নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

দূরে থাকুন; ভালো থাকুন।

ঋণাত্মক শূণ্য

নেগেটিভিটিতে বিশ্বাস করি না; তাই এমন নাম বেছে নিলাম, যা বাস্তব নয়!

ঋণাত্মক শূণ্য › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাদাম ওয়ালা VS মরিচ ওয়ালা!

১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ভোর ৫:১৪

কল্যানপুরে এক বাদাম ওয়ালাকে চিনতাম। নামটা জানি না। তার কাছ থেকে বাদাম কিনতে কেন যেন স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করতাম। তার কাছ থেকে বাদাম কিনে কখনও ওজনে কম কিংবা প্রচুর পরিমানে নষ্ট বাদাম পাইনি।



অপর দিকে সার্ক ফোয়ারের পাশে ইসলামী ব্যাংকের বুথের সামনে এক বাদাম ওয়ালা ছিলো, এর কাছ থেকে বাদাম কিনতাম না পারতপক্ষে। কারণ এর বাদামে অন্তত ৩০% নষ্ট বাদাম পেতাম।

দুজন বাদাম ওয়ালার সাথে কথা বলেছি, তাদের সাথে তাদের সমস্যা গুলির কথা জানতে চেয়েছি। অবাক হয়েছি যখন জেনেছি যে দুইজনের জীবনের সব থেকে বড় সমস্যা হুবহু একই!

সমস্যাটা হচ্ছে, মানুষ হাঁটতে হাঁটতে না বলেই এক/দুইটা বা মাঝে মধ্যে এক মুঠ বাদাম নিয়ে চলে যায়। তাদের বাঁধা দিতে গেলে পড়তে হয় বিপত্তিতে! এমনকি মারও খেতে হয়েছে তাদের। দুই পয়সার বাদাম নিলে কি এমন ক্ষতি এটাই যুক্তি!

চন্দ্রীমা উদ্যানের পাশে মাঝে মধ্যেই বসে থাকা হতো। আমাকে ফোনে না পাওয়া গেলে সাধারণত এখানে এসে খুঁজলেই পাওয়া যেতো। এই জায়গাটা বেশ কিছু কারণে ভালো লাগতো। এর মধ্যে একটা ছিলো বয়স্ক মানুষের সাথে পরিচয় হওয়া যেতো। আর পাওয়া যেতো বেশ ভালো ভালো উপদেশ ও অভিজ্ঞতার গল্প।

এখানে প্রায়ই দেখতাম ছোট ছোট কিছু বাচ্চা বাদাম বিক্রি করতো। সাধারণত এদেরকে পুলিশে কিছু বলতো না। কিন্তু ভিআইপি কেউ ঐ রাস্তা দিয়ে গেলেই বিপত্তি ঘটতো। পুলিশে এদের সতর্ক করা সত্বেও এরা সাধারণত লেক রোড থেকে সরতো না; এরপর পুলিশ ক্ষেপে গিয়ে এদের কাছ থেকে বাদামের গামলা কেড়ে নিয়ে বাদাম গুলি লেকে ফেলে দিতো!

প্রথম প্রথম পুলিশকে বেশ নির্দয় মনে হতো। একটু সময় লেগেছে বুঝতে যে পুলিশ অতটা নির্দয় নয়। অতটা নির্দয় হলে ঐ গামলা ফেরৎ দিতো না; গামলাও পানিতে ফেলতো। বরং এরা হিসাব করে যে ভিআইপি আসতে বহু দেরী, আর একটু সময় রাস্তায় থাকতে পারলে হয়ত আর একটু বিক্রি।

কল্যানপুরে রাস্তার পাশে প্রচুর টং দোকান ছিলো। যখনই কোন দেশের বড় কোন ব্যক্তি আসতো, তখনই ওগুলি সরিয়ে ফেলা হতো! ঐ বড় ব্যক্তি সাভার স্মৃতি সৌধে যাবেন, তাকে এই টং দোকান দেখানো যাবে না!

যাই হোক, মানুষ এভাবে অন্যেরটা ফ্রিতে কেন খায় আমার এখনও বুঝে আসে না। বাদাম ওয়ালা, ঝালমুড়ি ওয়ালা, বরই ওয়ালা ইত্যাদি ইত্যাদি মানুষ থেকে ইচ্ছা হলেই খেয়ে নেয়।

বিশ্ব বিদ্যালয়ে যখন পড়ি, আমাদের ক্যাম্পসের সামনে এক ঝাল মুড়ি ওয়ালাকে জিজ্ঞাসা করেছিরাম একটু মুড়ি নিয়ে খাবো কি না। আমি তখন মূলত ঝালমুড়ি অর্ডার করেছি। সে আমার দিকে তাকায় বললো, আপনি যতদিন এখানে আছেন, আমার কাছে বলা লাগবে না; আপনার ইচ্ছা হলে নিয়ে খাবেন।

আমি হেসে দিয়ে জিজ্ঞাসা করলাম যে, এমন কেন? সে বললো এই ক্যাম্পাসে আপনিই একমাত্র বোকা যে পারমিশন নিয়ে মুড়ি খাইলো। বাকি সবাই হাটতে হাটতে ফচ করে হাত ঢুকায় এক মুঠ নিয়ে হাটা দেয়। অনেকে আবার ৫টাকার ঝালমুড়ি অর্ডার দিয়ে ঠোঙ্গায় যতটুকু আছে, তার থেকে বেশি সাবাড় করে ফেলে না বলেই।

এই দিক হিসাব করলে কাঁচা মরিচ কিংবা শুকনা মরিচের দোকানদার হয়ত ভালো আছেন। আমার বিশ্বাস কেউ হাঁটতে হাঁটতে ফচ করে হাত ঢুকায় এক মুঠ কাঁচা মরিচ নিয়ে চাবানো শুরু করে দেয় না।

---------------

আমাদের বাস্তবিক জীবনেও এমন লোক আছে। অনাকাঙ্খিত ভাবে তারা এভাবেই আমাদের বিষয় গুলিতে হস্তক্ষেপ করছে। আমরাও সোশ্যাল প্রেসারে পড়ে মেনে নেই। কিন্তু কখনও বাদাম ওয়ালা থেকে মরিচ ওয়ালা হতে পারি না। কারণ হলেই আমাদের বেয়াদব বলা হবে।


বাদামের ছবি নেওয়া হয়েছে এখান থেকে।

মন্তব্য ১৬ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (১৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ সকাল ৯:২১

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: শেষ স্তবকটা দিয়ে পোস্টটাকে অনেক অর্থবহ ও তাৎপর্যপূর্ণ করে তুলেছেন। আমাদের মাঝেমাঝেই বাদামওয়ালা থেকে মরিচওয়ালা হতে হবে শুদ্ধাচারের জন্য।

বাদাম, ঝালমুড়ি, ছোলা, খোলা চানাচুর বিক্রিওয়ালাদের আসলেই একটা সমস্যা। এটা নিয়ে কখনো ভাবি নি এভাবে। কেনাকাটা করতে গেলে ওভাবে তুলে খাওয়াটা অভ্যাসের বাইরে। বরই, আঙ্গুর, খেঁজুর কিনতে গেলেও অনেক সময় বিক্রেতারা সাধেন, কখনো জোরাজুরি করেন। খেতে বাধ্য করা হলে তুলে পাশের ছেলেটাকে খেতে দিয়ে বলি- খেয়ে দেখো, কেমন লাগে।

আপনার বাদামওয়ালাদের করুণ জীবনযাত্রাটা ফুটে উঠেছে। রিকশাওয়ালা, সিএনজিওয়ালা, ভ্যানওয়ালাদের জীবনেও এমন কষ্ট আছে অনেক, যদিও তাদের দ্বারা যাত্রীরাও অনেক হয়রানির শিকার হয়ে থাকেন।

১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ বিকাল ৫:৫৮

ঋণাত্মক শূণ্য বলেছেন: আমি শেখার চেষ্টা করি উদাহরণ থেকে। একটা উদাহরণের সাথে জীবনের কিছু অংশ মেলাতে পারলে মনে থাকে বেশী। সাথে সাথে এভাবে মানুষকে শেখানোও সহজ হয়। পুরা লেখার সব কথা সত্য হলেও, আমার মূল উদ্যেশ্যই ছিলো ঐ শেষ লাইনটি।

আমাকে কখনও কোন বিক্রেতা খেয়ে দেখতে বললে খেয়ে দেখি, ওটাতো মূলত তার ব্যবসার প্রচারণার অংশ। কিন্তু নিজে থেকে হুট করে না বলে খাওয়াটাকে আমি চুরি কিংবা ছিনতাই মনে করি।

মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

২| ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ সকাল ১০:৫৯

সাখাওয়াত হোসেন বাবন বলেছেন: ভাল লিখেছেন । হাত ধুয়ে খাওয়ার অভ্যাসটা যদি সবার মধ্যে গড়ে উঠতো তাহলে আর কেউ ফচ করে হাত ঢুকিয়ে দিতো না

১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ বিকাল ৫:৫৮

ঋণাত্মক শূণ্য বলেছেন: শিক্ষিত লোকরেই বুঝাইতে পারি না যে হিসু করলেও হাত ধুইতে হয়, আর সাধারণ জনগন!

৩| ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ সকাল ১১:৩০

কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: খুব সুন্দর বাস্তবিক লিখা। আমার জিনিসটা দেখলেই মনটা খারাপ হয়। মানুষ বাদান কিনে আর কুটুস কুটুস খায়, এটা এক রকমের হারাম খাদ্য। একটা দুইটা বাদাম বাদাম ওয়ালার কিছু না। তবুও তার মন খারাপ হয় কারণ সারাদিন এমন করে অনন্ত পঞ্চাশজনে খেলে তার অনেকটাই ক্ষতি হয়। মানুষকে আল্লাহ সঠিক বুঝদান দিন।

১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ বিকাল ৫:৫৯

ঋণাত্মক শূণ্য বলেছেন: হুম, অবশ্যই হারাম।

একটা দুইটা কিছু না; তবে যখন ১০০জন একটা দুইটা করে নেয়, তখন বাদাম ওয়ালার আধাকেজি না হোক, এক পোয়া হলেও বাদাম বের হয়ে যায়। এটা তার জন্য বড় একটা বিষয়।

মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

৪| ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ সকাল ১১:৩৪

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: কেবল ফকিন্নি আর ইতর হলেই কেবল গরিবের রুজিতে কুঠারাঘাত করতে পারে! এক মুঠো করে যারা খাবলা দেয়, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি ওরা ফকিন্নি এবং ছোটোলোক।

১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:০০

ঋণাত্মক শূণ্য বলেছেন: সহমত।

৫| ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ দুপুর ১:৪৩

রাজীব নুর বলেছেন: আমি অফিস থেকে হেঁটে হেঁটে বাসায় আসতাম। সময় লাগতো এক ঘন্টা। অফিস থেকে বের হয়েই এক বাদাম ওয়ালা রোজ বাদাম বিক্রি করতো। আমি দশ টাকার বাদাম কিনতাম। বাদাম খেতে খেতে বাসায় ফিরতাম।

১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:০১

ঋণাত্মক শূণ্য বলেছেন: বাদাম এনার্জি জোগায়।

৬| ১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ রাত ১২:২২

রোকসানা লেইস বলেছেন: ভাবতেই পারি না কিভাবে বাদাম বা মুড়ি তুলে নিয়ে খেয়ে ফেলতে পারে। এরা তাহলে শিক্ষিতজন!!
বিদেশে একজনকে দেখেছিলাম ডিপার্টমেন্টাল স্টোরগুলোতে বাদাম শুকনো ফ্রুটস এমন সব মুঠো করে নিয়ে খেতে খেতে বাজার করত। পকেটে নিলে ধরা পরবে কিন্তু খেয়ে ফেললে ধরা পরার সুযোগ নাই। জিজ্ঞেস করলে বলত, বহু পয়সা এদের দিচ্ছি অন্য জিনিস কিনে তাই এভাবে খাওয়াটা হালাল। অথচ তার পয়সার অভাব নাই

১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ রাত ৩:৫৫

ঋণাত্মক শূণ্য বলেছেন: দুঃখজনক!

৭| ১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ রাত ৩:৩২

নেওয়াজ আলি বলেছেন: অনেকে আছে এইভাবে মুড়ো করে গরিবের জিনিস খেতে মজা। বলে লাভ নাই কয়লা সাদা হয় নাকখনো

১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ রাত ৩:৫৫

ঋণাত্মক শূণ্য বলেছেন: হুমম

৮| ২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ভোর ৪:৩৩

জটিল ভাই বলেছেন:
এরা সবাই নিশ্চই ছোটবেলায় অন্যের গাছে ঢিল ছুঁড়ে বড় হয়নি। বরং বড় হয়ে ঢিল ছুঁড়ছে :(

২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২২ সকাল ১১:৫৭

ঋণাত্মক শূণ্য বলেছেন: অপরাধ বোধ বিষয়টা একটা কঠিন বিষয়। সবার মধ্যে থাকে না।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.