নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

দূরে থাকুন; ভালো থাকুন।

ঋণাত্মক শূণ্য

নেগেটিভিটিতে বিশ্বাস করি না; তাই এমন নাম বেছে নিলাম, যা বাস্তব নয়!

ঋণাত্মক শূণ্য › বিস্তারিত পোস্টঃ

সমাজ ও জাতি গঠনে "কুসুমের মা"য়েদের অবদান অনস্বীকার্য

১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:৪৮

আমি জন্মাইয়াছি ও বড় হইয়াছি খুলনায়। আমার এলাকা যদিওবা সিটি কর্পোরেশনের ভিতরেই পড়ে, তবুও আমি উহাকে মফস্বলই বলিবো। মফস্বলে বাড়িয়া ওঠার বিশেষ কিছু সুবিধা আছে, যাহা আজকাল আর শহরে তেমন একটা পাওয়া যায় না।



আমি আপনাদের আজকে আমার এলাকার একজন মহিয়সী(!?) নারীর কথা বলিবো, আমাদের এলাকার বিভিন্ন মানুষের চরিত্রগঠনে যাহার অবদান আনস্বীকার্য। আপনি হয়ত লেখা শেষে বুঝিতে পরিবেন যে এমন মানুষ গুলি কেন আমাদের প্রতি পাড়া-মহল্লায় দরকার।

মূল অংশে যাইবার আগে তাহার পরিচয় বলি। তাহার নাম আমি বলিতে চাহিতেছি না, তাই ছদ্ম নাম "কুসুমের মা" বলিলাম। তিনি আমার প্রতিবেশী ছিলেন, প্রতিবেশী বলতে উনাদের ঘর আর আমাদের ঘর একই উঠানের উপরে। পরবর্তিতে অবশ্য উনারা আমাদের পাশের বিল্ডিং এর ৩য় তলার অধিবাসী হইয়াছিলেন।

তিনি একজন দক্ষ "সার্ভালেন্স ক্যামেরা" ছিলেন। তাহার দৃষ্টি (ও কর্ণ) এড়িয়ে কোন কিছু করা প্রায় অসম্ভব। আমাদের এলাকার এমন কোন মানুষ নাই যে উনাকে ভয় করিতো না। ৩য় তলায় উন্নিত হইবার পর তাহার ক্যামেরা সাধারণ HD হইতে একেবারে 8K হইয়া গিয়াছিলো। যদিও ঐ জামানায় কেউই 8K শব্দটিই জানিতো না। তাহার আর একটি গুন ছিলো, তিনি ২০০-৩০০ মিটার দূর হইতে কাহারও ঠোঁটের নাড়াচাড়া দেখিয়াই উনি ঐ ব্যক্তি কি বলিতেছে তাহা বুঝিয়া ফেলিতে পারিতেন। আফসোস, সরকার তখন লিপ-রিডার হয়ার করিতো না, করিলে উনি সরকারী বিশাল পদের অধিকারী হইতে পারিতেন।

যাই হোক, পোলাপাইন তাহার অন্য কিছু নামও দিয়াছিলো। কেউ তাহাকে BBC, কেউ CNN, কেউ তাহাকে Voice of "আমাদের এলাকার নাম" বলিয়া ডাকিতো।

তিনি সারাদিন নানান কাজে ব্যস্ত থাকিতেন, বিকালে তিনি বসিতেন ৩য় তলার ব্যালকনিতে, সব কিছু অবজার্ভ করিতেন। সন্ধ্যার পর তিনি বিভিন্ন বাড়ি বেড়াইতে যাইতেন। এবং সারাদিন তিনি যা যা তথ্য মানুষের মাঝে ছড়াইয়া দিতেন। আশাকরি পাঠক সহজেই বুঝিতে পারিতেছেন যে কেন তাহাকে পোলাপাইন BBC, CNN বা Voice of "আমাদের এলাকার নাম" বলিয়া ডাকিতো।

ইহা লইয়া প্রায়সই আমাদের এলাকায় সমস্যা তৈরী হইতো। তবে তিনি এমনই এক অকট্য যুক্তি দেখাইতেন যাহা ভঙ্গ করিবার মুরোদ অত্র এলাকার আর কাহারও ছিলো না।

তিনি বলিতেন এলাকাটা শান্তিতে আছে তাহার এই কথার কারণে। তাহার কথার ভয়ে নাকি বহু লোক বহু আকাজ-কুকাজ কমাইয়া কমাইয়া করে। তিনি ও তাহারা না থাকিলে সমাজ (পক্ষান্তরে জাতি) ধ্বংস হইয়া যাইতো।

মফলস্বলের মত হইবার কারণে এলাকায় কুসুমের মাকে নিয়া একাধিকবার বিচার-আচার বসিয়াছে। বিচারে তাকে একাধিকবার মানুষের পিছে লাগতে নিষেধ করা হইয়াছে, কখনও কখনও তাহাকে প্রায় এক ঘোরে করিয়া রাখা হইয়াছে। কিন্তু তাহাতেও কুমুসের মায়ের কোন পরিবর্তন দেখা যায় নি।

তবে কুসুমের মায়ের একটি বড় যোগ্যতা ছিলো, তা হহা হইলো, তিনি নিজের ও নিজের পরিবারের সকলের দোষ সুন্দর ভাবে গোপন করিতেন। কেহ তাহাকে তাহার ও পরিবারের বিষয়ে প্রশ্ন করিলে তিনি হয় তাহাকে কিছু উচ্চমর্গীয় বাজে কথা শুনাইয়া দিতেন, অথবা নতুন উদ্যমে তাহার পিছু লাগিতেন।

তাহার সাথে আমার খুব বেশী বাহাস হয় নি কখনও। একবার হইয়াছিলো, কোন কারণে আমার বড় ভাই আমাকে ধরে প্যাদানি দিয়েছিলেন। বৈকাল বেলায় মাঠে খেলিতে বাহির হইয়াছি, মহিলা বলিযা উঠিলেন, ওহে, তোমার ভাই যে তোমাকে প্যাদানিটা দিলো, তাহার হেতু টা কি, শুনি!

আমার মেজাজ যথেষ্ট চড়িয়া গেলো, আমি তাহাকে শুধাইলাম, আপনার জামাই যে আপনাকে গতকল্য আর এক ব্যাটার সাথে হাসিয়া কথা বলিবার অপরাধে প্যাদানি দিলো, আমরা কি তাহার বিষয়ে কিছু জিজ্ঞাসা করিয়াছি?

যা হোক, আমরা ছোট থেকে মাঝারি হইয়াছি, মাঝারি থেকে বড় হইয়াছি; কিন্তু কুসুমের মায়ের ম্যাচিউরিটি এখনও সেই আগের মতই রহিয়া গিয়াছে। তিনি এখন বৃদ্ধা হইয়াছেন, তবু তিনি এই কাজ ছাড়েন নাই। বরং তাহার যদি মাঝে মধ্যে খারাপ লাগে, ছেলে বলে এবাড়ি-ওবাড়ি ঘুরে এসো মা।

-------------------

ব্লগে দেখিলাম এক ব্যক্ত অন্য ব্যক্তিকে কতগুলি মন্তব্য করিয়াছেন, আর কতগুলি পাইয়াছে তাহা লইয়া ধোলাই করিয়াছেন, তিনার বিভিন্ন সময়ের লেখা আমরা পড়িয়াছি, উনি একাধিক সময় বুঝাইবার চেষ্টা করিয়াছেন যে উনি কিভাবে সকলকে শুধরাইয়া "সমাজ ও জাতি গঠনে" বিশেষ অবদান রাখিয়াছেন।

(অ)ভদ্রলোক আবার সাজেশন দিয়া থাকেন নুসরাত ফারিয়ার অভিনয় না দেখিয়া মিয়া খলিফার অভিনয় দেখিতে, কারণ মিয়ার দর্শক ভক্ত অনেক বেশী।

উনাকে সম্ভব হইলে কুসুমের মায়ের সাথে পরিচয় করাইয়া দিতাম। কুসুমের মায়ের সাথে না হোক, বাঙলার আনাচে-কানাকে ছড়িয়ে ছিটিয়া থাকা এমন হাজারও কুসুমের মায়ের সাথে তাহার পরিচয় করাইয়া দিতে মন চায়। তাহাদের মন-মানষিকতা যেহেতু একই, তাহাদের জমিতো ভালো। তাহারা সকলেই 'সমাজ ও জাতি গঠনে বিশেষ ভূমিকা' রাখিতেছেন। তাহাদের একটা এওয়ার্ড দেওয়ার ব্যবস্থা করা যায় কি না তাহা লইয়াও আমি ভাবিতেছি।

Photo by Eden Constantino on Unsplash

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৩ ই অক্টোবর, ২০২৪ দুপুর ১২:০৫

জুল ভার্ন বলেছেন: খুলনার সাথে আমার একটা আত্মীক সম্পর্ক আছে। আমি খুলনা সেন্ট জোসেফ স্কুলের ছাত্র ছিলাম। আবার ঐ স্কুল থেকেই ঝিনেদা ক্যাডেট কলেজে ভর্তি হই।

২| ২৫ শে নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:৪৪

প্রত্যাবর্তন@ বলেছেন: ব্লগে দেখিলাম এক ব্যক্ত অন্য ব্যক্তিকে কতগুলি মন্তব্য করিয়াছেন, আর কতগুলি পাইয়াছে তাহা লইয়া ধোলাই করিয়াছেন, তিনার বিভিন্ন সময়ের লেখা আমরা পড়িয়াছি, উনি একাধিক সময় বুঝাইবার চেষ্টা করিয়াছেন যে উনি কিভাবে সকলকে শুধরাইয়া "সমাজ ও জাতি গঠনে" বিশেষ অবদান রাখিয়াছেন।


## উনি সবজান্তা শমসের

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.