নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
শিশুর মত চোখ দিয়ে দেখি আমার এই বিশ্ব।মানুষ স্বপ্নের কাছে হেরে যায় না, হেরে যায় নিজের প্রত্যাশার কাছে। প্রত্যাশা থাকে আকাশচুম্বী অথচ প্রচেষ্টায় থাকে শুধুই স্বপ্ন।
আমার সাক্ষাৎকার
সাহিত্যে কিভাবে এবং কেন এলেন?
রুবাইদা : সাহিত্যে তো আমি আসিনি। আমি তো সবসময়ই সাহিত্যের মাঝেই ছিলাম। আমার অতিক্রান্ত প্রতিটা সময় সাহিত্যের মধ্য দিয়ে অতিবাহিত হয়েছে। আমার কথা, কাজ, আমার ভাবনা সাহিত্যের সাথে মিলেমিশে একাকার হয়ে গিয়েছিল এবং আনুষ্ঠানিকভাবে বই প্রকাশের মধ্য দিয়ে উপলব্ধি করলাম এতদিন আমি সাহিত্যের জগতেই ছিলাম।
মেলায় এবার আপনার কী বই আসছে?
রুবাইদা : এবারের মেলায় দেশ পাবলিকেশন্স থেকে ছোটগল্পের সংকলন 'অরণ্যের গুঞ্জন' নামক বইটি এসেছে।
নতুন বই সম্পর্কে কিছু বলুন
রুবাইদা : ‘অরণ্যের গুঞ্জন’ কয়েকটি গল্পের সমন্বয়ে একটি বই। মানুষের দৃষ্টিভঙ্গির পার্থক্য, জীবনের ছোট ছোট সুখ কিংবা দু:খ, অনুপ্রেরণা এসব কেন্দ্র করে গল্পের চরিত্রগুলো গড়ে উঠেছে। আশা করি বইটি পাঠকের ভালো লাগবে।
বইয়ের লেখাগুলোর বিষয়বস্তু নিয়ে যদি বলেন
রুবাইদা : এই বইয়ের প্রতিটা গল্পই ভিন্ন ভিন্ন বিষয়বস্তুকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে। অনুমান করে আমরা মানুষকে ভালো কিংবা মন্দ বিচার করে থাকি এবং এই বিচারটা করতে আমরা খুব একটা সময় নিই না। এটা ঠিক নয়। কাউকে ভালো কিংবা খারাপ ভাবার আগে একটু সময় নেয়া উচিত। অন্য একটা গল্প প্রসঙ্গে বলতে পারি -আজকাল লোক দেখানো কাজে বেশি ব্যস্ত আমরা। আমার সন্তানকে একটা দামি উপহার দিয়ে যদি সবাইকে জানাই, একটা সময় পর দেখা যাবে যার সামর্থ্য নেই সে-ও যে কোন উপায়ে টাকা জোগাড়ে সবাইকে জানান দিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। কে কী কারণে দুর্নীতির সাথে জড়িয়ে যায় সেটা বলা কঠিন। কিন্তু একজন মানুষ হিসেবে অন্য মানুষের এমন কাজ করা উচিত নয়; যাতে করে অন্য মানুষ দুর্নীতিতে জড়িয়ে যায়। প্রত্যক্ষ কারণে মানুষ যতোটা দুর্নীতি না করে পরোক্ষ কারণে তার চেয়ে অধিক করে। সমাজের এমন ছোট ছোট দিকগুলো বইটিতে বিষয়বস্তু হিসেবে প্রাধান্য পেয়েছে।
আপনার গল্পের পাঠক সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন কি?
রুবাইদা : সময়টা এখন একটু অন্যরকম। কবিতার বই পাঠক কিনতে কিংবা পড়তে আগ্রহী কম। গল্পে সবাই বেশ আগ্রহী এবং প্রায় অনেক পাঠকই বলেছেন ছোট ছোট গল্প লিখতে; যেন সময়ের ফাঁকে ফাঁকে পড়তে পারেন। বর্তমানের এই সময়ে ফেসবুক কিংবা ব্লগের যতই প্রসার ঘটুক আমি দেখেছি পাঠকরা বই হাতে ছুঁয়ে পাঠ করতে চায়। তবে বরাবরই বলব, কবিতার প্রাধান্য সেখানে কম।
বছরের অন্য সময় বই প্রকাশ না করে মেলায় কেন?
রুবাইদা : বছরের অন্যান্য সময় বই প্রকাশ করা গেলেও মূলত পাঠক এবং প্রকাশক চান বইটা মেলাতে আসুক। বলতে পারেন বইমেলাতে বই আসাটা ধারা হয়ে গেছে। প্রকাশক মেলাকে ঘিরেই প্রকাশ করতে এবং পাঠক মেলাকে ঘিরেই বই কিনতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। সেক্ষেত্রে আমি বলব, লেখকগণও বছরের অন্যান্য সময়ের চেয়ে এই সময়টাকে প্রাধান্য দিয়ে থাকেন।
সামগ্রিকভাবে মেলা সম্পর্কে আপনার ভাবনা জানতে চাই।
রুবাইদা : মেলা বলতেই একটা উৎসব, আনন্দ, লোকজনের সমাগমের চিত্র আমাদের চোখে ভাসে। প্রতিবছর বইমেলা হচ্ছে, পাঠক বই কিনছে। তবে মেলাতে প্রচুর পরিমাণে কাগজ নষ্ট হচ্ছে। সব বই পাঠোপযোগী নয়। টাকা দিয়েই ব্যক্তিগতভাবে বই ছাপানো যাচ্ছে। এটা কতটুকু সাহিত্যমানের হচ্ছে সেই বিচারে কেউ যাচ্ছে না কিংবা বলতে পারেন মহাকাল এর বিচার করবে। কিন্তু মহাকালের বিচারের আগেও নিম্নমানের সাহিত্যের প্রসার ঘটলে মানুষের বই কেনার আগ্রহ আরো কমে যাবে। এমনিতে পাঠকরা নতুন লেখকের লেখা পড়তে চান না, তারা ভাবেন নতুন লেখকদের লেখা বই কেনার অর্থ টাকা ও সময় নষ্ট করা। আমি মনে করি পাঠকগণ প্রচারণা দেখে নয়, অন্তত বই হাতে নিয়ে একটু পড়ে তারপর বই কেনার সিদ্ধান্ত নেবেন।
মেলা নিয়ে কোনো উল্লেখযোগ্য অভিজ্ঞতা?
রুবাইদা : মেলা নিয়ে উল্লেখযোগ্য অভিজ্ঞতা নেই। তবে বইমেলায় মোড়ক উন্মোচনের সময় একটা অভিজ্ঞতা হয়েছিল। বইয়ের যিনি লেখক মোড়ক উন্মোচনের সময় তাঁকে স্পেস দেয়া হয় কম, সবাই চান সামনে দাঁড়াতে; কিন্তু লেখকের ঠাঁই যেন নেই। লেখক নিজে সামনে জায়গা না পাওয়ায় তাঁকে পেছনের সারিতে দাঁড়াতে হয়। আমার সাথে এমন একটি ঘটনা ঘটেছিল।
লেখালেখি চর্চার ক্ষেত্রে প্রেরণা বা প্রভাব কার কাছ থেকে বা কিভাবে পেয়েছেন?
রুবাইদা : প্রেরণা ব্যাপারটায় পরে আসি। আমার আব্বু প্রায়ই আমাদেরকে নিয়ে ছড়া লিখতেন আর তা পড়ে আমাদেরকে শোনাতেন। আমরা বেশ আনন্দ পেতাম। এরপর আমি নিয়মিত ডায়েরি লিখেছি। সেখানে আমার মেজ আপু ডাক্তার আয়েশা শীলাকে কেন্দ্র করেই আমার সবকিছু লেখার শুরু। আমি ডায়েরিতে কিছু লিখে রাখতাম তারপর আমার আপু উত্তর দিত। এরপর হাবিজাবি যা কিছু লিখেছি আপু দেখেছে। বলত- ভালোই তো লিখিস। এরপর শুধু লিখে গিয়েছি। লিখেছি কবিতা কিংবা মনের কথা। কিন্তু আপুকে দেখানো হত না আর। বন্ধুরা বলত- তুই এত কী লিখিস? আমি বলতাম- আমার লিখতে ভালো লাগে। ওরা হাসতো আর আমি নিজেকে আরও লুকিয়ে ফেলতাম। কখনো আমার লেখা কেউ পড়বে সেটা আমি স্বপ্নও ভাবিনি।
আমাদের দেশে বইমেলার প্রয়োজনীয়তা কী?
রুবাইদা : সময়টা প্রযুক্তির। স্পর্শ করে পৃষ্ঠা উল্টিয়ে অন্য একটা জগতে হারিয়ে যেতে মানুষ এখন কম চায়। কিন্তু তারপরেও আশার কথা হচ্ছে মানুষ বইমেলায় আসছে, বই কিনছে এবং বই পড়ছে। আমার শিশুরা বইমেলায় আসে এবং তারা প্রচুর বই কেনে। বই পড়ার মধ্যে দিয়ে পাঠকরা ভিন্ন এক জ্ঞানের জগতে প্রবেশ করেন। প্রাণের এই বইমেলা শুধু মেলা নয় এটি বাঙালির মিলনমেলা।
আপনার দৃষ্টিভঙ্গী থেকে বলুন
রুবাইদা : আমি চাই বইমেলা প্রতিবছর অনুষ্ঠিত হবার পাশাপাশি ভালো মানের লেখা বইয়ের প্রসার ঘটুক।
প্রকাশকদের নিয়ে আপনার অভিমত কি?
রুবাইদা : সত্য কথা তেতো হয়; আর এই কথা বলার জন্য শত্রু হয়ে যেতে পারি। প্রকাশকদের বলব, আপনারা হলেন লেখক ও পাঠকের মধ্যে মিডিয়া। আপনাদের সহযোগিতায় একজন লেখক তার কর্ম উপস্থাপন করতে পারে। তাহলে লেখক সত্তাকে সহযোগিতা করতে হলে আপনারা ব্যবসায়িক মনোভাবকে একটু কম প্রাধান্য দিয়ে সহজ শর্তে বই প্রকাশের সুযোগ করে দিন। নিজেদেরকে টাকার কাছে হস্তান্তর না করে ভালো মানের লেখা ছাপানোতে নজর দিন এবং লেখকদের সহযোগিতা করুন। তাদের প্রাপ্য রয়্যালিটিটুকু দিতে কার্পণ্য বোধ করবেন না। এদেশে হরহামেশা ডাক্তারদের নিয়ে অনেক নেতিবাচক কথা প্রচার করা হয়। সাংবাদিকরা যদি প্রকাশকদের নিয় এভাবে নিউজ করেন, তাহলে অনেক অনিয়মের কথা উঠে আসবে বলে মনে হয়।
কোন্ কোন্ ব্যাপারে মনঃক্ষুন্নতা আছে আপনার?
রুবাইদা : আমি তো ছাপানোর খরচের কথা ভেবে লিখতে ভয় পাই কিংবা কম কম লিখি। বই ছাপানোর অত্যধিক খরচ এবং কোন রকম রয়্যালিটি না পাওয়াটা এক প্রকার হতাশার কাজ করে। নতুন লেখকদের বই বের হবার পর ঝুলিতে শুধু এটুকুই জমা হয় যে আমি একজন লেখক। গণমাধ্যমসহ প্রশাসনেরও উচিত প্রকাশনার এই দিকটায় নজর দেয়া। নিম্ন সাহিত্যমানের লেখা ছাপানোর অর্থ কাগজের অপচয়ের পাশাপাশি মেধা ধ্বংস করা। লেখার মান খারাপ হতে থাকলে মানুষ বইমেলামুখী কম হবে।
লেখালেখি নিয়ে আপনার ভবিষ্যত পরিকল্পনা কী?
রুবাইদা : লেখালেখি নিয়ে সবচেয়ে বড় পরিকল্পনা হল লেখালেখিটা ধরে রাখার ইচ্ছা। সাহিত্য অঙ্গনে শিশুদের নিয়ে কিছু ভালো বই লিখতে চাই এবং কিছু গল্প লিখে যেতে চাই, যা মানুষের জীবনে কোন না কোনভাবে উপকারে আসবে। এছাড়া আরো কিছু পরিকল্পনা আছে, আপাতত সেগুলো না হয় একটু গোপনই থাকুক।
১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ১:০০
নীল মনি বলেছেন: বাহ দারুণ স্মৃতিশক্তি, মা শা আল্লাহ। সেফটিপিন গত বছর বের হয়েছিল। শুকরিয়া। বর্তমানে যেটি বের হয়েছে তা ১১৫ টাকা।
২| ০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ দুপুর ২:০৩
মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: বইটির বহুল প্রচারও বিপণন কামনা করছি। আপনার সাফল্যে ব্লগবাসী সত্যি আনন্দিত।
১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ১:০১
নীল মনি বলেছেন: আলহামদুলিল্লাহ্ আল্লাহ্ আপনার এই আন্তরিক দোয়া কবুল করে নিন। দোয়া করবেন আর সুস্থ থাকুন।
৩| ০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ দুপুর ২:৪৫
রাজীব নুর বলেছেন: সহজ সরল একটি সাক্ষাৎকার।
১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ১:০১
নীল মনি বলেছেন: মেয়েটি সহজ সরল এবং একটু বোঝে কম
৪| ১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ দুপুর ১২:০৫
বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: শুভকামনা রইলো।
১১ ই মার্চ, ২০১৯ রাত ১:২০
নীল মনি বলেছেন: শুকরিয়া
©somewhere in net ltd.
১| ০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ দুপুর ১:৪৭
প্রিন্স হ্যামলেট বলেছেন: গতবছর কি সেফটিপিন নামক কোন বই বের হয়েছিল ??? বইপোকাদের আড্ডাখানা গ্রুপে সম্ভবত দেখেছিলাম ।
এই বইটির মূল্য কত ???