নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বিনোদন ও জাগরণের চেষ্টা। হরর, থ্রিলার, রম্য এই জাতীয় কিছু লেখার চেষ্টায় আছি। (০২/০২/১৭)

Nishi Chowdhuri

আমি মানুষ।

Nishi Chowdhuri › বিস্তারিত পোস্টঃ

গল্পের নামঃ স্বপ্ন

১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল ৭:২৭

গল্পের নামঃ স্বপ্ন
.
~ মিমি, তোমার সাথে কিছু গুরুত্বপূর্ণ কথা ছিল। যদি একটু সময় দিতে ভাল হত।
> জ্বি ভাইয়া বলুন।
~ ইয়ে মানে মিমি আসলে আমি তোমাকে খুব ভাল বেসে ফেলেছি। তোমাকে নিয়ে ভালবাসার …………
> রাসেদ ভাইয়া এটা কি করলেন আপনি?
.
মিমির প্রতিক্রিয়া দেখে মনে হল কেউ মিমিকে খুন করে ফেলেছে। রাসেদ বেশ অবাক হল।
~ আমি যাস্ট মনের কথা বললাম।
> আপনি আমার সম্পর্কে কিছু জানেন না?
~ ভালবাসায় কিছু জানতে হয় না।
> প্লিজ ভাইয়া ওই শব্দটা আর বলিয়েন না। রাজিব আপনাকে আমার সম্পর্কে কিছু বলে নায়?
~ কি বলবে?
> আমি আর রাজিব একে অপরকে ভালবাসি। কিন্তু আপনি এটা কি করলেন ভাইয়া? আমি আপনার সাথে হাসিখুশি ভাবে কথা বলি কারণ আপনি রাজিবের বড় ভাই। আর আপনি এই প্রতিদান দিলেন!!!! সব শেষ করে দিলেন ভাইয়া।
.
মিমি কাদতে কাদতে চলে গেল। রাসেদ থ হয়ে দাড়িয়ে রইল। রাজিবের মধ্যে অনুশোচনাবোধ কাজ করতে লাগল।
.
সন্ধ্যায় রাজিব মিমিকে ফোন দিলে মিমি রাজিবের সাথে ব্রেকআপ করে ফেলে। রাজিব মিমিকে খুব ভালবাসে। তাই রাজিব এটা সহ্য করতে পারল না। ধীরে ধীরে পাল্টে যাচ্ছে। রাজিবের হঠাৎ পরিবর্তন দেখে রাসেদ বুঝল যে মিমি হয়তো ব্রেকআপ করেছে।
.
রাসেদ মিমিকে ধরল
~ ভুলটা তো আমার ছিল। কিন্তু রাজিবকে কষ্ট দিচ্ছ কেন?
> যাতে ভবিষ্যতে কষ্ট না পায়।
~ তুমি তো ওকে ভালবাস। তবে এমন কেন করতেছ?
.
মিমি একটু চুপ থেকে বলল
> দেখুন সত্য কখনো চাপা থাকে না। একদিন না হয় একদিন রাজিব আপনার প্রপোজের ব্যাপারটা জেনে যাবে। তখন ওর কেমন লাগবে? ধরুণ রাজিবের সাথে আমার বিয়ে হয়েছে। বিয়ের পর একদিন দুষ্টামির মধ্যে রাজিব সত্যটা জানল। তারপর থেকে রাজিব আপনাকে আর আমাকে নিয়ে সন্দেহ করতে পারে। ধরুণ একদিন আমি আর আপনি রাজিবের কোনো একটা ঘটনা নিয়ে হাসাহাসি করছি। হঠাৎ রাজিব চলে আসায় আমরা হাসাহাসি বন্ধ করে দিয়েছি। তখন সন্দেহের মাত্রা বেড়ে যাবে। এভাবে একদিন সংসার ভেংগে যাবে। এতে রাজিবও কষ্ট পাবে আমিও পাব। আর আমি তা চাই না। তাই কষ্টটা এখন পাক। কারণ জীবন তো মাত্র শুরু।
.
হঠাৎ মিমির নাক মুখ পানিতে ভিজে গেল। তাকিয়ে দেখল সামনে তার ভাই পানির মগ নিয়ে দাড়িয়ে মুচকি মুচকি হাসতেছে। চারপাশে তাকিয়ে দেখল সে তো নিজের রুমে। ওহ! তারমানে এতক্ষণ যা ঘটেছে তা সবই স্বপ্ন। মিমির বুক থেকে যেন পাথর নেমে গেল।
.
মিমি তার ভাইকে পাঠিয়ে দিয়ে তাড়াতাড়ি রাজিবকে ফোন করল।
- হুম। (ঘুম)
> আমাদের রিলেশনের কথা তোমার ভাইকে বলেছ?
- না তো। কেন?
> এক্ষুণি উঠে আমাদের ব্যাপারে সব বল।
- সাতসকালে কি মাথা খারাপ হইছে? ভাইয়া জানতে পারলে খবর আছে।
> আমি কিচ্ছু শুনতে চাই না। তুমি তাড়াতাড়ি জানাও। নয়তো ব্রেকআপ করতে বাধ্য হব।
- অদ্ভুত তো! সকাল সকাল কি শুরু করলে? আরে বাবা! ভাইয়া জানলে তো আমাদের রিলেশনে সমস্যাও হতে পারে। বুঝ না কেন পারিবারিক ভাবে জানানোর সময় এখনো আসেনি।
> আমি এত কিছু শুনতে চাই না। যা বলছি তা কর।
- তোমার মাথা মনে হয় গেছে।
.
মিমি ফোনটা কেটে দিল। ওকে বলে লাভ নেই। কারণ রাজিব তার বড় ভাইয়ের সাথে তেমন একটা ফ্রি না। মিমি এখন কি করবে বুঝতে পারছে না। যদি স্বপ্ন অনুযায়ী রাজিবের ভাই প্রপোজ করে তাহলে তো সব শেষ।
.
কোচিং করে মিমি তার বান্ধবীর সাথে বাসার দিকে যাচ্ছে। হঠাৎ লক্ষ্য করল রাজিবের ভাই রাসেদ। বুকটা ধরফর শুরু করল। অন্য সময় নিজ থেকেই যেয়ে হাসিমুখে কথা বলত। কিন্তু স্বপ্নটা দেখার পর কথা দূরে থাক না দেখার ভান করে হাটা দিল। কিন্তু রাসেদ ডাক দেয়ায় নিরুপায় হয়ে সামনে গেল।
.
> জ্বি ভাইয়া। (মুখে হাসি ভাবটা নেই উল্টা বিরক্তির ভাব)
~ তোমাকে একটা জরুরি কথা বলতে চাই।
.
আয় হায়! স্বপ্ন কি বাস্তব হবে নাকি? কতবার বললাম রাজিবকে আমাদের ব্যাপারটা যেন বলে দেয়। তবুও বলল না। ছেলেটা কোনো কথা শুনে না। হাজারো ভয়ভীতি নিয়ে মিমি জিজ্ঞেস করল
> কি কথা ভাইয়া?
~ ইয়ে মানে আসলে বুঝতে পারছি না কিভাবে বলব।
.
মিমি মনে মনে বলল এসব তো প্রপোজের লক্ষণ। আল্লাহ বাচাও।
> সমস্যা হলে বলার দরকার নেই।
~ না বলতে তো আমাকে হবেই। আসলে তোমাকে আমি …
রাজিবের কথা শেষ করার আগেই মিমি এক নিশ্বাসে বলল, " "ভাইয়া আমি রাজিবের গার্লফ্রেন্ড। আমরা একে অপরকে ভীষণ ভালবাসি।"
.
তারপর কিছুক্ষণ নীরব থাকল দুজনই।
~ যাক বাচা গেল। আসলে আমি তোমাকে এটাই জিজ্ঞেস করতে এসেছি। তোমার ছবি ওর মোবাইলে দেখেছি তো তাই সন্দেহ হয়েছিল। রাজিব আমার কথা তো শুনে না। তুমি ওকে একটু বুঝাও যাতে আড্ডাবাজি কম করে লেখাপড়ায় মন দেয়। ও যদি ভালমত লেখাপড়া শেষ করে ভাল জব পায় তাহলে তো তোমাদেরই লাভ। ওকে একটু বুঝাও।
> জ্বি ভাইয়া বুঝাব।
~ আচ্ছা যাও।
.
মিমি চলে এলো। বুক থেকে যেন পাথর নেমে গেল। মনে মনে বলছে আজ রাজিবের একদিন কি আমার একদিন। আড্ডাবাজি আজ ছুটিয়ে দিব। অনেক প্রশ্রয় দিয়েছি আর না। ওর ভাইটা ওর ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তা করে। আর গরুটা আড্ডাবাজি করে। আজ আর ছাড়ছি না।
.
অন্যদিকে রাসেদ আকাশের দিকে তাকিয়ে বলছে যা হয় ভালর জন্যই হয়। আজ সে বড় এক ভুল করা থেকে বেচে গেছে। কারণ আজ সে মিমিকে প্রপোজ করত। আসলে মিমির হাসিমুখে কথা বলাটাকে রাসেদ ভালবাসা মনে করেছিল। কিন্তু সে হাসিখুশির মধ্যে ছিল বয়ফ্রেন্ডের বড় ভাইয়ের প্রতি শ্রদ্ধা। যাক কথাটা ঘুরিয়ে দেয়ার ফলে রাজিবের আড্ডাবাজি হয়তো কমবে।
.
মাঝেমাঝে প্রকৃতি ইশারা ইঙ্গিতেত মাধ্যমে আমাদেরকে আগাম কিছু জানিয়ে দেয়। প্রতিটি স্বপ্নেরই কিছু একটা ব্যাখ্যা আছে। :-)
.
বিঃদ্রঃ কোনো মেয়ে আপনার সাথে হাসিমুখে কথা বললে ভেবে নিবেন না যে মেয়েটি আপনাকে পছন্দ করে। সেই হাসিখুশির মাঝে অনেক কিছুই থাকতে পারে।
.
লিখাঃ নিশি চৌধুরী (রাত্রির আম্মু)

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.