নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

দূরে থাকুন; ভালো থাকুন।

ঋণাত্মক শূণ্য

নেগেটিভিটিতে বিশ্বাস করি না; তাই এমন নাম বেছে নিলাম, যা বাস্তব নয়!

ঋণাত্মক শূণ্য › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমার সাঁতার, সাইকেল, মটর সাইকেল ও গাড়ি চালানো শেখা! - পর্ব সাঁতার শেখা

১২ ই নভেম্বর, ২০২১ বিকাল ৫:০১

সময়টা খুব সম্ভবত ১৯৯৫ এর মত হবে। ফায়ার সার্ভিসের এরিয়ার মধ‍্যে একটা পুকুর আছে; আমার জীবনে দেখা সব থেকে পরিস্কার ও স্বচ্ছ পানির পুকুর (একদম সুইমিং পুলের মত)।



বাহিরের মানুষের সেখানে গোসলের অনুমতি নাই। তবে আব্বা কিভাবে যেন সেখানে প্রতিদিনই গোসলে যান, এবং একদিন না গেলে ফায়ার সার্ভিসের লোকেরা বাড়িতে খবর নিতে আসে এমন অবস্থা।

আব্বা একদিন বললেন তার সাথে যেতে, সাতার শিখাবেন। ধৈর্য‍্য বলেতে যে একটা জিনিষ আছে, তা খুব সম্ভবত ঐ সময়ে আমার আব্বার যানা ছিলো না। উনি খুব দ্রুতই রেগে যেতেন। পরে অবশ‍্য আব্বা উল্টা মানুষ হয়েছেন; এখন তার ধৈর্য‍্যের পরীক্ষা নিতে গেলে আপনিই অধৈর্য‍্য হয়ে যাবেন!

তো আব্বার সাথে গেলাম; সাঁতার দূরে থাক, ডুবে যাওয়ার ভয়ে আমি তাকে আঁকড়ে ধরে রাখতে আর চিল্লাতে চিল্লাতেই তাকে মারি মারি অবস্থা।

পরে হাল ধরলেন আমার আম্মার আপন চাচী। তো নানী কোথা থেকে যেন দুইটা শুকনা নারকেল যোগাড় করে দড়ির মত অংশ বের করে নারকেল দুইটাকে বাধলেন। নানী বাড়ির পুকুরে নামলাম সাঁতার কাঁটা শিখতে। প্রথম কয়েক মিনিট গেলো সুন্দর ভাবেই। কিন্তু হঠাৎই গিট ছুটে গেলো; নানিকে জড়িয়ে ধরলাম। তাকে প্রায় ডুবাই ডুবাই করতে করতে কোন রকমে তিনি বেঁচে আসলেন। তার ম‍ৃত‍্যুর দিন পযর্ন্ত এই ঘটনা মনে ছিলো।

এভাবে ১৯৯৭ সাল পযর্ন্তও আমার সাঁতার শেখঅ হলো না। এবার হাল ধরলেন মামাতো ভাই (মেঝ মামার ছেলে)। উনি কোথা থেকে ট্রাকের একটা টিউব জোগাড় করেছেন; সেটা ফুলিয়ে আমাকে তাতে চড়িয়ে দিলেন। ২/৩ দিন পুকুরে যাই, আর টিউবের উপরে শুয়ে পুকুরের ভিতরে ঘুরে বেড়াই; আর মাঝে মধ‍্যে উনার লেকচার শুনি কি করে সাতরাতে হয়। একদিন বললেন যে উনার সকালে সময় হবে না; দুপুর ২/৩টার দিকে যেতে।

ঐ সময় সাধারণত পুকুরে কেউ থাকে না। মফস্বল এরিয়া, দুপুরে মানুষ সাধারণত খাওয়ার পরে ঘুমায়।

তো আমি টিউবে চড়ে ঘোরার লোভে গেলাম। মাঝ পুকুরে গিয়ে উনি আমাকে বললেন যে বড় একটা নিশ্বাস নাও। নিলাম।

উনি এবার টিউবটা উল্টে আমাকে ফেলে দিলেন। এবং বললেন, এ কদিন যেভাবে বলেছি, সেভাবে সাঁতরাও। বলেই উনি টিউব নিয়ে হাওয়া!

আমি চিৎকার হাত-পা দাপাদাপি করতে করতে কখন ও কিভাবে যেন পুকুর পাড়ে চলে এলাম। এক গাদা পানি গিলে অবস্থা করুন!

আমি ঐ সময়ে কাউকে "শালা" বলেও গালি দিতাম না; এটার বাচ্চা ওটার বাচ্চা বলে গালি দেওয়াতো দূরের কথা। উনাকে ঐদিন মনে মনে অনেক গুলি জিনিষের বাচ্চা বলে গালি দিয়েছিলাম। পরের কয়েকদিন আর পুকুরে যাই নাই।

২/৩দিন পর হঠাৎ আব্বার সাথে সাহস করে আবার সেই ফায়ার সার্ভিসের পুকুরে গেলাম, সাঁতরালাম। সেদিনই আবার বেলা ১২টার দিকে নানী বাড়ির পুকুরে গেলাম। এবং সাঁতরালাম।

এই ভাবে সাঁতার কাটা আমার জীবনে লার্নিং এর উপর একটা প্রভাব ফেলেছিলো। যেটা এখনও আছে। সেটার ব‍্যাখ‍্যা না হয় শেষ পর্বেই দিবো।

মন্তব্য ২৪ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (২৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১২ ই নভেম্বর, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:৪৩

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: আমি সাঁতার পারি না। সাগর-নদী-পুকুর খুব পছন্দ, শুধু সাঁতার না জানার কারণে দূরে থাকতে হয়।

১২ ই নভেম্বর, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:৫০

ঋণাত্মক শূণ্য বলেছেন: আমার পদ্ধতিটা ট্রাই করে দেখতে পারেন। ভয়টা ৫মিনিটের জন‍্য স্থায়ী। এরপর সাঁতারের ফ‍্যান হয়ে যাবেন। আমি এখন বছরে প্রায় ৬০ হাজার টাকা খরচ করি খালি সাঁতারের জন‍্য ;)

২| ১২ ই নভেম্বর, ২০২১ রাত ৮:১১

অপু তানভীর বলেছেন: আমার সাতার শেখাটা হয়েছি সম্ভবত ২০০২/২০০৩ সালের দিকে । আমাদের বাসার সামনে এবং পেছনে অনেক গুলো পুকুর ছিল । মাঝে মাঝে সেখানে গিয়ে গোসল করলেও দুরে যাওয়া হত না । এরপর তেলের প্লাস্টিকের ঢম এর সাহায্য নিয়ে সাতার শেখা শুরু করলাম । ঢমটা পেটের কাছে রেখে দিব্যি ভেসে থাকা যেত । এবার হাত পা ছুড়ে শেখা হয়েছিলো সাতার । তবে ভয় কাটতে দেরি হয়েছে । সম্ভবত ক্লাস নাইনে ওঠার পরে প্রথম আমি সাহস করে পুকুরের এপাড় থেকে ওপাড়ে যেতে পেড়েছিলাম ।

১৩ ই নভেম্বর, ২০২১ রাত ৩:০৫

ঋণাত্মক শূণ্য বলেছেন: ক্লাস নাইন? আমার আরও আগেই হয়েছে ;)

৩| ১২ ই নভেম্বর, ২০২১ রাত ৮:৩৬

এস সুলতানা বলেছেন: সাঁতার শিখার ব্যপারে প্রতিটা মানুষেরই গুরুতে দেওয়া উচিৎ বলে আমি মনে করি।

১৩ ই নভেম্বর, ২০২১ রাত ৩:০৬

ঋণাত্মক শূণ্য বলেছেন: আমিও সেটাই মনে করি।

৪| ১২ ই নভেম্বর, ২০২১ রাত ৯:৪৪

জুল ভার্ন বলেছেন: আমি ভালো সাতার কাটতে পারি। কৈশোরে বুড়িগঙ্গা নদী পার হয়েছি অসংখ্য বার। আমার ছেলেরা নামকাওয়াস্তে সাতার কাটতে পারে। আমার স্ত্রী মোটেই জানেনা।

১৩ ই নভেম্বর, ২০২১ রাত ৩:০৭

ঋণাত্মক শূণ্য বলেছেন: আমিও একটা নদী পার হয়েছি অনেকবার; তবে সেটা বুড়িগঙ্গার ৭৫% এর মত হবে (সদরঘাটের জায়গা থেকে দেখলে)। আমরা স্বামী-স্ত্রী দুইজনেই সাঁতার পারি, আলহামদুলিল্লাহ। আমর নদী-সাগর প্রেমী। ছেলেটা পানি দেখলেই ভয় পায়। এ বছরেই হয়ত সাঁতার শিখিয়ে ফেলবো; মেয়েটা পানি দেখলে নামতে চায়; নামায় দিলে আর উঠতে চায় না!

৫| ১২ ই নভেম্বর, ২০২১ রাত ১১:৩৩

রাজীব নুর বলেছেন: আমি সাঁতার পারি না। ছোটবেলা আব্বা বলেছিলো সাঁতার শিখো। আমি বলেছিলাম মাশার্ল আর্ট শিখব। কয়েকদিন ক্লাশ করে আর শেখা হয় নাই।

১৩ ই নভেম্বর, ২০২১ রাত ৩:০৮

ঋণাত্মক শূণ্য বলেছেন: ব্লাগিং তো পারেন; তাই না?

৬| ১৩ ই নভেম্বর, ২০২১ রাত ১২:৩৫

মেহেদি_হাসান. বলেছেন: আমরা গ্রামের মানুষ এমনি এমনিই সাঁতার শিখি। কোনদিন কেউ শিখায়নি। বাড়ির পাশে বড় দিঘি আছে ওখানে একা একাই শিখেছি।

১৩ ই নভেম্বর, ২০২১ রাত ৩:০৮

ঋণাত্মক শূণ্য বলেছেন: কোন দ্বীমত নাই; কথা সত‍্য.....

৭| ১৩ ই নভেম্বর, ২০২১ সকাল ৭:৫১

এস সুলতানা বলেছেন: রাজীব নুর , আপনার আব্বার কথা শোনা উচিৎ ছিলো। আমি গ্রামের মেয়ে, যদিও এখন শহরের বাসিন্দা। আমার কৈশোর কেটেছে গ্রামে তাই প্রকৃতির সাথে থেকে সাঁতার এমনিতেই শিখে গেছি। সাঁতার শিখতে কোনো কিছুর বা কাউকে প্রয়োজন হয়নি।

১৩ ই নভেম্বর, ২০২১ সকাল ৮:০৯

ঋণাত্মক শূণ্য বলেছেন: কষ্ট ছাড়া ও কাউকে ছাড়া শিখে গেছেন.... এটা একটা এডভান্টেজ!

৮| ১৩ ই নভেম্বর, ২০২১ সকাল ১১:৪৭

জুল ভার্ন বলেছেন: মেরিন একাডেমীতে ভর্তি পরীক্ষায় আমার ছোট ছেলেটা রিটেনে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছিল। কিন্তু প্রাক্টিক্যালে সাথে ডুবে মরার অবস্থা হয়েছিলো-তারপরেও ওকে সাতার শেখার কন্ডিশনে পাস করিয়ে নিয়েছিলো-কিন্তু নির্দিষ্ট সময়েও সাতার শিখতে পারেনি! অবশ্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সে কৃতিত্বের সাথে স্নাকত্তোর সম্পন্ন করে পেশাগত জীবন শুরু করেছে।

১৩ ই নভেম্বর, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:২৮

ঋণাত্মক শূণ্য বলেছেন: এখনো কি উনি সাঁতার পারেন না?

৯| ১৩ ই নভেম্বর, ২০২১ দুপুর ১২:১০

জ্যাকেল বলেছেন: সাঁতার শেখা হাটা শেখার মতই একটি বিষয়। হাঁটতে গেলে পড়তে হইবে, আছাড় খাইতে হইবে।

১৩ ই নভেম্বর, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:৩০

ঋণাত্মক শূণ্য বলেছেন: হ্যাঁ কিছু পানি তো পান করতেই হবে। কারো কপালে জুটে যমুনার ঘোলা পানি, কারো কপালে জুটে বুড়িগঙ্গার কাল পানি!

১০| ১৩ ই নভেম্বর, ২০২১ বিকাল ৩:১৩

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: সাতার শিখতে বাধ্য করা হয়েছিল ক্লাস এইটে যখন ছিলাম ( তবে ভালোমত এখনও পারি না), সাইকেল শিখেছি ক্লাস ফোরে বাসার মধ্যেই (৫ তলায়), মোটর সাইকেল এখনও চালাতে পারি না, গাড়ি চালানোতে হাতে খড়ি ১৪ বছর বয়সে (বাসার সামনে শুধু) তবে ভালোভাবে চালাতে শিখি ২০ বছর বয়সে, লাইসেন্স পেয়েছি ১৯৯৭ সালে।

১৩ ই নভেম্বর, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:৩১

ঋণাত্মক শূণ্য বলেছেন: শহরাঞ্চলে সাঁতরানোর জায়গা কই? এটা খুবই কষ্টের একটা বিষয়!

১১| ১৪ ই নভেম্বর, ২০২১ সকাল ৯:৪১

খায়রুল আহসান বলেছেন: নদীমাতৃক এ দেশে নিজে সাঁতার শেখাটা এবং বাচ্চাদেরকে শেখানোটা অবশ্য কর্তব্য। আপনার অভিজ্ঞতাটা শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।

১৪ ই নভেম্বর, ২০২১ দুপুর ২:৫৯

ঋণাত্মক শূণ্য বলেছেন: আপনার সাথে একমত। আমার ছেলেটাকে নিয়ে যথেষ্ট চিন্তিত। আমার থেকে একেবারে কম ভিতু না! এ বছরেই শিখিয়ে ফেলবো ইন শা আল্লাহ। যদিও আমরা এখন নদীমাতৃক বাংলাদেশে নাই; আছি মরুভূমিমাতৃক সৌদী আরবে! ;)

১২| ১৪ ই নভেম্বর, ২০২১ দুপুর ১:০৪

Abida-আবিদা বলেছেন: গ্রামের মানুষেরা দ্রুত সাতার শেখে শহরের মানুষের তুলনায়। তবে সবারই সাতার শেখা উচিৎ। এটি একটি প্রয়োজনীয় শারীরিক নৈপুণ্য। পরিস্থিতির বর্ণনা চমৎকার।

১৪ ই নভেম্বর, ২০২১ দুপুর ২:৫৯

ঋণাত্মক শূণ্য বলেছেন: হুমমম

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.