নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বিনোদন ও জাগরণের চেষ্টা। হরর, থ্রিলার, রম্য এই জাতীয় কিছু লেখার চেষ্টায় আছি। (০২/০২/১৭)

Nishi Chowdhuri

আমি মানুষ।

Nishi Chowdhuri › বিস্তারিত পোস্টঃ

গল্পের নামঃ এডভেঞ্চারেই অপূর্ণ ও পরিপূর্ণ।

৩০ শে এপ্রিল, ২০১৭ দুপুর ১২:৩৮

গল্পের নামঃ এডভেঞ্চারেই অপূর্ণ ও পরিপূর্ণ।
.
- কিরে আর কতক্ষণ? (আবিদ)
~ এই তো দোস্ত আরেকটু। (সুমি)
- ফোন কর। We're getting late.
~ করেছি বলেছে ৫ মিনিট।
- এই ৫মিনিট শব্দটা কোন জ্ঞানী বের করেছে? ৫ মিনিট শেষই হয় না।
= কুল ইয়ার। (তৌসিফ)
- যত দেরি হবে পৌছাতে তত দেরি হবে। আর দেরি হলে অন্ধকার ঘনিয়ে আসবে।
= অসুবিধা নাই। আমরা আমরাই তো।
- আমরা ছেলেরা থাকলে অসুবিধা হত না। কিন্তু ওদের (মেয়ে) নিয়ে সমস্যা।
~ দেখ আবিদ জেন্ডার ডিস্ক্রিমিনেশন করবি না।
- জ্ঞান না দিয়ে তোর বান্ধবীরে ফোন কর।
-- তুই সবসময়ই এমন করিস। মেয়েদেরকে হেয় করিস। (তুলি)
- চামচামী করিস না। (আবিদ)
= এই ঝগড়া করিস না। (তৌসিফ)
- শুরু আমি করছি?
~ তো কি আমি করছি? (সুমি)
= চুপ কর না তোরা।
-- ওরে থামা। (তুলি)
.
এভাবেই কথা কাটাকাটি হতে লাগল এরই মধ্যে নিধি চলে এলো।
> এনি প্রব্লেম?
- আসছে তোর ভিআইপি বান্ধবী।
কথাটা কিছুটা আস্তে করে সুমিকে বলল তবে নিধি শুনে ফেলল।
> আমি ফালতু মনমানসিকতার লোকদের সাথে কোথাও যাইনা। (উল্টো পথে হাটতে লাগল)
সুমি গিয়ে বুঝিয়ে শুনিয়ে নিয়ে আসলো। তারপর সবাই মাইক্রোতে উঠে পরলো।
.
আবিদ, তৌসিফ , সুমি, তুলি নিধি সহ মোট ৮জন মিলে একটা এডভেঞ্চারে যাচ্ছে। সবাই একে অপরের বফ্রেন্ড শুধু নিধি ব্যতীত। নিধি হল সুমির ফ্রেন্ড। নিধি সবার সাথে হাই হ্যালো করে পরিচিত হল। তবে আবিদের সাথে হাই হ্যালো করেনি ঐ ঘটনাটির জন্য। তাদের এডভেঞ্চারের স্থান হল একটা উচ্চ পাহাড়। তারা পাহাড়ের শেষ সীমানায় উঠবে। পাহাড়ে কোনো ভয়াবহ জীবজন্তু নেই। তাই অনেকেই এখানে আসে। এখানে কিছু পিকনিক স্পটও আছে। দু একটা হোটেলও আছে।
.
সন্ধ্যা হওয়ার একটু আগে তারা যথাযথ স্থানে পৌছালো। তারপর হোটেলে এসে রুম নিলো। আবিদ সবাইকে বলে দিয়েছে খুব ভোরে উঠে রওনা দিতে হবে নয়তো ফিরতে সন্ধ্যা হয়ে যাবে। অতঃপর পরেরদিন খুব সকালেই রওনা দিল। খুব আনন্দের সাথে সবাই পাহাড়ের উচ্চতার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। কখনো গান, কখনো কথাবার্তা, কখনো একে অপরকে নিয়ে দুষ্টামি, কখনো রেস্ট + খাওয়া দাওয়া। এভাবেই তারা এগিয়ে যাচ্ছে।
.
সবাই পর্যাপ্ত পরিমাণে নিজ নিজ খাবার নিয়ে এসেছে এবং সেই অনুসারেই শেষ করছে। ঠিকঠাকমতো তারা দুপুরের দুকে পাহাড়ের উচ্চতায় পৌছে গেল। সেখানে কিছুক্ষণ রেস্ট নিল + সেলফি তুললো। তারপর ফিরার জন্য রওনা দিল। মাঝপথে এসে কিছুক্ষণ রেস্ট নিল।
.
> দেখেন আবিদ সুন্দর মত বলছি আমার ব্যাগ দিয়ে দিন। (নিধি)
- আপনার ব্যাগ আমি কোথায় পাব?
> আপনি এইমাত্র আমার ব্যাগটা নিয়েছেন।
- আমি নেইনি। আর নিলে কোথায় লুকাতাম?
~ আবিদ নিলে দিয়ে দে প্লিজ। (সুমি)
- আশ্চর্য আমি নেইনি। তো কোত্থেকে দিব?
= এক মিনিট। আমার ব্যাগও নেই। (তৌসিফ)
"আমাদের ব্যাগও নেই।" (আরও দুজন)
.
হঠাৎই পুরো পরিবেশ নিস্তব্ধ হয়ে গেল।
= দোস্ত এখানে ভুত টুত নেই তো?
এমন একটা ঘটনার পর গহীন জঙ্গলের পড়ন্ত বিকেলে ভুত শব্দটা সবাইকেই আতংকিত করে তুললো। আবিদ তৌসিফের উপর কিছুটা রাগন্বিত হয়ে গেল।
- কি যাতা বলছিস? চুপ থাক তো।
= তাহলে ব্যাগ গুলো কোথায় গেল?
- তোর লজিক দেয়া বন্ধ কর তো। সবাই হাটা দে। আমাদেরকে তাড়াতাড়ি হোটেলে পৌছাতে হবে।
.
মনের মধ্যে এক অজানা ভয় নিয়ে অবিলম্বে সবাই হাটা শুরু করল। আবিদ তৌসিফকে কানে কানে বলল
- তুই কি পাগল? অহেতুক ভুত শব্দটা তুললি কেন? মেয়ে গুলো তো ভয় পেয়ে গেল।
= স্যরি দোস্ত এত কিছু খেয়াল ছিল না। কিন্তু ব্যাগ গুলো কই গেল?
- চুপচাপ হাট।
.
আবিদও কিছুটা ভয়ে আছে। কিন্তু প্রকাশ করছে না। আসলেই তো ব্যাগ গুলো কোথায় গেল? [ব্যাগ গুলো বানরে নিয়ে পালিয়েছিল]
.
কিছুটা দূর আসার পর নিধি হোচট খেল। যার ফলে হাতে থাকা পানির বোতলটা একটু নিচে পরলো। তারা এখনো সমতল থেকে অনেক উচুতে। নিধি পানির বোতলটা আনতে গেল। যেই না সেদিকে পা দিল ওমনি মাটি নিচের দিকে চলে গেল যার ফলে নিধি ভারসাম্য হারিয়ে নিচে পরতে লাগল। আবিদ এগিয়ে গেলো ধরতে। কিন্তু নিজেও ভারসাম্য হারিয়ে নিধির সাথে নিচে পরে গেল। সবাই চিতকার করে এগিয়ে গেল কিন্তু ততক্ষণে আবিদ নিধি ধরা ছোঁয়ার বাইরে চলে গেল। কিছুক্ষণ পর আবিদ নিধির আর্তনাদ বন্ধ হয়ে গেল।
.
সবাই মিলে বেশ কিছুক্ষণ কান্নাকাটি করল। তারপর তৌসিফ বলল
= আমাদের দ্রুত হোটেলে গিয়ে ফরেস্ট গার্ডদের সাথে কথা বলা উচিত। তাছাড়া রাত হয়ে গেলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়ে যাবে।
বাকিরা সম্মতি দিল। অতঃপর তারা হোটেলের দিকে দ্রুত গতিতে ছুটে হোটেলে এলো। তারপর হোটেল কর্তৃপক্ষকে সব খুলে বলল।
.
অতি উচু থেকে নিচে পরার সময় আবিদ-নিধি জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। পাহাড় থেকে পরে নিধি আবিদ একে অপরের পাশাপাশি হাত ধরা অবস্থায় ছিল। কিছু পাহাড়ি লোকজন তাদেরকে সেই অবস্থায় পেয়ে নিজেদের গ্রামে নিয়ে এলো। ঘটনাস্থলে আবিদ নিধির বন্ধুরা ফরেস্ট গার্ড নিয়ে অনেক খোঁজাখুঁজি করল কিন্তু গ্রামের লোকজন নিয়ে যাওয়ায় তাদেরকে আর পেল না তারওপর তখন অনেক রাতও হয়ে গিয়েছিল।
.
পরেরদিন সকালে
চোখ খোলার পর আবিদ দেখল তার আশেপাশে বেশ কিছু মানুষ এবং তার হাত পা মুখ বাঁধা। কিছুক্ষণ পর নিধিরও জ্ঞান ফিরলো। অতঃপর দুজনকে গ্রামের সর্দারের কাছে হাজির করে সব বাঁধন খুলে দেয়া হল।
.
- আমাদেরকে এভাবে বেঁধে রাখা হয়েছে কেন?
-- তোমরা নোংরামি করেছ। আর আমাদের গ্রামে নোংরামিকে প্রশ্রয় দেয়া হয় না।
- কি আজেবাজে বকছেন! আমরা পাহাড় থেকে পরে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছিলাম।
-- আমি মূর্খ নই। এখন তোমাদের কাছে দুটাই পথ খোলা। এক একে অপরকে বিবাহ কর, দুই মৃত্যুদণ্ড।
> কি যাতা বলছেন! আমরা কোনো নোংরামি করিনি।
-- তোমাদেরকে ১ ঘন্টা সময় দেয়া হল।
.
অতঃপর লোকজন তাদেরকে আবার হাত পা বেঁধে একটা ঘরে রাখলো।
- এসব কিছু তোমার জন্য হয়েছে। পানির বোতলটা কেন তুলতে গেলে?
> আমাকে দোষারোপ করবা না।
- তো কার দোষ?
> তোমার। তোমাকে হাত দিতে কে বলেছে?
- বারে বাহ! তোমার হেল্প করতে গিয়ে কুয়ায় পরলাম। আর এখন দোষ আমার?
> হুম তোমার।
- দেখ ঝগড়া না করে কিভাবে মুক্তি পাব তার উপায় বের কর।
> জানি না।
- দুটা উপায় আছে।
> কি কি?
- বিয়ে নয়তো মরণ।
> তোমার মত অসভ্যকে বিয়ে করার চেয়ে মরণই ভাল।
- ওকে তাহলে তাই হবে।
.
কিছুক্ষণ পর
> আমি রাজি।
- কিসের জন্য?
> বিয়ের জন্য। তবে বিয়েটা হবে শুধুমাত্র এখান থেকে বাঁচার জন্য। শহরে যেতে পারলে তোমার মুখটাও কখনো দেখাবে না।
- জ্বি একমত। এরকম দজ্জাল মেয়েকে বিয়ে করে মরতে চাই না।
> বাড়াবাড়ি করবা না।
(কিছুক্ষণ তর্কাতর্কি চললল)
.
কিছুক্ষণ পর কিছু লোক এসে তাদেরকে সর্দারের সামনে নিয়ে গেল। সেখানে আবিদ ও নিধি বিয়ের জন্য রাজি হল। গ্রামের কিছু মেয়ে নিধি বধু রূপে সাজিয়ে দিল আর কিছু ছেলে আবিদকে বর। অতঃপর কাজি ও উকিল ডেকে তাদেরকে ধর্মীয় ভাবে এবং আইনিভাবে বিয়ে করানো হল।
.
বিয়ের পরেরদিন সকালে আবিদ নিধিকে তাদের ফোন দিয়ে বলা হল বাবা মাকে ডাকার জন্য। আবিদ নিধি তাদের বাবা মাকে কল করল। তাদের কল পেয়ে তাদের বাবা মা কান্নায় ভাসিয়ে দিল। কারণ সবাই মনে ধরে নিয়েছিল আবিদ নিধি আর দুনিয়াতে নেই। তাদের বাবা মা পাহাড়ি এলাকাতে ছিল। কারণ বন্ধুরা সব বলে দিয়েছিল। তাই গ্রামে পৌছাতে সময় লাগল না। পৌছানোর পর গ্রামের লোকজনের কথা শুনে তাদের বাবা মা বেশ অবাক হল। তাদের সন্তান এমন খারাপ কাজ করবে বলে বিশ্বাস হচ্ছে না। তবুও যা হবার তো হয়েছেই। তাই তাদের বাবা মা বিয়েটা মেনে নিল। কারণ দুই পরিবারই যথেষ্ঠ শিক্ষিত ও বিত্তশালী। তাই বাধার কোনো কারণ এলো না।
.
আসার পথে আবিদ তার বাবা মাকে অনেক বুঝাল যে সবকিছুই ভুল ধারণা। নিধিও বুঝাল। বাবা মা মুখে হ্যাঁ হ্যাঁ করলেও মনে মনে গ্রামবাসীদের কথাই বিশ্বাস করল। কারণ তারা বলেছিল তারা আবিদ নিধিকে হাতেনাতে ধরেছে।
.
শহরে আসার পরপরই ধুমধাম করে আবার আবিদ নিধির বিয়ে দেয়া হল। আবিদ নিধি কেউই রাজি ছিল না। তবুও অন্য উপায় ছিল না।
.
বিয়ের পর আবিদ নিধিকে মনে মনে মেনে নিল। এছাড়া তো কোনো উপায় নেই। মনে মনে ভেবেছে নিধিও হয়তো মেনে নিয়েছে। তাই খুশিমনে রুমে এলো।
> এ সবকিছুর জন্য তুমি দায়ী। (নিধি)
নিধির কথা ও গলার স্বরে বুঝল যে নিধি তাকে মেনে নেয়নি।
> তুমি তো ছেলে। তোমার বাবা মাকে বুঝাতে পারনি?
আবিদ নিধির পাশে গিয়ে বসল। নিধি একটু নড়েচড়ে বসলো।
.
- হুম বুঝিয়েছি। কিন্তু তাদের কাছে আমার থেকে তোমার মান সম্মানটা অধিক গুরুত্বপূর্ণ ছিল। কারণ আমাদেরকে নিয়ে যে গুজব ছড়িয়েছে। তাতে তোমারই বেশি ক্ষতি হত।
.
আবিদের কথায় নিধির মনের মধ্যে থাকা রাগটা নিমিষেই গলে গেল। নিধি আর কিছু বলল না। কিছুক্ষণ নীরবতার পর আবিদ বলল
- রাত অনেক হয়েছে। ঘুমিয়ে পর।
অতঃপর ঘুম।
.
বিয়ের বাড়ি, নতুন বউ দেখতে আসে আত্মীয়স্বজনেরা। সেসব ঝামেলা কাটাতে কাটাতে বেশ কয়েকদিন চলে গেল। আবিদের মা তো নিধির হাতে সংসার গুছিয়ে দেয়ার জন্য উঠেপরে লেগেছে, "মা আমি তো এখন বুড়ি হয়ে গেছে। এবার সংসারটা তুমি গুছিয়ে নিয়ে আমাকে একটু রেস্ট দাও।"
> আপনার দিকনির্দেশনা ছাড়া আমি এত বড় দায়িত্ব কিভাবে নিব?
-- আচ্ছা তুমি কিছুদিন আমার সাথে থেকে বুঝে নাও।
.
আবিদের মা নিধিকে সবকিছু বুঝিয়ে দিতে লাগল। দিন যেতে যেতে নিধি সংসার বুঝে নিল। অন্যদিকে পড়াশুনা শেষ করে আবিদ জব শুরু করেছে। আবিদ কখনোই নিধি উপর স্বামীর অধিকার দেখায়নি কিন্তু কর্তব্যটা ঠিকই পালন করে যাচ্ছে। আবিদের এমন আচরণ নিধির মন জয় করে ফেলেছে। কিন্তু নিজেদের মাঝে যে দূরত্বটা তৈরি করেছে তা পূরণ করার সময় নিধি পাচ্ছে না।
.
এক রাতে, আবিদ বেডরুমে বসে ল্যাপটপে ফেবু চালাচ্ছে। নিধি সবকিছু গুছিয়ে আবিদের জন্য চা নিয়ে এলো।
> এই নাও।
- তুমি খাবে না?
> নাহ।
- তুমি চা পাগলী হঠাৎ চা খেতে না বলছ?
> চা নেই তাই।
- কাপ তো আছে। যাও কাপ নিয়ে এসো।
.
নিধি বুঝল যে আবিদ চা ভাগাভাগি করবে। তাই দেরি না করে কাপ নিয়ে এলো। তারপর ভাগাভাগি করে চা পান করতে লাগল।
> ঘুমাবে না? সকালে অফিস আছে না?
- নাহ। ৪দিনের ছুটি দিয়েছে।
নিধি মনে মনে ভাবল এই একটা সুযোগ হাতে এসেছে নিজেদের দূরত্বটা মিটিয়ে নেয়ার।
> চল না তাহলে কোথাও ঘুরতে যাই। (মুখ ফসকে বেরিয়ে গেল)
.
আবিদ কিছুক্ষণ নিধির দিকে তাকিয়ে রইলো। নিধি কিছুটা লজ্জা পেয়ে চোখ সরিয়ে নিলো।
- কোথায় যাবে?
> তুমিই বল।
- চল কোনো এক এডভেঞ্চারে যাই।
> আবার এডভেঞ্চার?
- হুম। এই এডভেঞ্চারেই জীবনের মূল্যবান একটা জিনিস পেয়েছি।
.
আবিদের কথা শুনে নিধির গাল দুটো লজ্জায় লাল হয়ে গেল।
- লজ্জা পেলে মেয়েদেরকে এত সুন্দর দেখায় কেন?
হাতের মগটা আবিদের দিকে উচিয়ে ধরে অগ্নি দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলল
> আর কয়টা মেয়ের দিকে তাকিয়েছ?
- আরে না না একটাই।
> নাম নাই?
- বলব?
> হুম।
- এডভেঞ্চারে চলো সেখানেই বলব।
> কোথায় যাব?
- সারপ্রাইজ।
> আচ্ছা।
.
সকালে উঠে টুকিটাকি কাপড় গুছিয়ে বাবা মায়ের থেকে পারমিশন নিয়ে দুজনে বেরিয়ে পড়লো। লং ড্রাইভের পর দুজন সেই পাহাড়ি গ্রামে এলো।
> এখানে কেন?
- লাইফের সব থেকে মূল্যবান সম্পদটা এখান থেকেই পেয়েছি।
নিধি মাথা নিচু করে ফেলল।
.
গ্রামের লোকজন তাদেরকে দেখে এগিয়ে এলো। তারা গ্রামের সর্দারের সাথে দেখা করলো। সর্দার বেশ খুশি হল। গ্রামের লোকজন আবিদ নিধিকে খুব আপ্যায়ন করল। যা দেখে আবিদ নিধিও খুব খুশি হল। গ্রামের লোকজন আবিদ নিধিকে একটা ঘর থাকার জন্য। ঘরটা মেহমানদের জন্যই।
.
দুজনে মিলে চাঁদ দেখছে।
> কি অদ্ভুত তাই না? কিছু মাস আগেই এক দিন আমরা এদেরকে মনে মনে কত বকাবকি করেছিলাম। কিন্তু আজ বুঝতেছি এরা আসলে কত ভাল।
- মানুষের সাথে না মিশলে বুঝা যায় না সে কেমন।
> ঠিক। যেমনটা আমি তোমাকে চিনতে ভুল করেছি।
- আমিও তোমাকে চিনতে ভুল করেছি। সারাদিন কত কষ্ট করে পুরো সংসারটা গুছিয়ে রাখ। তবুও আমি তোমার সাথে ভালমত একটু কথা বলিনি।
> দোষটা আমারই। আমিই তো তোমাকে দূরে রেখেছিলাম। তুমি আমার প্রতিটি যথেষ্ঠ খেয়াল রেখছ। কিন্তু আমি নিজের দায়িত্ব পালন করিনি।
- থাক না অতীতের কথা। বর্তমান ও ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবি।
.
নিধি আবিদের বুকে মাথা রাখলো। আবিদ নিধির মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। তাদের জীবনের একটি অধ্যায় এখানেই শুরু হয়েছিল। আবার আরেকটি নতুন অধ্যায় এখানেই শুরু হতে যাচ্ছে।
.
বলা হয় পৃথিবী গোলাকার। তেমনই জীবনটাও গোলাকার। বৃত্ত যেমন একটি স্থান থেকে শুরু হয়ে আবার সেই স্থানে মিলিত হয়। তেমনই লাইফটা মাঝেমাঝে তার অসম্পূর্ণ স্থানে আবার এসে সম্পূর্ণ হয়।
.
লেখাঃ নিশি চৌধুরী (রাত্রির আম্মু)

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.