নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

শিক্ষক, সাংবাদিক ও সাহিত্যিক। ফেসবুকে যুক্ত হোনঃ www.facebook.com/dev.d.nipun

...নিপুণ কথন...

সময়ের সাথে দৌঁড়ে পারিনা, জীবনের দৌঁড়েও পিছিয়ে আমি!খুঁজে ফিরি আপন মানুষ, মাঝে মাঝে হই বেহুঁশ...হৃদয়ে অবিরাম স্বপ্ন গাঁথন, বলব আজ নিপুণ-কথন।

...নিপুণ কথন... › বিস্তারিত পোস্টঃ

এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের জন্য ❤

৩১ শে মার্চ, ২০১৯ রাত ১০:৩৪

আমার সবচেয়ে প্রিয় ব্যাচটির আগামীকাল থেকে এইচএসসি পরীক্ষা। অনেক অনেকদিন ওদের কারো সাথে দেখা নাই, কথা নাই। কে কতটা ভালো প্রস্তুতি নিতে পেরেছে তাও জানি না। চাইলেও ওরা আমার সাথে যোগাযোগ করতে পারে না। কিন্তু ওদের জন্য আমার খুব চিন্তা হয়।

যতদিন ফরিদপুরে ছিলাম, ওরা আমাকে খুব শ্রদ্ধা করতো, ভালোবাসতো। অন্য শাখা থেকে এসে আমার ক্লাসে বসে থাকতো। বিজ্ঞানের প্রতি, সমসাময়িক বিষয়ের প্রতি কৌতূহল এবং সর্বোপরি জানার আগ্রহ আমাকে আনন্দ দিতো। ক্লাস শেষে নিজের বিভাগে গেলে ওরাও পিছে পিছে আসতো, ফিজিক্স বুঝতে চাইতো। বড় স্যারেরা যখন প্র‍্যাক্টিকাল খাতা সাইন করতে পাঁচবার ঘুরাতো, ওরা তখন এই ছোট স্যারের কাছে নির্ভয়ে আসতো এবং অন্যদের যা বলতে ভয় পেতো সেসব বিষয়ও নির্ভয়ে বলতো।

বন্ধুর মতো আমি ওদের সাথে মিশতাম, ওদের কথা শুনতাম। ব্যাচ না পড়িয়েও ক্লাসে আর বিভাগে অতিরিক্ত সময় দিয়ে এমনকি ফেসবুকেও ফিজিক্সের আর আইসিটির সমাধান দিতাম। সেই আমাকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে ওদের থেকে অনেক দূরে। সরকারি চাকরিতে বদলিটা স্বাভাবিক ব্যাপার। কেউ ২০ বছরের উপরে একই কর্মস্থলে একই কলেজে চাকরি করে, আবার কেউ ১ বছরও টিকে থাকতে পারে না নীতি নিয়ে সৎপথে চলতে গিয়ে, অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে গিয়ে।

কিন্তু এই ব্যাচটার সাথে আমার অনেক আবেগ জড়িয়ে আছে। সারাটা জীবন এদেরকে আমি স্নেহের জায়গাটায় সবার আগে এগিয়ে রাখবো।

খুব মনে হচ্ছে প্রিয় স্টুডেন্টদের কথা। ওদের কাছে এখন আর আমি প্রিয় স্যার আছি কিনা জানি না। অনেককেই দেখলাম ব্যাচ আর কোচিং করানো স্যারদের শেষ ক্লাসে স্যারের সাথে সেলফি তুলে প্রশংসাসূচক পোস্ট দিচ্ছে। তাদের হাতে প্র‍্যাক্টিকালের মার্ক। আমার হাতে কিছু নেই। তাছাড়া 'আউট অফ সাইট, আউট অফ মাইন্ড' বলে একটা কথা আছে এবং এটা সত্যি। এটাও সত্যি যে, দুই-তিনজন ছাড়া আর কেউ ফোন করে বা ম্যাসেজ দিয়ে দোয়া চায়নি। কিন্তু আমি ওদের জন্য দূর থেকেই প্রাণভরে আশীর্বাদ করি এবং সবসময় ওদের ভালো চাই। আমি চাই ওরা ভালো করুক এবং সর্বোপরি একজন ভালো মানুষ হিসেবে গড়ে উঠুক।

❤ ওদের জন্য পরীক্ষার আগের রাতে আমার এই কয়েকটি ছোট্ট উপদেশঃ

আজ একটু আগে ঘুমিয়ে পড়াই ভালো। বেশি রাত জাগলে কাল পরীক্ষা হলে ঝিমুনি আসবে। ফলে পরীক্ষা খারাপ হবে।

যা প্রস্তুতি নেওয়ার, নিয়েছো। এখন এই ২ ঘন্টা শুধু রিভিশন দাও। নতুন কিছু পড়বে না। তাহলে সব এলোমেলো হয়ে যেতে পারে।

আজ হয়তো মনে হতে পারে কিছুই পড়া হয় নাই, কিছুই মনে নাই। কিন্তু ভালোভাবে পড়ে থাকলে দেখবে পরীক্ষার হলে ঠিকই মনে পড়বে। তাই দুশ্চিন্তামুক্ত হয়ে ঘুমাও।

প্রশ্ন আউট হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। তাই ওসব মাথায় আনবে না। কেউ প্রলোভন দেখালে আমাকে ইনবক্সে জানাবে প্রমাণসহ।

পেট ভরে খাবে আজ রাতে। সকালে উঠে হয়তো দুশ্চিন্তায় খেতে ইচ্ছা করবে না। পেট খালি থাকলে মাথা খুলবে না। শূণ্য শূণ্য লাগবে হলে গিয়ে। মাথা ঘুরে পড়েও যেতে পারো লিখতে লিখতে।

আজ রাতে মোবাইলে অ্যালার্ম দিয়ে ঘুমাও। মাথা থেকে সব চিন্তা ঝেরে ফেলে ঘুমাও। বাসায় থাকলে বাবা-মা বা ভাইবোনকে বলে রাখো কয়টায় ডেকে দিতে হবে।

যেহেতু আজ ঝড় হয়ে গেলো, তাই কালকেও হয় কিনা ঠিক নাই। যদি দেখো সকালেই আকাশ কালো, বা মেঘ আছে, দুটি মোমবাতি আর ম্যাচ সাথে নিয়ে যেতে পারো। পরীক্ষার সময় বিদ্যুৎ চলে গেলে হলে কাজে লাগতে পারে।

পরীক্ষার ঘন্টাখানেক আগে কেন্দ্রে পৌঁছানোর জন্য যতটা আগে বের হওয়া দরকার, রাস্তার দূরত্ব ও জ্যামের কথা মাথায় রেখে ততটা আগে বের হবে বাসা থেকে।

মোবাইল নিয়ে হলে প্রবেশ করা যাবে না। সাথে মোবাইল পেলে বহিষ্কার হয়ে যেতে পারো।

ট্রান্সপ্যারেন্ট ফাইল ব্যাগে করে দরকারি প্রবেশপত্রসহ কলম পেন্সিল স্কেল ইত্যাদি নেবে। পানির বোতল সাথে নিলে ভালো হয়। তাহলে হলে আর বারবার পানি খেতে উঠে গিয়ে সময় নষ্ট করতে হবে না।

পর্যাপ্ত পরিমাণে চালু কলম সাথে নিয়ে যাবা। না লাগলেও সাথে থাক। একটা সমস্যা করলে যাতে আরেকটা দিয়ে লেখা যায়। অবশ্যই বল পয়েন্ট কলম নিবা। আর '১ নং প্রশ্নের উত্তর' লেখার জন্য নীল কালি ব্যবহার করে নিচে কালো মার্কার পেন দিয়ে দাগ দিতে পারো। এতে করে খাতা দেখার সময় পরীক্ষকের সুবিধা হবে। তাঁর হাতেই তোমার ভবিষ্যত, তাই তাঁকে একটু গোছানো খাতা উপহার দেওয়াটাই ভালো।

শুরুতেই খাতার উপরের ওএমআর ফর্ম যথেষ্ট সময় নিয়ে বারবার দেখে প্রবেশপত্রের সাথে মিলিয়ে পূরণ করবে। ভুল করা যাবে না। খাতা ভরে খুব সুন্দর উত্তর করলেও যদি রোল নাম্বার ভুল পূরণ করে আসো, তাহলে সবকিছুই বৃথা।

পরীক্ষার হলে প্রশ্ন যেগুলো অল্প লেখায় বেশি মার্ক, সেগুলো আগে উত্তর করা ভালো। তারপর বৃহৎ উত্তরগুলো করবে। কমনগুলো আগে উত্তর করবে। আনকমনগুলো পরে। তবে কোনো প্রশ্নের উত্তর না লিখে ফাঁকা রেখে আসবে না। যতটা পারো লিখে আসবে। হাতের লেখা সুন্দর হওয়া ভালো, তবে নাহলেও মন খারাপ করবে না।

প্রশ্ন অনুপাতে কোনটায় কত মার্ক সে হিসেবে উত্তর লেখার জন্য সময় ভাগ করে নেবে। ঐকিক নিয়ম খাটিয়ে দেখবে কত মার্কের জন্য কতটুকু সময় তুমি পাচ্ছো। অবশ্যই শেষের দিকে খাতা রিভাইজ দেওয়ার জন্য ১০-১৫ মিনিট হাতে রেখে হিসাব করবে।

অন্যের থেকে শুনে শুনে লেখার চেয়ে নিজের ওপর বিশ্বাস রেখে লেখাই ভালো। অন্যেরটা ভুল হতে পারে বা কেউ ভুলটাও বলে দিতে পারে। সেই সময়ে কলম থামিয়ে না রেখে লিখে যাও। যেটা পারছো না, সেটা নিয়ে বেশি সময় নষ্ট না করে পরেরটায় চলে যাও। হয়তো একটার উত্তর মনে করতে গিয়ে দেখা গেলো পরে আর জানা প্রশ্নটির উত্তর করার সময়টাই হাতে নেই! এমনটা যেন না হয়।

স্যারদেরকে সম্মান করবে। স্যার খাতায় সাইন করতে আসলে উঠে দাঁড়িয়ে খাতা ও অ্যাডমিট কার্ড এগিয়ে দেবে। স্যার বসতে বললে বসবে। আদাব-সালাম দেওয়াটা ভদ্রতা। মনে রাখবা, শিক্ষাগুরুকে সম্মান করা প্রতিটি শিক্ষার্থীর কর্তব্য। যদি সে অসাধুও হয়, তবুও পরীক্ষার হলে তাঁকে সর্বোচ্চ সম্মান দেখাবে। দেখাদেখি করতে গিয়ে নিজের বিপদ ডেকে না আনাই ভালো।

একটা পরীক্ষা হয়ে গেলে উত্তর না মেলানোই ভালো। যা হবার হয়ে গেছে। আড্ডাবাজি না করে পরেরটার জন্য একটু রেস্ট নিয়ে পড়া শুরু করো। আগেরটা নিয়ে ভাবতে গেলে মন খারাপ হয়ে যেতে পারে, যার প্রভাব পরেরটার উপর পড়লে সেটাও খারাপ হবে।

সর্বোপরি, টেনশন ফ্রি হয়ে পরীক্ষা দাও। এতোদিন যা পড়েছো, তাকে খাতায় লিখে আসার সময় এখন। ভেবে বা দুশ্চিন্তা করে কোনো লাভ নেই।

তোমাদের সর্বাঙ্গীন মঙ্গল কামনা করি।
ভালোবাসা ও স্নেহাশীষ নিও।

লেখাঃ দেব দুলাল গুহ।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ৩১ শে মার্চ, ২০১৯ রাত ১০:৪১

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
শুভ কামনা।
ভালো থাকুন সব সময়।

২| ০১ লা এপ্রিল, ২০১৯ সকাল ৮:০৫

রাজীব নুর বলেছেন: চমৎকার পরামর্শ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.