![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন বিনোদন প্রেমি মানুষ, অনেক আগ থেকে ব্লগ লিখছি...
একটি স্বাধীন রাষ্ট্র। বিশ্বের ইতিহাসে একটি দেশ স্বাধীনতা লাভ করার জন্যে যুদ্ধ করেছে এটা বিরল ঘটনা। বাংলাদেশ স্বাধীনের পরে এখানকার সবকিছুতে আস্তে আস্তে পরিবর্তনের হাওয়া বয়তে থাকে। সেই পরিবর্তনের ছোঁয়া সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ভাবে হয়েছে।
গুরুত্ব সহকারে ডাঃ কামাল হোসেনকে আহবায়ক করে ৩৪ সদস্য মাধ্যম গঠিত হয় কমিটি। সেই কমিটির মাধ্যমে বাংলাদেশের সংবিধান রচিত হয়।১৯৭২ খ্রিষ্টাব্দের ৪ঠা নভেম্বর তারিখে বাংলাদেশের জাতীয় সংসদে এই সংবিধান গৃহীত হয় এবং একই বছরের ১৬ই ডিসেম্বর অর্থাৎ বাংলাদেশের বিজয় দিবসের প্রথম বার্ষিকী হতে এটি কার্যকর হয়। মূলত বাংলাদেশের সংবিধান ইংরেজি ভাষায় রচিত হয় এবং একে বাংলায় অনুবাদ করা হয়।
১০ই এপ্রিল ২০১৮ সালের সপ্তদশ সংশোধনী সহ বাংলাদেশের সংবিধান এ পযন্ত সর্বমোট ১৭ বার সংশোধীত হয়েছে। এই সংবিধান সংশোধনের জন্য জাতীয় সংসদের সদস্যদের মোট সংখ্যার দুই তৃতীয়াংশ ভোটের প্রয়োজন হয়।
তবে পঞ্চম সংশোধনী , সপ্তম সংশোধনী , ত্রয়োদশ সংশোধনী ও পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিলের আদেশে বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট রায় দিয়েছে যে, সংবিধানের মূল কাঠামো পরিবর্তন হয়ে যায় এরূপ কোনো সংশোধনী এতে আনা যাবে না; আনা হলে তা হবে এখতিয়ার বহির্ভূত।
বাংলাদেশের সংবিধান কেবল বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আইনই নয়;সংবিধানে বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের মূল চরিত্র বর্ণিত রয়েছে। এতে বাংলাদেশের ভৌগোলিক সীমারেখা বিধৃত আছে। দেশটি হবে প্রজাতান্ত্রিক, গণতন্ত্র হবে এদেশের প্রশাসনিক ভিত্তি, জনগণ হবে সকল ক্ষমতার উৎস এবং বিচার বিভাগ হবে স্বাধীন। জনগণ সকল ক্ষমতার উৎস হলেও দেশ আইন দ্বারা পরিচালিত হবে। সংবিধানে জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা -কে রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে।
বাংলাদেশের সংবিধান সম্পর্কে আরো বিস্তারিত পড়ুন
এবার আসুন আমরা মূল বিষয়ে ফিরে আসি। বিচার বিভাগ যদি সত্যি স্বাধীন হয়ে থাকে তাহলে দেশে বিচারবহির্ভূত হত্যা হয় কেন? ও আচ্ছা তার আগে জেনে নিন—বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড কি?
বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড হচ্ছে একপ্রকার বেআইনি হত্যাকাণ্ড যা সাধারণত রাজনৈতিক, ব্যবসায়িক, সামাজিক ব্যক্তিত্ত্ব, বা অপরাধীকে রাষ্ট্রপ্রদত্ত আইনত বিচারের পূর্বেই হত্যা করা হয়। এটি সাধারণত সরকার, প্রাদেশিক সরকারের মাধ্যমে, যেমন: পুলিশ বা সশস্ত্র বাহিনী, অথবা বিভিন্ন অপরাধী সংগঠন ধারা করা হয়।
বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে আরো বিস্তারিত পড়ুন
আসুন আরো একটি বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের নাম ক্রসফায়ার সম্পর্কে জানি:
ক্রসফায়ার হলো বন্দুকযুদ্ধের নামে 'কুখ্যাত অপরাধী' বা 'অপরাধী সন্দেহভাজন' বা 'অপরাধীগণ্য' কোন ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা করা। ১৯৭৩ সালে ভারতের পশ্চিম বঙ্গে নকশালবাদী আন্দোলন নিয়ন্ত্রণে আনার লক্ষ্য নিয়ে কলকাতার পুলিশ কমিশনার রণজিৎ গুপ্ত এই কৌশলটি প্রয়োগ শুরু করেন। পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ এর নাম দিয়েছিল "পুলিশ এনকাউন্টারে মৃত্যু"। বাংলাদেশে ক্রসফায়ারে নিহত অন্যতম প্রধান ব্যক্তি হলেন পূর্ব বাংলা সর্বহারা পার্টির নেতা সিরাজ সিকদার। ১৯৭৫ সালের ২ জানুয়ারি তাকে আটক অবস্থায় গুলি করে হত্যা করা হয় এবং তার লাশ সাভারের তালবাগ এলাকায় ফেলে রাখা হয়। ২০০২ সাল থেকে বাংলাদেশে এই পদ্ধতির পুনঃপ্রয়োগ শুরু হয়। সে সেময় সন্ত্রাস দমনের জন্য স্বল্পমেয়াদী অপারেশন ক্লিনহার্ট চালু করা হয়। আইন বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের অন্তর্গত হওয়ায় এটি ব্যাপক বিতর্কের কারণ।২০০৪ খ্রিষ্টাব্দে 'অপারেশন ক্লিনহার্ট' পরিচালনার সময় পুনরায় 'ক্রসফায়ার' ব্যবহার শুরু হয়।
ক্রসফায়ার সম্পর্কে আরো পড়ুন
বাংলাদেশের মাটিতে প্রতিনিয়ত বিচারবহির্ভূত হত্যা ও ক্রসফায়ার এবং গুম বেড়েই চলছে।এই সংবিধান অনুযায়ী জনগণ অন্যায় বা অপরাধ করলে তার শাস্তি প্রধান করবে আদালত। তবে আজকাল বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে দেশের আইনকানুন সহ আদালত অবমাননা হয়। কেন না দেশে আইন আদালত রয়েছে বিচারের মাধ্যমে সঠিক ও সুবিচার প্রতিষ্ঠার লক্ষে, অপরদিকে তার উল্টা মোড় চাচ্ছে দেশের অধিকাংশ প্রশাসনিক বাহিনী।
প্রায় সময় পত্রপত্রিকা ও টেলিভিশনের নিউজ পড়ে ও শুনে জানা যায় বিচারবহির্ভূত হত্যা সম্পর্কে। বাংলাদেশে ইদানীং সময়ে এই ঘটনা বেশি ঘটতেছে। ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকার পিলখানায় তৎকালিন বিডিআরদের একটি গ্রুপ দ্বারা সংগঠিত বিদ্রোহ। ঘটনায় ৫৭ জন সদস্যকে নির্মম ভাবে হত্যা করা হয়। আবার নতুন করে গত ১ এ আগস্ট কক্সবাজারে একজন পুলিশের এস.আই কতৃক নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। এগুলো কি বিচারবহির্ভূত হত্যা কান্ড নয়? এ হত্যাকাণ্ড গুলো কি প্রমাণ করেনা দেশের বিচার ব্যবস্থা দুর্বল।
সাবেক সেনা কর্মকর্তাকে গুলি করে হত্যা: বিস্তারিত পড়ুন
বর্তমান সরকারের ৩য় মেয়াদে ক্ষমতা চলছে।তারপরেও আইনকানুনের অবমাননা সবচেয়ে বেশি হয়েছে বলে মনে করে সাধারণ মানুষ। কেন না দেশের মাটিতে সঠিক বিচার ও তদন্ত নেই।আইনকানুনের সঠিক প্রয়োগ নেই।যে কোন সময় পুলিশ সহ নানান বাহিনী বন্দুক যুদ্ধের নামে নানান নাটক সাজিয়ে বিচারবহির্ভূত হত্যায় জড়িয়ে থাকে।
DW Bangla তে প্রকাশ হওয়া "ক্রসফায়ারের’ উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কবে? বিস্তারিত পড়ুন
২০০৮ সাল থেকে বিচারের নামে প্রহসন সৃষ্টি করা হয়েছে।এ সরকার ক্ষমতায় আসার পরে ২০০৯ সালের বিডিআর বিদ্রোহের হত্যা করা হয় ৫৭জন সেনা কর্মকর্তাকে,দেশে যদি সঠিক আইনকানুন থাকতো তাহলে বিচার পাওয়ার জন্যে ১১বছর অপেক্ষা করা লাগতো না।দেশের সাধারণ মানুষ আইন আদালত ও নানান বাহিনীদের নিজের কাজে ব্যবহার করছে সরকার এমন প্রশ্ন তোলার সাহস পেতো না। পাশাপাশি রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা দেশের আইনকানুন নিয়ে সমালোচনা করতো না।
২০০৯ থেকে শুরু করে ক্রসফায়ার ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বেড়েই চলছে।সেই ধারাবাহিকতায় ২০১৮ সালে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বেড়েছে ২৮৭ শতাংশ। বিস্তারিত পড়ুন।
একটি দেশে যদি ২০১৮ সালে বিচারবহির্ভূত হত্যা ২৮৭ শতাংশ বৃদ্ধি হয়।তাহলে ২বছর পরে কি এদেশে ৩শ শতাংশের বেশি বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ডের শিকার হয়নি? এতে করে বিচারআচারের ও আইন আদালতের প্রতি কি মানুষের আস্তা আর থাকে? তাছাড়া মানুষের জীবন এভাবে নেওয়াটা কি অপরাধ নয়?
বিচারবহির্ভূত হত্যায় আমরা পুলিশের একটি উক্তি প্রায় সময় শুনে থাকি।আর সেটা হলো পুলিশকে লক্ষকরে গুলি করাতে তারা নিজেদের রক্ষা করার জন্যে গুলি ছুড়ে তারপর সে মারা যায় ইত্যাদি।
বিচারবহির্ভূত হত্যা নিয়ে পুলিশের বক্তব্যে বিস্ময় - বিস্তারিত পড়ুন।
এতকিছুর পরে ২০১৯ সালের চলতি বছরে ক্রসফায়ারে ৩৬১ জনের মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়ে স্বাধীন রাষ্ট্র বাংলাদেশে।এইদেশের মানুষ বিচারের নামে প্রহসন দেখতে হবে আর কত বছর? অপরাধী যতই বড় হোক তাকে কেন ক্রসফায়ারে মৃত্যু নিশ্চিত করতে হবে? ক্রসফায়ার না করে বিচারের আওতায় আনাটা কি রাষ্ট্রের দায়িত্ব নয়? নাকি রাষ্ট্র ক্রসফায়ারে হুকুম দিয়ে বিচারের নামে প্রহসনের পক্ষে কাজ করছে?
বিস্তারিত পড়ুন
বাংলাদেশের মাটিতে প্রতিনিয়ত আরেকটা জিনিস অনেক প্রচলিত আছে। সেটা হলো মাদকবিরোধী আন্দোলন ও জঙ্গি নাটক। এত আন্দোলনের পরেও মাদকের কালোছায়া থেকে বাংলাদেশ মুক্ত হতে পারছে না কেন? প্রশাসনের চোঁখ ফাঁকি দিয়ে কিভাবে মাদকবিক্রেতাদের সংখ্যা বাড়ছে? বিগত কয়েকমাস আগে মাদকবিরোধী আন্দোলন এর টাইটেল দিয়ে অনেক সুশীলদের লিখতে দেখেছে হাজার হাজার ফেসবুক ইউজার। চলো যায় যুদ্ধে মাদকের বিরুদ্ধে...
সেই যুদ্ধের নামে মৃত্যুবরণ করেছে। অনেক রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ও সাধারণ মানুষ। বন্দুকযুদ্ধ': মাদকবিরোধী অভিযানের নামে 'ক্রসফায়ারে মৃত্যুর' রেকর্ড
বিস্তারিত পড়ুন
বিশ্ব যখন করোনাভাইরাস ঠেকাতে ব্যস্ত। ঠিক সেইসময় বাংলাদেশের র্যাব-পুলিশ-বিজিবির সদস্যরা কথিত বন্দুকযুদ্ধের নামে বিচারবহির্ভূত হত্যায় লিপ্ত।বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের মধ্যেও থেমে নেই র্যাব-পুলিশ-বিজিবির কথিত 'বন্দুকযুদ্ধের' ঘটনা
বিস্তারিত পড়ুন
কথা হলো, যে-সব মানুষ মাদকের সাথে সহ নানান অপরাধের সাথে জড়িত তাদের হত্যা না করে।বিচারের মাধ্যমে সঠিক শাস্তি নিশ্চিত করলেই হয়।এইভাবে হত্যা চলতে থাকলে একসময় আরো তরতাজা নিরহ রাজনৈতিক কর্মী এবং মানুষ ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে মৃত্যুবরণ করবে।বেঁচে যাবে সত্যিকারের মাদক ব্যবসায়ী ও অপরাধী।
বাংলাদেশের বড় রাজনৈতিক দলের মধ্যে অন্যতম একটি হলো বিএনপি। বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বন্ধে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বিএনপি এমন কথা সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বলেছে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বিস্তারিত পড়ুন
বিএনপি সহ বাংলাদেশের বড় বড় রাজনৈতিক দল গুলো যদি এমন সব হত্যাকাণ্ড বন্ধে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকে।তাহলে দেশের সাধারণ মানুষের আদালত ও আইনকানুন সম্পর্কে আস্থা ফিরে আসবে।
অকাতরে প্রাণ দিতে হবে না সাধারণ মানুষকে এবং বাংলাদেশের বিচার বিভাগের মেরুদণ্ড ঠিক হবে।বিশ্বাস ও ভালবাসায় ফিরে আসবে আইনের প্রতি, ফিরে আসবে শ্রদ্ধা ও পূর্নতা।
আমি ব্যক্তিগত ভাবে বিচারবহির্ভূত হত্যা ও ক্রসফায়ারের সমর্থন করি না।কেন না আমি বাংলাদেশের আইনকানুনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল।ব্যক্তিগত ভাবে বিশ্বাস করি দেশের বিচার ব্যবস্থা যদি সংবিধান অনুযায়ী স্বাধীন হয়ে থাকে তাহলে বিচারবহির্ভূত হত্যা বন্ধ করা সম্ভব।পাশাপাশি জনসাধারণের মনে আদালতের প্রতি সম্মান ফিরে আসবে নিশ্চিত।
এই পোষ্ট সম্পূর্ণ ফেসবুকে পড়তে ক্লিক করুন।
©somewhere in net ltd.