নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
নেগেটিভিটিতে বিশ্বাস করি না; তাই এমন নাম বেছে নিলাম, যা বাস্তব নয়!
এখানে এলাম যেভাবেঃ পর্ব ০১ | এখানে এলাম যেভাবেঃ পর্ব ০২
'আক্কা!' শব্দটা শুনে পিছনে তাকালাম। একটু হকচকিয়েই গিয়েছিলাম। হোক্কা বা হুক্কা শুনেছি; আক্কা কি?
----------------------------------------------------------------
শাপলা যেখানে হয়েছে, এখানের পানিটা অগভীর এবং একটু কালচে ধরণের। তবুও নিচে অনেক কিছুই দেখা যায়। আর এই কালচে পানির উপরে ভেসে আছে শত শত, উহু, মনে হয় হাজার হাজার শাপলা। সবুজ, বেগুনী, সাদা, লাল..... শত শত শাপলা। দেখে কোন ভাবেই মনে হবে না যে এগুলি একা একাই হয়েছে; বরং মনে হচ্ছে কোন রাজার কোন নামকরা মালি যেন সুন্দর ভাবে এদের সাজিয়ে রেখেছেন। কতগুলি ছোট আকারের শাপলার পর একটা বড় শাপলা। খুব সম্ভবত, খুব সম্ভবত এখানেই প্রথম পদ্ম দেখেছিলাম। দুপুর হওয়াতে শাপলা গুলি কেমন যেন আধা আধা ফুটে ছিলো। মাঝি বললো যে খুব ভোরে, যখন সুর্য্য উঠে তখন নাকি আরও সুন্দর লাগে।
মধ্যেখানে অন্য একদিনের কথা বলিঃ একদিন আমার মেঝ চাচাকে নিয়ে গিয়েছিলাম, ফজরের আযানের সময় বের হয়ে একদম ভোর নাগাদ পৌছে গেলাম শাপলা বিলে। দিগন্ত রেখায় যখন সূর্য আর্ধেক উঠলো, প্রথমবারের মত বইয়ে-গল্পে-কবিতায় পড়া সূর্য্যদয়ের মর্ম বুঝলাম। বিশাল বিল, যদ্দুর চোখ যায় সদ্য ফোঁটা শাপলাল ঝাঁক। চোখ ধাঁধিয়ে যাবার মত অবস্থা! স্পষ্ট মনে আছে সেদিন এই দৃষ্ট দেখে মন ভালো হবার পরিবর্তে মন খারাপ হয়ে গিয়েছিলো; প্রতিদিন কেন দেখতে পাই না সেই দুঃখে।
'আক্কা!' শব্দটা শুনে পিছনে তাকালাম। একটু হকচকিয়েই গিয়েছিলাম। হোক্কা বা হুক্কা শুনেছি; আক্কা কি? পরে জানতে পেরেছিলাম 'ও কাকা' এর সর্ট ফর্ম বা কখনও কখনও সরাসরি 'কাকা'কেই আক্কা বলা হয়! নৌকার পাটাতনে শুয়ে শাপলা ছেড়ার চেষ্টা করছিলাম, তখনই মাঝি নিষেধ করলেন। কারণ শাপলার পাতার উপর নাকি সাপ থাকে পাতার নিচেও নাকি থাকে। গত সপ্তাহেই একজনকে কেটেছে। মারা যায়নি অবশ্য। আমি হাত সরিয়ে নিলাম, সাপের কামড় খাবার কোন শখ নাই।
আব্বার কাছে শুনলাম এইখানেই নাকি ছোটবেলায় প্রায় দিন ভোরে আসতেন। ঘরে চাল না থাকায় এই শাপলার উপরেই ভরসা করতে হতো। শাপলাগুলির ভিতরে এক ধরণের গুড়া গুড়া দানা পাওয়া যায়; এটাকে ঢ্যাপ বলে। এই ঢ্যাপ সিদ্ধ করলে কিছুটা ভাতের মত একটা খাবার হয়। অন্তত বেঁচে থাকা যায়। বড় শাপলা গুলির মধ্যে বেশী পাওয়া যায়।
একটি মাঠের মধ্যে দিয়ে কিছু মানুষ যদি একই পথ ধরে হাটে, কিছু দিনের মধ্যে সেখানে একটা দাগ পড়ে যায়, মানুষের হাঁটার দাগ; বিলের শাপলার মধ্যেও তেমন কিছু দাগ দেখা গেলো, নৌকার দাগ। যেসব জায়গা দিয়ে নৌকা গিয়েছে সে সব জায়গার শাপলা গুলি নষ্ট হয়ে দাগ হয়ে গিয়েছে। তবে আশার কথা হচ্ছে একবার এক জায়গায় দাগ হলে ঐ জায়গা দিয়েই অন্য নৌকা গুলি সাধারণত চলে, চলার পথ সহজ হবে বলে।
নৌকায় ওঠার সময় কিছু খাবার কিনে ওঠা হয়েছিলো। প্রকৃতি দেখতে দেখতে আর আব্বার কাছে তার বিভিন্ন স্মৃতির গল্প শুনতে সব খেয়ে ফেলেছি। তখনই ছোটবোন কথা বললো, তার নাকি খিধা লেগেছে! এই বিলের মধ্যে খাবার পাবো কোথায়? মজার একটা অপ্রাসঙ্গিক গল্প বলি; আমার ছোট বোন আমার আব্বাকে ডাকতো আম্মা বলে, আর আম্মাকে ডাকতো আব্বা বলে। কিন্তু খিধার যন্ত্রনায় হোক আর অন্য কোন কারণে হোক, সে আব্বাকে আব্বা এবং আম্মাকে আম্মা ডাকা শুরু করলো।
কিছুক্ষণের মধ্যেই নৌকা খালের মধ্যে ঢুকে গেলো, খুব একটা চওড়া খাল নয়। ধানমন্ডি আবাসিক এরিয়ার মধ্যে যে রাস্তা গুলি, অতটুকু চওড়া হবে। খালের দুপাশে হিন্দু এলাকা। কিছু কিছু বাড়ির রান্নাঘর থেকে ধোঁয়া উঠছে; আর আমার বোন সেগুলির দিক তাকিয়ে 'ও ভাত, ভাত, আয়, আয়' বলে করুন সুরে ডাকছে এই দৃশ্যটা আমাদের বাড়ির সবাই আজ ২২ বছর পরও মনে রেখেছে। যাই হোক, খাবারের একটা ব্যবস্থা করা গেলো। খাল দিয়ে নৌকা এগিয়ে চলেছে।
'আব্বু, ঐটা কি কুমির?', আমি চিৎকার করে উঠলাম, কিছু একটা খুব দ্রুত গতিতে পানিতে নেমে গেলো.....
২৮ শে নভেম্বর, ২০১৮ দুপুর ২:২১
ঋণাত্মক শূণ্য বলেছেন: সাজেশনের জন্য ধন্যবাদ। আমি আসলে লেখক না তো; তার উপর নাদান টাইপের। লেখার সময় খেয়াল থাকে না যে কতবড় হলো আর কত ছোট হলো। তাছাড়া আমি নিজেই বড় পোষ্ট পড়তে পারি না! ফলে আমার মনে হয় অন্যরাও পড়তে পারে না! তাই ছোট করা। হয়ত আগামীতে আপনার কথাটা ফলো করবো
২| ২৮ শে নভেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১২:৪০
মনিরা সুলতানা বলেছেন: খুব পরিচিত গল্প , স্নিগ্ধতা সৌন্দর্যে মাখা।
অনেক ভালোলাগা।
২৮ শে নভেম্বর, ২০১৮ দুপুর ২:২১
ঋণাত্মক শূণ্য বলেছেন: ধন্যবাদ
৩| ২৮ শে নভেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১২:৫০
নীল আকাশ বলেছেন: আপনার এবারের বর্ননাও ভালো হয়েছে। মনে হচ্ছিল আমিও যেন আপনাদের সাথে আছি। দারুন লিখেছেন। সিরিজ চলুক, এর সাথেই আছি।
এত বছরের আগের স্মৃতিগুলি তো আপনার বেশ ভালোই মনে আছে দেখছি! চমৎকার!
শুভ কামনা রইল!
২৮ শে নভেম্বর, ২০১৮ দুপুর ২:২৩
ঋণাত্মক শূণ্য বলেছেন: ধন্যবাদ। সাথেই থাকুন।
আসলে আমি খুব বেশী ঘোরা ঘুরির পাগল। এই পাগলামীটা এইটা দিয়েই শুরু হয়েছে (প্রথম পর্বে এই বিষয়ে লিখেছি সামান্য)। মনে থাকাটা স্বাভাবিক। মনে দাগ পড়ে গিয়েছে। তাছাড়া লেখার আগে কিছু ডিটেইলস বিষয় বড় ভাইয়ার সাথে কথা বলে নিয়েছিলাম যে মেমরী ঠিক আছে কিনা। আলহামদুলিল্লাহ ঠিক আছে।
৪| ২৮ শে নভেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১:০৩
হাবিব বলেছেন: বাহ.. ভালো লাগলো.... আমি কিন্তু ২য় পর্ব পড়েছি.........
২৮ শে নভেম্বর, ২০১৮ দুপুর ২:২৪
ঋণাত্মক শূণ্য বলেছেন: ধন্যবাদ। আপনার কমেন্ট আগের পোষ্টেও দেখেছি; রিপ্লাইও দিয়েছি।
আশাকরছি পরের পর্বেও সাথে থাকবেন।
প্রথম পর্বটা পড়েছেন কি?
৫| ২৮ শে নভেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১:৩৭
রাজীব নুর বলেছেন: চোখের সামনে প্রচুর বই থাকলে, দেখতে ভালো লাগে।
চোখ জুড়িয়ে যায়, মন ভরে যায় !! এটা কৃত্রিম শান্তি।
২৮ শে নভেম্বর, ২০১৮ দুপুর ২:২৫
ঋণাত্মক শূণ্য বলেছেন: চোখের সামনে প্রচুর বই থাকলে আমার অস্বস্তি লাগে। মনে হয় সব এক সাথেই পড়ে ফেলি
৬| ২৮ শে নভেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১:৪৬
শফিউল আলম চৌধূরী বলেছেন: গ্রামের মধ্যে কুমির? ইন্টারেষ্টিং! পরের পার্টের জন্য অপেক্ষায় থাকলাম। ভালো একটা ফিনিশিং দিয়ে পাঠককে ঝুলিয়ে রাখলেন। চালিয়ে যান।
২৮ শে নভেম্বর, ২০১৮ দুপুর ২:২৬
ঋণাত্মক শূণ্য বলেছেন: হে হে হে হে.. লেখক হইবার ট্রাই আরকি প্রচুর লিখতে ইচ্ছা করে; কিন্তু কুলায় উঠে পারি না
৭| ২৮ শে নভেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:৫৫
ঢাবিয়ান বলেছেন: অত্যন্ত সাবলীল ও প্রানবন্ত লেখা। পড়তে ভাল লাগে এমন লেখা।
২৮ শে নভেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৫:২১
ঋণাত্মক শূণ্য বলেছেন:
©somewhere in net ltd.
১| ২৮ শে নভেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১২:৩৯
করুণাধারা বলেছেন: পোস্টে +++++।
আরেকটু বড় করলে পারতেন!!!!!!