নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

"নীরবের বাংলা জগৎ"

নীরবের বাংলা জগতে আপনাকে স্বাগতম।

নীরব চিৎকার

নিজেকে নিয়ে বলার সুযোগ খুব কমই পেয়েছি এই জীবনে। তাই নিজের সম্পর্কে কেউ কিছু জানতে চাইলে খুব একটা গুছিয়ে বলতে পারি না।তবুও চেষ্টা করছি নিজের সম্পর্কে কিছু বলতে...আমার ছদ্মনাম নীরব চিৎকার। ছদ্মনাম বললে ভুল হবে। নামটা ভালো লাগে তাই ব্যবহার করি। নামের পিছোনে ছোট একটা গল্প আছে।মোটামুটি রকমের ছাত্র আমি। পড়ছি ইন্টারমিডিয়েট, ২য় বর্ষ। বিজ্ঞান বিভাগ।পরিবারে আছে, মা, বাবা, আর ছোট্ট একটা পুতুল। খুব ছোট্ট না হলেও এবার ১০-এ পরবে। নাম ঐশী।লেখালেখি করার নেশা আছে। কেমন লেখি সেই বিষয়ে আমারো সন্দেহ আছে। সুযোগ হলে নিজেই পড়ে বিচার করে নিবেন ।কবিতা লিখতে ভালোবাসি। ভালোবাসি বিকেলে ছাদে হাঁটা-হাঁটি করতে। ভালোবাসি বৃষ্টিতে ভিজতে। যদিও সব সময় ভেজার সুযোগ পাই না।অনেকের মতে আমি কাছের মানুষগুলোকে কষ্ট দিতেও ভালোবাসি (যদিও কখনো ইচ্ছে করে এমনটি করিনি)।অপরিচিত হিসেবে এর থেকে বেশি না জানলেও চলবে।অপরিচিতদের সাধারণত বন্ধু বানাই না তবে বিশেষ কোনো কারণ অথবা গল্প-কবিতা পড়ার উদ্দেশ্যে বন্ধু হতে চাইলে আপত্তি করবো না।এত বড় লেখা পড়ার জন্য ধন্যবাদ। আর আপনার ধৈর্য দেখে আমি মুগ্ধ।

নীরব চিৎকার › বিস্তারিত পোস্টঃ

"অপূর্ণ গল্প"- ছোট গল্প

১৫ ই আগস্ট, ২০১৪ রাত ১২:৪৪

আজ জয় অনেক খুশি। বিমানের যাত্রি সীটে বসে আছে সে। ৫ বছর পর সে আজ দেশে ফিরছে।

তার নিজের দেশে, বাংলাদেশে। দেশের টান খুব দৃঢ় ভাবেই টানে তাকে এখন।

হয়তো দেশ থেকে অনেক দূরে অন্যদেশে থাকে বলে। সেই ২০০৮-এ কলেজ শেষ করে চলে আসে অস্ট্রেলিয়ায়।

বাকি পড়াশুনা শেষ করার জন্য। আসার ইচ্ছা ছিল না তার মোটেও। কিন্তু বাবা-মার মতের বিরুদ্ধেও যেতে পারেনি।

তবে, অস্ট্রেলিয়ায় আসার দেড় মাসের মাথায় টের পায় দেশের প্রতি ভালবাসা, বাবা-মায়ের স্নেহ, বন্ধু-বান্ধবের সাথে খুনসুটির মমত্ব।

বাবা-মায়ের সাথে প্রায় প্রতি দিনই কথা হতো। কিন্তু বন্ধুগুলোর সাথে প্রায় ৫ বছর হয়নি। তাই সব থেকে বেশি মনে পরে তাদেরকেই।

মাঝে মাঝে অবশ্য পারভেজের সাথে কথা হতো জয়ের। তাও খুব কম। আর কারও সাথে হয়নি।

নিজের ভার্সিটির ক্যাফেটেরিয়ায় বসে জয়ের মনে পরে সেই সব দিনের কথা। সেই “রসনা” হোটেলের চা-সমুচার স্বাদ।

সেই “প্লাস পয়েন্ট” শো-রুমের সামনের সিঁড়ির আড্ডা।

ক্যাফেটেরিয়ার “কফি আর ডোনাট” দিয়ে “চা-সমুচা”র এবং ক্লাস রুম দিয়ে শো-রুমের সিঁড়ির বিকল্প পাওয়া গেলেও, সেই পরিবেশের সব উপাদান ফিরে পাওয়া হয় না।

ফিরে পাওয়া হয় না সেই বন্ধুগুলোকে।



অস্ট্রেলিয়াতেও তার বেশ কিছু বন্ধু আছে। কিন্তু সবার মাঝেই কেমন যেন একটি যান্ত্রিক ভাব। শুধু একজন আলাদা।

একজন মেয়েবন্ধু আছে তার। আক্ষরিক অর্থে মেয়েবন্ধু বলতে যা বোঝায় তাই। তার স্বভাবের মত তার নামটাও বেশ আলাদা ধরেনের।

ডেলিয়া এস্পঞ্জীয়া। মেয়েটা আসলেই সবার থেকে আলাদা। সে খুব আগ্রহ সহকারে জয়ের কথা শোনে। তার বন্ধুদের কথা শোনে। শোনে তার দেশের কথা।

মেয়েটার সাথে জয়ের সম্পর্ক বন্ধুত্যের হলেও তারা বন্ধুর থেকে বেশি অধিকার খাটায় একে অন্যের ওপর। জয়কে এয়ারপোর্ট ছাড়তে এসেছিল ডেলিয়া।

বাচ্চা মেয়ের মত কাঁদছিল। জয়ের একটু মন খারাপও হয়। কিন্তু মন খুব বেশিক্ষণ খারাপ থাকেনি। বিমানে উঠেই দেশের কথা মনে পড়ে গেল।

আর মনটাও ভালো হয়ে গেল। আবার ডুবে যায় বন্ধুদের জন্য আলাদা করা স্মৃতির ডায়রিতে। কেমন আছে ওরা? মিস কি করে আমায়?

মাঝে মাঝেই প্রশ্নগুলো জিজ্ঞেস করতে ইচ্ছা করতো বন্ধুদের। কিন্তু কেন জানি পারভেজকেও কখনো জিজ্ঞেস করা হয়নি।

অন্যদের সাথে তো কথাই হয়নি এত দিন। তাই কাউকে জিজ্ঞেস করতে না পেরে নিজেই কল্পনা করে নেয় তারা কেমন আছে!



পারভেজ আজ বেশ জনপ্রিয় লেখক বাংলাদেশের। পরীর সাথে দাম্পত্য জীবনেও বেশ সুখেই আছে সে। থাকাটাই স্বাভাবিক। তাদের মাঝে বোঝাপড়া চমৎকার।

আদনান তার পরিবারের চাপে পড়াশুনার জন্য কানাডা যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। ধার্মিক নিজাম আজও ইসলামের দিকে ঝুকে আছে। অন্য কিছুর আগেও নেই, পিছেও

“আইরিন পাগল” অভি জীবনে তার একমাত্র চাওয়ার জিনিষটাই পেয়েছে। আইরিনকে সে বিয়ে করেছে। তাদের একটা মেয়ে হয়েছে। নাম “আলিয়া নিহারিকা জাহান”।

আর সোহেল? সে তার বুদ্ধি খাটিয়ে আজ অনেক বড় সফল ব্যবসায়ী। নিজের কল্পনার সাথে বাস্তবতার মিল দেখার জন্য জয়ের আর তর সয় না।



কিন্তু মিল-অমিল কতটুকু তা দেখার সৌভাগ্য জয়ের হয়নি। বিমান দুর্ঘটনায় মারা যায় সে। বিমানের একটি ইঞ্জিন অকেজো হয়ে গিয়েছিল।

সামলে নেবার আগেই প্রচন্ড বেগে বিমানটি আছরে পরে মাটিতে। টুকরো টুকরো হয়ে যায় বিমানটি। কেউ বাঁচেনি। বাস্তবতা আসলেই অনেক নিষ্ঠুর।

পত্র-পত্রিকায় ছোট-খাটো লেখা দেয় পারভেজ। তাতে যে টাকা পায় তা দিয়েই বইয়ের ভাষায় “জীবিকা নির্বাহ” করে। প্রকাশকের অভাবে বড় লেখক হতে পারে নি সে।

তবে পরী আছে বলে সে আজও বেশ সুখে আছে। পড়াশুনার জন্য আদনান কানাডা যায়নি। মানসিক এবং পারিপার্শিক চাপ সহ্য করতে পারেনি ছেলেটা।

আজ তার ঠিকানা “দানি মেন্টাল কেয়ার”। ধার্মিক নিজাম আজও ইসলামের পথেই আছে। তবে আজ সে জেলখানায়।

রমনা থানার ওসি, নু্রনবি সাহেবের ভাষ্যমতে, গত দের বছর ধরে আল-কয়াদির সক্রিয় সদস্য সে। তার কাছে নাকি বোমা বানানোর বিভিন্ন সরঞ্জাম পাওয়া গেছে।

“আইরিন পাগল” অভি, বিয়ের প্রথম সাত মাস সুখেই ছিল। আইরিন আর অভির ভালবাসা ধীরে ধীরে ফিকে হয়ে যায়। শুরু হয় কলহ।

অভি তবুও চেষ্টা করেছিল শেষ পর্যন্ত আকড়ে ধরে রাখতে। যার ফলস্বরুপ তাদের এক মাত্র মেয়ে। নাম “আলিয়া নিহারিকা জাহান” নয়। “স্নিগ্ধা”। সাফরিন আহমেদ স্নিগ্ধা।

সোহেল তার বুদ্ধি দিয়ে সফল ব্যবসায়ী হতে পারেনি শেষ পর্যন্ত। কাজ থেকে ফেরার পথে পিকেটারদের উদ্দেশ্যে ছোড়া পুলিশের গুলি এসে লাগে তার ঘাড়ে।

হাসপাতালে তাও আড়াই দিন বেঁচে ছিল বিভিন্ন যন্ত্রের সাহায্য নিয়ে।

তার পর? থেমে যায় সব। গল্প থেকে যায় অপূর্ন।



উৎসর্গঃ গল্পের চরিত্রগুলোর জন্যই অপূর্ণ গল্পের উৎসর্গপত্র। পরী, জয়, পারভেজ, আদনান, নিজাম, আইরিন, অভি, সোহেল, দানি, নুরনবি, সাফরিন, সারা, নিহারিকা, ডেলিয়া।

তাদের ঘিরেই আমি।



বি.দ্রঃ গল্পটি সম্পুর্ন কাল্পনিক। শুধুমাত্র চরিত্রের নামগুলো আসল।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৫ ই আগস্ট, ২০১৪ রাত ১২:৫৩

রাজিব বলেছেন: খুবই মন খারাপ ক্রা একটি গল্প। আমাদের সমাজের বাস্তবতা ফুটে উঠেছে। হাজারো মানুষের কাহিনী ফুটিয়ে উঠেছে। আমাদের সমাজে ব্যর্থ মানুষের সংখাই বেশী মনে হয়। না হলে আপনার পরী, জয়, পারভেজ, আদনান, নিজাম, আইরিন, অভি, সোহেল, দানি, নুরনবি, সাফরিন, সারা, নিহারিকা, -এদের এত বেশী দেখি কেন চারপাশে।
আমি নিজেই কি সফল? না মনে হয়। হয়তো ব্যর্থও নই। নানা ভেজালে পরিপূর্ণ থাকে প্রতিটি দিন। তারপরও হয়তো লড়াই করে যাবার সংগ্রাম করে যাবার চেষ্টা করে যাই বলে বোধহয় ঠিক হতাশ নই। আপনার গল্প মন ছুয়ে গেল।
আমি আশাবাদী মানুষ। হয়তো একই কাহিনী লিখলে আরেকটু কম কষ্ট দিয়ে লিখতাম।
সব কিছুই ভাল লেগেছে শুধু একটাই দুর্বলতা রয়ে গেছে বলে মনে হল- চরিত্র গুলোর বর্ণনা ও পরিচয় আরেকটু বেশী হলে ভাল হতো।

১৫ ই আগস্ট, ২০১৪ রাত ১:০১

নীরব চিৎকার বলেছেন: আমিও আপনার মত আশাবাদী মানুষ। গল্পটার মুল বিষয়টা সবার ভিতরে ঢুকিয়ে দেবার প্রয়াস গল্পটাকে একটু বেশিই-ই কষ্টকর করে তুলেছে। ধন্যবাদ আপনার গঠনমূলক মন্তব্যের জন্য। বিষয়টা মাথায় রাখবো পরের বার। @রাজিব

২| ১৯ শে আগস্ট, ২০১৪ রাত ২:১৩

In2the Dark বলেছেন: অনেক হাসি হাসি ছিলাম একটু আগেও। এখন তোমার গল্পপ্টা পড়ে কাঁদছি :( অনেক খারাপ লাগল।

আর গল্পটা ভাল লেগেছে, শুভ কামনা রইল।

২২ শে আগস্ট, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:২২

নীরব চিৎকার বলেছেন: মন খারাপ করে দেয়ার জন্য দুঃখিত! :(

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.