নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সময়ের সাথে দৌঁড়ে পারিনা, জীবনের দৌঁড়েও পিছিয়ে আমি!খুঁজে ফিরি আপন মানুষ, মাঝে মাঝে হই বেহুঁশ...হৃদয়ে অবিরাম স্বপ্ন গাঁথন, বলব আজ নিপুণ-কথন।
প্রচন্ড গরমে কষ্ট পাচ্ছি। ঘরের সিলিং ফ্যান নষ্ট, কেউ সারিয়ে দিয়ে যাও! আমি কি দিনদিন অলস হয়ে যাচ্ছি? হ্যাঁ, ঠিক তাই। ঠাণ্ডা-গরম লেগেছে খুব। গলা ভারী, বুকে ও মাথায় ব্যাথা। ফ্যান নষ্ট। ভালোই হয়েছে। এখন খুব ইচ্ছা করছে রাস্তায় বেরিয়ে পড়ি। কিন্তু একা? আচ্ছা, বাইরে নাকি চোখ ঝলসানো জ্যোৎস্না? ফেসবুক মারফৎ জানতে পেরেছি। নাহ, হাসবেন না। আমার মতো একা মানুষের কাছে ফেসবুক এক বিশাল বন্ধুময় জগত। একে হেয় করবেন না।
.
ছোটবেলায় বাবাকে খুব হিসেব করে চলতে দেখেছি। বাবার একার সীমিত সৎপথের রোজগার, তার ওপর তার অনেকগুলো ভাইবোনের দায়িত্ব। এর মাঝেই এসে পড়েছিলাম আমি। কিন্তু আমাকে বাবা কোনো কষ্ট বুঝতে দেয় নাই। এমন গরমের রাতে বিদ্যুৎ না থাকলে আমাকে কোলে নিয়ে বাবা ঘুরতে বের হতো। লাহিড়িপাড়া, পানি ওয়াপদা হয়ে মেইন রাস্তা, মহিম স্কুলের মাঠ, বাগানবাড়ির পুকুর পাড়, আঙ্গিনার জলা! খালি গায়ে আমি, পাখা দিয়ে বাতাস দিতো বাবা। আর ঐ চাঁদটাকে দেখিয়ে বলতো, 'দেখো বাবা, তুমি একা নও। দেখো চাঁদ মামাও আমাদের সাথে সাথে আসে!'
.
তখন তো বুঝতাম না, এসব আমার মনেও থাকার কথা না। প্রচন্ড ঘামাচির জ্বালায় কাঁদতাম ঠোঁট উল্টিয়ে! পরে বড় হয়ে বাবার মুখেই এই গল্প শুনেছি। মনে নেই অনেক গল্পই। স্মৃতিরা হারিয়ে যায়। আজ বাবা নেই, কিন্তু চাঁদটা আছে। আমি যেখানে যাই, চাঁদটাও আমার সঙ্গী হয়। চাঁদকে আমি ভালোবাসি।
.
অনেক বড় আর সুন্দর একটা চাঁদ উঠেছে আকাশে। চাঁদটা এতো বড়, এত্তো বড়, যে সে আমাকে নিউটনের মহাকর্ষ সূত্র অনুযায়ী মহাকর্ষ বল দিয়ে টেনে টেনে নিজের খুব কাছে নিতে চাইছে। ওর চাইতে আমি ক্ষুদ্র, তাই বলের দিক ওর দিকেই। ও চাইছে আমি ওর প্রেমে পাগল হয়ে ওর বুকে খেলা করি, ওর মিষ্টি আলো গায়ে মেখে আমিও যেন স্বর্গীয় আনন্দে আপ্লুত হই।
.
ফিজিক্স যখন টানলামই, তাহলে আরেকটু টানি। যদি ফিজিক্সের ভাষায় কথা বলি, তাহলে 'চাঁদ উঠেছে আকাশে' বলাটা ভুল। ঐ চাঁদটা ওখানেই থাকে, আমাদের পৃথিবীকে কেন্দ্র করে ঘুরে বেড়ায়, অমাবস্যা আর গ্রহণ বাদে সারাক্ষণ আমাদেরকে আলো বিলায়। দিনের বেলায় তবে কেন চাঁদের আলো দেখতে পাই না?
.
আমরা দিনের বেলা দেখলেও উপলব্ধি করি না। সূর্যের আলোই চাঁদের পৃষ্ঠে প্রতিফলিত হয়ে আমার চোখে এসে পড়ে, তাই আমরা রাতের বেলা চাঁদের আলোতে আলোকিত হই। কিন্তু এটা চাঁদের নিজস্ব আলো না। দিনের বেলা সূর্য নিজেই সরাসরি আমাদের আলো দেয়। তাই তখন চাঁদের আলোটা এক সাগর জলে এক ফোঁটা জল ঢেলে দেয়ার মতো। দেখবেন অনেক সময় ভোরের দিকে হালকা করে চাঁদটাকে দেখা যায়। তারপর সুর্যের আলোয় সেটা হারিয়ে যায়। যেমন ডুবে যারা জ্বলজ্বল করতে থাকা তারারা! তবে পৃথিবীর সব জায়গায় একসাথে একসময় আলো এসে পড়ে না। যেপাশে আলো পড়ে তার বিপরীত পাশে সূর্যের আলো সরাসরি যায় না।
.
আপনারা জানেন এর সবই। আরেকটু সহজভাবে বলার চেষ্টা করলাম। কী করবো বলেন, শিক্ষক মানুষ, ক্লাস নাই অনেকদিন। প্রিয় ছাত্রীদের থেকে আমাকে আলাদা করা হয়েছে, পাঠানো হয়েছে দূরে। তাই জ্ঞান বিতরনের জন্য আপাতত ফেসবুকই ভরসা। আর এই যে বকবক করছি ঘুমের ঘোরে, কোনো ভুল-ত্রুটি হলে ক্ষমা করে দিয়েন।
.
এবং বাবা,
আই মিস ইউ সো মাচ! ♥
.
দেব দুলাল গুহ
২| ২৮ শে মে, ২০১৮ সকাল ১০:০৯
রাজীব নুর বলেছেন: জীবন আর মৃত্যুর মাঝে জীবনের স্বাধ বড় অদ্ভুত ।
©somewhere in net ltd.
১| ২৮ শে মে, ২০১৮ রাত ২:৪৩
ইব্রাহীম আই কে বলেছেন: ফিজিক্স একটা ভালবাসার নাম। একটা সময় এটা পড়তে ভালো লাগত যখন এটা পড়ার প্রতি কোন বাধ্যবাধকতা ছিলনা। কিন্তু এটা এখন পড়তে বিরক্ত লাগে, না চাইলেও পড়তে হয়, ধরাবাঁধা নিয়মে পড়েছি বলে হয়তো!