নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বিনোদন ও জাগরণের চেষ্টা। হরর, থ্রিলার, রম্য এই জাতীয় কিছু লেখার চেষ্টায় আছি। (০২/০২/১৭)

Nishi Chowdhuri

আমি মানুষ।

Nishi Chowdhuri › বিস্তারিত পোস্টঃ

গল্পের নামঃ শিষ্টাচার ব্যতীত শিক্ষা মূল্যহীন।

৩০ শে এপ্রিল, ২০১৭ দুপুর ১২:৪৯

___ শিষ্টাচার ব্যতীত শিক্ষা মূল্যহীন।
লেখাঃ Nishi Chowdhuri (রাত্রির আম্মু)
.
টেম্পুতে উঠে বাসায় উদ্দেশ্যে রওনা হলাম। টেম্পুতে মোট নয়জন আছি। তারমধ্যে ৪ জন একই কলেজ/ভার্সিটির ছেলে আছে। তাদের কথাবার্তা ও ড্রেস দেখ বুঝলাম। টেম্পু চলা শুরু হল। তাদের কথোপকথনও শুরু হল। বেশ কিছুক্ষণ ধরে তারা একনাগাড়ে কথা বলেই যাচ্ছে। তাদের কথাবার্তা গুলো হল, ফেবুতে কি হয়েছে, কলেজে আর কোন ম্যাডাম কি কথা বলেছে এবং তার কটুক্তি মূলক জবাব কি দিয়েছে, আজ কোন মেয়ে কিভাবে সেজে এসেছে এবং তাকে নিয়ে অট্টহাসি ব্লা ব্লা ব্লা। মিনিট দশেক পর একজন লোক তাদেরকে ডাক দিল। লোকটার মাথায় টুপি ও মুখে দাড়ি ছিল। বেশ ধার্মিক লোক। তো লোকটা তাদেরকে যা যা বলল তা হলঃ-
.
- আপনারা সেই তখন থেকেই অনবরত কথা বলে যাচ্ছেন। এতে অন্যান্যরা তো বিরক্ত হচ্ছে। আপনারা শিক্ষিত মানুষ। এটা তো বুঝা উচিত যে পাবলিক প্লেসে এত কথা বলা ভাল না। প্রয়োজনীয় কথা বলুন। কিন্তু এভাবে অবান্তর কথাবার্তা ও আড্ডা দেয়া তো ঠিক না। যাত্রা পথে থাকাকালীন বই পড়ুন বা আজ কি কি করবেন তা ভাবুন বা মুসলিম হলে আল্লাহ জিকির করুন। এভাবে আড্ডা দিয়ে সময়টা অপচয় করবেন না। আর আপনারা যেসব কথাবার্তা বলছেন তাতে বরং গুনাহগার হচ্ছেন।
.
লোকটার কথা শুনে তারা চুপ হয়ে গেল। আমি মুগ্ধ হয়ে গেলাম। উনার প্রতিটি বাক্য খুবই উপকারী। বিশেষ করে শেষ কিছু বাক্য যা মুসলিম হিসেবে আমাকে একটা শিক্ষা দিলো। এরপর থেকে কিছু মিনিট টেম্পুতে নিরবতা বিরাজ করলো। একটু পর লোকটা নেমে গেল। তারপরই শুরু হল ছেলেগুলোর বিদ্রুপ কমেন্ট।
.
~ এই কাল থেকে টেম্পুতে কথা না বলে বই নিয়া বসবি। তারপর সবাইকে জ্ঞান দান করবি। (প্রথমজন)
= আমি লাইব্রেরী নিয়ে বসবো। (২য় জন)
> আরে বেটা হুজুরদের সবকিছুতেই প্রব্লেম থাকে। এরা ভাবে টুপি আর দাড়ি রাখলেই জান্নাত পেয়ে যাবে। (৩য় জন)
.
কথাগুলো শুনে রাগে রক্ত টগবগ করে উঠলো। কিন্তু মেয়ে বলে কিছু বলতে পারছিলাম না। কিন্তু টেম্পুতে থাকা অন্য একজন গর্জে উঠলো।
.
-- কোথায় যাবেন আপনারা?
কথাটা শুনে সবাই থেমে গেল।
-- কোন ক্লাসে পড়েন?
~ অনার্স।
-- পড়ালেখা করে লাভ কি যদি বিহেভ না শিখতে পারেন? একটু আগে একজন আপনাদেরকে ম্যানার্স (manners) শিখিয়ে গেল। তবুও থামলেন না। উল্টা সে চলে যাওয়ার পর তাকে নিয়েই কটাক্ষ শুরু করেছেন। পিঠ পিছু কারও সমালোচনা করা গীবত জানেন তো? জানি তবুও আপনারা থামবেন না। আমি নেমে গেলে আমাকে নিয়েও সমালোচনা করবেন। আল্লাহ আপনাদের সুবুদ্ধি দান করুক।
.
পুরো টেম্পু জুড়ে স্তব্ধতা বিরাজ করল। কিছুক্ষণ পর ছেলেগুলো নেমে গেল। তারপর বাকিরা যে যার যার গন্তব্যে নেমে গেল। আমিও আমার গন্তব্যে নেমে গেলাম। হয়তো ছেলেগুলো টেম্পু থেকে নেমে দ্বিতীয় লোকটারও সমালোচনা করেছে কিংবা শিক্ষা নিয়েছে। পরবর্তীতে কি হয়েছে তা জানা নেই। তবে আমাদের উচিত প্রথম ব্যক্তি ও দ্বিতীয় ব্যক্তি উভয়ের কাছ থেকেই শিক্ষা নেয়া। বই পড়ার মাধ্যমে শিক্ষিত হওয়া যায় কিন্তু স্বশিক্ষিত হওয়া যায় না। আমাদের উচিত স্বশিক্ষিত হওয়া। শিক্ষার মাধ্যমে আত্মশুদ্ধি করা, মানবতা জাগ্রত করা। তবেই শিক্ষার প্রকৃত উদ্দেশ্য অর্জিত হবে।
.
লেখাঃ Nishi Chowdhuri (রাত্রির আম্মু)

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.