নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বিনোদন ও জাগরণের চেষ্টা। হরর, থ্রিলার, রম্য এই জাতীয় কিছু লেখার চেষ্টায় আছি। (০২/০২/১৭)

Nishi Chowdhuri

আমি মানুষ।

Nishi Chowdhuri › বিস্তারিত পোস্টঃ

নামঃ মানবতা ও মনুষ্যত্ব

৩০ শে এপ্রিল, ২০১৭ দুপুর ১২:১৭

___ মানবতা ও মনুষ্যত্বই মানুষের পরিচয়।
.
একজন সাংবাদিক একজন মহিলা টিচারকে জিজ্ঞেস করল
- টিচার্স লাইফে কোন ব্যাপারটা আপনার সবচেয়ে বেশি ভাল লাগে।
> যখন আমার স্টুডেন্টরা পাস করে এসে সালাম দিয়ে বলে ম্যাম আমি পাস করেছি। আমার জন্য দোয়া করবেন।
- জ্বি। সত্যিই। আর কোন ব্যাপারটা আপনার সবচেয়ে খারাপ লাগে।
> যখন আমার স্টুডেন্টরা আমার দিকে নোংরা নজরে তাকায়।
সাংবাদিক স্তব্ধ হয়ে গেল।
.
বর্তমানে এটা অহরহ দেখা যাচ্ছে। নিউজফিডে প্রায় দেখি, "আজ টিচারের উপর ক্রাশ খেলাম, অমুক সাবজেক্টের টিচারটা যে সুন্দরী, স্কুল / কলেজে নতুন সুন্দরী টিচার এসেছে ……… ইত্যাদি আরও অনেক রকম স্ট্যাটাস। কখনো কি ভেবেছেন সেই টিচারের মনের ভেতরে কেমন তুফান চলে যখন সে দেখতে পায় তার স্টুডেন্টরা তার দিকে লোলুপ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। লেকচার দেয়ার সময় তিনি যখন বোর্ডের দিকে তাকান পিছনে তার স্টুডেন্টরা কত রকম নোংরা কথা / ইঙ্গিত করে তা ধারণারও বাইরে। পিছনের ব্যাঞ্চে বসে থাকা কিছু স্টুডেন্ট রূপি পশুরা প্রতিনিয়ত নানাভাবে টিজ করে থাকে। এটা যে কত কত কত কতটা বেদনাদায়ক তা কেউই বুঝবে না। সেদিন বুঝবে যেদিন তার চোখের সামনে তার মা বোনের সাথে কেউ ঠিক এমনটাই করবে।
.
বর্তমানে এসব কুকর্মের কারণ হল আমাদের নৈতিক অবক্ষয় হয়েছে, মানবতা-বিবেক কবরে শুয়ে আছে। বই তো পড়ছি কিন্তু ভদ্রতা, ব্যবহার, সংস্কার কিছু পড়ছি না। কারণ এসবের কোনো বই নেই। এসব বই থেকে শিক্ষা যায় না। বাবা-মা, ভাইবোন, পরিবার-পরিজন-আত্মীয়স্বজন-পরিবেশ, বন্ধুবান্ধব ইত্যাদি থেকে আমরা আদব-কায়দা-বেয়াদবি সদ্ব্যবহার-দুর্ব্যবহার সবই শিখে থাকি। কিন্তু আমরা শুধুমাত্র বেয়াদবি ও দুর্ব্যবহারের প্রয়োগ করি।
ভাল জিনিসটার প্রয়োগ করি না। আর এর প্রধান কারণ হল অসত্‍ সঙ্গ। খারাপের সাথে মিশতে মিশতে খারাপটাই আমাদের বদ-অভ্যাসে পরিণত হয়েছে।
.
ব্যবহারে বংশের পরিচয়। আমি এই কথাটা ৫০-৫০ মানি। কারণ অনেক পরিবারেই বাবা মায়ের ঝগড়াঝাঁটি সন্তানের উপর বিদ্রুপ প্রভাব ফেলে। তাই তার ব্যবহারও অন্যরকম হয়। কিন্তু বর্তমানে অনেক হাই সোসাইটির সন্তানেরাই বেশি বিপথগামী। তাদের ব্যবহারই সব থেকে বেশি খারাপ। তাই আমি কথাটা ৫০-৫০ মানি।
.
"সত্‍ সঙ্গে স্বর্গবাস, অসত্‍ সঙ্গে সর্বনাশ।" এই কথাটির সাথে আমি পুরোপুরি একমত। স্কুলে যাওয়ার সময় আমাদের ঘর থেকে বলা হয় যে সামনের বেঞ্চে বসবি। ফার্স্ট বয়ের সাথে বন্ধুত্ব করবি। কিন্তু আমরা কি করি? টিচারদের চোখ থেকে বাঁচার জন্য, দুষ্টামি করার জন্য, ফাঁকিবাজি করার জন্য পিছনে বসি এবং আজেবাজে ছেলেদের সাথে চলাফেরা করি। যার ফলস্বরূপ আজ টিচারকেই উত্ত্যক্ত করি, বাবা বয়সী লোকের সাথে গায়ের জোর দেখিয়ে দুর্ব্যবহার করি, ছোটদের উপর জোর খাটাই, বড়দের অসম্মান করি।
.
সব থেকে বড় ব্যাপার হল আমাদের নিজেদের মনমানসিকতা ও বিবেক। আমাদের মনমানসিকতা যদি খারাপের দিকে না যায় তাহলে কোনো শক্তি নেই আমাদের খারাপ করার। সবকিছু আমাদের উপর নির্ভর করে। বন্ধু নামক শত্রুরা প্রথমে হাতে সিগারেট তুলে দেয় আপনি যদি সেই সিগারেট হাতে না নেন তাহলে দুনিয়ার কারও সাধ্য নেই যে আপনাকে smoker বানাবে। সুতরাং ভাল খারাপের ব্যাপারটা অনেকটাই আপনার উপর নির্ভর করে। তবে এক্ষেত্রে পরিবেশ ও সঙ্গিও ভূমিকা রাখে। আপনি যদি নিজেকে খারাপ পরিবেশ থেকে দূরে রাখেন তাহলে খারাপ অভ্যাসগুলো আপনার মধ্যে প্রবেশ করতে পারবে না। যদি প্রতিনিয়ত খারাপ পরিবেশে যান এবং খারাপ লোকদের সাথে মেলামেশা করেন তাহলে একদিন আপনিও খারাপ হয়ে যাবেন। তাই নিজেকে সংযত রাখুন এবং খারাপ পরিবেশ ও লোকজনদের থেকে নিজেকে দূরে রাখুন।
.
আপনি ভাল তো জগত ভাল। তবে শুধু এইটুকুতেই পড়ে থাকলে হবে না। আপনার আশপাশটাও ভাল রাখার চেষ্টা করুন। সবাই ভাল তো জগত সুখের।
.
হাত না নাক চোখ তো পশুপাখিরও আছে। কিন্তু আশরাফুল মাখলুকাত অর্থাৎ সৃষ্টির সেরা জীব হলাম আমরা। কারণ আমাদের মানবতা ও মনুষ্যত্ব আছে। নিজের মানবতা ও মনুষ্যত্বকে জাগিয়ে রাখুন। তবেই মানুষের মত মানুষ হবেন। নয়তো পশুর চেয়েও অধম হবেন। ভাল কাজ করুন যাতে মৃত্যুর পরেও মানুষের মনে জীবিত থাকতে পারেন। তবে জন্ম স্বার্থক হবে।
.
পরিশেষে এটাই বলব যে, সবকিছু যথাযথ স্থানে দেখতে সুন্দর দেখায় এবং সেখানেই নিরাপদ। তাই তো বলা হয়, "বন্যেরা বনে সুন্দর, শিশুরা মাতৃক্রোড়ে।" সম্মানের স্থানে সম্মান করুন। স্নেহের স্থানে স্নেহ করুন। ভালবাসার স্থানে ভালবাসুন। তাহলে দুনিয়া সুন্দর ও পবিত্র থাকবে।
.
লিখাঃ Nishi Chowdhuri (রাত্রির আম্মু)

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.