নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

শিক্ষক, সাংবাদিক ও সাহিত্যিক। ফেসবুকে যুক্ত হোনঃ www.facebook.com/dev.d.nipun

...নিপুণ কথন...

সময়ের সাথে দৌঁড়ে পারিনা, জীবনের দৌঁড়েও পিছিয়ে আমি!খুঁজে ফিরি আপন মানুষ, মাঝে মাঝে হই বেহুঁশ...হৃদয়ে অবিরাম স্বপ্ন গাঁথন, বলব আজ নিপুণ-কথন।

...নিপুণ কথন... › বিস্তারিত পোস্টঃ

এ ট্রিপ টু আগারগাও!

১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ১:৫৬

বাসের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে আছি আজীমপুরে, বাসের দেখা নাই। প্রায় আধ ঘন্টা পর এলো বাস, যাবো আগারগাও। ইশারা দিলেও বাস প্রথমে থামলো না। সেফটি দ্রুতির হেলপার হাত বাড়িয়ে ডাক দিচ্ছে, কিন্তু ড্রাইভার থামায় না। অনেকটা পুরাতন প্রেমের মতো, কাছেও টেনে নেয় না, আবার ছেড়েও চলে যায় না। যাহোক, একটু দূরে বাস থামলো। পাঞ্জাবি কোটি পরিহিত আমাকে ড্রাইভার একদম পাত্তা দিলো না। আমাকে তাই কিছু দৌঁড়ে গিয়ে আসে উঠতে হলো। উঠে দেখি বাস ফাঁকা। তবুও ড্রাইবার টেনেই যাচ্ছে, টেনেই যাচ্ছে! ব্যাপার কি? ঢাকা শহরের বাসগুলো এতো ভালো হয়ে গেলো নাকি?
.
হেলপার সিগন্যাল দেয়, কিন্তু ড্রাইভার থামায় না। পথের যাত্রীরা আশাহত হয়, আর হেলপার রাগ হয় ড্রাইভারের প্রতি। খালি বলে, 'ঐ মিয়া, আপনে থামান না ক্যান? এতো তাড়া কিসের?' ড্রাইভার কিছু বলে না। আমি ভাবলাম, বেচারার বড়টা পেলো নাকি? নীলক্ষেতের মোরে গিয়ে সিগন্যালে থামতেই হলো। তখন সব যাত্রী হুরমুর করে উঠে পড়লো। যেন সবাই ওখানে গিয়েই বাসের অপেক্ষায় থাকে। যাহোক, সেখান থেকে বাস হলো লোকাল। থামাতে থামাতে নিতে থাকলো। সিট ফিল আপ, তবুও যাত্রী তুলছে। পুরাতন যাত্রীদের গালির তোয়াক্কা করছে না ড্রাইভার। সিট খালি নাই, তবুও বোরকা পরিহিত প্রায় ৭-৮ জনকে তুলতে গেলো হেলপার। ওদিকে ড্রাইভার ভাব ধরলো তোলার কি দরকার? দিলো টান। এক বেচারি ওঠার আগেই বাসের টানে রাস্তায় পড়ে দুইটা গড়াগড়ি খেলো। ভাগ্যিস বাস থামিয়েছিলো আমাদের চিৎকারে। আমি বসে গেটের পাশের জানালার পাশের সিটেই। বেচারি উঠে দাঁড়ালো। রাগ হলো না কাঁদলো না গালি দিলো, বোঝা গেলো না নেকাবের কল্যাণে।
.
ড্রাইভার ভাইটিও মুখে ঢেকেছে। মাস্ক পরেছে, যেন ধোয়া নাকে না যায় এমন ভাব। আসল কারণটা পরে বলি। ততক্ষণে যাত্রী আর ড্রাইভারের তোপের মুখে ধানমন্ডি ৩২ এ সিগন্যালে বাস থামতেই দুই সুন্দরী এসে হাজির। কিছুতেই যাত্রী তুলবে না, কারণ ভেতরে প্রায় ৫-৬ জন মহিলা ইতিমধ্যেই দাঁড়িয়ে। তবুও লাল জামা পরিহিত লাল লিপ্সটিকের মেয়েটা খুব ন্যাকামি মিশ্রিত কণ্ঠে বলতে লাগলো, 'মামা, খুলেন না, প্লিইইইইইজ... নিয়ে যান আমাদের!' অনেকটা 'পদ্মা নদীর মাঝি'র কপিলা স্টাইলেই। ব্যাস, ড্রাইভার হেল্পারের মন গলে ঘি! ড্রাইভার বললে, 'যা, নিয়েই যখন নিছিস, তুলে নে এদেরকেও!'
.
বাস টেনেই চলেছে, টেনেই চলেছে। ব্যাপারখানা কি? আমাকে দেখে আবার ঘাবড়ে গেলো নাতো? আমি তো কোট পরা নই, সুটেড বুটেড নই! আর কাউকে খুঁজে পেলাম না যে তাকে দেখে ভয়ে একটু জলদি টানবে। তাহলে? এরই মধ্যে বিট টপকাতে গিয়ে গাড়ির ইঞ্জিন অফ হয়ে গেলো। কয়েকবারের চেষ্টায় সেটা চালু করা গেলো। বারবার এই অবস্থা। সংসদ ভবনের সামনে গিয়ে আবার অফ। পাশের যাত্রী বললেন, 'দেখেন ভাই, ফিটনেস ছাড়া গাড়ি নামাইছে। এতো বড় আন্দলোন হইলো, কি হইলো? সব আগের মতোই! ফিটনেসহীন গাড়ি রাস্তায়।' এই ভাই খুব শিক্ষিত না। কারণ তার হাতে একটা জামার বান্ডিল। দোকান-টোকান আছে বা তার কর্মচারী গোছের৷ এবার বুঝলাম আসল রহস্য। ট্রাফিক সপ্তাহ চলে। বাসের ফিটনেস নাই, ধরতে পারলে জরিমানা হবে। তাই এমন টান দিয়ে চলছে গাড়ি, আর দরজা বন্ধ!
.
এবার আসল মজাটা পেলাম। যে মেয়েটা খুব অনুনয় করে, খাতির করে কপিলা স্টাইলে বাসে উঠলো, তাকে একটু পিছে গিয়ে সিটে বসতে বলাতেই সে তেলে-বেগুনে জ্বলে হেলপারকে জ্ঞান দিলো, 'আরে এতো ভিত্রে যামু ক্যান? সামনে সিট নাই তো উঠাইছো ক্যান?!' পাশের যাত্রী ভাইজান বললেন, 'দেখছেন ভাই? এজন্যই কয় মেয়ে মানুষ হইলো ছলনাময়ী। ছলে বলে কৌশলে বাসে উঠলো, উঠে এখন আবার চোটপাট দেখায়!' আমি বললাম, 'এ আর নতুন কি? প্রাচীনকালে মুনি-ঋষিরা না খেয়ে বছরের পর বছর ধ্যান করেছেন নির্মোহ থেকে, অথচ সামান্য নারী নর্তকী অপ্সরাদের নৃত্য না দেখে ধ্যান রক্ষা করতে পারেন নাই। নারীরা চাইলে সব পারে। বুঝলেন?'

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ভোর ৫:৫২

মাহমুদুর রহমান বলেছেন: কুকুরের লেজ বারোমাস বাকাই থাকে।

২| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ সকাল ৮:৩৫

রাফা বলেছেন: আমিতো মনে করছিলাম যাক নতুন কোন গল্পের প্লট মনে হয় মিলেই গেলো ।এখন দেখি সেই পুরোনো ভানুমতির খেল।এই ড্রাইভারকে রাস্তায় নামিয়ে গুলি করে মারা উচিত।কত মানুষের জিবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলেই চলেছে এরা।এই বাসের যাত্রিরা যে কত অসচেতন তা পরিস্কার বোধগম্য হলো।এবং আপনিও সেই একই পথের নিপুন পথিক।

সময়ের চাইতে জিবনের মুল্য অধিক ইহা আমাদের কবে যে উপলব্দিতে আসিবে আল্লাহই জানে।

৩| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ বিকাল ৩:০৩

রাজীব নুর বলেছেন:

৪| ২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ বিকাল ৩:৩৯

বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: যারা নিয়মিত আজিমপুর থেকে মিরপুর রুটে বাসে করে যাতায়াত করেন, তাদের গল্পের ঝুড়ি এতোই সমৃদ্ধ যে, লিখতে গেলে একটি হাজার পাতার ট্রিলজি'তেও সংকুলান হবে না। বঙ্গরঙ্গের বিচিত্র সব চরিত্রের দেখা মিলে সেই যাত্রায়।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.