নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

শিক্ষক, সাংবাদিক ও সাহিত্যিক। ফেসবুকে যুক্ত হোনঃ www.facebook.com/dev.d.nipun

...নিপুণ কথন...

সময়ের সাথে দৌঁড়ে পারিনা, জীবনের দৌঁড়েও পিছিয়ে আমি!খুঁজে ফিরি আপন মানুষ, মাঝে মাঝে হই বেহুঁশ...হৃদয়ে অবিরাম স্বপ্ন গাঁথন, বলব আজ নিপুণ-কথন।

...নিপুণ কথন... › বিস্তারিত পোস্টঃ

বর্তমান ফরিদপুরের সাহিত্য ও সংস্কৃতি অঙ্গন এবং একজন কবি বাবু ফরিদী।

১৫ ই জুলাই, ২০১৮ রাত ৮:০৫

ফরিদপুরের সাহিত্য ও সংস্কৃতি অঙ্গন বরাবরই আমার সাথে বিমাতাসুলভ আচরণ করে আসছে। এখন তাই আর খুব বেশি কষ্ট পাই না। এখানে একজন কলেজ ছাত্রর কিংবা মেকানিকের এনজিও কর্মী অথবা বেকারদের যে মূল্যায়ন আছে, আমার সেটাও নেই। কবি বাবু ফরিদীর ছেলে আমি, তাঁরও কোনো অবদান আছে বলে মনে হয় না এই অঙ্গনে। অথচ, মায়ের মুখে শুনি কীভাবে চাকরির বাইরে নিজের ব্যাক্তিগত কষ্টের সময়গুলো সংসারে না দিয়ে সাহিত্যাঙ্গনে দিয়ে বেড়িয়েছেন তিনি! প্রায় সব সাহিত্য সংগঠনের অন্যতম সংগঠক অত্যন্ত জনপ্রিয় প্রতিভাবান মানুষ অকালপ্রয়াত বাবু ফরিদী শুধুমাত্র কোনো বিশেষ দলের রাজনীতি না করার কারণে এবং অসাম্প্রপদায়িক হওয়ার কারণে আজ কোনো ধরণের মূল্যায়ন পান না ফরিদপুরে।
.
ঐ কোর্ট চত্বরে শিল্পকলায় খেলাঘর শিশু একাডেমিতে এবং রাজপথে খোলা আকাশের নিচে কতো অনুষ্ঠান করেছি ছোটবেলায়! মাত্র ৫ বছর বয়সে ফুলকির হয়ে মঞ্চে উঠেছি, নাটক গান আবৃত্তি করেছি। ৭ বছর বয়সে প্রথম পত্রিকায় লেখা ছাপা হয়। তারপর জিলা স্কুলে ভর্তি হওয়ার পর পুরোদমে ডুবে গেলাম পড়ালেখায়। কারণ বাবার কড়া নির্দেশ, আগে নিচের চেয়ারটা পাকা করো। তারপর এমনিতেই সব পাবে, ভালো করলে মূল্যায়ন করবে মানুষ। নটরডেম কলেজে পড়াকালীন নিয়মিত লেখা শুরু বিভিন্ন ম্যাগাজিনে, তারপর ঢাবিতে পড়াকালীন শুরু এবং টানা ৭ বছর জাতীয় দৈনিকে লেখা ও সাংবাদিকতা। এরপর সেটা ছেড়ে জীবনের প্রথম বিসিএস দিয়ে ক্যাডার সার্ভিস। এরপরেও আজ মূল্যায়ন পাই না। বাবা, আমি আর কবে মূল্যায়ন পাবো? তোমার কাছের মানুষগুলোই কিন্তু ক্ষমতায়, এসে দেখে যাও!
.
আমাকে কোনো অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণপত্র দেওয়া হয় না, নিতান্তই চিঠি লেখার সময় সামনে পড়ে না গেলে। ফোন করে বলার প্র‍য়োজন কেউ অনুভব করেন না। ফেসবুকে দয়া করে পরশু প্রিয় জাহিদ ভাই জানালেন, কাল সন্ধ্যা ৭টায় শিল্পকলায় জাতীয় রবীন্দ্রসঙ্গীত সম্মিলন পরিষদের বর্ষামঙ্গল। আমি বিশ্বকাপের তৃতীয় স্থান নির্ধারনী না দেখে অসুস্থ মাকে রেখে গেলাম ৭ঃ১০ মিনিটে। গিয়ে দেখি অনুষ্ঠান শুরুর প্রস্তুতি চলছে। দর্শক সাকুল্যে ১০-১২ জন, যা পরে ৩০ জনের মতো হলো। অনুষ্ঠান শুরু হলো প্রদীপ জ্বালিয়ে, আমি দর্শক সারিতে বসা। বক্তব্য প্রদান চললো, আমি তখনো একা বসে। কেউ যেন আমাকে চেনে না, যেন আমি এক অনাহুত। যেন ওখানে দুই লাইন বলার যোগ্যতাও আমার নাই। রবীন্দ্রনাথ, আমি এক অযোগ্য সাধক তোমার, আমায় ক্ষমা করো। প্রায় ঘন্টাখানেক থাকলাম, জাহিদ ভাই কুশল মামা আর অমল মামা ছাড়া আর কাউকেই দেখে মনে হলো না তারা আমাকে চেনেন। ওহ, রুকসুর নবনির্বাচিত ভিপি মিথুন দাদাও একবারটি এসে হাত মিলিয়েছেন। তাকেও ধন্যবাদ।
.
সাহিত্য ও সংস্কৃতি উন্নয়ন সংস্থায় গেলে সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ফয়েজ কাকু যেন আমাকে দুই চোখেই দেখতে পারেন না। দেখেলেই তেলে বেগুনে জ্বলে উঠেন! আমার অপরাধ বাবা মারা যাওয়ার পর প্রাপ্ত কাগজের ভিত্তিতে আমি বাবার মুক্তিযোদ্ধা পরিচয়ের জন্য আবেদন করেছি, কিন্তু কাউকে খুশি করতে পারিনি বলে ফরিদপুর থেকে তাকে গ তালিকায় ফেলে পাঠানো হয়েছে। ফয়েজ কাকুকে ধন্যবাদ। কুশল মামা খোকন কাকার মাঝে বাবার অবর্তমানে কাকুদের স্নেহ পেতাম, সেটাও আজকাল কোনো এক অদৃশ্য শক্তির বারণে হারিয়ে ফেলছি। এই খোকন কাকা আর মুক্তা আন্টির প্রেম নিয়ে আমার বাবার একটা উপন্যাস আছে। কতটা আপন ভাবলে কেউ কাউকে নিয়ে লেখে? তাঁদের এনজিও রাসিনের লোগোটাও বাবু ফরিদীর করা বলে জেনেছি। অথচ, আমিতো বাবাকে নিয়ে আপনাদের একটা লেখাও পেলাম না অনেক চেয়েও!
.
আপনাদের সন্তানতুল্য ছেলেটা, আপনাদের দীর্ঘদিনের সঙ্গী বড় ভাইটির মৃত্যুর পর তার বিধবা মাকে নিয়ে একা সংগ্রাম করে একদম সাগরের তলা থেকে উপরে উঠে এসেছে, প্রয়োজনের সময় পাশে না পেলেও আপনাদের কাছে আবার ফিরে এসেছে, আপনারা তাকে এখনও আপন ভাবতে পারেন না। সংস্থার সদস্য পদটাও সে অনেক চেয়ে পায় না। সে আসলে খুব ভুল করে আবেগী হয়ে নিজের জন্মভূমিতে একটু সবাইকে নিয়ে ভালোভাবে বাঁচার অধিকার চায়, যা আপনাদের মতো অনেকেই তাকে দিচ্ছেন না। তাকে বিনা কারণে নিজ এলাকা থেকে সরিয়ে দিলেও আপনারা নীরব থাকলেন। তার দোষ সে সততা নিয়ে চলে, অন্যায়ের সাথে আপস করতে জানেনা আর উচিত কথা বলে। সুতরাং সে একটা 'বেয়াদব'। সে ক্ষমতার থেকে দূরে নিরিবিলিতে থাকতে চায়, পা চাটতে জানে না। এটাও তার একটা অযোগ্যতা।
.
আজ থেকে বাবু ফরিদীর ছেলে দেবু আর আপনাদেরকে গিয়ে গিয়ে জ্বালাবে না, বিরক্ত করবে না, ব্যানারের ভুল ধরবে না, আয়োজনকে আরও সুন্দর করার জন্য কথা বলবে না। দেবু আপনাদের স্নেহ পাবার কিংবা আপনাদের সাথে সাহিত্য চর্চা করার পাশাপাশি বসার যোগ্য না। আপনারা সবাই ভালো থাকবেন। তবে মন থেকে চাই ফরিদপুরে শিল্প সাহিত্যের এই দৈন্যদশা কাটুক, বেশি বেশি অনুষ্ঠান হোক আর দর্শকে ভরে উঠুক অডিটেরিয়াম, আবার ঠিক সেই বাবু ফরিদীদের সময়ের মতো। তারা রাজনীতি না করলেও অনুষ্ঠানে লোকের অভাব হতে দেখিনি। অনেক ধন্যবাদ ও শুভকামনা।
.
[আমিতো এমনিতেই বেয়াদব, আমাকে কেউ নাকি ভালো বলে না। তাই চুপ থেকে কী লাভ? চাপের কাছে আর কতো নতিস্বীকার? চুপ থাকলেও আমি বেয়াদব, তাই আজ নাহয় বলে কয়েই বেয়াদব হই। ]

লেখাঃ দেব দুলাল গুহ (দেবু ফরিদী)

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৬ ই জুলাই, ২০১৮ সকাল ১০:৪৩

রাজীব নুর বলেছেন: ফরিদপুরের নির্বাচনের খবর কিছু বলুন।

১৭ ই জুলাই, ২০১৮ রাত ২:১৩

...নিপুণ কথন... বলেছেন: বললে চাকরি থাকবে না।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.