নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বিনোদন ও জাগরণের চেষ্টা। হরর, থ্রিলার, রম্য এই জাতীয় কিছু লেখার চেষ্টায় আছি। (০২/০২/১৭)

Nishi Chowdhuri

আমি মানুষ।

Nishi Chowdhuri › বিস্তারিত পোস্টঃ

গল্পের নামঃ পাগলী মেয়েটি

২৭ শে নভেম্বর, ২০১৬ রাত ১১:২৬

গল্পের নামঃ পাগলী মেয়েটি
.
বাসরঘরে ঢুকে আবিদ নিধির দিকে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। পাগলী মেয়ে। সত্যিই পাগলী। ছোট বেলা থেকেই নিধির বাবা মার স্বপ্ন মেয়েকে ডাক্তার বানাবে। একটি বার জানতেও চায়নি নিধি কি ডাক্তার হতে চায়? কিংবা তার উপর যে প্রেসার দেয়া হচ্ছে তা কি নিধি সামলাতে পারছে? না নিধি এই প্রেসার সামলাতে পারছিল না। তাই তো এসএসসি পরীক্ষার পর থেকেই নিধির আচার আচরণ পরিবর্তন হয়ে ছিল। নিধি নিজেকে এক ঘরে বন্দী করে ফেলেছিল। বাবা মা মনে করেছিল নিধি পড়াশুনার ব্যাপারে সিরিয়াস হয়েছে। নিধি সারাক্ষণ নিজের সাথেই মিনমিন করে কথা বলতো। কিন্তু বাবা মা মনে করেছিল মিনমিন করে পড়তেছে।
.
এইচএসসি পরীক্ষার পর মেডিকেল এডমিশনের এতই প্রেসার নিধির উপর পডেছিল যে নিধি প্রচুর ডিপ্রেসড হয়েছিল। সেই ডিপ্রেশনের ফলে আজ নিধি পাগলী। তবে এই কথাটা আবিদ বিয়ের আগ পর্যন্ত জানত না। একটু আগেই তার শ্বশুড় আব্বু সব বলল। যদিও আবিদ প্রথমে বিশ্বাস করেনি। তবে পরে ডাক্তারি কিছু রিপোর্ট দেখার পর বিশ্বাস করতে বাধ্য হল।
.
নিধির সাথে আবিদের পরিচয় দু মাসের। আবিদ তখন জবে মাত্র প্রমোশন পেয়েছিল। নিধির পরিবার আগের শহর ছেড়ে নতুন এক অজানা শহরে এসেছিল। আবিদদের পাশের বাড়িতে উঠেছিল। আবিদ সকাল সকাল জানালার পাশ নিধিকে দেখতো। জীবনে প্রথম কোনো মেয়েকে দেখে আবিদ প্রেমে পড়েছিল।
.
পাগলী হওয়ার পর থেকে নিধির কাছে ক্রিকেট ভাল লাগে। তাই জানালার বাইরে তাকিয়ে ক্রিকেট খেলা দেখতো। টিভির ক্রিকেট খেলার সব চ্যানেল বন্ধ। কারণ নিধি ক্রিকেট দেখলে যে বেশি ভাল করে তাকে বিয়ের করার জন্য কান্নাকাটি শুরু করে। এছাড়া নিধির আর কোনো সমস্যা নেই। কেউ দেখে বলতে পারবে না যে নিধির মানসিক সমস্যা আছে। একদম পরিপাটি একটি মেয়ে। যে দেখবে সেই বলবে খুব মিষ্টি এবং সাংসারিক মেয়ে।
.
একদিন আবিদ পাড়ায় ক্রিকেট খেলছিল। আবিদ খুব ভালই খেলে। সেদিন নিধি সবার চোখ ফাকি দিয়ে ছাদে চলে এসেছিল। সেখান থেকে আবিদের খেলা দেখে আবিদকে বিয় করবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। অন্যদিকে খেলা শেষে আবিদ ইচ্ছে করে বলটা ছাদে মেরে আনতে গিয়েছিল। তারপর নিধির সাথে টুকিটাকি কথা হয়েছিল। নিধি তো পুরাই ফিদা। আবিদ বুঝেছিল নিধি তাকে পছন্দ করে। আবিদ ফোন নাম্বার দিয়ে চলে গেল। তারপর ধীরে ধীরে প্রেম শুরু হয়েছিল।
.
এক মাস পর একদিন আবিদ নিধির মায়ের কাছে ছাদে ধরা পড়েছিল। নিধি তো যাবেই না। অনেক জোর করে নিয়ে গিয়েছিল। নিধির এই আচরণ আবিদকে অজানা সাহস দিয়েছিল। তাই সে বাবার কাছে সব খুলে বলছিল। তাছাড়া আবিদের বাবা মাও চাচ্ছিল আবিদ এখন বিয়ে করুক। শুরুতে নিধির বাবা মা রাজি না থাকলেও নিধির কান্নাকাটির কাছে হার মানতে হয়েছিল। কারণ কেদে কেদে নিধি প্রতিদিনই বেহুঁশ হয়ে যেত। খাওয়া দাওয়া তো বন্ধই করে দিয়েছিল।
.
নিধির বাবা বলেছে নিধির মধ্যে ক্রিকেট ব্যতীত আর কোনো পাগলামী নেই।
.
বাসরঘরে ঢুকে আবিদ ঠাই হয়ে দাড়িয়ে আছে। হঠাৎ নিধির স্পর্শে আবিদের ঘোর কাটলো। নিধি আবিদের পা ধরে সালাম করল। আবিদ কি করবে ভেবে পাচ্ছে না। মাথায় এইটুকুও নেই যে নিধিকে উঠাবে। কিছুক্ষণ পর আবিদ নিধিকে উঠালো।
.
> এতক্ষণ লাগে উঠাতে? এই তুমি কি ঘোড়া? দাড়িয়ে দাড়িয়ে ঘুমাচ্ছিলে?
আবিদ না হেসে পারল না।
> বাহ! হাসিটা তো দারুণ। আচ্ছা বস। তোমার সাথে অনেক কথা আছে।
.
আবিদ খাটে বসে পড়ল। নিধি আবিদের সাথে রাজ্যের কথা শুরু করল। আবিদ শুধু শুনে যাচ্ছে। বিশ্বাসই হচ্ছে না নিধির কোনো সমস্যা আছে। দেখতে একদম স্বাভাবিক।
.
ভোরে,
> এই যে উঠে পড়ুন। আর কত ঘুমাবেন? নামাজ পড়বেন না?
- এইতো আরেকটু।
নিধি হাত ধরে উঠিয়ে দিল।
- উফফ! এমন কর কেন?
> নামাজ না পড়লে আল্লাহ আমাদের উপর নারাজ হবে। তুমি কি তা চাও?
আবিদ উঠে গোসল করে নামাজ পড়ল।
.
> এই নাও চা।
দুজনে এক সাথে বসে চা খেতে লাগল। আবিদ বারবার নিধির দিকে তাকাচ্ছে।
> চায়ে চিনি হয়নি?
- হয়েছে। হয়েছে।
> তো এভাবে তাকাচ্ছ কেন? আগে দেখনি?
- ইয়ে মানে ..... মানে এমনি।
> তুমি রোমান্টিক হতে পার না?
- মানে?
> এই যে আমি বললাম চিনি হয়েছে কিনা? তখন যদি তুমি বলতে না হয়নি। আমি বলতাম কই দেখি। তারপর একটু চুমুক দিয়ে বলতাম চিনি তো ঠিকই আছে। তখন তুমি বলতে তোমার ঠোঁটের স্পর্শে এবার হয়েছে। আমি বলতাম যাহ! ফাজিল।
.
আবিদ মনে মনে বলল কে বলেছে এই মেয়ে পাগল? যে বলেছে সে নিজেই পাগল।
> আবার কোথায় হারালে?
- তোমার রূপের সৌন্দর্যে।
> হয়েছে বলার পর করে লাভ কি? নিজ থেকে বুঝ না?
- তুমি বুঝিয়ে দিও। তাহলে সব বুঝে নিব।
> যাও অফিসের জন্য রেডি হও।
.
আবিদ লাফিয়ে উঠলো। আরে হ্যা! আজ তো ইম্পোটেন্ট মিটিং আছে। তা না হলে যেত না নতুন বিয়ে বলে কথা। বস জানেই।
.
আবিদ রেডি হতে লাগল। আবিদ শার্ট পড়তেছে। আবিদ ছোটবেলা থেকে শার্টের বোতাম নিচ থেকে উপরের দিকে লাগায়। আবিদ যখন বোতাম লাগাতে লাগাতে লাগল উপরের দিকে আসল নিধি এসে ধরে ফেলল।
> ওয়েট আমি লাগিয়ে দেই?
- হুম।
.
নিধি আবিদের বোতাম লাগিয়ে টাই পড়িয়ে দিল। আবিদ পুরো সময়টা নিধির মায়াবী চেহারার দিকে তাকিয়ে রইল। তারপর আবিদ নিধি কপালে ভালবাসার ছোঁয়া এঁকে দিল। নিধি তো লজ্জায় লাল। তারপর আবিদ অফিসে চলে এলো। আবিদ অফিসে এসে বেশ কয়েকবার ফোন করে নিধির খবর নিল।
.
- হ্যালো!
> এই তুমি এত ডিস্টার্ব করছ কেন?
- ডিস্টার্ব?
> হুম। ঘরের কাজ কি তুমি এসে করবে? ঘরে কত কাজ পড়ে আছে। আর তুমি বারবার কল দিয়ে ডিস্টার্ব করছ। দু একবার দেয়া স্বাভাবিক। বাট এত বার দেয়ার পিছনে কারণ থাকে। সত্য করে বল তো কি কারণ?
- না না এমনি। আচ্ছা রাখি।
.
আবিদ ফোন রেখে দিয়ে ভাবতে লাগল বাপরে কত বুদ্ধি? আরেকটু হলেই ধরা খেতাম।
.
আবিদ অফিস শেষে কিছু ফুল নিয়ে বাসায় ফিরল।
> আরে বাহ! জনাব তো একদিনেই রোমান্টিকের সব চ্যাপ্টার বুঝে গেছে। তো হাতে নিয়েই দাড়িয়ে থাকবেন?
.
আবিদ ফুল গুলো নিধির চুলে গুজে দিল। রাতে ডিনার করে দুজনে বেশ গল্প করল। এভাবেই কাটতে লাগল আবিদ - নিধির সংসার। প্রতিদিন ভোরের চায়ের সাথে দুষ্টামি থেকে শুরু করে সেই শার্ট-টাই পড়ানো, রাতে ডিনারে দুষ্টামি সবই তাদের নিত্যদিনের রুটিন।
.
নিধি খুব সাংসারিক। সবকিছু একদম পরিপাটি করে রাখে। কোনো অস্বাভাবিক আচরণ নিধি করে না। সুখে - শান্তিতে কেটে গেল বেশ কিছু মাস।
.
এক ভোরে,
তীব্র ব্যাথায় আবিদ ঘুম থেকে জেগে উঠলো। দেখল নিধির হাতে ছুরি। আবিদের পেটের এক পাশে সেই ছুরি দিয়ে নিধি আঘাত করেছে। আর বলছে
> মেয়েদেরকে কি পেয়েছিস? খেলনায় পুতুল? আজ তোর জীবনের শেষ দিন। আর কোনো মেয়ের জীবন নষ্ট করতে পারবি না।
.
নিধি আবার এগিয়ে এলো। আবিদ নিধিকে ধাক্কা মেরে সরিয়ে দিল। নিধি দেয়ালের সাথে ঠাক্কা খেয়ে পড়ে গেল। তারপর যা করল তা দেখেও আবিদ বিশ্বাস করতে পারছে না। ভাবতেছে এসবই দুঃস্বপ্ন। নিধি নিজের পেটে নিজে ছুরি মেরে দিয়েছে। কিছুক্ষণ পর ব্যাথার তীব্রতায় আবিদ বুঝল এসবই বাস্তব। যাইহোক না কেন নিধিকে বাঁচাতে হবে। আবিদের গায়ে বিন্দুমাত্র শক্তি নেই। আবিদ জানালার পাশে যেয়ে দারোয়ানের নাম ধরে ডাক দিয়ে বেহুঁশ হয়ে পড়ে গেল।
.
চোখ খুলে নিজেকে হাসপাতালে আবিষ্কার করল। নিধি যে পাগল এই কথা আবিদ তার বাবা মাকে জানায়নি। আবিদের বাবা জিজ্ঞেস করল এসব "কিভাবে হল? দারোয়ান তো কাউকে বাইরে যেতে দেখেনি।"
- জানি না। নিধি কেমন আছে?
= ডাক্তার দেখতেছে।
.
আবিদ উঠে পড়ল। পুলিশ এসে আবিদকে কিছু জিজ্ঞেস করল। আবিদ না জানার কথা বলে পুলিশদের পাঠিয়ে দিল। তারপর নিধির কেবিনের সামনে গেল।
~ বাবা, এসব কিভাবে হল? (নিধির বাবা)
আবিদ তাকে সব খুলে বলল।
~ ওর তো এমন করার কথা। আমার মেয়েটা মনে হয় পুরো পাগল হয়ে গেছে। (কাদতে লাগল)
- প্লিজ এই মুহূর্তে সাহস রাখুন।
.
ডাক্তার বের হয়ে বলল, "ভাগ্যিস সময়মতো আনা হয়েছে। নয়তো বাচ্চাটাকে বাঁচানো যেত না।"
- বাচ্চা?
-- আপনার ওয়াইফ প্রেগন্যান্ট। খেয়াল রাখবেন। রক্ত তেমন যায়নি তাই বেচে গেছে।
.
খুশির খবর শুনেও আবিদের মুখে অজানা ভয়ের ছাপ। কিছুক্ষণ পর নিধির জ্ঞান ফিরলো। আবিদ ভেতরে গেল। আবিদকে দেখে নিধি, "বাবা বাচাও বাচাও" করে চিল্লাতে লাগল। নিধির বাবা ভেতরে যেয়ে নিধিকে শান্ত করার চেষ্টা করল।
.
নিধি কেদে কেদে বলল
> বাবা, এই জানোয়ারটা এখানে কিভাবে? ওকে পুলিশে দাও। ও আমার সর্বনাশ করেছে। ওকে পুলিশে দাও।
~ শান্ত হ মা। কি বলছিস? ও তো তোর স্বামী।
> স্বামী? তুমি এসব কি বলছো বাবা? আমার তো বিয়েই হয়নি।
.
কথাটা শুনার পর আবিদ বসে পড়ল। যেন দুনিয়াটা ভেংগে গেছে। তবে আবিদ বুঝল নিধি স্বাভাবিক হয়ে গেছে। মানসিক সমস্যাটা দূর হয়ে গেছে। নিধির বাবা মাও বুঝে গেল। আবিদের বাবা আবিদকে নানান প্রশ্ন করল। আবিদ সব খুলে বলল। যাইহোক না কেন আবিদ চায় সন্তানটার যাতে কোনো ক্ষতি না হয়।
.
কিছুক্ষণ পর আবিদ আবার কেবিনের ভেতরে গেল। এবার নিধি চুপ করে আছে। নিধির বাবা বাইরে চলে এলো। আবিদ ধীরে ধীরে যেয়ে নিধির পাশে বসল। নিধি অন্যদিকে মুখ ঘুরিয়ে নিল।
.
- এখন কেমন আছ?
> আমি জানি আপনি টাকা দিয়ে এসব করেছেন। বাট টাকা দিয়ে দেহ পাওয়া যায় কিন্তু মন না।
- কি বলছ এসব? তুমি আমার বিবাহিত স্ত্রী। তোমার গর্ভে আমার সন্তান।
.
নিধি আবিদের দিকে অবাহ হয়ে তাকালো। তারপর মুখ চেপে কাদতে লাগল। আবিদ বুঝল নিধি এসব মেনে নিতে পারছে না। কারণ নিধির কাছে মনে হচ্ছে সে এইমাত্র ঘুম থেকে উঠেছে। কোনো মেয়ে ঘুম থেকে উঠে যদি তারপর পাশে অপরিচিত কোনো ছেলেকে দেখে এবং পরে জানতে পারে সে প্রেগন্যান্ট তবে কি মেয়েটি এসব স্বাভাবিক ভাবে নিতে পারে? নিধির সাথেও তাই হয়েছে।
.
যাইহোক, বাবা মার কথায় নিধি আবিদের সাথে যাওয়ার জন্য রাজি হল। কিন্তু আবিদের বাবা মা নিধিকে ঘরে নিতে নারাজ। কে জানে পরে আবার কি করে বসবে! বহু কষ্টে আবিদ রাজি করাল। তবে শর্তসাপেক্ষে। আবিদ নিধি এখন তাদের সাথেই থাকবে।
.
নিধিও বুঝল যে তার সাথে কিছু তো হয়েছে। কারণ নিধির জানামতে এখন ২০১৫ সাল থাকার কথা। কিন্তু এখন হচ্ছে ২০১৬। নিধির স্মৃতি থেকে একটি বছর হারিয়ে গেছে। নিধির মা নিধিকে অনেক বুঝাল যে আবিদকে স্বামী হিসেবে মন থেকে মেনে নিতে। নিধিকে বিয়ের ভিডিও, ছবির এলবাম সহ নানান প্রমাণ দেখালো। তারপর নিধি বিশ্বাস করল। বাবা-মা কি চাইবে পরপুরুষের হাতে নিজের মেয়েকে তুলে দিতে?
.
> দেখুন, গত বছর কি কি হয়েছে তা আমার কিছুই মনে নেই। সব প্রমাণ বলছে আপনি আমার স্বামী। তবে আমার কিছু সময় লাগবে।
- তুমি শুধু আমাদের সন্তানের দিকে খেয়াল রেখ। মানো আর না মানো ও তোমারও।
নিধি মাথা নেড়ে হ্যাঁ বলল।
.
নিধি নিজেকে মানিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছে। অন্যদিকে আবিদ সেই পুরানো দিনগুলো সবসময় মিস করে। সেই ভোরের চা থেকে শুরু বোতাম-টাই পড়ানো সবকিছুই আবিদ সবসময় মিস করে। নিজের আবেগ গুলো কারো সাথে শেয়ারও করতে পারছে না। তাই ডায়েরিতে লিপিবদ্ধ করছে।
.
এভাবে কেটে গেল বেশ কিছু মাস। সবকিছুই স্বাভাবিক যাচ্ছে। আবিদের ভালবাসা, কেয়ার দেখে নিধি মেনেই নিয়েছে আবিদ তার স্বামী। এটাই তার সংসার।
.
আজ আবিদ নিধির সন্তান দুনিয়ার এলো। নাম রাখা হল ঊর্মি। বেশ আনন্দেই যাচ্ছে তাদের দিনকাল। আবিদ দেখল যে নিধি ঊর্মিকে নিজের অংশই ভাবে। তাই আবিদও খুশি।
.
এক ভোরে নিধির ডাকে ঘুম ভাংলো আবিদের। তারপর নামাজ পড়ে আবার ঘুমাতে গেল। কিন্তু নিধি বাধা দিল।
> আর ঘুমাতে হবে না। বারান্দায় এসো। চা খাবে।
.
আবিদ কিছু ভাবতে লাগল। এসো? ভুল শুনেনি তো? কারণ স্বাভাবিক হওয়ার পর থেকে নিধি আপনি করে বলে। আবিদ বারান্দায় এলো। দুজন মিলে চা খেল। কিছুক্ষণ পর আবিদ অফিসের জন্য রেডি হতে লাগল। শার্ট পড়ছে। উপরের বোতাম লাগানোর সময় নিধি চলে এলো।
> আমি লাগিয়ে দিচ্ছি।
.
আবিদের কাছে স্বপ্ন মনে হচ্ছে। না এতো স্বপ্ন নয়। তবে কি নিধি আবার পাগলী হল?
- এই তুমি ঠিক আছ?
> হুম। কেন?
- না এমনিই।
.
নিধি টাই পড়িয়ে দিল। তারপর বেশ কিছুক্ষণ নীরবতা। নিধি কিছুটা রেগে বলল
> ডায়েরির লিখা অনুযায়ী তো এখন তোমার এমন নীরব থাকার কথা না।
- তুমি আমার ডায়েরি পড়েছ?
> হুম।
- তাই এসব করতেছ?
> হুম। দেখ গত বছরের সকল ঘটনা আমার স্মৃতি থেকে মুছে গেছে। তাই তুমি আমার কাছে অপরিচিত ছিলে। কিন্তু আমার প্রতি তোমার কেয়ার দেখে বুঝাই যায় তোমার জীবনে আমার মূল্য অনেক। তাই চেষ্টা করছি তোমাকে তোমার আগের নিধি ফিরিয়ে দেয়ার।
.
আবিদ নিধি কপালে ভালবাসা এঁকে বুকের মাঝে জড়িয়ে ধরে বলল
- তুমি শুধু আমাকে আপন ভাবো। এতেই হবে। আর ঊর্মিকে ভালবাসা দিও।
> এই শুনো ঊর্মি আমারও মেয়ে। সো এই ব্যাপারে তোমার মতামত না দিলেও হবে। আসছে একজন হুহ!
.
আবিদ কিছু না বলে নিধিকে জড়িয়ে ধরে আছে। শুরু হল আবিদের পুরানো দিনের রিপ্লাই।
.
লিখাঃ Nishi Chowdhuri (রাত্রির আম্মু)

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই এপ্রিল, ২০১৭ সকাল ১১:০৭

শরিফুল সরকার বলেছেন: খুব সুন্দর

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.