নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সময়ের সাথে দৌঁড়ে পারিনা, জীবনের দৌঁড়েও পিছিয়ে আমি!খুঁজে ফিরি আপন মানুষ, মাঝে মাঝে হই বেহুঁশ...হৃদয়ে অবিরাম স্বপ্ন গাঁথন, বলব আজ নিপুণ-কথন।
কবি বলেছেন, 'কোন বা পথে নিতাইগঞ্জ যাই...' এখন প্রশ্ন হলো, কবি কেন এই কথাটি বলেছেন? এই নিয়ে বসেছে অনুসন্ধান কমিটি। দেখাচ্ছে টিভিতে। সঞ্চালক সাংবাদিক ভাই এমন প্রশ্ন করতেই বিশিষ্ট ব্যাকরণবিদ প্রশ্নকর্তাকে মাথা ঝাকিয়ে হাতের ইশারায় থামিয়ে দিলেন, তারপর বললেন, 'আরেহ রাখেন মশাই, কবি এই কথাটি বলেন নি, তিনি প্রশ্ন করেছেন।'
.
তাঁর পাশেই আছেন বিশিষ্ট সমাজসেবক ও নেতা। তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে সঞ্চালককে নিলেন এক হাত, 'এ দিয়ে আপনার কি কাজ মশাই? সবকিছুতেই কেন কারণ খুঁজে বেড়ান? যা যেভাবে চলছে, চলতে দিন না!'
.
সঞ্চালকের অপর পাশে ছিলেন একজন যুক্তিবিদ। তিনি বললেন, 'তিনি ঠিক কাজটাই করেছেন। যুক্তি দিয়ে ভাবতে হবে, কারণ খুঁজতে হবে সবকিছুর। কেন কবি এমন প্রশ্ন করলেন, ভেবে দেখতে হবে।'
.
ছিলেন বিজ্ঞানীও। তিনি বললেন, 'আপনি সঠিক বলেছেন। এর পিছের কারণ খুঁজে বের করতেই হবে। এর জন্য দরকার উপযুক্ত গবেষণা, আর গবেষণার জন্য দরকার বিপুল অংকের অর্থ..'
.
'আরেহ রাখেন মশাই, টাকা কি গাছ ঝাঁকি দিলে পড়ে, যে খালি টাকা টাকা করেন?' পাশ থেকে ফোঁড়ন কাটলেন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ কাম ব্যাংকার।
.
অনুষ্ঠানের এই পর্যায়ে 'গাছ ঝাঁকি দিলে পড়ে' এমন কটাক্ষময় বক্তব্যে তীব্র আপত্তি জানিয়ে সভাস্থল ত্যাগ করেন উপস্থিত জীববিজ্ঞানী পরিবেশবিদেরা।
.
ছিলেন গোয়েন্দারাও। তাদের একজন বললেন, 'আরেহ আরেহ, আপনারা তো আসল কারণটা না খুঁজেই নিজেরা নিজেরা রাগারাগি করে মরছেন! চলুন একসঙ্গে খুঁজে বের করি নিতাইগঞ্জে কী এমন আছে যে কবি সেখানে যেতে চান?'
.
তার মুখের কথা খপ করে ধরে ফেলে ভূতত্ত্ববিদ বললেন, 'ইউরেকা! নিশ্চয়ই হীরের খনির সন্ধান পেয়েছেন কবি!'
.
পুলিশের এক বড় কর্তা ছিলেন পাশেই। এবার তাঁর মতামত জানতে চাওয়া হলে তিনি বললেন, 'এটা তদন্তসাপেক্ষ ব্যাপার। তদন্তের স্বার্থে এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না।'
.
অনুষ্ঠানের এই পর্যায়ে স্কাইপে যুক্ত হলেন কবি। দেখা গেলো, তিনি এই গভীর রাতে হাতে হারিকেন জ্বালিয়ে পথ খুঁজছেন। নিতাইগঞ্জের পথ। যুক্তিতর্কের অবসান ঘটাতে তাকেই করা হলো প্রশ্নটি। ভীত কণ্ঠে তিনি ছন্দ মিলিয়ে বললেন,
.
'বউ ক্ষেপেছে, তাই ভেগেছে, গিয়েছে বাপের বাড়ি,
শাঁসিয়ে গিয়েছে সেথায় না যাই, না করি বাড়াবাড়ি।
শ্বশুরবাড়ি নিতাইগঞ্জে, শ্বশুর বড্ড রাগি,
ভাবছি কোন পথে সেথায় গিয়ে বউয়ের চরণে লাগি!'
.
এই বলে কবি লাইনটি কেটে দিলেন।
.
হুটহাট লাইন কেটে যাওয়ায় সঞ্চালক দু:খপ্রকাশ করে বললেন, 'দর্শক, যেমনটি দেখছিলেন...'
.
এখানেই তাকে থামিয়ে পুরুষ অধিকারকর্মী বললেন, 'এ ভীষণ অন্যায়। আমাদের সোনালী অতীতে 'স্বামীর পায়ের নিচে স্ত্রীর অবস্থান' বলে মানা হতো। অথচ আজ কবির এ কী অধ:পতন! তিনি অনতিবিলম্বে কবির বিচার দাবি করেন এবং তাকে পুরুষ সমাজে অবাঞ্চহিত ঘোষণা করেন।'
.
টকশোর এই পর্যায়ে ধপ করে কারেন্ট চলে যাওয়ায় বাকিটুকু দেখা সম্ভব হয়নি।
.
লেখা: দেব দুলাল গুহ / দেবু ফরিদী
[একটি কাল্পনিক দৃশ্যপট]
২| ০৫ ই জুলাই, ২০১৭ রাত ৮:৩৭
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন:
ঘুমায়া ছিলাম ছিলাম ভাল
জেগে দেখি বেলা নাই.....
কবির কারণ পাই না পাই সমাজের (টকশোর) বাস্তব হালটাইতো পেলাম!!!
+++
৩| ০৫ ই জুলাই, ২০১৭ রাত ৮:৫১
রাজীব নুর বলেছেন: সুন্দর।
©somewhere in net ltd.
১| ০৫ ই জুলাই, ২০১৭ রাত ৮:১২
Al Rajbari বলেছেন: হাসিই পেল-!!