নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি নিভৃতা। ভালোবাসি পড়তে। একটু আধটু লেখালেখির অপচেষ্টা চলে মাঝেমাঝে।

নিভৃতা

সামুতে আট বছর আগে কোনভাবে যুক্ত হলেও আমার ব্লগিং জীবন আসলে শুরু জানুয়ারি, ২০২০ থেকে।

নিভৃতা › বিস্তারিত পোস্টঃ

গল্প: ভয় -০৭

২৭ শে জানুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৩:১৯



১ম পর্ব - Click This Link

৬ষ্ঠ পর্ব - Click This Link

রাতের নিস্তব্ধতায় ঠাহর করা যাচ্ছিল না আওয়াজটা আসলে কোনদিক হতে আসছে। কিছুদুর এগোতেই বীথির মনে হলো আওয়াজটা দূরে সরে যাচ্ছে। বীথি আবার পিছিয়ে এলো। আসলাম খানের রুমের কাছে আসতেই কান্নার আওয়াজটা আবার বেড়ে গেলো। তবে কি আসলাম খানই কাঁদছেন? না, না তা কী করে হয়। আসলাম খান এভাবে কাঁদতেই পারেন না।


তবে তার ঘরে কি অন্য কেউ কাঁদছে? কিন্তু এ বাড়িতে তো অন্য আর কেউ থাকেই না। বীথি আসলাম খানের দরজায় আস্তে করে কান পাতলো। এবার যেন কান্নাটা একটু থেমে থেমে আসছে। যেন কান্নার সাথে সাথে কেউ কথাও বলছে। কথা বলার ধরণটা তো আসলাম খানের মতই। হঠাৎ যেন অন্য কারও কথার আওয়াজও শোনা গেলো। এই কণ্ঠস্বর আরও ভারী। কিন্তু কী কথা হচ্ছে বীথি কিছুতেই ধরতে পারলো না। ভীষণ ইচ্ছে হলো ভেতরে আসলে কী হচ্ছে তা দেখার।


ভয়ে ভয়ে খুব ধীরে ও দরজার নবটা ঘুরালো। লকটা খোলাই ছিল। দরজাটা একটু ফাঁক করে ঘরের ভেতরে উঁকি দিয়ে বীথি দেখলো, বিছানার উপর পা গুটিয়ে বসে হাঁটুতে মাথা গুজে ছোট্ট শিশুটির মত কেঁদে চলেছেন আসলাম খান। আসলাম খানকে এভাবে দেখে কেঁপে উঠলো বীথির হৃদয়। ঘরের ভেতরে ঢুকে আসলাম খানের একেবারে পাশে গিয়ে দাঁড়ালো ও। আসলাম খান বীথির উপস্থিতি টেরও পেলেন না। বীথি বিছানায় বসে আসলাম খানের মাথায় হাত রাখলো। চমকে উঠে বীথির দিকে তাকালেন তিনি।

ঘর্মাক্ত উদভ্রান্ত চেহারার আসলাম খান বীথিকে বললেন,
---বীথি তুমি পালাও। এখান থেকে পালাও। এখানে থাকলে ওরা তোমাকেও শেষ করে ফেলবে।
আসলাম খানকে এইভাবে দেখে বীথির সব ভয় উধাও হয়ে গেলো। ও একটুও ঘাবড়ে না গিয়ে বললো,
---আপনি একটু শান্ত হোন। আমি আপনার পাশে আছি। কেউ আমাকে কিচ্ছু করতে পারবে না।

বীথির কথায় একেবারে শান্ত হয়ে গেলেন আসলাম খান। যেন ভীত অবোধ কোন শিশু হঠাৎই মায়ের আশ্রয় খোঁজে পেলো। বীথি একটা টাওয়াল এনে পরম যত্নে আসলাম খানের ঘর্মাক্ত মাথা, মুখ, গলা ভাল করে মুছে দিলো। তারপর ঠাণ্ডা এক গ্লাস পানি দিলো খাওয়ার জন্য। আসলাম খান বাধ্য ছেলের মত ঢক ঢক করে এক নিঃশ্বাসে পুরোটা পানি খেয়ে ফেললেন। মনে হলো যেন কতকালের তৃষ্ণার্ত তিনি। পানি খাওয়ার পর অনেকটা স্বাভাবিক হয়ে এলেন। সকৃতজ্ঞ নয়নে তাকিয়ে রইলেন খুব কাছাকাছি বসা বীথির দিকে।

---জানো বীথি, কেউ কোনদিন আমাকে এভাবে যত্ন করেনি। এমন কি নিজের মা'ও না।

বীথি কিছুটা লজ্জা পেয়ে মাথা নুয়ালো। আসলাম খানকে স্বাভাবিক দেখে এখন ওর লজ্জা লাগছে। আসলাম খানের এত কাছাকাছি কখনো হয়নি তো। লজ্জাটা একটু কাটিয়ে জিজ্ঞেস করলো,

---কী হয়েছে আপনার? এভাবে কাঁদছেন কেন?
আসলাম খান হাসলেন। কষ্টের হাসি। বললেন,

---এই কান্না আমার অনেক দিনের সাথি। এই কান্নার পেছনে রয়েছে বিশাল কাহিনী।

---আমি শুনতে চাই।

---না থাক। তুমি ভয় পাবে। তাছাড়া আমার জীবনের কষ্টের ছায়া তোমার উপর পড়ুক আমি চাই না।

---ঠিকই বলেছেন। আমি যদি আপনার আপন কেউ হতাম তাহলে বলতেন। কিন্তু আমি তো আপনার কিছুই না। আমাদের মধ্যে শুধুই একটা চুক্তির সম্পর্ক।

আহত কণ্ঠে বলল বীথি। ওর ভেতরে অভিমান দানা বাঁধলো।

---প্লীজ এভাবে বলো না। এই মুহূর্তে তোমার চেয়ে আপন আমার আর কেউ নেই।

----তাহলে সব খুলে বলুন আমাকে।

---ভয় পাবে না তো? তোমার বয়স অনেক কম।

---ভয় পাবো না। আপনি বলেন।

---ছোটবেলা থেকেই আমি বড় একা। দিন দিন আমার সেই একাকিত্বের বোঝা বেড়েই চলছিল। আমার বাবা বড় ভাল মানুষ ছিলেন। বিশাল সম্পত্তির মালিক। কিন্তু এতটুকু অহংকার ছিল না তার মনে। কথা বলতেন কম। চুপচাপ ধরণের মানুষ ছিলেন আমার বাবা। আমরা ভাইবোনরা ছিলাম উনার নয়নের মনি আর মা ছেলেন প্রাণ।

আমার মা কে বড় বেশি ভালবাসতেন বাবা। কিন্তু ব্যবসার চাপে ঠিকমত সময় দিতে পারতেন না মা কে। সেই সুযোগে আমার মা অবৈধ সম্পর্ক গড়ে তোলেন বাবারই এক বন্ধুর সাথে। প্রেমে পড়ে মা এও ভুলে গেলেন যে উনার দুটি ছোট্ট ছেলেমেয়ে রয়েছে। বাবা ব্যবসার কাজে বাইরে বাইরে থাকতেন আর মা চলে যেতেন প্রমিকের সাথে প্রমোদ ভ্রমনে। আর আমি আর আমার ছোট্ট বোনটি অবহেলায় একাকী দিন কাটাতাম কাজের লোকের তত্ত্বাবধানে।


একদিন বাবা সব জেনে গেলেন। সব জেনে পাগলের মত হয়ে গেলেন বাবা। তারপর একদিন আমার শান্ত ভাল মানুষ বাবা গভীর রাতে গলা টিপে মেরে ফেললেন আমার মা কে। তারপর নিজেও গলায় দড়ি দিলেন। আমার বয়স তখন পাঁচ কি ছয়। আমার বোন শায়লার বয়স তিন। সকালে বাবা মার ঘরে গিয়ে ভীত আতঙ্কিত ছোট্ট আমি দেখলাম মেঝেতে লুটিয়ে পড়ে আছে মায়ের লাশ আর সিলিঙে ঝুলে আছে বাবার লাশ। দুজনেরই চোখের মনি ঠিকরে বের হয়ে এসেছে আর আস্ত জিহ্বা মুখ থেকে বেরিয়ে ঝুলে আছে।

এই ভয়ঙ্কর দৃশ্য দেখে আমি জ্ঞান হারাতে লাগলাম বারবার। যতবার জ্ঞান ফিরে আসে ততবারই আমার চোখের সামনে ভেসে উঠে আমার বাবা মা-র সেই ভয়ঙ্কর বিভৎস চেহারা। উফ সে কী বিভৎস! আমি বলে বুঝাতে পারব না তোমাকে বীথি।

বলে দুই হাতে মুখ ঢেকে ডুকরে কেঁদে উঠেন আসলাম খান। এসব কথা বীথির একটু আধটু জানা আছে। গ্রামে জমিদার বাড়ির ছেলেদের জীবনের ঘটনা মুখরোচক গল্প। কিন্তু সেই সব গল্প যে একটি মানুষের জীবনের এত বড় কষ্ট হয়ে জমে আছে এটা বীথি জানতো না। বীথির মনটা আসলাম খানের জন্য বেদনায় আর মমতায় ভরে উঠে। ও আস্তে করে আসলাম খানের মাথাটা ওর কোলের উপর নিয়ে আসে। আসলাম খানও অবোধ শিশুর মত জড়োসড়ো হয়ে বীথির কোলে মাথা রেখে শোয়ে পড়েন। বীথি আলতো হাতে আসলাম খানের চোখের জল মুছে দেয়। আসলাম খান বীথির কোলে মাথা রেখেই ঘোর লাগা কণ্ঠে বলে যান,

---তারপর কীভাবে আমি সুস্থ হলাম ভুলে গেছি। শুধু মনে আছে আমার চাচা, আমার বাবার ছোট ভাই আমাকে সুস্থ করে তোলেন। বড় ভাল মানুষ ছিলেন আমার চাচাও। বাবা মা-র মৃত্যুর পর তিনি এক হাতে সব ব্যবসা সম্পত্তি এবং অন্য হাতে আমাদের সামলেছেন। বড় করেছেন। ভাই তার বড় প্রিয় ছিলেন। ভাই আর ভাবীর এর এই নির্মম মৃত্যু তাকেও খুব বেশি কষ্ট দেয়। তাই তিনি ঠিক করেন কখনো বিয়ে করবেন না।

আমার মনেও বিয়ের প্রতি বিতৃষ্ণা চলে আসে। আমিও ঠিক করি কখনো বিয়ে করবো না। আমার পৃথিবীটা ছিল শায়লা আর চাচাকে নিয়ে। শায়লাকে আমি বড় বেশি ভালবাসতাম। ওর পড়াশুনা খাওয়াদাওয়া সবকিছুর খেয়াল রাখতাম। বড় আদরের ছিল আমার বোনটি।


আমার বয়স তখন আঠারো আর শায়লার বয়স পনেরো। ঠিক তখনই একদিন হঠাৎ করে শায়লা উধাও হয়ে যায়। আমরা পাগলের মত ওকে এদিক সেদিক খুঁজলাম। পুলিশে খবর দিলাম। পত্রিকায় নিখোঁজ সংবাদ ছাপানো হলো। কিন্তু শায়লাকে কোথাও খুঁজে পাওয়া গেলো না। ও যেন হাওয়ায় মিলিয়ে গেল।


আমি আবার মুষড়ে পড়লাম। সময়ের মত মহৌষধ বুঝি আর নেই। অন্তরের বিশাল জখমও এই সময় একদিন মিলিয়ে দেয়। এক সময় আমি বোন হারানোর ব্যথাও কাটিয়ে উঠলাম। চাচা আর আমি আমরা দুজন দুজনকে আঁকড়ে ধরে জীবনটা কাটাতে লাগলাম। চাচা যতদিন ছিলেন ততদিন নিজেকে খুব একটা একা লাগতো না। কিন্তু আমার বয়স যখন ত্রিশ হঠাৎই একদিন আমাকে ঘোর একাকিত্বের সাগরে ভাসিয়ে দিয়ে চাচাও চলে গেলেন।


চাচাকে হারিয়ে আমি দিশেহারা হয়ে পড়ি। চাচার মৃত্যুর পর প্রতি রাতে বাবা মার বিভৎস চেহারাওয়ালা প্রেতাত্মা আমার ঘরে আসতে শুরু করলো। প্রতি রাতে আমি ভয়ে আতঙ্কে বালিশে মুখ চেপে কাঁদতে কাঁদতে ঘুমিয়ে পড়ি। ঘুমাই ঠিকই কিন্তু শান্তির ঘুম আমি ঘুমাতে পারি না। ঘুমের মধ্যেও আমি ভয়ে আতঙ্কে কাঁদতে থাকি। এভাবেই তীব্র আতঙ্কে কাটতে থাকলো আমার একাকী জীবন। এক সময় একাকীত্ব আর আতঙ্ক থেকে বাঁচতে আমি বিয়ে করি সুরভীকে। সুরভী আমার সম্পর্কে সবই জানতো। সব জেনেই ও বিয়েতে রাজী হয়।

সেদিন ছিলো আমাদের বাসর রাত। আমি রুমে এসে দেখলাম সুরভী ঘুমিয়ে পড়েছে। ভাবলাম সারাদিনের ধকলে হয়তো বেচারী ক্লান্ত। তবু ওকে আমার বিছানায় দেখে আমি খুব স্বস্তি পেলাম। মনে হলো আমার স্ত্রী আমার পাশে আছে। এখন আমি নিশ্চিন্তে ঘুমাতে পারবো। এখন আর ঐ প্রেতাত্মারা আমায় জ্বালাবে না। কিন্তু আমাকে ভুল প্রমানিত করে সেদিনও বাবা-মার প্রেতাত্মারা এলো। আমি ভয়ে কাঁদতে কাঁদতে ঘুমের কোলে ঢলে পড়লাম। ঘুম ভাঙলো সুরভীর ডাকে। বললো, আমাকে অন্য রুমে জায়গা করে দাও। আমি তোমার মত পাগলের সাথে এক ঘরে থাকতে পারবো না। আমার ভয় লাগে। আমি বিস্মিত হয়ে বললাম,
---তুমি তো সব জেনেই আমাকে বিয়ে করেছ।
ও বলল,
---সব জেনেই করেছিলাম। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে মস্ত ভুল হয়ে গেছে আমার।

কী আর করা আমি তো আর জোর করে ওকে আমার রুমে রাখতে পারবো না। বললাম যে রুমটা তোমার পছন্দ নিয়ে নাও। ও এই বাড়ির সবচেয়ে দখিনের ঘরটা বেছে নিলো। ঐ রুমটা এ বাড়ির সবচেয়ে বড় রুম, যেটা এখন তালাবদ্ধ থাকে। তখনো আমি বুঝতে পারিনি আমাকে বিয়ে করা ছিল আসলে ওর একটা প্ল্যান। কথায় বলে না, হিস্ট্রি রিপিটস ইটসেল্ফ। আমার জীবনেও ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটলো। যে ভয়টা আমি পেতাম তাই হলো।

সুরভী অন্য একটি ছেলেকে ভালবাসে। সেই ছেলেটির সাথে প্ল্যান করেই ও আমাকে বিয়ে করেছে। ও ব্যাংক থেকে ইচ্ছে মত টাকা তুলে ছেলেটিকে নিয়ে দিত। আমি সব জেনেও চুপ করে থাকতাম। কারন আমি কিছুতেই চাইতাম না সুরভী আমাকে ছেড়ে যাক। ও থাকায় মনে হত বাড়িতে অন্তত একজন কেউ তো আছে। রাতে অন্তত বাড়িটিকে মৃতপুরী তো মনে হয় না।

এভাবেই চলছিলো। বাইরের জগতে আমরা খুব সুখী দম্পতি। কাজের লোকেরাও আমাদের সেই অভিনয় বুঝতে পারতো না। সুরভী বাইরের লোকের কাছে খুব ভাল মানুষ সেজে থাকতো। খুব সহজেই সবার মন জয় করে ফেলতো। তাই সবাই ওকে খুব ভালবাসতো।

এভাবেই দুটি বছর কেটে গেলো। হঠাৎ একদিন সুরভীর কান্না আমার কানে এলো। আমি ওর ঘরে উঁকি দিলাম। দেখলাম বালিশে মুখ চেপে গুমরে গুমরে কাঁদছে ও। আমার কেমন জানি মায়া হলো। পাশে গিয়ে জিজ্ঞেস করলাম কী হয়েছে? ও আমাকে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়লো। বললো,

"আমাকে ক্ষমা করে দিয়ো আমি তোমাকে ঠকিয়েছি। কথায় আছে না কর্মফল ঠিকই ভোগ করতে হয়। যার কথায় আমি তোমাকে ঠকাতে রাজী হয়ছিলাম সেই আজ আমাকে ঠকালো। সে বিয়ে করেছে।"

আমি কী বলবো ভেবে পেলাম না। পরক্ষণে কান্না থামিয়ে একদম স্বাভাবিক হয়ে গেলো সুরভী। ওকে দেখলে কেউ বলবে না কিছুক্ষণ আগে এই মেয়েই কান্নায় ভেঙ্গে পড়েছিলো। পরেরদিন ও আমাকে বলল, বাবার বাসায় যেতে চায় কদিনের জন্য। আমি ওকে যেতে দিলাম। ভাবলাম ওখানে গেলে হয়তো ওর মনটা ঠিক হবে। কিন্তু দুইদিন পর সকালবেলা হঠাৎই ফোন এলো ওদের বাড়ি থেকে। জানতে পারলাম বাড়ির পাশের লেকে ডুবে সুরভী আত্মহত্যা করেছে। সুরভী সাঁতার জানতো না।


সেই থেকে বাবা মার প্রেতাত্মার সাথে আরো একটি প্রতাত্মা এসে যোগ হলো আমার জীবনে। এখন আমি তিনটা প্রেতাত্মা নিয়ে প্রেতাত্মাময় রাত কাটাই। আগে কাঁদতে কাঁদতে এক সময় ঘুমিয়ে পড়তাম। এখন এক ফোঁটা ঘুমও আমার চোখে আসে না। সারা রাত জেগে ভয়ে আতঙ্কে আমি কাঁদতে থাকি আর বিভৎস তিনটি প্রেতাত্মা আমাকে ঘিরে বসে থাকে। আর কতকাল আমাকে এই প্রতাত্মাময় নির্ঘুম রাত কাটাতে হবে জানি না। আমি একটু শান্তির ঘুম চাই বীথি। একটু শান্তির ঘুম।

বলে কাঁদতে থাকেন আসলাম খান। স্তব্ধ বীথির চোখ দিয়েও ঝরতে থাকে নীরব জলের ধারা। বীথি আসলাম খানের কানের কাছে মুখ নিয়ে ফিসফিস করে বলে,

----আমি এসে গেছি। আর কোন ভয় নেই আপনার। আর কোন প্রতাত্মা কোনদিন আসবে না আপনার জীবনে।

সেই অমৃতবাণী শোনে আসলাম খানের দুচোখ বুজে আসে ঘুমে। ভীত প্রতাত্মাময় আতঙ্কের ঘুম নয়। পরম শান্তির ঘুম। আসলাম খানের চুলে পরম মমতায় হাত বুলিয়ে দিতে থাকে বীথি। সুরভীর যে মূর্তি ওর মনের কোণে আসন গেড়ে নিয়েছিলো সেটা ভেঙে গুড়ো গুড়ো হয়ে গেলো। সুরভীকে ওর নারী জাতির কলঙ্ক বলে মনে হলো।

সুরভীর কথা ভাবতে ভাবতে হঠাৎ বীথির মনে হলো ও যখন দরজায় কান পেতেছিল তখন আসলাম খানের কণ্ঠের পাশাপাশি আরেকটা ভারী কণ্ঠস্বর শুনতে পেয়েছিল ও। স্পষ্ট শুনতে পেয়েছিল। কোন ভুল ছিল না তাতে। সেটি তবে কার কণ্ঠ ছিল? এ ঘরে তো আসলাম খান ছাড়া আর কেউই নেই।

চলবে

মন্তব্য ২০ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (২০) মন্তব্য লিখুন

১| ২৭ শে জানুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৩:৩১

রাজীব নুর বলেছেন: বেশ নাটকীয়তা আছে।
আসলাম খান আর বীথি।
আসলাম খান একা একা কান্না করে। অথচ বীথিকে বলে পালিয়ে যেতে!

২৭ শে জানুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৩:৩৫

নিভৃতা বলেছেন: বড়ই জটিল ব্যাপার স্যাপার।
অশেষ কৃতজ্ঞতা গল্পের সাথে থাকার জন্য। শেষ অবধি থাকবেন কিন্তু।

২| ২৭ শে জানুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৪:৪৫

মা.হাসান বলেছেন: খুব সুন্দর চলছে। সাবলিল এবং গুছানো।

২৭ শে জানুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৫:১২

নিভৃতা বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ আপনাকে। শুভ কামনা রইল।

৩| ২৭ শে জানুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৪:৫২

রাজীব নুর বলেছেন: লেখক বলেছেন: বড়ই জটিল ব্যাপার স্যাপার।
অশেষ কৃতজ্ঞতা গল্পের সাথে থাকার জন্য। শেষ অবধি থাকবেন কিন্তু।


অবশ্যই সাথে থাকবো।

২৭ শে জানুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৫:১২

নিভৃতা বলেছেন: :) :)

৪| ২৭ শে জানুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৫:০৯

মোহাম্মাদ আব্দুলহাক বলেছেন: ডরাইছি, ওটা কার কণ্ঠ গো!!!

২৭ শে জানুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৫:১৩

নিভৃতা বলেছেন: হা হা হা। ভূউউউউউউত।

৫| ২৭ শে জানুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৫:১৬

মোহাম্মাদ আব্দুলহাক বলেছেন: ভূত সত্যি আমি ডরাই, যদিও উপন্যাস একটা লিখেছি। ছোটগল্প কয়েকটা আছে।

আপনার এই গল্প আরও কয়েকবার রিরাইট করলে এক্কেবারে মারাত্মক রোমহর্ষক হবে, মানে যে পড়বে তার খবর আছে :|

২৭ শে জানুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৫:২০

নিভৃতা বলেছেন: ভূতের উপন্যাস? লিঙ্ক দেবেন। পড়বো।

রিরাইট করলে আরো ভালো হতো। কিন্তু সময় যে করে উঠতে পারি না।

৬| ২৭ শে জানুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৫:২৪

মোহাম্মাদ আব্দুলহাক বলেছেন: আমি ২৫ বছরে একটা শেষ করেছি। কয়েকবার রিরাইট করলে এই গল্প রোমাঞ্চকর উপন্যাস হবে।

ভৌতিকোপন্যাসের লিংক

২৭ শে জানুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৫:২৭

নিভৃতা বলেছেন: ২৫বছরে! আপনার ধৈর্য্যও দেখি অসাধারণ! আমার ধৈর্য্যটা একেবারেই কম। লিঙ্কের জন্য ধন্যবাদ। সময় করে পড়ে নেবো ইনশাআল্লাহ।

৭| ২৭ শে জানুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৫:৪১

মোহাম্মাদ আব্দুলহাক বলেছেন: ব্লগে আমার আরেকটা নিক আছ, এখন আর ব্যবহার করি না। সেই উপন্যাসের চরিত্রের ডাক নাম পলাশমিঞা


ৈধর্যশীল হতে হয়েছে। আজ আপনার সাথে মন্তব্য বিনিময় করে সত্যি আনন্দিত হয়েছি। আপনার সফলতা কামনা করি। অভিধান ব্যবহার করতে হবে। অভিধান এবং শব্দকোষ হলো লেখকের ধনভাণ্ডার।

২৭ শে জানুয়ারি, ২০২০ রাত ৮:১৯

নিভৃতা বলেছেন: সেটাই তো সমস্যা। আমরা অভিধান ব্যবহার করতে চাই না। আমারও ভীষণ ভালো লেগেছে আপনার সাথে মন্তব্য বিনিময় করে।

অনেক অনেক শুভ কামনা আপনার জন্য। ভালো থাকবেন সব সময়।

৮| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০২০ রাত ৯:৩৪

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: জট খূলতে শুরু করেছে!!

সুরভীও মন্দ পথেই হাটলো আর পরিণতিও ভোগ করলো!

প্রেতাত্মা থেকে মুক্তি কোন পথে আসে... অপেক্ষায় ....

২৯ শে জানুয়ারি, ২০২০ রাত ১২:০২

নিভৃতা বলেছেন: শুভ কামনা অফুরান।

৯| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০২০ সকাল ১১:৫৩

কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: সুন্দর গল্পের জন্য ধন্যবাদ

৩০ শে জানুয়ারি, ২০২০ দুপুর ১২:১৯

নিভৃতা বলেছেন: সব গুলো পর্ব এত মনোযোগ দিয়ে পড়ার জন্য তোমাকে এক বূক ভালোবাসা।

১০| ১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ দুপুর ১:৫১

নীল আকাশ বলেছেন: মানুষ মারা গেলে প্রেতাত্মা হয়ে ঘুরে বেড়ায় এই থিঊরী আজকে শিখলাম। জ্বীন ভুত হলে মনে হয় বেশি ভয় পেতাম।
মোটামুটি চলে। দেখি পরের পর্বে কী লিখেছেন? আজকের দিন আপনার জন্য বরাদ্দ।

১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৩:২৮

নিভৃতা বলেছেন: আপনার মত জ্ঞানী গুণী মানুষেে এতটা সময় দখল করতে পেরেছি, তারমানে লেখাটা একেবারেই ফালতু টাইপ না। নয়তো আপনার এত সময় পেতাম না।

অশেষ ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.