নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সময়ের সাথে দৌঁড়ে পারিনা, জীবনের দৌঁড়েও পিছিয়ে আমি!খুঁজে ফিরি আপন মানুষ, মাঝে মাঝে হই বেহুঁশ...হৃদয়ে অবিরাম স্বপ্ন গাঁথন, বলব আজ নিপুণ-কথন।
রাত ১০টা বেজে ৩০। খিদেয় পেট চোঁ চোঁ করছে। একান্ত শংকিত মনে জীর্ণ মানিব্যাগটির ভেতর তাকিয়ে আপনি দেখতে পেলেন, তাতে অবশিষ্ট আছে মাত্র ৩২ টাকা। এই টাকায় রাতের খাবারটা তো হয়ে যাবে কোনমতে, চাইলে ডাল-সব্জি দিয়ে ২২টাকাতেও ডিনার সেরে নেয়া সম্ভব। হ্যাঁ, হলের ক্যান্টিনের অত্যধিক "উচ্চ" মানের খাবারের জন্য এই টাকাই যথেষ্ট। তবু আপনি চিন্তায় পড়ে গেলেন। এই টাকা ক'টা শেষ করে ফেললে কাল সারাটা দিন কিভাবে চলবে? ব্যাংক অ্যাকাউন্টেও যে তোলার মতো টাকা নেই! তবু আপনি মানিব্যাগটি প্যান্টের পকেটে পুরলেন। ভাবলেন, যো হোগা দেখা যায়েগা। অত:পর যেই না শার্টটা গায়ে জড়াবেন, এমন সময় দুই ছোট ভাই এসে হাজির- "ভাই, আমাদের বন্ধুর বাবা অসুস্থ, হাসপাতালে। হার্টের বাইপাস সার্জারি করাতে হবে। কিছু টাকা..." এই অবস্থায় আপনার উচিৎ কমপক্ষে ১০০ নাহোক, ৫০ টাকা দেয়া। কিন্তু আপনার আছে ৩২ টাকা। কী করবেন আপনি?
আমি হলে ২০ টাকা দিতাম। তারপর ওদের দিকে তাকিয়ে মিষ্টি করে হেসে বলতাম, "আবার দরকার পড়লে এসো। আজ আসলে..." আর বাকি ১২ টাকা দিয়ে হালকা কিছু খেয়ে নিয়ে বেশি করে পানি মেরে দিতাম পেটে। মধ্যবিত্ত বা নিম্নবিত্ত পরিবারের ছেলেদের হলজীবনটা সাধারণত এভাবেই কাটে। ভাঙ্গা স্বপ্ন জোড়া দিতে দিতে যায় দিন, আর রাত কাটে নির্ঘুম, নতুন করে বড় হবার স্বপ্ন দেখতে দেখতে!
হলে থাকা এইসব ছেলেদের নিয়ে সবাই একটু না একটু খেলাধুলা করে নেয়। অল্পতেই এদেরকে তুষ্ট করা যায় বিধায়, এদের কদর সবজায়গায় বেশি। টিউশনি করাতে এদের জুড়ি নেই। অল্প কিছু টাকার বিনিময়ে এরা মাসের পর মাস পড়াবে, অভিভাবক ঘড়ি ধরে বসে থাকবেন, আর নানা ধরণের জেরা করবেন। এমন ভাব ধরবেন, যেন শিক্ষকের চেয়ে তিনিই বেশি বুঝেন। তো মশাই, নিজেই পড়ান না নিজের মেয়েকে! শুধু শুধু এতগুলো টাকা গচ্ছা দেয়া কেন? আর সময়মতো বেতন না দেয়া তো আছেই। কর্মক্ষেত্রেও এদের মূল্যায়ন কম। আপনি এসব মেনে নিতে পারলে ভালো থাকবেন, না পারলেন তো গেলেন রসাতলে! তারা জানে, আপনার অপশন কম। আপনার দূর্বলতা প্রকাশ পেলো তো আপনি শেষ।
শীত কমে গেলো, আর মশার উৎপাত বেড়ে গেলো। ছোট ছোট মশা খুব জ্বালায় ইদানিং। এরাও হলের ছেলেদের রক্ত চুষে মজা পায়। আমি ফ্যান চালিয়ে দিয়েছি। আগে ফ্যানের বাতাসে মশা পালাতো। এখন আর পালায় না! ওরা অভিযোজিত হয়ে গেছে। আমিও একদিন এই সমাজের সব অন্যায় অবিচার ধান্দাবাজি আর দূর্নীতির সাথে অভিযোজিত হব -এই কামনায় এখন একটু ঘুমানোর চেষ্টা করি, কেমন?
শুভরাত্রি।
©somewhere in net ltd.
১| ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১:৩৩
অপূর্ণ রায়হান বলেছেন: এভাবেই ধীরে ধীরে অভিযোজিত হয়ে যাবে সবাই। একই চক্র ঘুরেফিরে চলতেই থাকবে ।।
ভালো থাকবেন ভ্রাতা।