নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সময়ের সাথে দৌঁড়ে পারিনা, জীবনের দৌঁড়েও পিছিয়ে আমি!খুঁজে ফিরি আপন মানুষ, মাঝে মাঝে হই বেহুঁশ...হৃদয়ে অবিরাম স্বপ্ন গাঁথন, বলব আজ নিপুণ-কথন।
ভোট দিতে ফরিদপুর কেন যাবো? আমার ভোটের মূল্য আছে কতটা? কী এমন পালটিয়ে ফেলতে পারবো আমি ভোট দিয়ে? গত ১০ বছর আমার ও আমার মায়ের ওপর যে অত্যাচার হয়েছে এবং এখনও হচ্ছে, তার সমাধান কে করবে? মন্ত্রী মহোদয়ের আশপাশেই তারা বসে থাকেন! তাঁর সাথে কথাও বলতে দেয় না।
আমার বাবা কবি বাবু ফরিদী একজন মুক্তিযোদ্ধা, কবি, সাবেক সরকারি কর্মকর্তা ও অ্যাডভোকেট। তাঁর মতো আমিও সারা জীবন মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পক্ষে এবং অন্যায়ের বিরুদ্ধে লেখালেখি করেছি। ব্লগে লিখেছি, ফেসবুকে লিখেছি। হুমকি পেয়েছি, তবুও দমে যাইনি। কুখ্যাত রাজাকারের ফাঁসির পর তাকে ফরিদপুর নিয়ে দাফন করতে গাড়িতে নেওয়া হলো, আমি প্রতিবাদ করে লিখলাম, 'অমুকের ঠিকানা আমার ফরিদপুরের মাটি হবে না'। লাভ কি হলো? দেশের সর্বোচ্চ প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে ডিগ্রি নিয়ে সর্বোচ্চ পর্যায়ে চাকরিতে এসেই বা কি লাভ হলো? কোথাও একফোটা শান্তি পাই না।
আমার বসতভিটা অংশবিশেষ বেদখল হয়ে আছে। মাকে প্রায় পাগল বানিয়ে ফেলা হয়েছে অত্যাচার করে করে। আমাকেও পাগল বানানোর জোগাড়, হয়ে আছি অনেকটা একঘরে। আমাকে ট্রেনিঙ্গয়ে পাঠিয়ে অত্যাচার করা হলো। তারপর কোনো কারণ দর্শানো ছাড়াই বদলি করা হয়েছে বাড়ির পাশের বড় কলেজ থেকে পাশের জেলার অপেক্ষাকৃত ছোট কলেজে। অন্য অনেকে টানা ১০-১৫-২১ বছর ধরে একই কলেজে পোস্টিং নিয়ে বসে আছে বেআইনিভাবে, ক্লাস বাদ দিয়ে পড়াচ্ছে ব্যাচ, করছে ব্যবসা, অথচ আমি শুধু বেতনের কয়টা টাকায় চলা মানুষ, একটা বছরও থাকতে পারলাম না। আমার দোষ আমি প্রাইভেট পড়াইনি, আমি নকল করতে দেইনি, আমি অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছি, আমি সর্বোচ্চ জনপ্রিয়তা পেয়েছি। এরপর আমার বেতন আটকে দেওয়া হলো কারণ ছাড়াই। সেটা পেলাম প্রতিবাদ চালু রেখে, শুভাকাঙ্খিদের কাজে লাগিয়ে। এরপর আমার ওপর হলো হত্যাচেষ্টায় হামলা। সেটা নিয়ে আমার অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা হলো, তদন্তে আসামীদের দোষ পাওয়া যাওয়ায় তাদের ওপর সমন জারি করলো আদালত, এরপর শুরু হলো নতুন করে হুমকি ধামকি। পথেঘাটে বাধা দেয়, চাকরিতে যেতে বাসা থেকে বের হই, আসে বাধা!
মায়ের শরীরটা খারাপ। তাকে দেখার কেউ নাই। উন্নত চিকিতসার জন্য তাকে ভারতে নেওয়া দরকার, পারছি না। একটা চোখে অপারেশন করিয়েছি , আরেকটা করাবো বলে একার এতো ব্যস্ততার মাঝেও বহিঃবাংলাদেশ ছুটি আর মায়ের মেডিক্যাল ভিসার সব কাগজ একা হাতে রেডি করে নিয়ে গেলাম। আসার পথে বাস অ্যাক্সিডেন্ট করেও অল্পের জন্য বেঁচে গেলাম। এসেই ফুড পয়েজনিং হলো। বিছানায় পড়ে রইলাম। এতোকিছুর পরেও, এমনকি নির্বাচন অফিসের প্রত্যয়নপত্র জোগাড় করার মতো প্রায় অসঅম্ভব কাজ সম্ভব করেও কলেজের অবকাশকালীন ছুটিতে বহিঃবাংলাদেশ ছুটি পেলাম ন! মেডিক্যাল ভিসা একা একা করে হাতে পেলেও আমার নিজেদের লোকেরা, আমার মাউশি আমাকে ছুটি দিলো না! কেন পাচ্ছি না অর্ডার, জানতে মাউশিতে গেলে পরিচালক ফরিদপুরের প্রবীর ভট্টাচার্য স্যার উলটো জানালেন, আমাকে নাকি আরও দূরে বদলিই শুধু না চাকরি থেকে বরখাস্ত করার পরিকল্পনা তাদের! আমার দোষটা জানা গেলো না। তবে আজকাল নির্দোষ লোককে দোষী বানানো খুব একটা কঠিন কাজ না। ক্ষমতায় থাকলে নাকি সব সম্ভব! অপেক্ষায় আছি, নতুন কী করেন তিনি ও তাঁর মরহুম সাবেক ডিজি স্যার আমার, ফরিদপুরের কিছু ক্ষমতাবান লোক ও শিক্ষকদের সাথে নিয়ে, সেটা দেখার।
সুতরাং, ভোট দিয়ে কি হবে? যেই জিতুক, এরাই ক্ষমতায় থাকবে আর আমার মতো বাপমরা যোগ্য ছেলেকে নাকে দড়ি দিয়ে ঘুরাবে। কিছুই পরিবর্তন আসবে না। মাননীয়ার কান পর্যন্ত এসব কথা যাবে না। যুদ্ধাপরাধীদেরকে ভোট দিতে পারবো না। 'না' ভোট দেওয়ার সুযোগটাও নাই। তাই, এবার আমি ভোট দেওয়া থেকেই বিরত থাকবো বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। নগণ্য এক মানুষ আমি, আজ বাদে কাল মেরেই তো ফেলবে, কি দরকার শুধু শুধু ভোট দিয়ে আরেক দফা লাঞ্ছিত হওয়া?
মা আজ কয়েক দফা ফোন দিয়েছে আর আমি কেটে দিয়েছি। এতে তাঁর দুশ্চিন্তা আরও বেড়েছে। বাড়ুক। বলুক, 'তাড়াতাড়ি বাড়ি আয়, আমার একা থাকতে কষ্ট হয়', আমি ফিরবো না। বাড়ি ফিরে কি হবে? যেখানে এক ফোটা শান্তি নেই, মাকে এই বৃদ্ধ বয়সে একটু সুখ দিতে পারি না, কুত্তার বাচ্চাগুলাকে মারতে পারি না রাস্তায় ফেলে, কারণ আমি সরকারি চাকরি করি, সেখানে গিয়ে ভোট দিয়েই বা কী লাভ?
২| ২৬ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:০৮
বাংলার মেলা বলেছেন: যাদের ভোট দিয়ে ক্ষমতায় আনলেন, তারাই আপনার মায়ের এই অবস্থা করেছে। রাজাকারের দাফনও তো দেশের মাটিতেই দিতে হল। এখন আর কেঁদে কি হবে? যে পাপ করেছেন, তার প্রায়শ্চিত্ত করুন।
©somewhere in net ltd.
১| ২৬ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ সকাল ৯:১১
রাজীব নুর বলেছেন: দুঃখজনক।