নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি নিভৃতা। ভালোবাসি পড়তে। একটু আধটু লেখালেখির অপচেষ্টা চলে মাঝেমাঝে।

নিভৃতা

সামুতে আট বছর আগে কোনভাবে যুক্ত হলেও আমার ব্লগিং জীবন আসলে শুরু জানুয়ারি, ২০২০ থেকে।

নিভৃতা › বিস্তারিত পোস্টঃ

গল্প: আক্রোশ - ০৩

০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সকাল ১১:০৩


২য় পর্ব- Click This Link


মোহনপুরকে ঠিক শহর বলা যায় না।  কারণ শহরের কান ঝালাপালা করা কোলাহল এখানে খুব একটা কানে আসে না। নেই যানবাহনের চ্যাঁ ভ্যাঁ চিৎকার, কলকারখানার কালো ধোঁয়া। নেই যেখানে সেখানে আবর্জনার স্তূপ আর নাক বন্ধ করা পঁচা দুর্গন্ধ। তারমানে এই নয় যে এখানে গাড়িমোটর, কলকারখানা এসব নেই। একটা শহরে যা যা থাকে তার সবটাই মোহনপুরে বিদ্যমান।

এখানে আছে বড় বড় পিচঢালা রাস্তা, রাস্তায় চলছে হরেক রকমের যানবাহন। আছে বড় বড় শিল্পকারখানা। কিন্তু সবকিছু এখানে নিয়ম মেনে চলে। তাই চ্যাঁ ভ্যাঁ এখানে কানটাকে ঝালাপালা করে না। মোহনপুরে ঢুকলেই সবার আগে যা নজরে পড়ে তা হলো সবুজের সমারোহ। যানবাহন আর কলকারখানার মৃদু শব্দকে ছাপিয়ে এখানে রাজত্ব করে পাখির কলকাকলি। মোহনপুর হলো গ্রাম্য স্নিগ্ধতায় ভরা এক অপূর্ব মায়াবী শহর।

  নাহ, এই শহরটা মূল থেকেই এমন ছিল না। আবার হঠাৎ করেই মোহনপুর এমন মোহনীয় রূপ ধারণ করেনি। এই শহরটা এমন রূপ ধারণ করেছে তিলে তিলে। আর এই অসম্ভবকে সম্ভব করে তোলার সম্পুর্ণ কৃতিত্ব যার, তার নাম হলো পল্লব আহমেদ। পল্লব আহমেদ মোহনপুর পৌরসভার বর্তমান মেয়র।

মেয়র বললে চোখের সামনে ভেসে ওঠে পঞ্চাশোর্ধ একজন বয়স্ক মানুষের চেহারা। কিন্তু পল্লব আহমেদ সম্ভবত বাংলাদেশের সবচেয়ে অল্পবয়সী মেয়র। বিগত তিন বছর ধরে সে মোহনপুর পৌরসভার  মেয়রের দায়িত্ব পালন করে আসছে সফলতার সাথে। তার সুখ্যাতি এখন সারা বাংলাদেশে লোকের মুখে মুখে। তার অক্লান্ত পরিশ্রমেই মোহনপুর আজ সারা বাংলাদেশের একটি আদর্শ শহর।

          আঠারো বছর বয়সে মোহনপুরে পা রাখে পল্লব। মোহনপুরে আসার পেছনে তার উদ্দেশ্যটা গোপন কিন্তু বিশাল। ভাল ভাল ছাত্ররা যেখানে এইচ এস সি পাস করে ঢাকার উদ্দেশ্যে পারি জমায় সেখানে পল্লবের মত মেধাবী ছেলে এইচ এস সি পাস করে ঢাকা থেকে চলে আসে মোহনপুরে। মোহনপুর সরকারী কলেজে পলিটিক্যাল সায়েন্স নিয়ে অনার্সে ভর্তি হয়।

এখানে কোন আত্মীয়স্বজন না থাকায় হোস্টেলে থেকেই সে পড়ালেখা করতো। ধীরে ধীরে যে উদ্দেশ্যে তার আগমন সেই পথে হাঁটা শুরু করে সে। আর তার প্রথম পদক্ষেপটা সে গ্রহণ করে ছাত্র রাজনীতিতে নাম লিখিয়ে। রাজনীতিতে যোগ দিয়েই অল্প কদিনের ভেতর ছাত্রদের মধ্যে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠে সে। চোখে মুখে ছিল এক দৃঢ় আত্মপ্রত্যয়। তুখোড় বক্তৃতায় মুগ্ধতার আলো ছড়িয়ে সহজেই মানুষের মন জয় করে নেয়ার এক আশ্চর্য ক্ষমতা ছিল ওর।

অসহায়ের পাশে দাঁড়ানো আর নিপীড়িতের সেবা করা ব্রত হয়ে উঠলো তার। ধীরে ধীরে সারা মোহনপুরে ছড়িয়ে পড়ে তার নেতৃত্বের দীপ্তি। প্রায় সাতটি বছর এই মোহনপুরে কাটিয়ে এই শহরেরই একজন মানুষ, একজন নেতা, প্রাণের নেতা হয়ে উঠে সে। ঠিক পঁচিশ বছর যখন বয়স হলো তখন সময় হলো নির্বাচনে দাঁড়ানোর। যে উদ্দেশ্যে এই মোহনপুরে তার আগমন সেই উদ্দেশ্যেটা সফল করার জন্য তার প্রয়োজন ছিল অসামান্য ক্ষমতা।

কারণ তার লড়াইটা যে এই মোহনপুরের ক্ষমতাধর কয়েকজন ব্যক্তির সাথে। সংসদীয় ক্ষমতার চেয়ে বেশি প্রয়োজন ছিল তার স্থানীয় ক্ষমতা। তাই সংসদ নির্বাচনে না গিয়ে সে প্রার্থী হলো পৌর নির্বাচনে। জয় তার নিশ্চিত ছিল। ফলে মাত্র পঁচিশ বছর বয়সে মোহনপুর পৌরসভার মেয়রের পদে আসীন হয় পল্লব।

সেই থেকে শুরু হয় মোহনপুরকে ঢেলে সাজানোর কাজ। যেন এক নেশায় পেয়ে বসে তাকে। কোথাও কোন ময়লা আবর্জনার স্তূপ নেই। রাস্তায় যানবাহনের সারি ঠিকই আছে কিন্তু নেই কান ঝালাপালা করা হর্ণ। এর কারণ সবাই এখানে নিয়ম মেনে চলতে বাধ্য। আছে শক্ত ট্রাফিক আইন। রাস্তার দুই  পাশে রয়েছে নাম না জানা সব গাছের সারি। এ যেন এক সবুজের শহর।

মোহনপুরে থাকতে থাকতে কখন যে মোহনপুরকে এতটা ভালবেসে ফেলেছে তা পল্লব নিজেও জানে না। আজ সে নিজেকে  মোহনপুরেরই একজন ভাবে। মোহনপুরের মানুষও তাকে এই শহরেরই একজন ভাবতে শুরু করেছে। মোহনপুরের কেউ আজও জানে না পল্লবের আসল পরিচয়। মোহনপুরের কেউ আজও জানে না পল্লবের ভ্রুণের জন্ম আসলে এই মোহনপুরেই।
চলবে
(গল্পের সকল ঘটনা, চরিত্র, স্থান কাল্পনিক)

রচনাকাল- ১৮-০৪-২০১৮
©নিভৃতা

মন্তব্য ১৪ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ দুপুর ১২:১৩

কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: এগিয়ে যাক গল্প
ধন্যবাদ আপি ছোট করে দেয়ার জন্য

০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ দুপুর ২:৪৭

নিভৃতা বলেছেন: হুম ছোট করেই দিচ্ছি পড়ার সুবিধার জন্য। আবারো ভালোবাসা জানাই। ভালো থেকো আপু।

২| ০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ দুপুর ১:২০

মোহাম্মাদ আব্দুলহাক বলেছেন: আপনি আসলেই পাকাপোক্ত লেখিকা।

০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ দুপুর ২:৪৯

নিভৃতা বলেছেন: কী যে বলেন। পাকাপোক্ত হতে এখনও অনেক দেরি। আর পাকাপোক্ত হওয়ার সম্ভাবনাও কম।
কিন্তু আপনার মত পাকাপোক্ত লেখকের মন্তব্য পেলে সত্যি ভালো লাগে। ভালো থাকবেন।

৩| ০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ দুপুর ২:০৪

রাজীব নুর বলেছেন: মোহনপুর জায়গাটা তো কাল্পনিক না। এই নামে জায়গা আছে।

০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ দুপুর ২:৫১

নিভৃতা বলেছেন: কিন্তু এই নামে কোন পৌরসভা আছে বলে আমার জানা নেই। তাছাড়া মোহনপুর গ্রাম নিশ্চয়ই আমার গল্পের শহরের মত না। তাই কাল্পনিক বললাম।
মন্তব্যে অনেক অনেক ভালো লাগা। ভালো থাকবেন।

৪| ০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৩:০৯

এম এ হানিফ বলেছেন: মোহনপুরের কাল্পনিক মেয়রের মত হোক আমার আপনার শহরের মেয়রেরা। ধন্যবাদ আপনাকে এমন বিষয় নিয়ে চমৎকার গল্প লেখার জন্য।

০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৩:৫৭

নিভৃতা বলেছেন: অনুপ্রাণিত হলাম খুব। অনেক অনেক শুভ কামনা আপনার জন্য। ভালো থাকবেন।

৫| ০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ৮:২৫

নেওয়াজ আলি বলেছেন: দক্ষ হাতের কমনীয় প্রকাশ

০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ১০:৪০

নিভৃতা বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ ভাই। শুভেচ্ছা জানবেন।

৬| ০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ৯:৩৬

মুক্তা নীল বলেছেন:
পল্লব চেয়ারম্যানের প্রতি অজানা আগ্রহ কাজ করছে পরের পর্ব পড়তে গেলাম ।

০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ১০:৪১

নিভৃতা বলেছেন: আগ্রহ জাগাতে পেরে ভালো লাগছে খুব। পাঠক হিসেবে সাথে পেয়ে ধন্য।
ভালো থাকবেন।

৭| ০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ১১:০৪

আহমেদ জী এস বলেছেন: নিভৃতা,




পড়ছি।

দেখি, মোহনপুরে মনহারিণী কিছু রহস্যের দেখা মেলে কিনা সামনে.............

০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ১১:১২

নিভৃতা বলেছেন: অশেষ কৃতজ্ঞতা জানবেন।

ভুল ত্রুটিগুলোও দেখিয়ে দিবেন আশা করি।

ভালো থাকুন সব সময়।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.