিল।
এই পৃথিবীতে এমন কিছু মানুষ থাকে যারা অনেক কিছুই বলতে চায় কিন্তু বলতে পারেনা।কোথায় যেন দ্বিধা ওদের,এক পা এগোলে দশ পা পিছিয়ে আসে।ওরা যে ভালোবাসে না তা নয়,ওরা ভালোবাসতে জানে কিন্তু বলতে পারেনা।ওদের মনে হয় চোখ দেখে না হয় কেউ বুঝে নিক আমাকে।ওরা আসলে প্রকাশ করতে পারে না,হৃদয়ের ভেতরের কথা।তূর্য তেমন,ওদেরই দলে।আমাকে দেখলেই হাসে।আচ্ছা! একটা মানুষ এতো সুন্দর করে কেন হাসে?
তূর্যের কাঁধে মাথা ,হাতে হাত, মনে হল আমার আমিতে আমি আর নেই।আমরা দু'জনে হারিয়ে গেছি এই শহরে।তুর্যকে আমি বললাম- কি চমৎকার রাত তাইনা বল?
কেমন মায়াবী মায়াবী।আমার তো বাসায় যেতে ইচ্ছে করছে না।"
তূর্য বলল তাহলে থাকেন।
"ঘুম ঘুম চাঁদ ঝিকিমিকি তারা এই মাধবী রাত
আসেনিতো বুঝি আর জীবনে আমার!
ওগো মায়াভরা চাঁদ আর ওগো মায়াবিনী রাত"
হুম ভালো 'য় তো গাইলে!
আমার জন্য তো গায়ছিলে?
"হ্যাঁ তো আপনার জন্যই গেয়েছি,এখানে তো আর আমার অন্য কেউ নেই যে...
আমি বললাম কি গলায় কি, সেটা না ভাবলেও চলবে
বুঝেছ
গলা নিয়ে আর কিচ্ছু শুনতে চাইনা।
"জ্বী, ওকে"
আমি একটু রাগ করে বললাম "তূর্য, তুমি তো পচাঁ -আমি যা বলি সব মেনে নাও"
তুর্য কি বলল আমায় "হুম খুব খারাপ"
আমি বললাম এমন করলে ঝগড়া বাঁধবে না তো!
তুর্যের সোজাসুজি উত্তর আমি কাউকে জোর করিনা।
আমি বললাম ইশশ,হয়েছে।চল বাসায় চল।
হুম চলেন।
আমার ঘুমে ধরেছে।তুর্য বলছে ওর চোখে ঘুম নেই।আমি বললাম বাসায় চল, ঘুম আসবে ঠিক দেখ।জানো
স্নিগ্ধ বাতাসে আমার ঘুম ঘুম এসে গেছে।বুঝলে আমার মনে হচ্ছে হাঁড়েও বাতাস লাগছে।
হুম বুঝলাম।
আচ্ছা! তুর্য বল তো এই আকাশ কার??
এই আকাশ আমাদের।
তুর্য এই মায়াবী রাতে সীমাহীন মুগ্ধতা ভর করেছে বল।হুম
আমার যেতে ইচ্ছে করছে না আর তূর্য, কিন্তু তবুও বাসায় যাব। চল।তোমার ঠান্ডা লাগছে।
এই মামা রিকশা ঘোরাও।
একটা কথা তূর্য, আমি বাসায় গিয়ে ছাদে যাব কিন্তু।আমি ঠিক করেছি আমি ঘুমাব না।আচ্ছা।
রিকশা থেকে নেমে গেলাম আমরা।অতঃপর কিছুক্ষণ পরে আমরা একে অপরের হাত ধরে সিঁড়ি বেয়ে উঠছি।এক ধাপ এক ধাপ করে উঠছি আমরা।তূর্য বলল"আস্তে আস্তে উঠেন,পাশের ফ্লাটে সবাই ঘুমিয়ে।"
সিঁড়ি আর ফুরায় না,তূর্য এদিক ওদিক তাকায়,তারপর উঠার মত আর সিঁড়ি নেই।সামনে বিশাল চাঁদ,মাথার উপর চাঁদ আর মেঘের লুকোচুরি। আমি আর শাড়ি বদলায়নি,শুধু খোঁপাটা খুলে দিয়েছি।
তূর্যের হাঁচি লাগছে।ঠান্ডা লেগে গেছে।এই তূর্য ঘরে চল।"না মেমসাহেবা আমি আজ এখানেই থাকব,আপনার ঘুম এলে রেখে আসি?
তাহলে আমি তোমার কোলে মাথা রেখে ছাদে শুয়ে আকাশ দেখব,এইশহরের আকাশ, আমাদের আকাশ।যেখানে এই চাঁদের নিচে শুয়ে থাকবে একটি হলুদাভ প্রজাপতি ও তার নীলচে জোনাকি।
পৃথিবী ঘুমুচ্ছে,ঘুমুচ্ছে তূর্যের মেমসাহেবা।তূর্য চেয়ে আছে মেমসাহেবার দিকে, আর বসে বসে পাহারা দিচ্ছে যেন সে সুখের ঘুম ঘুমাতে পারে।মেমসাহেবা ঘুমুচ্ছে যেন মেঘের পালঙ্কে।পরম সুখে,ভালোবাসার ছোট্ট সংসারে।
মেমসাহেবা ঘুমাক,তূর্য পাহারা দিক-ওদের গল্প এইভাবে জমে উঠুক চাঁদ,নীলিমা কিংবা স্বপ্নময় বৃষ্টির রাত হয়ে...।
©রুবাইদা গুলশান
১১ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১২:১৭
নীল মনি বলেছেন: শুকরিয়া
২| ১১ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ সকাল ১০:৪২
রাজীব নুর বলেছেন: এটা কোনো গল্প নয়। বাস্তব বুঝা যায়।
১১ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১২:১৭
নীল মনি বলেছেন:
©somewhere in net ltd.
১| ১১ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ১২:৪৯
মাইনুল ইসলাম আলিফ বলেছেন: আপনি-তুমির গল্প ভাল লেগেছে।
তূর্য নামটা সুন্দর।