নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সময়ের সাথে দৌঁড়ে পারিনা, জীবনের দৌঁড়েও পিছিয়ে আমি!খুঁজে ফিরি আপন মানুষ, মাঝে মাঝে হই বেহুঁশ...হৃদয়ে অবিরাম স্বপ্ন গাঁথন, বলব আজ নিপুণ-কথন।
ঢাবিতে বেশ ক'জন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী ছাত্র পড়ে। এরা কেউ টিউশন করে, কেউবা রুমে রুমে গিয়ে বই বিক্রি করে পড়ালেখার খরচ চালায়। তবে আজ পর্যন্ত কাউকে হাত পাততে দেখিনি। আগে যখন হলের মেসে খেতাম, দেখতাম এক দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী খেতে আসতো। একদম পায়ের মাপে মাপা পথ তার। কয় পা হেঁটে কোনদিকে মোর নিতে হবে, কোথায় থামতে হবে, কোথায় বসতে হবে সব মুখস্ত। থাকতেই হয়, নাহলে চলে না। এসে প্রথম কাজ থালা নিয়ে বেসিনে গিয়ে থালা পরিস্কার করা। তারপর ফিরে এসে বসেই প্রহ্লাদকে ডাকা। প্রহ্লাদ মেসে খাবার পরিবেশন করতো। তারপর পাতে ভাত বেড়ে দেয়া, সব্জি, মাছের বাটি দেয়া এবং বলে দেয়া কোনটায় কি আছে। অন্ধের খাওয়ার মাঝে কোন আগে-পরে নাই। সব একসাথে থালায় ঢেলে নিয়ে একত্রে খাওয়া। এরপর অবশ্য থালাটা আর তার পরিস্কার করতে হতো না। পা মেপে মেপে রুমে ফেরাটাই পরের কাজ।
আজ সেই দাদা পিছ থেকে আমায় ডাকলেন। আমি যাচ্ছিলাম শাহবাগের দিকে, বিকেলে। বললেন, "দাদা, মুগদা যাব। টিউশনি আছে। কিন্তু ভার্সিটির বাস মনে হয় ছেড়ে যায় যায়। ৩/৪ মিনিটের মাঝে বাস ধরতে না পারলে ঝামেলায় পড়ে যাব। আমাকে একটু পৌঁছে দেবেন?" আমি না করি কি করে? হাত ধরলাম। তিনি আমার হাত আরো শক্ত করে ধরলেন। এরপর খুব দ্রুত হাটতে শুরু করলেন। আমিই এত জোরে সাধারণত হাঁটি না। হাঁটতে হাঁটতে জানা গেল, তিনি চারটা টিউশন করান। (সারা জীবন তো আয়েশ করেই কাটিয়ে দিলাম। না করলাম পড়ালেখা, না করলাম অন্যকিছু। এঁদের দেখে শেখার আছে অনেক।) ভাগ্য ভালো ছিল দাদার। বাসটি ছেড়ে যায়নি। ডাসের পাশে শ্রাবণে উঠিয়ে দিয়ে আমি আমার গন্তব্যে যাব, এমন সময় তিনি হাতটা আবার বাড়ালেন। আমার নাম জানতে ভুললেন না। ভুলে গেলেন না কৃতজ্ঞতা জানাতেও। অথচ, এই জীবনযোদ্ধার নামটি জানা হয়নি আমার। পরেরবার দেখা হলে অবশ্যই জেনে নেব।
অন্ধজনে দেহ আলো।
-দেব দুলাল গুহ।
১৬ ই নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ১১:২৫
...নিপুণ কথন... বলেছেন: আমার মনে হয় আপনিও একটি ধন্যবাদ পাবার যোগ্য। কারণ পরেরবার আপনি অবশ্যই এমন কারো পাশে দাঁড়াবেন।
©somewhere in net ltd.
১| ১৬ ই নভেম্বর, ২০১৪ ভোর ৪:৩৬
তাশমিন নূর বলেছেন: লেখাটি ভালোই লাগল। আমাদের সমাজে এমন অনেক প্রতিবন্ধী আছেন, যারা অন্যের গলগ্রহ হয়ে বাঁচতে চান না। তবে প্রতিবন্ধীদের জ্ঞানে-গুণে বড় করে তোলার জন্য তার অভিভাবক এবং আশেপাশের মানুষজন অনেক সময়ই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেন না, বা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন না। অন্ধ মানুষটিকে সাহায্য করার জন্য আপনাকে একটি বাড়তি ধন্যবাদ।