নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

শিক্ষক, সাংবাদিক ও সাহিত্যিক। ফেসবুকে যুক্ত হোনঃ www.facebook.com/dev.d.nipun

...নিপুণ কথন...

সময়ের সাথে দৌঁড়ে পারিনা, জীবনের দৌঁড়েও পিছিয়ে আমি!খুঁজে ফিরি আপন মানুষ, মাঝে মাঝে হই বেহুঁশ...হৃদয়ে অবিরাম স্বপ্ন গাঁথন, বলব আজ নিপুণ-কথন।

...নিপুণ কথন... › বিস্তারিত পোস্টঃ

সুস্থতার জন্য দোয়া/আশীর্বাদ চাই

১৬ ই জুন, ২০১৯ ভোর ৪:০০

আজ হঠাৎ আমার কী হলো? একটুও ঘুম আসছে না। দম বন্ধ হয়ে আসছে। গলায় খুশখুশে কাশি, সারা শরীর গরম। দুপুরে দুটি আর রাতে একটি প্যারাসিটামল খেয়েও সুস্থবোধ করছি না। সবচেয়ে বড় কথা ঘুমও আসছে না। এমনটা তো হয় না সাধারণত! এটা কি ঠাণ্ডা-গরম লাগার লক্ষণ?
.
সারাটা দিন আজ ঘরে ভেতর থেকেছি। বদ্ধ একটা ঘর। জানালা দরজা খোলা বারণ। একটা মাত্র পাল্লা খোলা, তা দিয়ে যা একটু বাতাস আসে ঘরে। গোটা ঘর মাকড়সার জালে ভর্তি। এমন পরিবেশে সুস্থ মানুষও অসুস্থ হয়ে যাবে। কিন্তু কিছু করার নেই। আপাতত এর চেয়ে ভালো ব্যবস্থা নেই। এতেই তাই সন্তুষ্ট থাকতে হবে আরও কিছুদিন। মায়ের চিকিৎসা সম্পন্ন হওয়ার আগ পর্যন্ত তো বটেই। কপাল আমার, ডাক্তাররাও আর ধর্ণায় বসার সময় পেলো না!
.
বেশিদিন বাকি নেই আর বিদেশ ভ্রমণের। আবার ফিরতে হবে সেই কর্মব্যস্ততায়, বাসস্থানের সেই বৈরী পরিবেশেই। তাই, শরীর অসুস্থ লাগলেও ঘোরাঘুরি একেবারে বন্ধ করা যাচ্ছে না। বহুদিনের পরিচয় এবং ফেসবুক বন্ধুত্ব এখানকার কিছু প্রবীণ সাহিত্যিকের সাথে। তাঁদের ডাক উপেক্ষা করি কোন সাহসে? তাই শরীর সায় না দিলেও সন্ধ্যার দিকে বের হলাম। তারপর বেশ সুন্দর সময় কাটলো ইন্ডিয়ান কফি হাউসে। ইনফিউশানটা ভালো লাগে না আমার। কিন্তু পূর্ব-অভিজ্ঞতা বলে, ঐ সময়টায় আর কিছু পাওয়া যায় না। তাই সেটাই সই।
.
গল্প শেষে এক সহকর্মীকে পেয়ে গেলাম বিদেশের মাটিতেই। তিনি ফোন করে চলে আসলেন। তাঁকে নিয়ে বইয়ের দোকান দে'জে গেলাম। তাকে বিদায় দিয়ে কলেজ স্ট্রিট থেকে উঠে পড়লাম পাবলিক বাসে। দেখি সিট খালি আছে শুধু মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত জায়গায়। খালি থাকলে যে কেউ বসতে পারে, লেডিস আসলে উঠে যাওয়ার নিয়ম। অনেক সিটেই দেখলাম পুরুষ বসে আছে। তাই আমিও গিয়ে এক মহিলার পাশে বসতে গেলাম। কিন্তু তিনি দূরে দাঁড়িয়ে থাকা তাঁর স্বামীকে ডাকতে থাকলেন। অগত্যা দাঁড়িয়েই থেকে তাঁকে বসতে দিলাম। এরপর নজর পড়লো আরেক মাসির দিকে। তাঁর পাশের সিট খালি। বসলাম। ভাবলাম, এতো রাতে আর মনে হয় লেডিস আসবে না। আর উঠতেও হবে না।
.
কিন্তু বিধি বাম। কপালটাই মন্দ আমার। তাই পরের স্টপেজেই এম লেডিস উঠলেন। তিনি সামনের দুটি সিটসহ আরও কয়েকটি সিট পুরুষদের দখলে দেখেও দ্বিতীয় সারিতে বসা আমাকেই টার্গেট করে কাছে এসে স্মরণ করিয়ে দিলেন এটা লেডিস সিট। আমি অসুস্থ মানুষ, অনুরোধ করলাম সামনের দুটি সিটের একটি খালি করে বসতে। তিনি মানলেন না। আমার সিটটাই তার চাই। উলটো আমাকে বললেন না উঠলে আমি যেন সামনের সিটটা ম্যানেজ করে দেই তাকে। বোঝো অবস্থা!
.
আমি উঠে দাঁড়ালাম। কিন্তু মুখটা কালো করলাম দেখে একটু দূরেই দাঁড়িয়ে থাকা তার স্বামী খেঁকিয়ে উঠলেন আমার দিকে, 'কেন শুধু শুধু ঝামেলা পাকাচ্ছেন বলুন তো? ছেড়ে দিন না!' আমি অবাক হলাম, বরাবরই আমি দেশে কিংবা বিদেশে, পাশে মুরুব্বি দাঁড়িয়ে থাকতে দেখলেই উঠে বসতে দেই। আজ নিতান্তই অসুস্থ বলেই বললাম, 'বলছি আমি অসুস্থ, তবুও আমাকেই উঠতে হলো। সামনের দুজন ইয়াং, চ্যাংড়া টাইপের বলে তাদেরকে বললেন না আর আমাকে দেখতে ভদ্র লাগে বলেই জোর খাটালেন? পুরুষদের সিটে যে মহিলারা বসে, তাদেরকে কি কেউ ওঠান?' লোকটা আরও ক্ষেপে গেলেন। যাচ্ছেতাই ব্যবহার করতে শুরু করলেন। সম্ভবত আমার কথার টোনে বুঝে গেছেন আমি বাংলাদেশ থেকে এসেছি।
.
এই সময়ে যাত্রীদের কেউ কেউ আমার পক্ষে ঐ লোকটাকে তুলোধুনো করতে লেগে গেলেন, 'আরেহ মশাই, ছেলেটাকে ভদ্র পেয়ে এভাবে চ্যাঁচাবেন? তার দোষটা কোথায়? সে তো সিট খালি পেলে বসবেই। যেহেতু সে অসুস্থ বলেছে, তাকে একটু বসতে দিন না, আপনি সামনের সিটটা খালি করে বসুন! ব্যাস, ল্যাটা চুকে যায়। তার জায়গায় আমি থাকলে তো আপনি এতো চ্যাঁচাতে পারতেন না..' লোকটাও দমে যাওয়ার পাত্র নয়। সমানে মুখ চালাতে লাগলেন। শেষে আমার পক্ষের একজন বলতে বাধ্য হলেন, 'আসলে সবাইকে বুঝানোর চেষ্টা করা বৃথা। আমারই ভুল হয়েছে'। এরপর নিজের সিট ছেড়ে উঠে আমাকে বসতে দিলেন। কিন্তু আমি বসলাম না। বললাম, 'দাদা, আপনি কেন শুধু শুধু আমার জন্য কষ্ট করবেন? আপনি বসুন। আমি সিট খালি হলেই বসবো।' পিছের থেকে বয়স্ক এক মাসি ডেকে বললেন, 'বাবা তুই আমার পাশে আয়'। ততক্ষণে তাঁর পাশের সিটটা, যেটা নিয়ে গন্ডগোল, খালি করে ঐ মহিলা তার স্বামীর পাশে পুরুষ সিটেই গিয়ে বসেছেন। তবুও বসলাম না আমি, কারণ পরের স্টপেজে আবার লেডিস উঠলে আমাকে আবার একই অবস্থার ভেতর দিয়ে যেতে হবে। তাই দাঁড়িয়েই রইলাম। কেউ কেউ বলতে থাকলেন, 'ছেলেটা অভিমান করেছে'। কেউ বললেন, 'ছেলেটা আসলেই অসুস্থ। দেখো কেমন কাশছে আর ঘামছে!'
.
কয়েক স্টপেজ পরে পাশের সিটটা খালি করে দাদাটা একটু আগেই উঠে পড়লেন। তার পাশের লোকটা হিন্দীতে বললেন, 'আব তো ব্যাঠ জাইয়ে!' হ্যাঁ, এবার বসতে কোনো আপত্তি নেই। বসলাম। ততক্ষণে শরীরটা আরও খারাপ হয়েছে। কিন্তু তাতে কি? যা করেছি ঠিক করেছি।
.
এখন রাত ৩টা। মন্দিরের পাশে বকুল তলায় বসে আছি আমি আর মা। ঘুম আসছে না এখনও। একে অসুস্থ, তারপর বিকেল থেকে তিন কাপ চা আর এক কাপ কফি খাওয়ার ফল নয়তো? এমন চা-কফি তো নতুন নয় আমার জন্য। তবে এই দেশের চা-কফি একটু বেশিই কড়া বটে। এখানে চা কফি কিছুই পাওয়া যাবে না এখন। কোনো দোকান খোলা নেই। রাস্তায় গাড়িও অল্প। তাই এখন আরেক কাপ চা খেয়ে সকাল অবধি এখানে কাটিয়ে দেওয়ার প্ল্যানটাও বাস্তবায়ন করা যাচ্ছে না!
.
মনে পড়ছে বাবার কথা। আজ নাকি বাবা দিবস! বাবার সঙ্গটা খুব মিস করছি। আজ বাবা থাকলে বাবা মা আর আমি, তিনজন মিলে ঘুরতে পারতাম। হয়তো আরও কেউও সাথে থাকতো। কতই না মজা হতো!

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ১৬ ই জুন, ২০১৯ ভোর ৫:৫৮

সজীব শাহরিয়া বলেছেন: ডাক্তার দেখান, এটা ঠান্ডা গরমের ফলে হচ্ছে হয়তো

২| ১৬ ই জুন, ২০১৯ সকাল ৭:১২

রাজীব নুর বলেছেন: জ্বী বাবা দিবস।

৩| ১৬ ই জুন, ২০১৯ সকাল ৭:২২

চাঁদগাজী বলেছেন:

আপনার সুস্হতা কামনা করছি।

আপনার লেখা সব সময় ঝাপসা, কেমন অপ্রয়োজনীয় ঘটনার উপর লেখা

৪| ১৬ ই জুন, ২০১৯ সকাল ১০:১৮

খায়রুল আহসান বলেছেন: শিরোনামটা যদিও স্পষ্ট, পোস্ট পড়ে ঠিক পরিষ্কার হলো না যে এটা কার জন্য দোয়া চাওয়ার পোস্ট, লেখকের নিজের রোগমুক্তির জন্য, না লোকান্তরিত বাবার আত্মার কল্যাণের জন্য! পোস্টের শেষে বাবার প্রসঙ্গটা যেন অপ্রাসঙ্গিকভাবেই এসে গেল!

৫| ১৬ ই জুন, ২০১৯ সকাল ১১:৫৩

নতুন নকিব বলেছেন:



আপনার সুস্থতার জন্য দুআ থাকলো।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.