নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

দূরে থাকুন; ভালো থাকুন।

ঋণাত্মক শূণ্য

নেগেটিভিটিতে বিশ্বাস করি না; তাই এমন নাম বেছে নিলাম, যা বাস্তব নয়!

ঋণাত্মক শূণ্য › বিস্তারিত পোস্টঃ

দুনিয়ার সব চাইতে সহজ কাজ!

২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২২ রাত ৩:৪৭

জগ থেকে পানি ঢেলে খাওয়ার কথা বলেন, বা তার থেকে সহজ কোন কাজের কথা বলেন, এর থেকেও সহজ কাজ আছে! কখনও ভেবে দেখেছেন সেটা কি?



আমি-আপনি হয়ত সেটা ভেবেও দেখি না। কিন্তু মজার বিষয় হচ্ছে, আমরা সেটা সব সময় (সব সময় না হোক, অধিকাংশ সময়) করে চলেছি।

এই সহজ কাজটি আমাদের প্রত্যেকের জন্যই সহজ। এমনকি ২ বছরের বাচ্চা, যে মাত্র টুকটাক কথা বলা, হাঁটা চলা শিখেছে তার জন্যও সহজ।

কাজটি হচ্ছে, অন্যের ভুল ধরা।

জ্বী, এই কাজটির থেকে সহজ কাজ আর নাই! খুব সহজেই আপনি অন্যের ভুল ধরতে পারবেন। আপনি চাইলে আইফেল টাওয়ার ভিজিট করে তার একাধিক ভুল ধরতে পারবেন। চাইলে সরকারের ভুল ধরতে পারবেন। চাইলে আপনার স্বামী/স্ত্রীর ভুল ধরতে পারবেন। এর মত সহজ কাজ সত্যিই আর নেই!

কিন্তু এই সহজ কাজটি আমাদের ঠিক কতটুকু উপকারে আসে? অধিকাংশ সময়ই উপকারে আসে না! তারপরও আমরা করি!

কেন উপকারে আসে না, সেটা বুঝতে হলে আপনাকে বসাতে হবে "ভুল যে করেছে" তার জায়গায়, আমাকে বসাতে হবে সবচাইতে সহজ কাজ করার জায়গায়।

আমি আপনার একটা ভুল ধরলাম। আপনি কি খুশি হবেন? অধিকাংশ সময়ই আপনি খুশি হবেন না। আমি যদি একাধারে আপনার ভুল ধরে যেতে থাকি, আপনি বরং বিরক্ত হতে থাকবেন। ঠিক এই কথা আমার জন্যও প্রযোজ্য।

পৃথীবিতে খুব কম মানুষ আছে যারা ভুলটা ধরলে খুশি হয়, ভূলটা শুধরে নিতে চেষ্টা করে।

অধিকাংশ সময়ই আমরা আসল কথা থেকে বরং ভুল খোঁজায় বেশী ব্যস্ত হই। যেমন, এই লেখাতে আমি কয়েকটি বানান ইচ্ছা করেই ভুল করেছি। এবং আমার ধারণা আপনি ইতিমধ্যেই সেই বানান ভুল গুলি ধরে ফেলেছেন। এবং আপনার মনের মধ্যে সেগুলি সামান্য হলেও নাড়াচাড়া দিয়ে গেছে।

আর যদি আগে ভুল গুলি নাও ধরে থাকেন, সম্ভাবনা খুব বেশী যে আপনি উপরে একবার হলেও চেক করেছেন যে কি ভুল ছিলো।

আমাদের সমাজে কিছু লোক আছে, যারা ভুল ধরায় ওস্তাদ, কিন্তু ভুল শুধরে দিতে ওস্তাদ নয়। ওস্তাদ দূরে থাকুক, তারা ভুল শুধরাতে সামন্যতম সক্ষমও নন।

মজার বিষয় হচ্ছে, এই মানুষ গুলির ভক্তবৃন্দ বেশী! বেশী মানে অনেক বেশী। এবং এদের ভুল ধরতে খুব একটা লোককে দেখা যায় না।

ভক্তবেশী, কারণ এরা প্রধানত দুইটি কারণঃ
১. এরা অন্যের ভুল ধরা দেখতে এবং সেগুলি নিয়ে মনে মনে বা আন্যের সামনে হাসতে পছন্দ করে
২. এরা চায় না এই অযোগ্য লোকটি তাদেরকে অন্য কারও সামনে অপমান করুক

আর এদের ভুল খুব কম লোকে ধরে তার প্রধান কারণ তিনটিঃ
১. ভদ্র মানুষেরা এদের রোষানলে পড়তে চায় না
২. এদের ভুল ধরলে আজেবাজে কথা শুনতে হয়, যেটা কেউ চায় না
৩. এদের চামচাদের (ভক্তদের) আক্রমনে কেউ পড়তে চায় না

যারা অন্যের ভুল ধরে আনন্দ পায়, এদের যে এটা একটা মানসিক রোগ, তা প্রায়সই আমরা বুঝি না। কারণ মানসিক রোগ বলতে আমরা সাধারণত উন্মাদ হয়ে নির্দিষ্ট কোন পাগলাগারদ বা রাস্তার মোড়ে বক্তৃতা দেওয়াকে বুঝি।

অন্যের ভুল ধরা যেমন সহজ, নিজের ভুল খুঁজে বের করে সেটা শুধরানো তেমন কঠিন। প্রথমত আমরা অন্যের দ্বারা ধরা আমার ভুল গুলিকে স্বীকার করতে চাই না। তার উপরে আমরা নিজেরা নিজেদের ভুল গুলি শুধরে নিতে প্রস্তুত নই।

ইন্টারভিউ বোর্ডে খুব কমন এবং কঠিন দুইটি প্রশ্ন আছেঃ
১. আপনার স্ট্রেন্থ কি?
২. আপনার উইকনেস কি?

যত ইন্টারভিউ টিপস দেখবেন, ২য়টিতে খুব জোর দেয় তারা। তারা বলে আপনার এমন উইকনেস বলতে হবে, যা আপনাকে কাজের অযোগ্য প্রমান করে না। আবার আপনাকে দেখাতে হবে সেই উইকনেসই কিভাবে আপনাকে স্ট্রেন্থ দেয়।

আমি যতবারই ইন্টারভিউতে এই প্রশ্নটির সামনা করেছি, ততবারই একটা কথা বলেছি; বলেছি, আমি আমার উইকনেস খুঁজে পেলে সেটাকে ওভারকাম করতে পিছপা হই না।

আমি ব্যক্তিগত জীবনে খুব বেশী মাত্রায় আলসে হলেও আমি আমার অফিস লাইফে বা কর্মজীবনে তেমন কর্মঠ। আবার আমার ব্যক্তি জীবনের অলসতা আমার পরিবারের অন্য কারও সহসা সমস্যার কারণ হয়ে দাড়ায় না।

কঠিন কাজটি কিভাবে করা যাবে?

ছোট্ট একটা উদাহরণ দেই, যেটা আমি কর্মক্ষেত্রে প্রচুর করি; কিন্তু অন্যদের এমন করতে দেখি না।

ধরেন একটা মেইল পেলাম অন্য এক ডিপার্টমেন্টের কাছ থেকে। দেখলাম সেখানে বড়সড় একটা ভুল আছে। আমি কখনই ঐ মেইলের রিপ্লাইটু অল এ ক্লিক করি না। শুধু রিপ্লাইতে ক্লিক করে তাকে এমন ভাবে বলিঃ

আচ্ছা, এখানে এই জিনিষটা দেখে আমার কাছে মনে হচ্ছে "আমি কোন ভুল করছি, বা আমি কিছু মিস করছি"। আমাকে কি একটু বুঝিয়ে দিবে যে আমি কোথায় ভুল করলাম?

প্রায় ৯৫% সময়ই আমি আসলে তাদের ভুল ধরিয়ে দিয়েছি; কিন্তু তাদের দোষারোপ করি নি। বরং তাদের অন্যের সামনে লজ্জা না দিয়ে ভুলটি ঠিক করার সুযোগ করে দিয়েছি।

বাকি প্রায় ৫% সময় দেখা যায় আসলেই আমার ভুল চিলো। আর যেহেতু আমি তার কাছে স্বীকার করেই নিয়েছি যে আমার মনে হয় ভুল হচ্ছে, তারা আমাকে ধরিয়ে দেয়।

ব্যাস, এই একটা লাইন আমাকে অফিসের সবার মধ্যে বেশ প্রিয় করে তুলেছে। এমনকি অনেক ম্যানেজারও মাঝে মধ্যেই আমার সাথে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। আবার তারা আমার মধ্যে কোন ভুল পেলে সাধারণত আমার সাথেই সেটা আলাদা ভাবে আলোচনা করে নেন।

আপনি অন্যের ভুল ধরতে যতটা ওস্তাদ, নিজের ভুল ধরায় যদি তার ১০%ও ওস্তাদ হতেন, আপনি নিজেকে আরও ভালো কোন পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারতেন।

এটা ধারণা নয়, এটাই বাস্তব।

Photo by Markus Spiske on Unsplash

মন্তব্য ২০ টি রেটিং +৫/-০

মন্তব্য (২০) মন্তব্য লিখুন

১| ২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ভোর ৫:২৪

প্রতিদিন বাংলা বলেছেন: ভালো লেখা ।
অন্যের ভুল ধরেপ্রচার করি ,স্বঠিকটা কি হবে সেটা নিজেও জানিনা

২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ভোর ৫:৩৯

ঋণাত্মক শূণ্য বলেছেন: হুম

২| ২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২২ সকাল ৯:৪৫

মহাজাগতিক চিন্তা বলেছেন: এরকম পোষ্টই ব্লগে প্রয়োজন।

২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২২ দুপুর ১:৩৮

ঋণাত্মক শূণ্য বলেছেন: ধন্যবাদ।

তবে আমি মনে করি ব্লগে বিভিন্ন ধরণের লেখা আসবে। শুধু এমন পোষ্ট আসলেই এটা তো আর বাংলা ব্লগ থাকবে না; হয়ে যাবে মেন্টাল হেল্থ ব্লগ!

আপনার ভালো লেগেছে জেনে ভালো লাগলো। সাধারণত এই ধরণের পোষ্ট গুলি মানুষ পছন্দ করে না। শেষের যে পোষ্টটা করেছি, তাতেতো কেউ কমেন্টই করে নাই!

৩| ২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২২ সকাল ১০:০২

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: আমার ভুল কেউ ধরলে খুশি হই, সংশোধনের চেষ্টা করি। যারা ভুল ধরে তারা ভালোই চায়। কিছু অবশ্য আছে শত্রুতা করে পিছু লেগে থাকে। তারা দুষ্টলোক। তারা ছোটো করার জন্য ভুল ধরে।
ভুল সম্মানের সঙ্গে ধরিয়ে দেওয়া জরুরি। যাতে পরবর্তীতে ভুলটা না হয়। তবে কানাঘুঁষা বা পরচর্চা অবশ্যই নিন্দনীয়।

২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২২ দুপুর ১:৩৯

ঋণাত্মক শূণ্য বলেছেন: কেউ শুধরানোর জন্য ভুল ধরলে আমারও ভালো লাগে। তবে অধিকাংশ সময়ই মানুষ ভুল ধরে ছোট করবার জন্য।

৪| ২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২২ সকাল ১১:০৪

কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: আমার ভুল ধরলে খুশি হই। কিন্তু তাসীনের বাপে যে সারাদিন ভুল ধরে তারে কেডা বুঝাইতো মানুষ মাত্রই ভুল :(

সুন্দর পোস্ট +

২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২২ দুপুর ১:৩৯

ঋণাত্মক শূণ্য বলেছেন: কিছু কিছু মানুষের এটা অভ্যাস। তবে আমার বিশ্বাস তাসীনের বাপ অন্তর থেকে ভালোও বাসে!

ধন্যবাদ।

৫| ২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২২ সকাল ১১:১৩

রানার ব্লগ বলেছেন: না এটা কঠিক কাজ না !!! সহজ কাজ হলো অন্যকে কষ্ট দেয়া , নিমিষেই আপনি কিছুই না জেনে বুঝে অন্যকে কষ্ট দিতে পারবেন ।

২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২২ দুপুর ১:৪০

ঋণাত্মক শূণ্য বলেছেন: আপনি কিন্তু সহজেই আমার ভুল ধরে ফেলেছেন! :P

৬| ২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২২ সকাল ১১:২৯

রবিন.হুড বলেছেন: ঠিক কথা বলেছেন। তবে আমি সব সময় আমার ভুল থেকে বের হতে চেষ্টা করি।

২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২২ দুপুর ১:৪০

ঋণাত্মক শূণ্য বলেছেন: চেষ্টা অব্যহত থাকুক। ধন্যবাদ।

৭| ২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২২ সকাল ১১:৪৭

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: ভালো লিখেছেন।
কেউ ভুল ধরিয়ে দিলে সেটি যে পক্ষান্তরে উপকার করা হয় সেটা অনেকেই বুঝতে চায় না। অনেকে আবার নিজের ভুল জানাটা কিছুই ছাড়তে যায় না।

২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২২ দুপুর ১:৪১

ঋণাত্মক শূণ্য বলেছেন: এই কথা সবার জন্য প্রযোজ্য।

৮| ২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২২ বিকাল ৩:০৯

রাজীব নুর বলেছেন: কেউ আমার ভুল ধরে দিলে আমি খুশি হই। তারপর নিজের ভুল শুধরে নিই।

২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২২ বিকাল ৩:৫৪

ঋণাত্মক শূণ্য বলেছেন: তাই?

৯| ২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২২ রাত ১১:০৭

নেওয়াজ আলি বলেছেন: মানুষ উপদেশ দিতে ভালোবাসে তাই অন্যের দোষ খোজে

২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২২ রাত ১২:৫৫

ঋণাত্মক শূণ্য বলেছেন: কিন্তু কাজের উপদেশ ক'জনা দিতে পারে?

১০| ২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২২ রাত ৩:২৪

জটিল ভাই বলেছেন:
যারা অন্যের ভুল ধরে আনন্দ পায়, এদের যে এটা একটা মানসিক রোগ, তা প্রায়সই আমরা বুঝি না। কারণ মানসিক রোগ বলতে আমরা সাধারণত উন্মাদ হয়ে নির্দিষ্ট কোন পাগলাগারদ বা রাস্তার মোড়ে বক্তৃতা দেওয়াকে বুঝি।

এমন বক্তা আর ভক্ত কিন্তু সোস্যাল মিডিয়াতেও কম নয়!

তবে পোস্টের টপিক ও উপস্থাপনা খুব জটিলভাবে সুন্দর হয়েছে। তবে পরিবর্তন আসবে বলে আশাবাদী হতে পারিনা। হয়তো এটাই আমার ভুল :(

২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২২ সকাল ১১:৫৬

ঋণাত্মক শূণ্য বলেছেন: পৃথীবিতে মানুষ অনেক, প্রতিদিন যদি ১,০০,০০০ লোকও ভালো হয়, তাহলেও বহু বহু দিন লেগে যাবে পরিবর্তন আসতে। তাই সবার পরিবর্তন আশাকরি না। চেষ্টা করি ১ থেকে শুরু করতে। যদি ১জনও পরিবর্তন হয়, সেটাও অনেক।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.