নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

\'\'অসাধারণ পৃথিবীতে একজন সাধারণ মানুষ\'\'

নিউটনিয়ান

নিজেকে সংজ্ঞায়িত করার কোনো সংজ্ঞা জানা নাই।

নিউটনিয়ান › বিস্তারিত পোস্টঃ

\'\'আন্তর্জাতিকভাবে পরিচিত, অনেকেই চিনে - আপনি চিনেন কি? তারা কিন্তু বাংলাদেশী\'\'

০৮ ই এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৫:১৪

প্রবাসে বাংলাদেশীদের অবদান কোনও অবস্থাতেই অস্বীকার করার জো নেই। প্রত্যেক প্রবাসীই যার যার অবস্থান থেকে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে অবদান রেখে চলেছে। অনেকেই অনেক ক্ষেত্রে, অনেক দেশে হয়েছেন স্বনামধন্য। এদের মধ্য থেকে কিছু প্রবাসী বাংলাদেশী বংশদূত রয়েছেন যাদের সুনাম বিশ্বব্যাপী, যাদের অবদান বিশ্বের দরবারে পরিব্যাপ্ত। বিশ্বের প্রথম সারির ব্যাক্তিদের থেকে যাদেরকে আলাদা করার সুযোগ নেই। এমনই কিছু নক্ষত্রের সংক্ষিপ্ত পরিচয় তুলে ধরা হল।

- জাওয়েদ করিম

ফেইসবুক, গুগল এবং ইউটিউব - বর্তমান সময়ে মানুষের মৌলিক চাহিদার নতুন সংযোজন। এই তিনটি উপকরণের একটির আবিষ্কারের ভাগীদার কিন্তু একজন বাংলাদেশী বংশদূত।

বর্তমানে ইউটিউব ব্যবহার করেনা এমন ব্যক্তি খুঁজে পাওয়াই দুষ্কর। ইউটিউব ইন্টারনেট জগতের একটা বড় পরিসর। এই ইউটিউবেরই তিনজন প্রতিষ্ঠাতার একজন হলেন জাওয়েদ করিম। এমনকি ইউটিউবের সর্বপ্রথম ভিডিও আপলোডার ও তিনি। ‘’Me At The Zoo’’ নামে ভিডিও আপলোডের মাধ্যমেই ইউটিউবের সূচনা। ইউটিউবে সার্চ দিলেই পাওয়া যাবে ভিডিওটি। ইউটিউব বর্তমানে আরেক ইন্টারনেট জায়ান্ট গুগলের মালিকানাধীন।

জাওয়েদ করিম জার্মানিতে অবস্থিত বাংলাদেশী বংশদূত নাইমুল করিমের ছেলে। বিখ্যাত স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর করা জাওয়েদ ইউটিউব প্রতিষ্ঠার আগে ইন্টারনেট ভিত্তিক অর্থ আদান প্রদানের জনপ্রিয় সাইট পেপ্যাল এ কর্মরত ছিলেন। পেপ্যাল এর অনেক গুরুত্বপূর্ণ কর্মাদি জাওয়েদ করিমের দ্বারা সম্পাদিত হয়েছিল, যা পেপ্যালকে তার মজবুত অবস্থান তৈরিতে সাহায্য করে। পেপ্যাল বর্তমানে সবচেয়ে বড় এবং নির্ভরযোগ্য অর্থ আদান প্রদানের মাধ্যম। তিনি বর্তমানে একজন সফল ব্যবসায়ী।

- সালমান খান

আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থার অন্যতম প্রতিকৃত। প্রযুক্তি এবং শিক্ষার সেতুবন্ধন তৈরির অনন্য কারিগর।

সাল খান নামে পরিচিত ও খান একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা। আমেরিকায় বসবাসরত বাংলাদেশী বংশদূত। সালমান খান পরিচিতি লাভ করেন অনলাইন ভিত্তিক ভিন্নধর্মী পাঠদান ব্যবস্থা উদ্ভাবনের জন্য। যারই ফলশ্রুতিতে প্রতিষ্ঠা করেন অলাভজনক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ‘’খান একাডেমি’’। সাল খানের ব্যতিক্রমী পাঠদান পদ্ধতি বর্তমান প্রজন্মের কাছে খুবই জনপ্রিয়তা লাভ করে। খান একাডেমি তাদের নিজস্ব ওয়েবসাইট এবং ইউটিউবের মাধ্যমে একাধিক ভাষার মাধ্যমে পাঠদান করে থাকে, যা বিশ্বের যে কারো জন্য উন্মুক্ত। বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তাদের শিক্ষার্থীদের পাঠ অনুসরণ করতে উৎসাহিত করে থাকে। এ পর্যন্ত খান একাডেমি এক বিলিয়নেরও বেশী পাঠ ৪০ মিলিয়নেরও বেশী শিক্ষার্থীকে প্রদান করতে ভূমিকা রেখেছে।

খান একাডেমির মত এত বড় প্ল্যাটফর্ম তৈরির পেছনের মানুষটির নাম সালমান খান। স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান ‘’এমআইটি (MIT)’’ থেকে স্নাতক ও জগদ্বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয় ‘’হার্ভাড” থেকে স্নাতকোত্তর লাভ করেন। যে কিনা ২০১২ সালে বিখ্যাত টাইম ম্যাগাজিনের ১০০ শ্রেষ্ঠ প্রভাবশালী ব্যক্তির তালিকায় তালিকাভুক্ত হয়। ফোর্বস ম্যাগাজিনে তাকে নিয়ে আর্টিকেল লেখা হয়েছে; পিবিএস এবং সিএনএন এর মত প্রতিষ্ঠান তাকে নিয়ে ফিচার তৈরি করেছে। বিল গেটস স্বয়ং তার আইডিয়াকে যুগান্তকারী ঘোষণা দিয়েছেন। গুগল ও গেটস ফাউন্ডেশন থেকে শুরু করে অনেক বড় বড় প্রতিষ্ঠান খান একাডেমির প্রচার ও প্রসারের জন্য তহবিল প্রদান করে যাচ্ছে। ‘’সকলের জন্য, সব জায়গায়, বিনামূল্যে শিক্ষাদান’’ শ্লোগান নিয়ে শুরু করা ‘’খান একাডেমি’’এখন আধুনিক ও ব্যতিক্রমী শিক্ষা ব্যবস্থার এক যুগান্তকারী উদাহরণ।

- এম জাহিদ হাসান ও মাকসুদুল আলম

বিজ্ঞান ও গবেষণা ক্ষেত্রেও রয়েছে বাংলাদেশীদের উল্লেখযোগ্য অবদান। এম জাহিদ হাসান ও মাকসুদুল আলম এমনই দুজন ব্যাক্তি গবেষণাকার্যে যাদের অবদান অবিস্মরণীয়।

এম জাহিদ হাসান যুক্তরাষ্ট্রের প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের একজন অধ্যাপক এবং বিজ্ঞানী।
তার কিছু গবেষণা ও আবিষ্কার বিজ্ঞানের অনেক ক্ষেত্রেই ব্যবহৃত হচ্ছে। তিনি বিশ্বের একজন শ্রেষ্ঠ প্রভাবশালী বৈজ্ঞানিক চিন্তাবিদ দের একজন, যার রেফারেন্স বহু রিসার্চের কোট হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। তার প্রকাশিত ১৫০ এরও বেশী রিসার্চ পেপার আছে। বহু গবেষক তাদের গবেষণার জন্য জাহিদ হাসানের রেফারেন্স উল্লেখ করে থাকে।

ঢাকা কলেজের প্রাত্তন ছাত্র এবং পরে ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাস অ্যাট অস্টিন হতে ব্যচেলর ও স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি লাভ করেন। পিএইচডি করার সময়ই বের করেন কঠিন বস্তুর মধ্য দিয়ে ইলেকট্রনের কোয়ান্টাম সংখ্যা বের করার কৌশল। সেই থেকেই তার পরিচিতি শুরু। বিজ্ঞানকে এগিয়ে নেবার উদ্দেশ্যে কাজ করে যাচ্ছেন এখনও।

আমেরিকান বাংলাদেশী বংশদূত আরেক বিজ্ঞানী মাকসুদুল আলম (১৯৫৪-২০১৪), যিনি ছিলেন নাম করা জীনতত্ত্ববিদ। যিনি পাট, রাবার, পেঁপে ও ছত্রাকের জিনোম উদ্ভাবন করেন। গভর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি ও ঢাকা কলেজের প্রাত্তন ছাত্র এবং অনুপ্রাণ বিভাগে স্নাতক, স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি সম্পন্ন করেন মস্কো স্টেট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। পরে আবার প্রাণরসায়নের উপর পিএইচডি করেন ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক ইউনিভার্সিটি থেকে। যিনি ইউনিভার্সিটি সেইন্স মালায়শিয়া ও ইউনিভার্সিটি অব হাওয়াই এ কর্মরত ও গবেষনার কাজ করতেন।

মাকসুদুল আলম উন্মোচন করেন পাট ও ব্যাকটেরিয়ার জীবন রহস্য (জিনোম সিকোয়েন্সিং)। যার ফলে দেশে বিদেশে মাকসুদুল আলমের নাম ও গুরুত্ব বেড়ে যায়। তার উদ্ভাবন নিয়ে প্রভাবশালী বিজ্ঞান ভিত্তিক ম্যাগাজিন ‘’ন্যাচার’’ প্রতিবেদন প্রকাশ করে। তার উদ্ভাবনগুলা মালেয়শিয়া ও যুক্তরাজ্যে হলেও, পাট ও ছত্রাকের জিনোম আবিষ্কারের পেটেন্টগুলা বাংলাদেশকেই করে যান। যার ফলশ্রুতিতে বাংলাদেশ সরকারের কাছ থেকে স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত হন। জীববিজ্ঞান শাখায় তার অবদান স্মরণীয় হয়ে থাকবে। বহু স্বপ্নকে জাগ্রত করে দুঃখজনকভাবে ২০১৪ সালে উনি পরলোকগমন করেন।

- টমি মিয়া ও নাদিয়া হুসেইন

রন্ধনশিল্পেও বাংলাদেশীদের সুনাম আকাশচুম্বী। বিশ্বের অনেক দেশেই বাংলাদেশী খাবারের রয়েছে অনেক জনপ্রিয়তা। রন্ধন শিল্পী হিসেবে বিশ্বের দরবারে সুনাম কুড়িয়েছেন টমি মিয়া ও নাদিয়া হুসেইন এবং কাজ করে যাচ্ছেন দেশীয় রান্নাকে বিশ্বের কাছে মহিমান্বিত করতে।

ব্রিটেনের ‘’কারি কিং’’ খ্যাত টমি মিয়া। টমি মিয়াকে মোটামুটি অনেকেই চিনি। রেস্তোরাঁর বাসনাদি ধোয়ার কাজ দিয়ে শুরু করে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করেন বিশ্বের সেরা রন্ধন শিল্পীর একজন হিসেবে, সুনাম তৈরি করেন আন্তর্জাতিক অঙ্গনে। রান্না করেছেন ব্রিটেনের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে সব নামীদামী ব্যক্তিদের জন্য। টমি মিয়া একধারে ব্যবসায়ী, সেলিব্রেটি শেফ, ইন্টারন্যাশনাল ইন্ডিয়ান শেফ অব দা ইয়ার এর প্রতিষ্ঠাতা। তিনি দেশে বিদেশে অনেক দাতব্য কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত। বেকারদের কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে বাংলাদেশেও প্রতিষ্ঠা করেছেন অনেক হস্পিটালিটি ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠান। দেশী খাবারকে বিশ্বের দরবারে পরিচয় করিয়ে দিতে ও নতুন প্রজন্মের কারি কিং তৈরি করতে কাজ করে যাচ্ছেন টমি মিয়া।

নাদিয়া হুসেইনও টমি মিয়ার মতই একজন রন্ধন শিল্পী। নাদিয়া হুসেইনের আবির্ভাব আরেকটু নতুনভাবে, ভিন্ন আঙ্গিকে। ২০১৫ সালে ‘’গ্রেট ব্রিটিশ বেক অব’’ এর বিজয় মুকুট পরার মাধ্যমে তার পথচলা শুরু। এর পর থেকে আর থেমে থাকতে হয় নি। তিনি একাধারে টেলিভিশন ব্যক্তিত্ব, উপস্থাপক, কলাম লেখক এবং লেখক। তার কয়েকটি টেলিভিশন অনুষ্ঠান সম্প্রচারিত হচ্ছে ও কয়েকটি বই প্রকাশিত হয়েছে। কাজ করে যাচ্ছেন একাধারে টাইম ম্যাগাজিন, বিবিসি, আইটিভির মত প্রতিষ্ঠানের জন্য। ২০১৭ সালেই নাদিয়া স্থান পেয়েছে বিখ্যাত প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান ‘ডেবরেট’ এর ৫০০ প্রভাবশালীদের তালিকায় এবং বিবিসি নিউজের ১০০ শ্রেষ্ঠ মহিলার তালিকায়। ব্রিটেনের রানী এলিজাবেথের ৯০ তম জন্মদিনের কেকও তৈরি করেন নাদিয়া। বাংলাদেশী বংশদূত নাদিয়া হুসেইনের পথচলা এগিয়ে চলছে সফলভাবেই। কাজ করে যাচ্ছেন রন্ধন শিল্পকে অন্য উচ্চতায় নিয়ে যেতে।

- শেষের কথা

প্রবাসীরা দেশেরই সম্পদ। তাদের অবদান পরিশেষে দেশেরই সুনাম বয়ে আনে। প্রত্যেক প্রবাসীরই রয়েছে নিজ মাতৃভূমির প্রতি ভালোবাসা। প্রবাসে থাকে বলে তাদের অবদানকে ছোট করার জো নেই, হয়ত প্রবাসে না থাকলে তাদের পক্ষে ওই সাফল্যগুলা পাওয়া সম্ভব হত না। প্রবাসীদের সাথে দেশের একটা সেতুবন্ধন তৈরি করা উচিত। যাতে করে প্রবাসীরা তাদের মেধা ও অভিজ্ঞতা দেশের কাজে লাগিয়ে দেশেকে নিয়ে যেতে পারে অন্য উচ্চতায়।

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৫:৪৬

শাহ আজিজ বলেছেন: খান একাডেমীর পাঠ্যসূচী ডাউনলোড করে আমার ছেলেটি ও আর এ লেভেলে উচ্চমানের রেজাল্ট করেছিল । শিক্ষাজগতে খান এখন নক্ষত্র হয়ে বিরাজ করছে ।

০৮ ই এপ্রিল, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:১৮

নিউটনিয়ান বলেছেন: আপনার সন্তানের উজ্জলতর ভবিষ্যৎ কামনা করি।

২| ০৮ ই এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৫:৫৬

মনিরা সুলতানা বলেছেন: ভালো লেগেছে আপনার পোষ্ট
আপনার ভাবনাও ।

০৮ ই এপ্রিল, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:১৮

নিউটনিয়ান বলেছেন: ধন্যবাদ মনিরা।

৩| ০৮ ই এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৫:৫৮

তারেক_মাহমুদ বলেছেন: চমৎকার পোষ্ট

০৮ ই এপ্রিল, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:১৮

নিউটনিয়ান বলেছেন: ধন্যবাদ তারেক মাহমুদ।

৪| ০৮ ই এপ্রিল, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৫২

আল ইফরান বলেছেন: পোস্টের মুল বক্তব্যের সাথে কঠিনভাবে সহমত পোষণ করছি।

০৯ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১২:০০

নিউটনিয়ান বলেছেন: ধন্যবাদ

৫| ০৮ ই এপ্রিল, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:১৮

মো: নিজাম উদ্দিন মন্ডল বলেছেন: ভাই, লেখার সাথে কিছু ছবি দিতে পারতেন?

০৯ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১২:০১

নিউটনিয়ান বলেছেন: হ্যাঁ তা ঠিক বলেছেন। পরে থেকে দিব।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.