নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি নিভৃতা। ভালোবাসি পড়তে। একটু আধটু লেখালেখির অপচেষ্টা চলে মাঝেমাঝে।

নিভৃতা

সামুতে আট বছর আগে কোনভাবে যুক্ত হলেও আমার ব্লগিং জীবন আসলে শুরু জানুয়ারি, ২০২০ থেকে।

নিভৃতা › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাসনা ছুরি - ১৩ ও শেষ পর্ব

০৬ ই মার্চ, ২০২০ সকাল ৯:৫১



আগের পর্ব - Click This Link


বজলুর রশীদ ভালোভাবে তৈরী হয়ে ওদের তিনজনকে আলাদা আলাদা জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করলেন। শুরু করলেন তানিকে দিয়ে।

---মিসেস তানি আপনার শেষ কোন ইচ্ছা থাকলে বলুন।
বিধ্বস্ত তানি ভীত কণ্ঠে কোন রকমে বলল,
---মানে?
---মানে আপনার ফাঁসির দড়ি তো রেডি।
---কী বলছেন এসব? আমি তো কিছুই বুঝতে পারছি না। আমার কেন ফাঁসি হতে যাবে?
---কারণ আপনার স্বামী তার জবানবন্দীতে সব স্বীকার করে ফেলেছেন। এখন আপনাকে আর আপনার মাকে কেউ বাঁচাতে পারবে না।
তানির সমস্ত শরীর অসার হয়ে এলো। কোন রকমে ঢোক গিলে বলল,
---কী বলেছে সে?
---বলেছে খুন দুইটা আপনি আর আপনাার মা মিলে করেছেন। উনি কেবল ব্যাপারটা গোপণ রেখেছেন। এখন উনি যেহেতু জবানবন্দীতে সব স্বীকার করেছেন উনার বড়জোর কয়েক বছর জেল হতে পারে। কিন্তু আপনাদের নির্ঘাত ফাঁসি হবে।

তানি বিভ্রান্ত হয়ে পড়লো। ঘাবড়ে গেলো। কিন্তু তবু হার না মেনে বলল,
---এসবই আপনাদের চাল। আমরা সবাই নির্দোষ তো এসব কথা কোত্থেকে আসবে।
---তাহলে এটা কী ম্যাডাম? এই দেখুন জবানবন্দী? আর এই আপনার স্বামীর সই। দেখুন তাকিয়ে, এটা আপনার স্বামীর সই
কিনা?
তানি তাকিয়ে দেখলো কাগজটায় ঠিকই আবীরের সিগনেচার। পড়ে দেখলো পুলিশ ঠিকই বলছে। কিন্তু আবীর কি এত বড় বিশ্বাসঘাতকতা করবে ওর সাথে। ও বিচলিত হয়ে পড়লো। তারপর একটু ভেবে নিয়ে বলল,
---এই সিগনেচার নকল সিগনেচার। সব আপনাদের চাল আমি জানি।
---তাহলে আপনার বাসায় যে কঙ্কালটা পাওয়া গেছে সেটা যে দীনার আর যেটা দীনার কবরে আছে সেটা যে কুলসুমের সেটা আমরা কী করে জানলাম বলুন।
তানি যেন ভেবে কোন কোল পাচ্ছিল না। হঠাৎই কান্নায় ভেঙে পড়লো। ভাবার সব শক্তি হারিয়ে ফেলল। কী বলবে বুঝতে পারছিল না। বজলুর রশীদ ভাবলেন লোহাটা গরম হয়েছে বাড়িটা এখনই মারা দরকার। তারপর শান্ত স্বরে বললেন,
---আপনার জন্য কষ্ট লাগছে ম্যাডাম। একটা উপায় কিন্তু আছে বাঁচার।
তানি চোখ মুছে বলল,
---কী উপায়?
---সব স্বীকার করে ফেলুন। তাহলে অন্তত ফাঁসি থেকে বেঁচে যেতে পারেন। কে জানে হয়তো যাবজ্জীবন থেকেও বেঁচে যেতে পারেন। হয়তো কয়েক বছরের জেল হবে শুধু।
এই অবস্থায়ও তানির চতুর মস্তিষ্ক কাজ করা বন্ধ করেনি। ও খুব ভেবে চিন্তে বলল,
---জেল কেন হবে? আমরা তো কিছুই করিনি যা করার ঐ আবীরই করেছে। আমরা শুধু চুপ করেছিলাম এটাই আমাদের অপরাধ।
---তাহলে আপনি সব খুলে বলতে রাজী?
---হ্যাঁ। রাজী।
বজলুর রশীদ মনে মনে হাসলেন। শিকার অবশেষে ফাঁদে পা রাখলো।

তেইশ


---আবীর সাহেব, সত্যি কষ্ট হচ্ছে আপনার জন্য।
---আমার জন্য আপনার কষ্ট হচ্ছে! হাসালেন আমায়।
---না মানে, মানুষ হিসেবে তো আপনি খুব খারাপ নন। আমি তো দেখেছি কীভাবে শাশুড়ি আর স্ত্রীকে বাঁচানোর চেষ্টা করে গেলেন এতদিন ধরে। কিন্তু যাদের জন্য করলেন চুরি তারাই এখন আপনাকে চোর বলছে। তাই একটু কষ্ট লাগছে আর কী!
---কী বলছেন এসব? আমি কিছুই বুঝতে পারছি না।
---আপনার ফাঁসি এখন সময়ের ব্যাপার মি: আবীর।
---আমার কেন ফাঁসি হতে যাবে কেন? কী করেছি আমি?
---আসলে কেইসটা সলভ হয়ে গেছে। সব সাক্ষী প্রমাণ এখন আমাদের হাতে। এখন শুধু কোর্টের ব্যাপার আর রায়ের জন্য অপেক্ষা। টানাহেঁচড়ার আর কোন সুযোগ নেই।
আবীরের ভেতরটা ছটফট করে উঠলো। কিন্তু প্রকাশ করলো না। কণ্ঠ যতটা সম্ভব স্বাভাবিক রেখে বলল,
---কী প্রমান পেয়েছেন আপনারা?
---আপনার স্ত্রী আর শাশুড়ি সব স্বীকার করেছেন। ওরা বলছেন খুন দুইটা আপনিই করেছেন। ওরা শুধু ব্যাপারটা গোপণ রেখেছেন।
মিথ্যে কথা। এ সব আপনার চালাকি। ওরা এসব কিছুই বলেনি।
বজলুর রশীদ রেকর্ডিংটা প্লে করলেন।
---আপনার স্ত্রীর কণ্ঠ চিনতে পারছেন তো আপনি?
আবীর সবটা শুনলো। শুনে স্তম্ভিত হয়ে বসে রইল।
--- শুধু এটাই না। আরো রয়েছে আবীর সাহেব। ডি এন এ টেস্টে সব প্রমাণিত হয়ে গেছে। আপনার বাড়িতে যার কবর ছিল সেটা মিসেস দীনার আর আপনার স্ত্রীর কবরে যে ছিল সে হলো কুলসুম। আপনার বাঁচার আর কোন স্কোপই নেই।
আবীর সব শুনে একেবারে মোষড়ে পড়লো। কিন্তু কোন কথা বলল না। নির্বাক হয়ে বসে রইল। বজলুর রশীদ আবীরকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে লক্ষ্য করে বললেন
---এখন একটা রাস্তাই খোলা আছে। যদি আপনি স্বীকারোক্তিমূলক একটা জবানবন্দী দেন তাহলে হয়তো জজ সাহেব কিছুটা সদয় হতেও পারেন। ফাঁসি না হয়ে যাবজ্জীবনও হতে পারে আপনার। দেখুন ভেবে কী করবেন।
আবীর তারপরেও চুপ। কোন কথা বলল না। শুধু বিষণ্ণ দৃষ্টিতে মুখটা নত করে বসে রইলো। ওকে চুপ করে থাকতে দেখে বজলুর রশীদ বসা থেকে উঠতে উঠতে বললেন,
---ঠিক আছে আবীর সাহেব আমি আসি। আমার আর কিছু করার নেই।
আবীর এবার মুখটা তুলল। বজলুর রশীদের দিকে তাকিয়ে বলল,
---আমি জবানবন্দী দিতে রাজী।
------

আমি সারাদিন অফিসে থাকতাম। বিকেলে বাড়ি ফিরতাম। আশে পাশে কোন বাড়ি নেই। কথা বলার মানুষ নেই। এত বড় বাড়িটায় দীনার তাই খুব একা একা লাগতো। তাই ওর ইচ্ছেতেই ঠিক করলাম দুতলাটা ভাড়া দেবো। দুতলা ভাড়া নিয়ে আসলো তানি এবং ওর মা। তানির স্বামী থাকতো বিদেশে। শ্বশুর বাড়ির সাথে ওর বনতো না। মা থাকতেন ভাইয়ের সংসারে। ওখানে উনারও ছেলে বউয়ের সাথে বনিবনা ছিল না। তাই মা মেয়ে দুজনে মিলে ঠিক করলো ওরা একসাথে অন্য কোথাও ভাড়া নিয়ে থাকবে। সেই উদ্দেশ্যেই ওরা ভাড়া নিয়ে আসলো আমাদের দুতলায়।
তানির মোহনীয় রূপে প্রথম দেখায়ই আমি মোহিত হয়ে গেলাম। তানির চোখেও আমার জন্য ভাল লাগা দেখতে পেলাম। বিকেল বেলা দীনা বাগান নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটাতো। তিতলি ওর সাথে সাথেই থাকতো। সেই সুযোগে আমি আর তানি গল্পে মেতে উঠতাম। গল্পে গল্পে কখন প্রেম হয়ে গেলো বুঝতেও পারলাম না। দুজন দুজনের জন্য অধির আকুলতায় সময় কাটাতাম।

রাত গভীর হয়ে এলে দীনা আর তিতলি ঘুমের রাজ্যে তলিয়ে গেলে আমি চুপি চুপি চলে যেতাম দুতলায়। আমার জন্য দরজা খোলাই রাখতো তানি। ওর মা সবই জানতেন। দুজনে দিনের পর দিন দীনার চোখকে ফাঁকি দিয়ে উন্মত্ততায় মেতে থাকতাম । এভাবেই একদিন উন্মত্ততায় মেতে ছিলাম আমরা। হঠাৎ দেখি দরজা হাট করে খোলা। আর সেখানে নিষ্পলক চোখে দাঁড়িয়ে আছে দীনা। সেদিন থেকে দীনা একদম চুপ মেরে গেল।

কিন্তু সব কাজ ঠিক ঠাক করে যেতো। তিতলির দেখাশোনা করতো। শুধু চোখে থাকতো এক উদাস দৃষ্টি। অনেকটা যেন রোবটের মত। কাউকে চেনে কি চেনে না বোঝার উপায় ছিল না। সেদিনের পর থেকে একটি কথাও ওর মুখ দিয়ে বের হত না। এমন কী ওর আত্মীয় স্বজন এলেও না। রাতের বেলা মেয়েকে জড়িয়ে ধরে গুটিসুটি মেরে ঘুমোতো। সবাই ভাবতে লাগলো ও পাগল হয়ে গেছে।


ও কয়েকবার আত্মহত্যারও চেষ্টা করলো। কিন্তু ও মরে যাক এটা আমি কখনোই চাইনি। তাই ওকে বার বারই সুস্থ করে তুলতে লাগলাম। এদিকে ওর এই ব্যবহার আমাদের জন্য শাপে বর হলো। ওকে নিয়ে আমাদের আর কোন চিন্তা রইল না। কিন্তু এক সময় এই লুকোচুরির খেলায় হাঁপিয়ে উঠলাম আমরা। তানি বলল,
---এভাবে আর কতদিন?
আমি বললাম,
---মানে?
ও বলল,
---আমি তোমার সাথে সংসার করতে চাই।
আমি বললাম, এটা কিভাবে সম্ভব?
ও বলল,
---সম্ভব। তুমি তোমার বউকে ডিভোর্স দাও। আমি আমার স্বামীকে ডিভোর্স দিবো। আর কোন সমস্যাই রইলো না।
আমি বললাম,
----এটা সম্ভব না। সমাজে আমার একটা সম্মান আছে।
ও বলল,
----তাহলে অন্য কোন ব্যবস্থা করো। আর না হলে আমার আশা ছেড়ে দাও। আমি এই লুকোচুরির খেলা আর খেলতে পারবো না।


ও আমার সাথে কথা বলা বন্ধ করে দিলো। কিছুতেই আমার সাথে কথা বলতে চাইতো না। আমি পাগল হয়ে উঠলাম। মনে হলো তানিকে ছাড়া আমি বাঁচবো না। দীনা যেদিন খুন হয় সেদিন রাতের ঘটনা। তানির কাছ থেকে বিতাড়িত হয়ে নিচে নেমে এলাম আমি। ঘরে ঢুকে দীনার ঘুমন্ত মুখের দিকে তাকালাম। আমার মাথায় রক্ত চড়ে গেলো। আক্রোশে ফেটে পড়লাম আমি। মনে হলো সব বিপত্তির মূল হলো ও। ওকে আমি এই দুনিয়া থেকেই সরিয়ে দেবো।

শরীরের সমস্ত শক্তি দিয়ে দুই হাতে ওর গলা টিপে ধরলাম। দীনা ছটফট করতে লাগলো। হাত পা ছুঁড়তে লাগলো। ওর চোখ বেরিয়ে আসতে লাগলো। কিন্তু আমি ওকে ছাড়লাম না। আমার শরীরে তখন পশুর শক্তি। আমি তানিকে কিছুতেই হারাতে পারবো না। আরো বেশি করে গলা টিপে ধরলাম আমি। এক সময় ওর হাত পা নিথর হয়ে এলো। নাকের কাছে হাত নিয়ে দেখলাম শ্বাস প্রশ্বাস বন্ধ হয়ে গেছে। কব্জি চেক করে দেখলাম পালস থেমে গেছে।

তিতলি তখন গাঢ় ঘুমে। কিছুই টের পেলো না। কিছুক্ষণ আমি স্থবির হয়ে বসে রইলাম দীনার লাশের পাশে। কতক্ষণ বসেছিলাম জানি না। এক সময় সম্বিত ফিরে পেলাম। খুব হাঁসফাঁস লাগছিল। শরীর ঘামছিল। খুব বেশি নার্ভাস ফিল করছিলাম। কী করব কিছুই বুঝতে পারছিলাম না। নিজেকে বড় অসহায় আর বেকুব মনে হচ্ছিল।

একসময় ছুটে গেলাম দুতলায়। মনে হল এই ঘোর বিপদের দিনে তানি ছাড়া আমার কোনো উপায় নেই। তানি আর তানির মাকে খুলে বললাম সব। সব শুনে তারা একটুও ঘাবড়ালো না। বরং তানি বলল,
--ভয়ের কিছু নেই। সবাই জানে ও পাগল হয়ে গেছে। তুমি বলবে সকালে উঠে ওকে ওর রুমে পাওনি। সবাই ভাববে কোথাও চলে গেছে। কেউ তোমাকে সন্দেহ করবে না। আমি বললাম,
---কিন্তু লাশটা কী করবো?
তানি বলল,
---বাগানে কবর দিয়ে দিতে হবে।
তিনজনে মিলে বাগানে মাটি খুঁড়ে দীনাকে কবর দিয়ে দিলাম। মাটিটা একদম সমান রাখলাম যাতে উঁচু মাটি দেখে কারোর সন্দেহ না হয়। উচ্ছিষ্ট মাটিগুলো পুকুরে ফেলে দিলাম যাতে কুলসুমের কোন সন্দেহ না হয়। তানি বলল, কদিন পর এই জায়গাটা পাকা করে একটা চাতাল বানিয়ে নিবে। এতে কোনদিন লাশটা বেরিয়ে পড়ার কোন সম্ভাবনা থাকবে না।

হঠাৎ আমার চোখ গেলো ব্যালকনিটার দিকে। দেখি সেখানে দাঁড়িয়ে আছে তিতলি। ও সব দেখেছে। আমার হাত পা ঠাণ্ডা হয়ে গেলো। তানি বলল, ও একটু আগেও ঘুমে ছিল আমি দেখেছি। ছোট মানুষ ঘুমের ঘোরে কিছু বুঝবে না। আর যদি বুঝে থাকে কিছু তখন দেখা যাবে। আমরা ঘরে এলাম। কিন্তু তিতলি একবারও ওর মায়ের কথা জিজ্ঞেস করলো না। তানি ওকে ঘুম পাড়াতে নিয়ে গেলো। ও বাধ্য মেয়ের মত গিয়ে ঘুমিয়ে পড়লো। যে মেয়ের মুখে কথার খৈ ফোটে সেই মেয়ে এত বড় ঘটনা দেখেও বেমালুম চুপ মেরে গেলো। আমরা ভাবলাম অন্ধকারে ও কিছুই দেখতে পায়নি। কিন্তু সেদিন আসলে মনে হয় ও সব দেখেছে। ওর অবচেতন মনে আজও সেই স্মৃতি রয়ে গেছে।

পরের দিন সকাল বেলা দেখলাম ও জেগে বসে আছে। ওকে জিজ্ঞেস করলাম কখন উঠেছে। কিন্তু ও আমার কথার কোন জবাব দিলো না। অন্য সময় হলে হড়বড় করে অনেক কথা বলে ফেলতো। আমার একটু সন্দেহ হলো মেয়েটা কিছু দেখে ফেলেনি তো! যদি কাউকে বলে দেয়। নানা চিন্তা আমাকে কুরে কুরে খেতে লাগলো। তানিও বলল,
---যদি ও কিছু দেখে থাকে আর কাউকে বলে দেয়।
আমি বললাম,
---ও এখন কিছু বলছে না যখন পরেও বলবে না। ধীরে ধীরে সব ভুলে যাবে। দীনার কথাও।

তানি আর কিছু বলল না।

সকাল দশটার দিকে কুলসুম আসলো। এসেই ও দীনার কথা জানতে চাইল। আমি বললাম, সকাল থেকে দীনাকে খুঁজে পাচ্ছি না। এতবড় একটা ঘটনার পর আমি কিছুটা উদ্ভ্রান্তের মত হয়ে পড়েছিলাম। ও আমার হাবভাব দেখে সন্দেহ করলো। আমরা ওর সামনে দীনাকে খোঁজাখুঁজির অভিনয় করতে লাগলাম। কিন্তু তাতেও ওর সন্দেহ যাচ্ছিল না। বার বার তিতলিকে জিজ্ঞেস করতে লাগলো দীনার কথা। কিন্তু তিতলি চুপ। তিতলিকে এই রকম চুপ করে থাকতে দেখে ওর সন্দেহ আরো বেড়ে গেলো।

ও বাগানে পুকুর পাড়ে সবখানে খুঁজতে লাগলো দীনাকে। ও বাগানের গাছ গাছালির দেখাশোনাও করতো। সব ওর চেনা জানা। দীনাকে যেখানে কবর দেয়া হয়েছে ওখানকার মাটি নরম দেখে ওর সন্দেহ হলো। ও ঐ জায়গাটা খুঁড়ার জন্য ঘর থেকে কোদাল নিয়ে যাচ্ছিল। তানি আর আমি এসে ওকে আটকে ফেললাম। ওকে ভাল করে দড়ি দিয়ে বাঁধলাম। মুখের মধ্যে কাপড় পুরে মুখটাও ভাল করে বেঁধে রাখলাম যাতে শব্দ না করে। তানির মা তিতলিকে নিয়ে উপরে চলে গিয়েছিলেন যাতে ও এসব না দেখে। আমি বললাম,
---এখন উপায়।
তানি বলল,
---একটা খুন যা দশটা খুনও তা। বাঁচতে হলে ঐ কুলসুমকেও শেষ করে ফেলতে হবে।
আমি বললাম,
---- কিন্তু ওর বাড়ির লোকজন?"
তানি বলল,
----ওর বাড়িতে তেমন কেউ নাই। শুধু এক বুড়ো নানি। ওকে বলে দেবো কুলসুম কাজ করে চলে গেছে। গরীব মানুষ। আর কোন ঝামেলা করবে না। আর যদি কিছু করে টাকা দিয়ে মুখ বন্ধ করে দেয়া যাবে। আমি একটা প্ল্যান করেছি, শোন।
আমি বললাম,
--কী প্ল্যান?
তানি বলল,
----দীনার তো আত্মহত্যার প্রবণতা আছে। আমরা বলবো ও গায়ে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে। কেউ অবিশ্বাস করবে না।
আমি বললাম,
---কিন্তু সেজন্য তো লাশটা আবার কবর থেকে তুলতে হবে।
তানি বলল,
--- তুলতে হবে না। আর ওর লাশ দিয়ে আত্মহত্যা সাজালে ধরা পরে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। পোস্ট মর্টেম হতে পারে। পোস্ট মর্টেমে ওকে শ্বাস রোধ করে মারা হয়েছে সেটা বেরিয়ে আসতে পারে। আমাদেরকে কোন জীবিত মানুষকে জীবন্ত পুড়িয়ে ব্যাপারটা সাজাতে হবে। আর এটা সম্ভব কুলসুমের দ্বারা। সাপও মরলো লাঠিও ভাঙলো না।

আমি ভেবে দেখলাম কুলসুমকে না মেরে উপায় নেই। তানি যা বলছে তা ঠিকই। আমরা ওকে বেঁধে রেখে রাতের জন্য অপেক্ষা করতে লাগলাম। রাত যখন গভীর হলো ঝড় শুরু হলো। এতে আমাদের জন্য সুবিধা হলো। ব্যাখ্যাটা আরো সহজ হয়ে গেলো। তিতলিকে ঘুম পাড়িয়ে দেয়া হলো। তারপর কুলসুমকে আমরা রান্না ঘরে নিয়ে গেলাম। ভাল করে বেঁধে সারা শরীরে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দিলাম। চোখের পলকে ও পুড়ে একেবারে ঝলসে গেলো।

চব্বিশ


আবীর ও তানির ফাঁসির রায় হলো। রওশন আরার হলো যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। জেরার মুখে পড়ে শেষ পর্যন্ত তানি আর রওশন আরা দুজনেই নিজেদের দোষ স্বীকার করতে বাধ্য হয়। কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে রওশন আরা কেঁদে চলেছেন অনবরত। আবীর আর তানি নতমুখে দাঁড়িয়ে রয়েছে। ওদের অবৈধ বাসনার ছুরি কেড়ে নিয়েছিলো তিনটি নিষ্পাপ প্রাণ। মানুষ পাপ করে গোপণে। কিন্তু পাপ কখনো গোপণ থাকে না, তা আরেকবার প্রমাণিত হলো। একদিন না একদিন পাপ তার খোলস ভেঙে বেরিয়ে আসেই। একদিন না একদিন সেই পাপের শাস্তি ভোগ করতেই হয়।

বিচারক রায়টা পড়ে শুনাচ্ছিলেন। রায় শুনতে শুনতে রীণার দুটো চোখ জলে ভরে গেলো। মি: আশরাফের দুটো চোখও ছলছল করে উঠলো। দীনা, টুনটুন আর কুলসুমের আত্মা আজ থেকে শান্তিতে ঘুমোবে। বিচারকের রায় পড়া শেষ হলে মি: আশরাফ রীণার দিকে তাকালেন। রীণার চোখ তখনও সামনের দিকে নিষ্পলক তাকিয়ে রয়েছে। মি: আশরাফ নীরবে নিজের একটা হাত রাখলেন রীণার হাতে। রীণা সেই স্পর্শ পেয়ে নিষ্পলক দুটি চোখের পাতা এক করলো। সাথে সাথে চোখের ভেতর জমে ওঠা জলগুলো অঝরধারায় বইতে লাগলো।

সমাপ্ত

মন্তব্য ৩৯ টি রেটিং +৯/-০

মন্তব্য (৩৯) মন্তব্য লিখুন

১| ০৬ ই মার্চ, ২০২০ সকাল ১০:২৯

নেওয়াজ আলি বলেছেন: নান্দনিক লেখনী ।

০৬ ই মার্চ, ২০২০ সকাল ১০:৩২

নিভৃতা বলেছেন: প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত গল্পটারর সাথে ছিলেন আপনি। অশেষ ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই। অনেক অনেক শুভ কামনা। ভালো থাকবেন।

২| ০৬ ই মার্চ, ২০২০ সকাল ১০:৫৩

ইসিয়াক বলেছেন: ভালো লাগলো খুব ।
পুরো গল্পটা আরো একবার পড়ে পুরো মন্তব্য করবো্ ।
শুভকামনা।

০৬ ই মার্চ, ২০২০ সকাল ১০:৫৫

নিভৃতা বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ তোমাকে। অনুপ্রেরণা পেলাম ভাই। ভালো থেকো সবসময়। গল্প কিন্তু অর্ধেক লিখে ফেলে রেখো না। :)

৩| ০৬ ই মার্চ, ২০২০ সকাল ১১:০৭

ইসিয়াক বলেছেন: সম্পর্কটা ভুল ছিলো গল্পটার শেষ লিখেছি । কয়েক পর্বে দেব।
আর আগের গল্প ‍গুলোর ব্যপারে একটু বলি যে, দু একজন এমন টাইপের কমেন্ট করে ,আর গল্প লিখতে ইচ্ছা করেনা।
আমি আবার একটু সেনসিসিটিভ টাইপের। মন ঘুরে গেলে আর লিখতে পারি না। তাই এই গল্পটা আগেই শেষ করে তারপর ব্লগে দিয়েছি। শুভকামনা ।

০৬ ই মার্চ, ২০২০ বিকাল ৫:৩৮

নিভৃতা বলেছেন: লেখকরা আবেগপ্রবণ হবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু আবেগ যেন দূর্বলতা না হয়ে যায়। বিরূপ মন্তব্য আসতেই পারে। কিন্তু তাতে করে থেমে যাওয়া চলবে না। থেমে যাওয়া মানে হেরে যাওয়া।

সম্পর্কটা ভুল ছিল পরবর্তী পর্ব পড়ার অপেক্ষায় রইলাম।

৪| ০৬ ই মার্চ, ২০২০ সকাল ১১:২৫

রাজীব নুর বলেছেন: উচ্চ আদালতের আপিল করলে আবীর আর তানির ফাঁসি হবে না। বড়জোর যাবত জীবন হতে পারে।

সব মিলিয়ে ভালো হয়েছে। বাস্তব জীবনের গল্প এঁকেছেন।

০৬ ই মার্চ, ২০২০ বিকাল ৫:৪০

নিভৃতা বলেছেন: ফাঁসি হবে না কেন?
ভালো হয়েছে বলছেন। যাক, বাবা! অনুপ্রাণিত হইলাম।
ভালো থাকবেন।

৫| ০৬ ই মার্চ, ২০২০ দুপুর ২:১৫

জোবাইর বলেছেন: অভিনন্দন! গল্প ভালো হয়েছে। গল্পের শেষটা হিন্দি সিনেমার শেষ দৃশ্যের মতো মনে হয়েছে :)
আপনার গল্পের নাম 'বাসনা ছুরি' শুরু থেকেই আমার পছন্দ হয় নি। শেষ পর্ব পর্যন্ত অপেক্ষায় ছিলাম নামের সার্থকতা জানার জন্য। গল্পের নামের সার্থকতার তেমন কিছু পেলাম না।

নামের কয়েকটি বিকল্প প্রস্তাব:
দুর্বাসনা
দুর্বাসনার বলি
দুর্বাসনার আগুন

গল্পের মূলভাব কী তা জাস্টিফাই করবে পাঠক। লেখক হিসাবে আপনি নিজেই জাস্টিফাই করেছেন! অনেকটা পত্রিকার সম্পাদকীয় নিবন্ধের মতো: 'মানুষ পাপ করে গোপণে। কিন্তু পাপ কখনো গোপণ থাকে না, তা আরেকবার প্রমাণিত হলো। একদিন না একদিন পাপ তার খোলস ভেঙে বেরিয়ে আসেই। একদিন না একদিন সেই পাপের শাস্তি ভোগ করতেই হয়।' আমি কিন্তু আপনার সাথে একমত নই। আমি মনে করি ওরা সুনিপুন পরিকল্পনা ও যথেষ্ট প্রস্তুতি নিয়ে হত্যাকাণ্ডগুলো করে নি, তাই ধরা পড়েছে।

০৬ ই মার্চ, ২০২০ বিকাল ৫:৪৮

নিভৃতা বলেছেন: গল্প ভালো হয়েছে বলেছেন তাতেই আমি অনেক খুশি। বোঝা যাচ্ছে প্রথম থেকেই গল্পটা পড়েছেন। তাতে করে আরো খুশি। :)
শেষটা চিন্তা ভাবনা করে বদলানো যেতে পারে। তবে রহস্য গল্পগুলোতে একটু সিনেমাটিক ব্যাপার স্যাপার আমার কাছে খারাপ লাগে না।

শত ঋতু-আবর্তনে
বিশ্বজগতের তরে ঈশ্বরের তরে
শতদল উঠিতেছে ফুটি;
সুতীক্ষ্ণ বাসনা-ছুরি দিয়ে
তুমি তাহা চাও ছিঁড়ে নিতে?
লও তার মধুর সৌরভ,
দেখো তার সৌন্দর্য-বিকাশ,
মধু তার করো তুমি পান,
ভালোবাসো, প্রেমে হও বলী,
চেয়ো না তাহারে।
আকাঙক্ষার ধন নহে আত্মা মানবের


রবি ঠাকুরের কবিতার প্রিয় কটা লাইন। এখান থেকেই বাসনা ছুরি নামটা পছন্দ হয়েছিল। হয়তো সঠিক প্রয়োগ হয়নি। আপনার সুচিন্তিত মতামত বিবেচনায় রাখবো।
অশেষ ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা ভাই।
ভালো থাকবেন।

৬| ০৬ ই মার্চ, ২০২০ রাত ৮:০০

শের শায়রী বলেছেন: বোন সব গুলো পর্ব পড়া হয় নি, মাঝে মাঝে এবং শেষ তিন টা পড়ছি। রহস্যপোন্যাস হিসাবে ভালো লাগা। এভাবে আরো দু তিনটা গল্পের সিরিজ করুন। তারপর বই হবে। না বোন বই করা অত ঝামেলার কাজ না, বাংলায় রহস্যোপন্যাস লেখিকা কিন্তু খুব বেশী নাই। নাই বললেই চলে, অভিনন্দন সেক্ষেত্রে।

০৭ ই মার্চ, ২০২০ রাত ১২:১৯

নিভৃতা বলেছেন: অনেক বেশি সাহস এবং অনুপ্রেরণা পেলাম ভাইয়া। আমার আরো তিনটার মত এই রকম বড় সাইজের রহস্য গল্প আছে। আপনি যখন বলছেন আমি এই লেখাগুলো নিয়ে আবার কাজ শুরু করবো।

অনেক অনেক ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা। ভালো থাকবেন সব সময়।

৭| ০৬ ই মার্চ, ২০২০ রাত ১১:৩০

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: অবশেষে রহস্য উন্মোচন হলো। শায়েরী ভায়ের সঙ্গে সুর মিলিয়ে বলবো আপনার এই প্রচেষ্টাকে অভিনন্দন জানাই। এই মোটোকে ধরে রাখুন। আমরা আগামী দিনে আরো একজন ডিটেকটিভ লেখককে(লেখক সত্তা হিসেবে বিচার করে) পেতে চলেছি সে কথা বলা বাহুল্য।

শুভেচ্ছা অফুরান।

০৭ ই মার্চ, ২০২০ রাত ১২:২৭

নিভৃতা বলেছেন: দাদা, অনুপ্রেরণার পাল্লাটা ভারী হয়ে যাচ্ছে বেশি। নতুন লেখকদের বেশি প্রশংসা করতে নেই কিন্তু। নীল আকাশের ঝাড়ি খাওয়ার সমূহ সম্ভাবনা আছে। :)

আপনাদের মত গুণি লেখকদের অনুপ্রেরণা এবং সাহচর্য আমার লেখার মান আরো বৃদ্ধি করবে আশা করছি। পরিপক্কতা এখনও আসেনি সেটা আমি বুঝতে পারি। আপনাদের দোয়ায় ইনশাআল্লাহ ভবিষ্যতে আরও ভালো লিখবো।

অনেক অনেক শুভ কামনা। ভালো থাকবেন সব সময়।

৮| ০৭ ই মার্চ, ২০২০ সকাল ৮:৩৯

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: নটে গাছটি মুড়লো,
আমার গল্প ফুরালো....

হুম্ পাপ কখোন গোপন থাকেনা। প্রকাশ হবেই । হয়তো সময়ান্তর কমবেশী হয় এই যা!
পাপিয়া সহ এমন ভূরি ভূরি বাস্তবতা আছে আমাদের চোখের সামনেই।
পাপের কলসি পূর্ন হলেই পাপ সামনে এসে যায়!

বাসনা ছুরি-ছিন্ন ভিন্ন করে দিল কত গুলো জীবন।
কত স্বপ্ন! কত ভাল বাসা!
এমনই হয়, প্রেমের নামে কাম যখন চড়ে বসে
জ্ঞানের বদলে মোহ যখন আচ্ছন্ন করে ফেলে চেতনা
স্বার্থপরতায় যখন ঢেকে যায় বিবেক
এমন হয়!

তাদের শাস্তি হওয়ায় গল্পে অন্তত শান্তি পেলাম।
তিতলিকে মিস করলাম শেষান্তে। তাকে দারুন বর্ণিল ছবি আঁকায় স্কুলে সেরা আঁকিয়ে পুরষ্কার টুরস্কার দেয়াতে পারতেন ;)
হা হা হা
লেখক তার লেখায় পূর্ণ স্বাধীন।
আমারা ইচ্ছেটা অবহিত করলাম আরকি? ;)

দারুন সিরিজের জন্য ধন্যবাদ।

++++++

০৭ ই মার্চ, ২০২০ দুপুর ২:৩৮

নিভৃতা বলেছেন: আপনার মন্তব্যগুলো বরাবরই আরো ভালো লেখার সাহস যোগায়। এতগুলো প্লাস পেয়ে আমি আত্মহারা। গল্পটাকে আরও মোটাতাজা করার ইচ্ছা আছে। তিতলিকে পুরষ্কার পুরষ্কার দেয়া যায় কিনা ভাবনয় রাখলাম।

অসাধারণ মন্তব্যে অশেষ ভালো লাগা। ভালো থাকবেন সব সময়।

৯| ০৭ ই মার্চ, ২০২০ সকাল ৯:২২

রাজীব নুর বলেছেন: লেখক বলেছেন: ফাঁসি হবে না কেন?
ভালো হয়েছে বলছেন। যাক, বাবা! অনুপ্রাণিত হইলাম।
ভালো থাকবেন।

বেশির ভাগ ফাসির আসামী উচ্চ আদালতে আপিল করে ফাঁসি হওয়া থেকে বেঁচে যায়।

০৭ ই মার্চ, ২০২০ দুপুর ২:৪২

নিভৃতা বলেছেন: অনেকেরই আবার ফাঁসি হয় এবং তা কার্যকরও হয়। হয়তো সংখ্যায় সেটা খুবই কম।

১০| ০৭ ই মার্চ, ২০২০ সকাল ১০:০২

স্বপ্নবাজ সৌরভ বলেছেন:
অসাধারণ একটা গল্প শেষ করলাম। +++ চমৎকার একটা গল্প উপহার দিলেন আমাদের ।
অপেক্ষায় থাকবো পরবর্তী গল্পের। আপনার নান্দনিক উপস্থাপন পরবর্তী পোস্ট পড়ার আগ্রহ বাড়িয়ে দেয়।

ভালো থাকবেন আপু।

০৭ ই মার্চ, ২০২০ দুপুর ২:৪৫

নিভৃতা বলেছেন: অনেক বেশি অনুপ্রাণিত হলাম ভাই। এত ব্যস্ততার মধ্যেও কষ্ট করে গল্পটা পড়ার জন্য অশেষ ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা।

আপনার সুখময় অনুভূতিটার কথা জানা হলো না। একটা পোস্টের মাধ্যমে জানিয়ে দিন। :)

অনেক শুভ কামনা রইল। ভালো থাকবেন।

১১| ০৭ ই মার্চ, ২০২০ সকাল ১০:২২

নীল আকাশ বলেছেন: ব্লগার জোবাইর কে অভিনন্দন। আমি যা বলতে চেয়েছি উনি সেটাই আগে বলে দিয়েছে। ভালো একটা নাম আমি মনে পড়লে পরে এসে দিয়ে যাবো। ছবি আরও ভালো হতে পারতো।
লেখাটা পড়া শেষ করলাম। আমার কাছে যা যা মনে হয়েছে- (এটা শুধু মাত্র আমার মতামত, অন্যকারও / সবার সাথে মিল নাও হতেও পারে)-
১। একতরফা লেখা। কোন সাসপেন্স নেই। আগে থেকেই ঠিক করে রেখেছে কাকে কিভাবে কোন পর্বে ঝুলিয়ে দেবেন।
২। পুরো গল্প অর্ধেক সাইজেই শেষ হতো। অযথাই অনেক বড় করেছেন।
৩। প্রতি পর্বের শেষ ট্যুইস্ট দেয়ার বিষয় ভুলে গেছেন। আমার ধারণা অনেকেই স্কীপিং করে করে পড়ে গেছেন।
৪। পুলিশের চরিত্র দূর্বল উপস্থাপণ এবং ইন্টারোগেশন আরও শক্ত হতে পারতো। (পরবর্তি লেখার সময় এই জিনিস অবশ্যই মাথায় রাখবেন)।
৪। কথপোকথন অনেক বেশি হয়েছে। কথপোকথন দূর্বল। অপ্রয়োজনীয় অনেক লাইন এসেছে। অনেক কনসাইজ করতে পারবেন।
৫। অনেক কিছু কথপোকথন এর জায়গায় প্যারা করে লিখে দিলে লেখা অনেক ছোট হয় আসবে। লেখার আবহ সুন্দর হবে।
আমার ধারণা এটা ৩/৪ পর্বেই হয়ে যাবে।
ধন্যবাদ এবং শুভ কামনা রইলো।


০৭ ই মার্চ, ২০২০ দুপুর ২:৫৭

নিভৃতা বলেছেন: মন্তব্যটা পুরোটা মনোযোগ দিয়ে পড়লাম। আপনার মন্তব্যগুলো নিজের লেখার পরিপক্কতা বাড়াতে আগ্রহ সৃষ্টি করে।
বলছেন কথোপকথন কমানোর জন্য। আর আমি ভাবছি কী করে গল্পটাকে পুষ্টিকর খাবার টাবার দিয়ে আরো স্বাস্থ্যবান বানানো যায় যাতে করে একটা উপন্যাস হয়। এই গল্পটাকে আরো দুই তিনবার রিরাইট করে ত্রুটিমুক্ত করবো। কয়েকবার রিরাইট করলে লেখার ধার আরো বাড়ে। আপনাদের সুচিন্তিত মতামতগুলো তো আছেই। এগুলো আমার অনেক কাজে লাগবে। কথোপকথন বেশি না হলে উপন্যাসের আকর্ষণ কমে যায়। এইটা সম্পুর্ণ আমার মতামত। তবে কথোপকথনের আকর্ষণ বাড়ানোর চেষ্টা থাকবে। কিছু সুন্দর বর্ণনা যোগ করবো। আর বাকিটা আল্লাহর হাতে।

১২| ০৭ ই মার্চ, ২০২০ সকাল ১০:২৬

নীল আকাশ বলেছেন: একটা বুদ্ধি দেই। পুরো লেখাটা একদম উলটো দিক থেকে চিন্তা করুন। শুরু হবেই শেষ থেকে। সাসপেন্স আস্তে আস্তে জট খুলে বের হবে। চিন্তা করুন। প্রতি পর্বেই একটা করে নতুন জট খুলবে।
হূট করে অতীতে নিয়ে যাবেন আবার হূট করেই বাস্তবে নিয়ে আসবেন। থ্রীলার / গোয়েন্দা গল্পগুলি এভাবেই লিখে।

০৭ ই মার্চ, ২০২০ দুপুর ২:৫৯

নিভৃতা বলেছেন: আপনার পরামর্শ মাথায় থাকবে উস্তাদজী।
অশেষ কৃতজ্ঞতা জানাই সাথে থাকার জন্য এবং সুচিন্তিত মতামত উপহার দেয়ার জন্য।

অনেক অনেক শুভ কামনা। ভালো থাকবেন সর্বোদা।

১৩| ০৭ ই মার্চ, ২০২০ সকাল ১০:৩৩

সোহানী বলেছেন: একটি পর্ব পড়েই কেমন যেন খুব পরিচিত কারো লিখার ছোয়া পাচ্ছিলাম তাই সবগুলো এক নি:শ্বাসে পড়ে শুধু একজনের নামই মনে আসলো, শায়মা :P

আশা করি আগামী বই মেলায় একটি পূর্নাঙ্গ বই পাঠক পাবে B:-/ B:-/

০৭ ই মার্চ, ২০২০ বিকাল ৩:০৫

নিভৃতা বলেছেন: আপনাকে মন্তব্যে পেয়ে ভীষণ ভালো লাগছে। মন্তব্যে অশেষ ভালো লাগা। অনুপ্রেরণার পাল্লাটা আরো ভারী হলো। গল্পটা আরো অনেকবার রিরাইট করার ইচ্ছা আছে। এটা প্রথম রাইট।

শায়মাকে চিনলাম না। উনি কি এই ব্লগে আছেন? আমি এখনও উনার লেখা পড়িিিনি। তবে আপনার কথায় এখন পড়ার আগ্রহ জাগছে। :)
অফুরান শুভ কামনা। ভালো থাকবেন।

১৪| ০৭ ই মার্চ, ২০২০ দুপুর ১:০৮

করুণাধারা বলেছেন: পোস্ট আগেই পড়েছিলাম, এখন সবকটা মন্তব্য পড়লাম।

পাঠক হিসেবে আমি সর্বভূক ধরনের, কাহিনী স্বচ্ছন্দে এগিয়েছে তাই পড়তে ভালো লেগেছে। আগামীতেও এমন গল্পের অপেক্ষায় রইলাম।

০৭ ই মার্চ, ২০২০ বিকাল ৩:০৮

নিভৃতা বলেছেন: আপনার মন্তব্য অনুপ্রাণিত করে খুব, প্রিয় লেখিকা। প্রথম থেকেই সাথে জিলেন ধৈর্য্য ধরে। অশেষ কৃতজ্ঞতা জানাই

শুভ কামনা অফুরান। ভালো থাকবেন সব সময়।

১৫| ০৭ ই মার্চ, ২০২০ বিকাল ৩:১৭

নীল আকাশ বলেছেন: শায়মাকে চিনলাম না। উনি কি এই ব্লগে আছেন? আমি এখনও উনার লেখা পড়িিিনি। তবে আপনার কথায় এখন পড়ার আগ্রহ জাগছে।
শায়মা আপু আমার 'শবনম' বইয়ের শবনমের ছবি এঁকে দিয়েছেন। অনেক সিনিয়র ব্লগার।
ব্লগার শায়মা আপু

০৭ ই মার্চ, ২০২০ রাত ১০:৫৬

নিভৃতা বলেছেন: বাহ! এখনও পরিচয় হয়নি। পড়বো উনার লেখা।
আপনার লেখার শেষ পর্ব তো পেলাম না।

১৬| ০৮ ই মার্চ, ২০২০ সকাল ৮:২২

নীল আকাশ বলেছেন: ওফাতের বিষয়ের শেষ অংশে অনেক বির্তকিত জিনিস আছে। এর প্রতিটার আমাকে ব্যাখ্যা লিখতে হচ্ছে।
সহী সনদ বের করতে হচ্ছে। আমাকে এখন প্রায় ৪ বা ৫টা হাদিস গ্রন্থ খুঁজে খুঁজে দেখতে হচ্ছে। এইধরণের লেখা খুব জটিল। এইসব লেখা লিখতেও ভয় লাগে। ভুল হলে আল্লাহর কাছে জবাবদিহী করতে হবে। সময় লাগবে। আমি পারফেক্টশনিস্ট টাইপের লেখক। লেখার মাঝে কোন খুঁত রাখা আমি পছন্দ করি না। আগের ২টা লেখা দেখে নিশ্চয় বুঝেছেন কী পরিমান কষ্ট করতে হয়েছে!
একটা পুরাতন গল্প দিয়েছিলাম দেখেছেন?
অফ টপিকঃ আমি পেন্সিলের মেম্বার নই। এইজন্য পেন্সিলে আপনাকে খুজে বের করতে পারি নি। এটা ছাড়া আর কোন গ্রুপে আছেন আপনি? সামুর গ্রুপে মেম্বার হয়েছেন?
ধন্যবাদ।

০৮ ই মার্চ, ২০২০ সকাল ১১:০১

নিভৃতা বলেছেন: লেখাটা যে কী পরিমাণ কষ্টসাধ্য সে আমি বুঝতে পারছি আর এত ধৈর্য্য দেখেও অবাক হচ্ছি। এর তিলমাত্র ধৈর্য্য যদি আমার থাকতো! তবে অপেক্ষায় আছি লেখাটি পড়ার।

পুরাতন গল্পটা তো এখনও দেখিনি। দেখে নেবো।

সামুর ফেবু গ্রুুপ আছে তাই তো জানি না। নাম কী তাড়াতাড়ি বলেন। সদস্য হতে চাই।

০৮ ই মার্চ, ২০২০ সকাল ১১:১৪

নিভৃতা বলেছেন: গল্পটা খুঁজে পেলাম না। কোথায় দিয়েছেন?

১৭| ০৮ ই মার্চ, ২০২০ দুপুর ২:২৬

নীল আকাশ বলেছেন: সপ্তকান্ড রামায়ণ পড়ে সীতা কার বাপ????
ফেবুতে সব জায়গায় ঘুরে বেড়ান আর আমাদের নিজেদের গ্রুপে নেই আপনি?
সামহোয়্যারইন ব্লগ গ্রুপ এই নামে সার্চ দিন। সেটাতেও না পেলে শবনম দিয়ে সার্চ দিন। আমাকে পেলেও এই গ্রুপ পেয়ে যাবেন।
গল্পঃ ভালোবাসার মরণ! (লিখেছেন নীল আকাশ, ০৭ ই জুলাই, ২০১৯ বিকাল ৩:৪৫) আমার ব্লগ বাড়িতেই পাবেন।
ধন্যবাদ।

০৮ ই মার্চ, ২০২০ বিকাল ৪:০৬

নিভৃতা বলেছেন: আসলেই তো সীতা কার যেন বাপ? হ্যাঁ মনে পড়েছে। লবকুশের। :D

ঘুরে বেড়াইতাম একদা। এখন উঁকিঝুঁকি দেই মাঝে মাঝে।

এখনই সার্চ দিয়ে যোগদান করছি। :)

আপনার ব্লগবাড়ি চষিয়া ফেলিলাম তবু ভালোবাসার মরণ খুঁজিয়া পাইলাম না। :(

১৮| ১০ ই মার্চ, ২০২০ দুপুর ১:৪০

নীল আকাশ বলেছেন: নিন ব্লগার চেনার সহজ রাস্তা!
এক এক করে সবগুলি পোস্ট দেখে আসুন
ব্লগ ডে - ১
ব্লগ ডে - ২
ব্লগ ডে - ৩
ব্লগ ডে - ৪
আপাতত এইগুলি হলেই চলবে। প্রায় সবাই আছে এখানে।
ধন্যবাদ।

১১ ই মার্চ, ২০২০ রাত ১২:১৮

নিভৃতা বলেছেন: ধন্যবাদ ধন্যবাদ ধন্যবাদ। নিরন্তর ধন্যবাদ। দেখে নেবো সবাইকে একে একে। :)

১৯| ১৮ ই মার্চ, ২০২০ দুপুর ১২:৩২

কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: শেষ পর্ব পড়ি নাই মনে করে আজ খুঁজতে খুঁজতে চলে এলাম
খুব সুন্দর হলো সমাপ্তি পর্যন্ত
ধন্যবাদ আপনাকে

১৮ ই মার্চ, ২০২০ বিকাল ৪:৩৫

নিভৃতা বলেছেন: হা হা হা। এতদিন পর। অনেক অনেক ভালোবাসা আপুমনি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.