নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি নিভৃতা। ভালোবাসি পড়তে। একটু আধটু লেখালেখির অপচেষ্টা চলে মাঝেমাঝে।

নিভৃতা

সামুতে আট বছর আগে কোনভাবে যুক্ত হলেও আমার ব্লগিং জীবন আসলে শুরু জানুয়ারি, ২০২০ থেকে।

নিভৃতা › বিস্তারিত পোস্টঃ

গল্প: ভয় -১ --- নিভৃতা

২৩ শে জানুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৫:২৭

গভীর রাত। সুনসান নীরবতা চারিদিকে। ঝিঁ ঝিঁ পোকার দল ডেকে চলেছে অবিরত। রাতের পাখিরা মাঝেমধ্যে নিস্তব্ধতা ভেঙে কর্কশ স্বরে ডেকে উঠে জানান দিচ্ছে নিজের অস্তিত্ব। আকাশে রূপালী চাঁদ কালো মেঘের আড়ালে লুকোচুরি খেলছে। চারপাশ কখনো নিকষ কালো আঁধারে ছেয়ে যাচ্ছে আবার কখনো বাঁধ ভাঙা আলোর জোয়ারে ভেসে যাচ্ছে। খুব দ্রুত হাঁটার চেষ্টা করছে বীথি। ওর ভয় লাগছে খুব। ভীষণ ভয়। শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেছে গলাটা। হাঁটতে হাঁটতে একটা বিশাল বটগাছের নিচে এসে দাঁড়ালো ও। সাথে সাথে অনেকগুলো বাঁদুর গাছটির ভেতর থেকে ডানা ঝাপটে উড়ে গেলো। হঠাৎ ডানা ঝাপটানোর শব্দে বীথির বুকটা কেঁপে উঠল। একটা আশ্রয়ের খুঁজে তাকালো ও চারিদিকে। কিন্তু আশেপাশে কোথাও কোন জনবসতির চিহ্ন নজরে এলো না। বীথি আবার হাঁটা শুরু করলো। হাঁটছে তো হাঁটছেই। পথ যেনো আর শেষ হতে চায় না। পিপাসায় বুকটা যেন ফেটে যাচ্ছে। এক ফোঁটা পানি কি কোথাও নেই? চারপাশ আবার নিকষ কালো আঁধারে ছেয়ে গেছে। আকাশের দিকে তাকায় বীথি। চাঁদের কোন অস্তিত্বই যেন নেই। অনেকগুলো দানব মেঘ চাঁদকে যেন খেয়ে ফেলেছে। হাঁটতে হাঁটতে হাঁফ ধরে যায় ওর। আর পারছে না বীথি। হঠাৎ পেছনে কারোর পায়ের আওয়াজ শুনতে পেলো ও। বীথির পা যেন মাটির সাথে আটকে গেলো। ওর মনে হলো কেউ যেন ওর পা দুটিকে মাটির নিচ থেকে হাত বাড়িয়ে মুঠো করে ধরে রেখেছে। কোন রকমে পা দুটিকে টেনে টেনে ও এগোতে থাকলো। একটা মানুষের কালো ছায়া পেছন থেকে বীথিকে পেরিয়ে সামনে এগিয়ে যাচ্ছে। ক্রমশ লম্বা হতে লাগলো ছায়াটা। বীথি শরীরের সমস্ত শক্তি দিয়ে এবার ছুটতে লাগলো। ছুটছে তো ছুটছেই। ছুটতে ছুটতে একটা কিছুতে হুচট খেয়ে হুড়মুড়িয়ে পড়ে গেলো ও। হাত পা অনেকখানি ছিলে গেলো। কিন্তু সেদিকে ভ্রুক্ষেপ না করে কোনরকমে উঠে দাঁড়িয়ে আবার ছুটতে লাগলো বীথি। ছুটতে ছুটতে হঠাৎই সামনে একটা বিশাল বাড়ির প্রবেশ গেট দেখতে পেলো ও। কাছে গিয়ে লোহার গেটটা ধরে খুব জোরে জোরে ধাক্কা দিতে লাগলো বীথি। কিন্তু কেউ এগিয়ে এলো না গেটটা খুলার জন্য। বীথি তাকিয়ে দেখলো একটা মস্ত তালা ঝুলছে গেটে। কিন্তু গেটের ভেতরের সব কিছু দেখা যাচ্ছে বাইরে থেকেই। যেন একটা নিঝুম পুরি বাড়িটা। গেট থেকে অনেকটা দূরে একটা মস্ত বড় প্রাসাদ। একটা প্রশস্ত রাস্তা গেট থেকে এঁকেবেঁকে চলে গেছে প্রাসাদ পর্যন্ত। রাস্তাটার দুপাশে সারি সারি ফুলের গাছ ছেয়ে আছে অজস্র ফুলে। রাস্তাটা ঢেকে গেছে রঙ বেরঙের নানা ফুলে। যেন ফুলের গালিচা বিছানো। গেটের ভেতরটা দেখতে দেখতে মোহগ্রস্থ হয়ে পড়ে বীথি। সব আতঙ্ক উধাও হয়ে যায়। মোহাচ্ছন্নের মত নিজের অজান্তেই গেটের ভেতরে পা বাড়ায় ও। আশ্চর্য লোহার গেট ভেদ করে অবলীলায় ঢুকে পড়ে ও ভেতরে। যেন এক ছায়া মানবী ও। বীথি হাঁটতে থাকে। নাম না জানা কত যে ফুলের মিশেল ঘ্রাণ নাকে এসে লাগে। সেই ঘ্রাণে বিভোর হয়ে হাঁটতেই থাকে ও। কিন্তু হাঁটতে হাঁটতে ওর পথ যেন আর ফুরায় না। যতই হাঁটে ততই প্রাসাদটা যেন আরো দূরে সরে যায়। হঠাৎ গুঙানীর মত একটা শব্দ শুনতে পায় বীথি। কেউ যেন গুঙিয়ে গুঙিয়ে কাঁদছে। কোন মেয়ের কান্না না। পুরুষের কান্না। কান্নাটা যেদিক থেকে আসছে সেদিকে এগিয়ে যায় বীথি। ধীরে ধীরে কান্নাটার খুব কাছে চলে আসে ও। দেখতে পায় একটা লোক হাঁটু গেড়ে বসে আছে। মাথাটা গুঁজে রেখেছে দুই হাঁটুর ভাজে। লোকটা বীথির দিকে পেছন ফেরা। লোকটার সামনে একটা বিশাল গাছ। সেই গাছের একটি শাখায় ঝুলে আছে একটি নারীদেহ। মেয়েটির মাথাটা একপাশে কাত হয়ে আছে। চোখ ঠিকরে বেরিয়ে এসেছে কোটর থেকে। আর জিহ্বাটা যেন একহাত লম্বা হয়ে ঝুলে আছে মুখ থেকে। শিউরে ওঠে বীথির সমস্ত শরীর। ভয়ে মুখটা দুইহাতে ঢেকে ফেলে ও। তারপর কোনরকমে নিজেকে সামলে এগিয়ে যায় লোকটার কাছে। পরম মমতায় লোকটার কাঁধে হাত রাখে। লোকটা তখন কান্না থামিয়ে বীথির দিকে ফিরে তাকায়।

ঠিক তখনই বীথির চুলের মুঠি ধরে কেউ সজোরে টান মারে।

---হারামজাদী আর কত ঘুমাবি? সকাল গড়িয়ে দুপুর হতে চললো। নবাবের বেটি কাজকর্ম করতে হবে না?

সৎ মা-র মার খেয়ে ঘুম ভেঙে ধড়মড় করে উঠে বসে বীথি। চুলের গোড়াটা টনটন করছে খুব। কিন্তু মার খেয়ে বীথি একটুও কাঁদে না। এখন আর মার খেয়ে চোখে জল আসে না ওর। এসবই গা সওয়া হয়ে গেছে সেই কবে থেকে। বরং আফসোস হয় একদিনও স্বপ্নটা পুরো দেখা হয় না বলে। খুব ইচ্ছে হয় বীথির প্রতিদিন স্বপ্নে দেখা ঐ লোকটার চেহারাটা দেখার। কিন্তু চেহারাটা যেই দেখতে যাবে তখনই ঘুমটা ভেঙে যায় ওর। খুব ইচ্ছে হয় ঐ লোকটার সাথে দুটো কথা বলার। বীথি ভেবে পায় না এই স্বপ্নটা ও কেন রোজ দেখে। এত বড় বাড়ি ও জীবনেও দেখেনি। এমন বাড়ির কথা শুধু গল্প উপন্যাসেই পড়েছে। বাস্তবে কখনও দেখা হয়নি। আর এই অজ পাড়াগাঁয়ে এমন বাড়ি কোথা থেকে আসবে? তবে কেন এই বাড়িটাই বারবার ওর স্বপ্নে আসে? স্বপ্নটাও কী ভীষণ অদ্ভুত! কী ভীষণ ভয়ংকর! স্বপ্নের রেষ যেন এখনও রয়ে গেছে। গলাটা এখনও শুকিয়ে কাঠ হয়ে আছে। যেন সত্যি সত্যি ঘটনাটা ওর সাথে ঘটেছে।

বিছানা থেকে নেমে বীথি প্রথমে ঢকঢক করে এক গ্লাস পানি এক নিঃশ্বাসে খেয়ে ফেলে। যেন কতদিনের পিপাসার্থ ও। তারপর হাতমুখ ধোয়ার জন্য বাড়ির পাশের ছোট্ট পুকুর ঘাটে যায়। কিন্তু ঘাটে নামে না ও। ঘাটটার পাশেই বড় একটা শিউলি গাছ। বীথির মায়ের হাতে লাগানো। বীথি প্রতিদিন মুখ ধোয়ার আগে শিউলি গাছটার নিচে যায়। গাছটার গুড়িতে বসে কিছুটা সময় কাটায়। মাকে অনুভব করার চেষ্টা করে। টুকটাক কথা বলে একা একা মায়ের সাথে। যেন এই শিউলি গাছটাই ওর মা। ওর বয়স যখন পাঁচ কি ছয় ঠিক তখনই বীথির মা মারা যান। ভোরবেলার এই সময়টা তাই বীথির ভীষণ প্রিয়। এই সময়টায় ও মাকে অনুভব করতে পারে।

শরৎ চলে এসেছে। হিমেল হাওয়ায় বেশ শীত শীত অনুভূতি হচ্ছে। শরতের স্নিগ্ধতামাখা এই ভোরবেলায় এই শীত শীত অনুভূতিটা বেশ লাগে বীথির। মনে মনে মুনিরা বেগমকে কৃতজ্ঞতা জানায় এই সুন্দর ভোরবেলাটা ওকে উপহার দেয়ার জন্য। হয়তো নিজের অজান্তেই সৎ মা এই কাজটা করেন, তবু তো বীথিকে একটা ভাল লাগার সুযোগ করে দেন। ভোরের আলো ফোটার আগেই বীথিকে জাগিয়ে দেওয়াটা মুনিরা বেগমের একটা জ্বালাতন। তিনি কাজটা করেন বীথিকে কষ্ট দেয়ার জন্য। যাতে বীথি আরাম করে ঘুমাতে না পারে। উনিতো আর জানেন না ভোরের আলোয় পৃথিবীটা এক মোহনীয় স্বর্গীয় রূপ ধারণ করে। আর পৃথিবীর সেই স্বর্গীয় রূপ অবলোকন করার সৌভাগ্য বা সুযোগ সব মানুষের হয় না। সেই সুযোগটাই নিজের অজান্তে তিনি বীথির জন্য করে দেন। বীথি নিশ্চিত, যদি মুনিরা বেগম এটা জানতেন তবে এই কাজটা তিনি ভুলেও করতেন না। বীথি প্রতিদিন ভোরের এই অপূর্ব ক্ষণটায় মুনিরা বেগমকে নিজের অজান্তে করা এই ভুলটার জন্য হাজারবার মনে মনে ধন্যবাদ দেয় আর ওর উপর করা সব অত্যাচারের জন্য ক্ষমা করে দেয়। শিউলিতলা শিউলি ফুলে ছেয়ে সাদা হয়ে আছে। সাদার ফাঁকে ফাঁকে কমলা রঙের বোঁটাগুলো উঁকি দিচ্ছে। শ্বেত শুভ্রতার সাথে রক্তিম কমলার মিলনে এক অদ্ভুত সৌন্দর্যের সৃষ্টি হয়েছে। পৃথিবীর সব চাইতে সুন্দর ফুল মনে হয় এই শিউলি ফুল। শিউলিকে বলা হয় স্বর্গের শোভা। সূর্যকে দেখামাত্র অভিমানে ঝরে পড়ে শিউলি। সূর্যের সাথে শিউলির বড় অভিমান। পুরানে শিউলিকে বেদনার প্রতীক হিসেবে ধরা হয়। এক রাজকন্যা ছিল। নাম ছিল তার পারিজাতিকা। রূপে যেন তার আগুন জ্বলতো। অপরূপা এই রাজকন্যার প্রেমে পাগল ছিল সবাই। কিন্তু রাজকন্যার কোন মানুষকে ভাল লাগে না। তিনি ভালবাসতেন সূর্যকে! সূর্যের প্রেমে তিনি ছিলেন পাগলপ্রায়। কিন্তু সূর্যের জন্য রাজকন্যার মন উজার করা এত ভালবাসা পরিণাম পেল না। শত সাধনায়ও সূর্যদেবতার মন গলল না। মনটা ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে গেলো রাজকন্যার। ব্যর্থ প্রেমের দহন সইতে না পেরে অবশেষে নিজের প্রাণটাই বিসর্জন দিয়ে দিলেন তিনি। হিন্দু শাস্ত্র মেনে তাঁকে দাহ করা হয়। কিন্তু সেই দহনে বিলীন হয়ে যান না পারিজাতিকা। বরং একটি গাছ হয়ে পৃথিবীতে ফিরে আসেন আবার। শুভ্র স্নিগ্ধতায় ভরা এক ফুলে ছেয়ে যায় সেই গাছ। রাজকন্যার নামে ফুলটির নাম রাখা হয় পারিজাতিকা। সেই পারিজাতিকাই অভিমানী ফুল শিউলি। বই পড়ার দারুণ শখ বীথির। কলেজ শেষে অনেকটা সময় ও কলেজের লাইব্রেরিতে কাটায়। সেখানে ও নানা রকমের বই পড়ে। এই কাহিনীও পৌরাণিক একটা বই পড়ে জেনেছে ও।

বীথি প্রথমে একটা ফুল হাতে নিয়ে হাতের তালুতে ডাটাটা ঘষে। কী সুন্দর কমলা রঙে হাতের তালুটা মেহেদির মত রঙিন হয়ে যায়! পাশেই রয়েছে সারি সারি কলা গাছ। সেখান থেকে একটা বড় দেখে কলা পাতা ছিঁড়ে আনে ও। তারপর একটা একটা করে ফুলগুলো কুড়াতে থাকে। দেখতে দেখতে অনেকগুলো ফুল জড়ো হয়ে পড়ে। এরপর একটা একটা ফুল নিয়ে মালা গাঁথে বীথি। সুঁই সুতো সাথে করেই নিয়ে আসে আজকাল মালা গাঁথবে বলে। মালা গাঁথা শেষ হলে মালাটা সাবধানে কলাপাতা দিয়ে মুড়ে রাখে। এই মালাটা ও একজনকে দেবে। বিথির হাতে গাঁথা শিউলি ফুলের মালা তার ভীষণ প্রিয়। বাকি ফুলগুলো কলার মোচায় ভরে নেয়। আঁধার এখনও পুরোপুরি কাটেনি। শিউলি ফুলে ভরা মোচাটা হাতে নিয়ে ধীরে ধীরে ঘাটে আসে বীথি। সাবধানে ঘাটলায় পা রাখে। শ্যাওলা জমে পিচ্ছিল হয়ে আছে ঘাটটা। নারিকেল গাছ দিয়ে ঘাটটা তৈরি করা হয়েছে। কলার মোচাটা আস্তে করে পানিতে ভাসিয়ে দেয় বীথি। ভোরের মৃদু বাতাসের ধাক্কায় ধীরে ধীরে চলতে থাকে মোচাটা। বীথি সেদিকে চেয়ে থাকে অনেকক্ষণ। ওর ভীষণ ভাল লাগে। কলার মোচাটা ভাসতে ভাসতে কোন এক কিনারে গিয়ে আটকে যায়। তখন বীথি হাতমুখ ধোয়ে ঘরে ফিরে আসে। মা আর খোকন এখনও ঘুমে। মুনিরা বেগম বীথিকে জাগিয়ে দিয়ে আবার ঘুমের কোলে ঢলে পড়েন। তাই ভোর বেলার এই সময়টা বড় নিশ্চিন্তে, বড় স্বাধীনভাবে নিজের ইচ্ছেমত কাটায় বীথি। ছোট ভাই খোকন বীথির সাথেই এক খাটে ঘুমায়। খোকনের বয়স দশ কি এগারো বছর হবে। বীথির খুব ন্যাওটা ভাইটা। বীথি ঘরে এসে খোকনের কাছে যায়। খোকন গভীর ঘুমে মগ্ন। বীথি ওর মাথায় হাত বুলিয়ে চুলগুলো এলোমেলো করে দেয়। তারপর শিউলি ফুলের মালাটা ওর মাথার কাছে রেখে দেয়। ঘুম থেকে জেগেই মালাটা পেয়ে খুশিতে ঝলমল করে উঠবে ভাইটা। ওর সেই ঝলমলে চেহারাটা দেখতে ভীষণ ভাল লাগে বীথির। সৎ ভাই হলে কী হবে নিজের মায়ের পেটের ভাইয়ের মতই আদর করে বীথি খোকনকে। খোকনও বীথিকে মন প্রাণ দিয়ে ভালবাসে।

চলবে
রচনাকাল
২৯-১০-২০১৮
©নিভৃতা


মন্তব্য ২৪ টি রেটিং +৯/-০

মন্তব্য (২৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৩ শে জানুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৫:৪৪

স্বপ্নবাজ সৌরভ বলেছেন:

আট বছর একটি মাত্র পোস্ট করলেন। কোন মন্তব্য নেই। আপনার লেখা ভালো। আপনি কি অন্য কোন নিকে ব্লগিং করেন?
আপনার লেখাটা চলুক , ভালো লাগলো। পরের পোষ্টের অপেক্ষায় থাকবো।

২৩ শে জানুয়ারি, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৫৮

নিভৃতা বলেছেন: শখের বশে ব্লগটিতে যুক্ত হয়েছিলাম বহু বছর আগে। তারপর আর আসা হয়নি কখনও। মনেও ছিল না এই ব্লগে আমি যুক্ত আছি। আজ হঠাৎই আবার আসা। এসে রেজিস্ট্রেশন করতে গিয়ে আবিষ্কার করলাম আমি এখানে সদস্য হয়েই আছি, তাও অনেক বছর আগে। আসলে ব্লগিং এ আমি একেবারেই আনকোরা। এতদিন ফেসবুকিং করেই এসেছি। আনাড়ি হাতে লেখালেখিও করেছি কিছু। কিন্তু ব্লগে এই প্রথম। ব্লগ তো আমার কাছে বিশাল ব্যাপার। তাই বুক ঢিপঢিপও করছে খুব। আপনার মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন। দোয়া রাখবেন।

২| ২৩ শে জানুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৫:৪৬

রাজীব নুর বলেছেন: বীথির জন্য মায়া লাগছে।
বীথিই তো আসল চরিত্র।

২৩ শে জানুয়ারি, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৫৯

নিভৃতা বলেছেন: জ্বী বীথিই আসল চরিত্র। ধন্যবাদ।

৩| ২৩ শে জানুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৫:৪৭

রাজীব নুর বলেছেন: বীথির জন্য মায়া লাগছে।
বীথিই তো আসল চরিত্র।

৪| ২৩ শে জানুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৫:৫৭

চাঁদগাজী বলেছেন:




এক প্যারাগ্রাফ পড়ে শেষ

২৩ শে জানুয়ারি, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:০০

নিভৃতা বলেছেন: ধন্যবাদ

৫| ২৩ শে জানুয়ারি, ২০২০ রাত ৮:২৯

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: বড় প্যারায় প্রথম নাক কুচকালেও ;) পরে মন্ত্রমুগ্ধের মতো টেনে নিয়ে গেল!

বেশ ঝরঝরে লাগলো। হালকা কিছু টাইপো বাদ দিলে - দারুন আগ্রহে পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম :)

+++++

২৩ শে জানুয়ারি, ২০২০ রাত ১০:৫৫

নিভৃতা বলেছেন: অনুপ্রাণিত হলাম খুব। অনেক ধন্যবাদ।

৬| ২৩ শে জানুয়ারি, ২০২০ রাত ১১:৩৩

চাঁদগাজী বলেছেন:



আপনি লেখার সময় প্যারাগ্রাফগুলোকে ছোট রাখার চেষ্টা করবেন।

২৪ শে জানুয়ারি, ২০২০ রাত ১:০২

নিভৃতা বলেছেন: অশেষ কৃতজ্ঞতা জানবেন। এখন থেকে তাই হবে।

৭| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০২০ রাত ১১:০৩

ময়ূরী বলেছেন: ভালো লিখেছেন।।

২৫ শে জানুয়ারি, ২০২০ রাত ১২:০৫

নিভৃতা বলেছেন: অনেক অনেক শুভ কামনা রইল।

৮| ২৫ শে জানুয়ারি, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৪৩

সৈয়দ মোজাদ্দাদ আল হাসানাত বলেছেন: ভিষন ভালো লাগলো ।

২৫ শে জানুয়ারি, ২০২০ রাত ৮:৫৫

নিভৃতা বলেছেন: শুভ কামনা রইল

৯| ২৫ শে জানুয়ারি, ২০২০ রাত ৯:২৪

আহমেদ জী এস বলেছেন: নিভৃতা,




আটটি বছর নিভৃতে নীরবে কাটিয়ে সবে এলেন ব্লগে, স্বাগতম নতুন করে।

ব্লগকে ভয় পাবার কিছু নেই। মনে করবেন, এ আপনার দিনলিপি। ভাবনার যখোন ভিড় করে আসবে তখন ব্লগের শ্লেটখানাতে তারই আঁকিবুঁকি কেটে যাবেন। আয়নার মতো নিজেকে দেখবেন সেখানে।

গল্প দিয়ে শুরু করেছেন। যেহেতু পর্ব করে লিখছেন এবং এটাই প্রথম পর্ব তাই গল্পের বিষয় নিয়ে এইমূহুর্তে বলার বিশেষ কিছু নেই।
মনে হচ্ছে লেখার হাত ভালো আপনার, সাজানো গোছানো। তবে প্যারাগুলো বেশ বড়সড়।

লিখতে থাকুন।
শুভেচ্ছান্তে।

২৫ শে জানুয়ারি, ২০২০ রাত ১১:২৮

নিভৃতা বলেছেন: অশেষ ধন্যবাদ আপনাকে। অনুপ্রাণিত হলাম খুব।

ভয় কেটে গেছে। তাই তো পর পর চারটি পর্ব পোস্ট করে ফেললাম। প্যারা সম্পর্কে ধারণা ছিল না। এখন ছোট করে দেয়ার চেষ্টা করছি।

অনেক অনেক শুভ কামনা আপনার জন্যও। ভালো থাকবেন।

১০| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০২০ দুপুর ২:২৪

কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: খুব ভালো লেগেছে আপি। গল্প পড়ার সময় পাই না বলে পোস্টে আসা হয় না। অন্য পর্বগুলোও পড়বো ইনশাআল্লাহ

২৮ শে জানুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৩:১৮

নিভৃতা বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ ও ভালোবাসা।

১১| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০২০ সকাল ১১:৪৮

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: বেশি লেখা বলে বারবার ফিরে গিয়েছি। এবার সাহস করে পড়েই ফেললাম। মনে হয় ঠকি নি।
বর্ণনার ছটার পাশাপাশি এক প্রকার কাব্যিকতা আছে লেখায়। শিউলিফুল নিয়ে যে কাহিনীটা দিলেন, মন ছুঁয়ে গেল। আমার বড়বোনের নাম আবার শিউলি।
কাহিনীতে নতুনত্ব তেমন না থাকলেও শুধুমাত্র বর্ণনার কারণেই লেখাটা পাঠকপ্রিয়তা পাবে বলে আমার ধারণা। লেখালেখি অব্যাহত রাখুন।
বাকি পর্বগুলো পড়া শেষ করি।

৩১ শে জানুয়ারি, ২০২০ দুপুর ১:৩২

নিভৃতা বলেছেন: শেষ পর্ব না পড়া পর্যন্ত কিন্তু আসল কাহিনী বোঝা যাচ্ছে না। শুরু যখন করেছেন, কষ্ট হলেও শেষ করবেন আশা করি।

মন্তব্যের জন্য অশেষ ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা।

নতুন কবিতার প্রতিক্ষায় আছি।
ভালো থাকবেন।

১২| ১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সকাল ৯:১২

নীল আকাশ বলেছেন: শুভ সকাল,
আমার শ্রদ্ধেয় গুরুর কথা দিয়েই শুরু করি-"আটটি বছর নিভৃতে নীরবে কাটিয়ে সবে এলেন ব্লগে, স্বাগতম নতুন করে"। আমি বলি ব্লগে সুস্বাগতম।

চমতকার একটা গল্প লেখার চেষ্টা করেছেন। উপরে অনেকেই বাহাবা দিয়ে মন্তব্যও করেছে যেটা ব্লগে খুব কমন ব্যাপার। আমি আসলে নিজেকে ব্লগার মনে করি। আর যখন কিছু লিখি সত্য লেখার চেষ্টাই করি। আপনার লেখা বেশ কিছু দিন ধরেই ব্লগে দেখছি। খুব ব্যস্ত ছিলাম দেখে পড়িনি। আমি কোন বা কারও লেখা কিছু পড়লে সেটা খুব ভালো করেই পড়ি। তাই একদম ১ম লেখা থেকেই শুরু করলাম। নীচে কিছু জিনিস লিখলাম একজন ব্লগার হিসেবে, যদি আমার এই মন্তব্য হজম করতে পারেন তাহলে আমাকে সবসময় পাবেন। ব্লগে সবাই আমার ব্যাপারে জানে। আপনি নতুন, তাই আগেই বলে নিচ্ছি।

১। গল্প লিখেছেন ভালো কথা, নামকরণ করেছেন ভয় -১ --- নিভৃতা। আমি আসলে বুঝি নি, গল্পের নাম কোনটা?
ভয় না নিভৃতা? না ভয় আপনার এই গল্পের সিরিজের নাম? আপনার নিক নেম গল্পের নামের সাথে দেয়ার কী কারণ আছে জানাবেন কী?

২। একদম শেষ চলবে দেয়ার কী দরকার? আপনি তো প্রথমেই বলে দিয়েছেন ভয় -১। রচনাকাল সহ বাকি অংশগুলি লেখার পার্ট নয়। আলাদা করে হেডিং দিয়ে দিলে আমার মনে হয় ভাল হতো।

৩। আপনি সিরিজ গল্প লেখার প্রাইমারি শর্ত ভঙ্গ করেছেন। লেখার শেষে সাস্পেন্স কোথায়? পাঠক'কে কী দিয়ে বেঁধেছেন পরের পর্ব পড়ার জন্য? পাঠক কেন আপনার পরের পর্ব পড়ার আগ্রহ পাবে? উত্তর দিন?

৪। এবার আপনাকে আমি পাঠক হিসেবে লেখাটা উল্টো দিকে থেকে পড়তে বলবো। প্রথমে শুরু করবেন এখান থেকে -
---হারামজাদী আর কত ঘুমাবি? সকাল গড়িয়ে দুপুর হতে চললো। নবাবের বেটি কাজকর্ম করতে হবে না?
সৎ মা-র মার খেয়ে ঘুম ভেঙে ধড়মড় করে উঠে বসে বীথি। < পুরো প্যারা পড়বেন।

শেষ প্যারা হবে এখান থেকে-
গভীর রাত। সুনসান নীরবতা চারিদিকে। ঝিঁ ঝিঁ পোকার দল ডেকে চলেছে অবিরত। রাতের পাখিরা মাঝেমধ্যে নিস্তব্ধতা ভেঙে কর্কশ স্বরে ডেকে উঠে জানান দিচ্ছে নিজের অস্তিত্ব। আকাশে রূপালী চাঁদ কালো মেঘের আড়ালে লুকোচুরি খেলছে।

শেষ কয়েকটা লাইন হবে এভাবে-
শিউরে ওঠে বীথির সমস্ত শরীর। কী যেন এক অদ্ভুত সুতীব্র আকর্ষন ওকে প্রায় জোর করেই সামনে টেনে নিয়ে যাচ্ছে। নিজের উপর ওর কোন নিয়ন্ত্রণ নেই বললেই চলে। সহসাই সামনে কী আছে দেখে ঠান্ডা একটা ভয়ের স্রোত ওর মাথা থেকে পা পর্যন্ত শিরশির করে নেমে গেল। কিছু একটা ওর দিকে হুট করেই যেন ফিরে তাকালো। কী এটা?

হাতে সময় ছিল তাই কিছুটা কাজ করলাম আপনার গল্প নিয়ে। আমার ভৌতিক সিরিজ আছে। আরও ভালো ধারণার জন্য সেইগুলি পড়ে দেখতে পারেন। বিশেষ করে পরী সাধনা।
ধন্যবাদ এবং শুভ কামনা রইলো।







১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সকাল ১০:৪৫

নিভৃতা বলেছেন: অবশেষে নীল আকাশ ভাইয়ের সমালোচনা পাওয়ার সৌভাগ্য হলো আমার। মনে মনে আপনার সমালোচনার অপেক্ষায় ছিলাম আমি। আমি জানি আমার লেখায় অনেক ত্রুটি আছে। লেখালেখিটা হয়তো আমাকে সাজেও না। তবু সাহস করে লেখা শুরু করি। লিখতে লিখতে দেখলাম যে ভালো লাগছে। তাই সেই ভালো লাগাটাকে আর ছাড়তে ইচ্ছে করলো না। ভালো লাগাটাকে ভালোবেসে ফেললাম। ভাবলাম লিখতে লিখতে হয়তো লিখার মানও ভালো হবে একদিন। কিন্তু সেই একদিন কোনদিন আসবে কিনা কে জানে। কারণ আমি খুবই অধৈর্য্য এক মানুষ। জেদ নাই বললেই চলে।

আপনার প্রথম প্রশ্নের উত্তর - গল্পের নামেের শেষে নামটা জুড়ে দিয়েছিলাাম বোকার মত। কারণ ব্লগে নিজের নিকটা তখন ভুল বানানে দেখাচ্ছিল যা খুবই দৃষ্টিকটু ছিল আমার জন্য।

গল্পের শেষে চলবে দেয়া চলবে না। কারণ এটা একটা সিরিজ নাম থেকেই বোঝা যাচ্ছে। সত্যি তাই। এখন থেকে আর দেবো না।

এই পর্বে সাসপেন্স রাখতে পারিনি। আরো ভালো করে ভেবে পর্বটা লেখা উচিত ছিল।

যদি গল্পটা কখনও রিরাইট করি, আপনি যে ভুল ধরিয়ে দিলেন সেগুলো অবশ্যই ঠিক করার চেষ্টা করবো।

সব শেষে, কী বলে আপনাকে ধন্যবাদ দিবো বুঝতে পারছি না। এই সমালোচনাটা খুব বেশি দরকার ছিল আমার। অনেক অনেক ভালো থাকবেন। আরো সমালোচনার অপেক্ষায় রইলাম।

১৩| ২৬ শে নভেম্বর, ২০২০ রাত ৯:৩৭

খায়রুল আহসান বলেছেন: "সূর্যকে দেখামাত্র অভিমানে ঝরে পড়ে শিউলি" - গল্পের চমৎকার একটি লাইন, ভাল লেগেছে।
অনেকেই বলেছেন, তাই আমার না বললেও চলতো, অনুচ্ছেদগুলো একটু বেশি বড় হয়ে গেছে। তবু এ প্রসঙ্গটা টানলাম শুধু এ কথাটি বলার জন্য যে একটি ব্লগপোস্ট প্রতি অনুচ্ছেদে ২০০ থেকে ৩০০ শব্দের মধ্যে, এবং সর্বসাকুল্যে ১৫০০ শব্দের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলে তা পাঠকের জন্য সুখপাঠ্য হয়। এটা কোন অবশ্যপালনীয় শর্ত নয়, শুধু আমার মত পাঠকের পছন্দের কথাটাই বললাম।
সৎ মায়ের সংসারে বিথীর সীমিত আনন্দের জীবনকথা পড়ে ভাল লাগলো। ভাল লাগলো সৎভাই এর প্রতি তার স্নেহ-ভালবাসার পরিচয় পেয়ে, গাঁথা মালাটি ঘুমন্ত সেই ভাই এর মাথার কাছে রেখে দেয়া আর কলাপাতায় মোড়ানো শিউলিফুলগুলো পুকুরজলে ভাসিয়ে দেয়াকে।
ব্লগে বিলম্বিত সুস্বাগতম জানাচ্ছি, শুভ হোক আপনার ব্লগযাত্রা, ব্লগীয় মিথষ্ক্রিয়া!
পোস্টে নবম ভাল লাগা + +।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.