নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

শিক্ষক, সাংবাদিক ও সাহিত্যিক। ফেসবুকে যুক্ত হোনঃ www.facebook.com/dev.d.nipun

...নিপুণ কথন...

সময়ের সাথে দৌঁড়ে পারিনা, জীবনের দৌঁড়েও পিছিয়ে আমি!খুঁজে ফিরি আপন মানুষ, মাঝে মাঝে হই বেহুঁশ...হৃদয়ে অবিরাম স্বপ্ন গাঁথন, বলব আজ নিপুণ-কথন।

...নিপুণ কথন... › বিস্তারিত পোস্টঃ

তবুও নিজেকে পাল্টাতে পারি না যে! হয়তো সেদিনও পারবো না।

২৬ শে এপ্রিল, ২০১৮ দুপুর ১:৫৭


অনেক চেষ্টা করেও ঘুমাতে পারছি না। একে তো গরম, দুইয়ে মন খারাপ, তিনে টেনশন। কোলকাতা থেকে মায়ের চিকিৎসা শেষে ফিরে সেদিন দেখি আমার রুমের লাইট ফ্যান চলে না। এরপর কয়েকদিন নিজে নিজেই চেষ্টা করেছি সারানোর, কাজের ব্যস্ততার মাঝেও। ইলেক্ট্রিশিয়ান ডাকতে ইচ্ছা করেনি, কারণ বাটপারির ভয়। বিষয়টা মোটেও হাস্যকর নয়। এর আগে আমার অনুমতি ছাড়াই আমার বাসার বিদ্যুতের লাইন সরিয়ে অন্যত্র লাগিয়ে দিয়েছে প্রতিবেশিরা। কম্পলেইন করেও কিছু হয়নি। এলাকার শত্রুরা আমাকে সরানোর জন্য টাকা-পয়সা খাটিয়ে হুমকি ধামকি দিয়ে অনেক চেষ্টা করেও যখন পারছে না, তখন চেষ্টা করছে একঘরে করে রাখার! কারো বিয়ে হলে দাওয়াত পাইনা, পেলেও সেভাবে আদর-আপ্যায়ন পাই না। আমার সাথে কেউ মিশলেই আমার বাসায় কেউ আসলেই পরেরদিন তাকে চোখ রাঙিয়ে দেওয়া হয়! এদের এত ছোট মানসিকতা, যে মাঝে মধ্যে আমি নিজে নিজেই হাসি। কষ্ট হয়, তবুও অসুস্থ মাকে নিয়ে আমি এই এলাকা ছেড়ে আমার বাবার স্মৃতি ছেড়ে কোথাও যাবো না।
.
আজ একটু বেশিই গরম। তাই ঘুম আসছে না। মাঝে জানালা খুলে দেয়ায় যা একটু এসেছিলো, তাও প্রতিবেশির আমার জায়গা ঘেঁষে নির্মিত টয়লেটের 'সুগন্ধে' ভেঙে গেছে। এরপর থেকে জেগে আছি। জেগে থাকলেই তো অন্ধকারে দুশ্চিন্তা হয়, স্বাভাবিক। সেটা কাটাতে এলাম ফেসবুকে। এসে দেখি মৃত্যুর মিছিল, একুশে পদকপ্রাপ্ত কবি Belal Chaudhuri এরপর আমার লিস্টের আরও একজন মারা গেছেন ঘুমের মধ্যে স্ট্রোক করে। তেমন আলাপ ছিলো বলে মনে পড়ে না, কিন্তু তিনি আমার লিস্টে আছেন। সম্ভবত তিনিও একজন ব্লগার, অসাম্প্রদায়িক চেতনার লেখক ছিলেন, নাম Shuvo Mehdi। ফেসবুক জানাচ্ছে গত বছর জুনের ১ তারিখে আমরা ফেসবুকে বন্ধু হয়েছিলাম। এক মিউচুয়্যাল ফ্রেন্ডের পোস্ট দেখে তাঁর ওয়ালে গিয়ে বেশিক্ষণ থাকতে পারলাম না।
.
এভাবেই একদিন আমাকেও হয়তো চলে যেতে হবে। স্বাভাবিক মৃত্যু হবে কিনা জানিনা। তবে স্বাভাবিক মৃত্যুটাই চাই। জীবনে এই পর্যন্ত জ্ঞানত কারো ক্ষতি করিনি, তবে অনেকের থেকে ক্ষতির শিকার হয়েছি। আমি ক্ষমাশীল মানুষ, তবুও মাঝে মাঝে আমার মনেও জিঘাংষা যে জাগে না, তা নয়। আমার খুব ইচ্ছা করে মৃত্যুর আগে আমাকে আর আমার পরিবারকে যারা বিনা অপরাধে কষ্ট দিয়েছে ও দিচ্ছে, তাদের শাস্তি পাওয়াটা দেখে যাই। কিন্তু সে আশায় আমার গুড়ে বালি।
.
আমি জানি এই দুনিয়ায় ভালো মানুষগুলোই কষ্টে থাকে, ভাঙা ঘরে কোনোরকমে দিন কাটায় স্বপ্নকে পুঁজি করে। আর খারাপরা হঠাৎ আঙুল ফুলে কলাগাছ হবে, বানাবে ডুপ্লেক্স বাড়ি, ঘুষ-দুর্নীতির টাকায় হবে গাড়ি, বাসায় লাগবে এসি। ওরাই ভালো থাকবে, এটাই হয়। সব খারাপগুলো এক হয়ে একজন ভালোর জীবনে বেঁচে থাকাকে অভিশপ্ত বানিয়ে ফেলবে। অথচ ধর্মশিক্ষার বইতে কত সুন্দরভাবেই না মিথ্যে করে নীতিকথাগুলো লেখা থাকে! আমাকে আবার নাস্তিক বলবেন না, আমি বাস্তবতা বললাম, ওসব নীতিকথা আজকাল কেউ মানেও না, না মানলে তাদের কিছু হয়ও না।
.
এই যে এতগুলো কথা লিখলাম, এসব লেখা আমার জন্য মানা। আমাকে আমার স্থানীয় শত্রুদের সম্পর্কে লিখতে মানা করা হয়েছে। তবুও আমাকে লিখতে হয়। কারণ আমি হুমকি পাই। ভালো কাজ করতে গিয়ে পাই, ভালো কথা বলতে গিয়ে পাই, অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে গিয়ে পাই, এমনকি নিজের জায়গা দখল কেন সেটা জানতে গিয়েও পাই। ভাবছেন, ছেলেটা বলদ, তাই এসব ফেসবুকে বলে? কেউ না জানুক, কেউ কিছু না করুক, তবুও আমার অভিজ্ঞতা আমি লিখে রেখে যেতে চাই। সরকারি চাকরি করে নিজের অভিজ্ঞতা জানানোয় কোনো বাধা নিষেধ আছে কি? আসলে অস্তিত্বের প্রয়োজনে এছাড়া উপায়ও তো নাই, যখন ঊর্ধত্বন কাউকেই লিটারেলি পাশে পাচ্ছি না!
.
এইসব নিকষ কালো রাতের শেষে একটা সময় ভোর হয়, পাখি ডাকে। আগের দিনের হতাশা আর অপ্রাপ্তিগুলোর হিসাব করতে করতে চলে আসে নতুন দিন। নতুন ভোর নতুন কিছু স্বপ্ন নিয়ে আসে। সেই ভোর দেখি আর ভাবি, এখনও অনেকটা দূর যাওয়া বাকি। জানি না পরের প্রজন্ম রেখে যেতে পারবো কিনা। যদি পারি, তাকে আমি কি শিক্ষা দেবো? তাকে কি বলতে পারবো, 'বাবা, সদা সত্য কথা বলবে। অন্যায়ের সাথে আপোষ করবে না। সৎপথে চলবে। কষ্ট করে চললেও হারাম কিছু খাবে না। মানুষের বিপদে তার পাশে দাঁড়াবে।'? এসব বললে নিশ্চিত আমার ছেলে হাসবে। বলবে, 'এসব মেনে আর করে তুমি আর দাদু কী করতে পেরেছো শুনি? পেরেছো একটা ভালো ঘর করতে, কিংবা একটা গাড়ি? ওসব বস্তাপঁচা নীতিকথা রাখো।'
.
হয়তো আমি খুব কষ্ট পাবো সেদিন, কষ্ট তো আজও পাই। কিন্তু তবুও নিজেকে পাল্টাতে পারি না যে! হয়তো সেদিনও পারবো না।
.
দেব দুলাল গুহ / দেবু ফরিদী
ভোর ৫টা বেজে ৩২ মিনিট।
২৫ এপ্রিল, ২০১৮।

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ২৬ শে এপ্রিল, ২০১৮ দুপুর ২:৫৫

কাওসার চৌধুরী বলেছেন: চমৎকার লেখা। বেশ গোছানো। পড়ে ভাল লাগল।

২| ২৬ শে এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৪:০৯

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: বেশ ভাল লাগলো।কলকাতার দোকান থেকে ৫০০ মিষ্টি কেনার ' পর আজ আবার আপনার পোস্ট পড়লাম।কবে দেশে ফিরলেন? মাসিমা এখন ভাল আছেন, আশাকরি।

শুভেচ্ছা নিয়েন,দেবুদা।

৩| ২৬ শে এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৪:৪০

রাজীব নুর বলেছেন: লেখা সুন্দর। পড়েতে বিরক্ত লাগে না।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.